নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।
নাটকীয়তায় ভরা সিনেমার মতো অতি দ্রুত ঘটনার আমূল পরিবর্তন-প্রসূত অপার বিস্ময়বোধের মধ্য দিয়ে কেটে যাওয়া এই ঈসায়ী সন দুই হাজার চৌদ্দকে ভালো, খারাপ উভয় বিশেষণের ছোঁয়াচ থেকে নাহয় দূরেই রাখলাম!
আল্লাহ হকের হাকিম। নতুন ঈসায়ী বছর সবার জন্য ভালো কাটুক। আমার পরিবার, বন্ধু, সুহূদ, সহকর্মী, সহমর্মী, সমাজ, জাতি, রাষ্ট্র সকলের জন্য আল্লাহর কাছে নিষ্কলুষ মঙ্গল কামনা করি...
যাই হোক প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আসি
গত বছরের শেষ সপ্তাহে ঢাকা সফরে এসেছিলেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। নজিরবিহীনভাবে কাঠমান্ডু থেকে বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটে চেপেই তিনি ঢাকা আসেন। বাহ্যত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এ সফরে বাংলার সার্বিক সক্ষমতা বিনির্মাণে চীনা সম্পৃক্ততা আরো বৃদ্ধির নিদর্শন দেখা গেছে, যা ভবিষ্যতে এদেশে চীনা প্রভাবের ব্যাপক বৃদ্ধিরই ইঙ্গিতবাহী।
বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির এই শীর্ষ কূটনীতিকের তিন দিনের ঢাকা সফরে বেশ কিছু স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমঝোতা স্হাপন পর্যায়ের অগ্রগতি হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, নৌবাহিনীকে সজ্জিত করতে বেইজিংয়ের সাথে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি করবে বাংলাদেশ। এই চুক্তির আওতায় অত্যাধুনিক রণতরী ও সমরাস্ত্র বিক্রয় ছাড়াও পায়রা বন্দরের কাছে প্রস্তাবিত শের-ই-বাংলা নৌঘাঁটি ও পেকুয়ায় সাবমেরিন ঘাঁটি নির্মাণে সাহায্য প্রদান করবে চীন। শের-ই-বাংলা নৌঘাঁটি নির্মাণ শেষে হবে দেশের বৃহত্তম নৌঘাঁটি।
এছাড়াও কৃষি গবেষণায় চীনের প্রভাব বৃদ্ধির আলামত হিসেবে চীন বাংলাদেশে একটি উচ্চ ফলনশীন ধানের গবেষণাকেন্দ্র করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। অর্থাৎ সামরিক খাতের পর কৃষি খাতেও চীনা প্রভাব বাড়তে যাচ্ছে। দেশের বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে চীনা প্রভাব বৃদ্ধির আরেক অনুঘটক হিসেবে বেইজিং প্রস্তাব করেছে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল চুক্তির।
আমার অতীতের অসংখ্য সংলগ্ন ও অসংলগ্ন পোষ্ট যদি কেউ হাতড়ায়, তাহলে দেখতে পাবে, বেশ কয়েকবারই আমি সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা ও আসিয়ানে বাংলাদেশের যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব যোগদানের উপর গুরুত্বারোপ করে পোস্ট লিখেছি। যে কয়টি আন্তর্জাতিক সংঘে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও ভূরাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশের যোগদান ফরজ বলে আমি মনে করি, সাংহাই সংঘ ও আসিয়ান তাদের মধ্যে শীর্ষে আছে।
