নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি গণহত্যায় পশ্চিমা পৃষ্ঠপোষকতা বিশ্ববাসীকে কিসের বার্তা দেয়? এটি সম্ভবত পশ্চিমা পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদের যবনিকার শুরু। প্রতিটি বৃহৎ শক্তিরই যেমন একটি সূচনা থাকে, একইভাবে শেষও থাকে, তার পতনের একটি নিজস্ব শব্দ, লক্ষণ ও প্রকৃতি থাকে। জ্যোতির্বিদরা বলেন, গ্রহ-নক্ষত্র তার আয়ুষ্কালের শেষ প্রান্তে এসে কৃষ্ণগহ্বরে পরিণত হয়। ভূ-তাত্ত্বিকরা বলেন, নদী তার শেষ প্রান্তে এসে গভীরতা হারালেও দুই পাড়ের ভাঙন বেড়ে যায়। বন্য জানোয়ার ক্ষুধার্ত হলে অথবা নিজেকে নিরাপত্তাহীন বোধ করলে তার হিংস্রতা অনেক বেড়ে যায়। প্রথম মহাযুদ্ধের পর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের কাঠামোর উপর ভর করে চলা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদে মাত্র এক শতাব্দীর মধ্যেই কি পতনের সুর বেজে উঠতে যাচ্ছে! সম্ভবত, ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়ই মুক্তবুদ্ধির মানবতাবাদী পশ্চিমা লেখক- সাহিত্যিকরা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের পতনের সুর শুনতে পেয়েছিলেন। মার্কিন বিট জেনারেশনের অন্যতম কবি এলেন গিন্সবার্গ ১৯৭৪ সালে প্রকাশিত তার একটি বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থের নাম দিয়েছিলেন ‘ফল অব আমেরিকা’। এই কাব্যগ্রন্থের শেষ কবিতা হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের রক্তাক্ত স্মৃতিবাহী ‘সেপ্টেম্বর ইন জেসর রোড’ কবিতাটি স্থান পেয়েছে। মার্কিন বিট কবিদের কনটেম্পোরারি উত্তরাধিকারী নিউ জার্সির পোয়েট লোরিয়েট আমিরি বারাকা ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কের বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্রে সন্ত্রাসী বিমান হামলার পর ‘সামবডি ব্লেউআপ আপ আমেরিকা’ শিরোনামে এক দীর্ঘ কবিতা লিখেছিলেন। এই কবিতায় আমিরি বারাকা টুইন টাওয়ার ধ্বংসের পেছনে ইসরাইলি ইহুদিদের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রথম স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন। শুধু টুইন টাওয়ার ধ্বংসই নয়, সাম্প্রতিক বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাসে বড় বড় অঘটনগুলোর সাথে ইহুদি ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সংশ্লিষ্টতার যুক্তিপূর্ণ ইঙ্গিত রয়েছে এই কবিতায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে আমিরি বারাকার বিরুদ্ধে ইহুদিরা প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে তাকে ক্ষমা চাইতে বললেও বারাকা তার বক্তব্য থেকে একচুলও সরে যাননি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা শুরুর প্রায় একমাস আগে একজন অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন সেনা কর্মকর্তা এবং মনস্তত্ত্ববিদ গ্লোবাল রিসার্চ অনলাইনে তার এক নিবন্ধের শিরোনাম দিয়েছেন, ‘দ্য ফল অব আমেরিকান অ্যামপায়ার...অ্যান্ড হোয়াট উই ক্যান ডু এবাউট ইট’। এই নিবন্ধের লেখক জোয়াসিম হ্যাগোপিয়ান মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের পতনের প্রায় সবগুলো লক্ষণ, ইতিহাস ও উপাত্তসমূহ তুলে ধরেছেন। আর মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এই পতন প্রক্রিয়ার নেপথ্যে রয়েছেন একটি ক্ষুদ্র কায়েমী স্বার্থবাদী মহল। পশ্চিমা বিশ্বে যারা জায়নিস্ট লবি এবং নিওকন বা নিওকনজারভেটিভ নামে পরিচিত। মাত্র দুই দশক আগে সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের পতনের মধ্য দিয়ে যে ইউনিপোলার বিশ্বের সূচনা হয়েছিল, ভেতরে ভেতরে তারও পতনের সূত্রপাত হয়ে গেছে অনেক আগেই। ভোগবাদী পশ্চিমাবিশ্ব এখন অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দেউলিয়াত্বের শিকার। পশ্চিমা বিশ্বে ইসলামোফোবিয়া বা ইসলাম বিদ্বেষী অপপ্রচার ও আগ্রাসন যতই বেড়েছে, সেখানে ইসলামী মূল্যবোধের প্রতি মানুষের আগ্রহও তত বেড়েছে। ইসলামী জীবনাদর্শ, মূল্যবোধ, অর্থনৈতিক সাম্যনীতি ও সার্বজনীন ও সর্বকালীন জীবনাদর্শের কাছে তারা পরাজিত হয়ে এখন শুধুমাত্র মারণাস্ত্রের উপর ভর করে নিজেদের শেষ রক্ষার চেষ্টা করছে মাত্র।
©somewhere in net ltd.