বস্তুত, চীন, রাশিয়া, সহ ইউরেশীয় জমিনের বেশ কয়েকটি দেশ নিয়ে গঠিত সাংহাই জোট এখনো ততো সক্রিয় না হলেও এটি ইতোমধ্যেই একটি ঐক্যবদ্ধ ইউরেশীয় সামরিক ও অর্থনৈতিক জোটে পরিণত হবার লক্ষণাক্রান্ত। সাম্প্রতিক বৈশ্বিক প্রক্ষাপটে চীন, রাশিয়া, তুরস্কের মতো সম্ভাবনাময় ইউরেশীয় শক্তিগুলোর নবজাগরণের প্রেক্ষাপটে সাংহাই সংঘের সম্ভাবনা ও গুরুত্ব হয়ে গেছে আকাশচুম্বী; সম্ভবত এই মুহূর্তে অন্য যেকোন আন্তর্জাতিক জোটের চেয়ে বেশি। এই সংঘ ও প্রাচ্যের সফল অর্থনৈতিক সংঘ আসিয়ানে পূর্ণ সদস্য হিসেবে যোগ দেয়া এখন আমাদের জন্য অবশ্য পালনীয়।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই দুই সংস্থায় বাংলাদেশের যোগদানে সাহায্য করার ওয়াদা দিয়ে গেছেন।
বস্তুত, ওয়াং ইর এই সফরে তেমন কোন ভৌত অগ্রগতি না থাকলেও উপরিউক্ত বিষয়গুলোর আলোচনা হওয়াটা গুরুত্বের দাবীদার। যেসব বিষয়ে চীনের সাথে বাংলাদেশের আলোচনা চললো, সেসব বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে মার্কিন প্রভাব তো বটেই, ভারতীয় প্রভাবও কমে যাবে। ফলে ভূরাজনৈতিক দিক থেকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফর বেশ স্পর্শকাতর। বিশেষত, বাংলাদেশ গভীর সমুদ্রে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর যে সংকল্প করেছে, চীন যেন তাতে নিবিড় সহযোগী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আর আন্ধারমাণিক ও কুতুবদিয়া প্রণালীতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ নৌঘাঁটি যদি সত্যিই চীন নির্মাণের দায়িত্ব পায়, তাহলে বঙ্গোপসাগরে আমেরিকার প্রবেশের সম্ভাবনায় মোহর পড়বে, আর ভারত নিজেকে জলে-স্থলে চীন কতৃক সম্পূর্ণ ঘেরাও অবস্থায় দেখতে পাবে। কার্যত নিজের পেটের ভেতর বঙ্গোপসাগরে চীনের শক্তিশালী সামরিক প্রভাব দিল্লীর জন্য অত্যন্ত অস্বস্তিকর। যার পারিপার্শ্বিক প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া সহজেই অনুমেয়।
তবে এক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য বিষয় হচ্ছে, এই সফরে সোনাদিয়ায় প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্রবন্দর, যা নির্মাণে চীনের আগ্রহের কথা সুবিদিত, সে ব্যাপারে আলোচনা হয়নি। দৃশ্যত চীন দুটি নৌঘাঁটি নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েই যেন খুশি। তবে আসলেই কি তাই?
এজন্যই ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হওয়া, এবং ওয়াং ইর এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ঘিরে ওয়াশিংটন ও দিল্লীর দুশ্চিন্তা আরো বেড়ে যাওয়ার ক্ষেত্র গোচরীভূত হলেও আপাতত এই সফরের খুব একটা ভৌত বা বাস্তব প্রাপ্তি এখনো আমি দেখিনা। তবে এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের সামনে প্রকাশ্য হওয়া সুবর্ণ সুযোগকে কাজে লাগানোর নতুন এক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে, যা হাতছাড়া করা আর আত্মহত্যা করা মোটামুটি কাছাকাছি প্রতিশব্দ...!
২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:১০
ওয়েলকামজুয়েল বলেছেন: হা হা হা.....ভালোই বলেছেন।
৩| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:০০
নিলু বলেছেন: বিশ্বে প্রায় সব সাগরেই তো আমেরিকার পতাকা ভাসছে বা পদচারনা রয়েছে বোধ হয় ।
৪| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৫২
ইমরান আশফাক বলেছেন: চীনা পররাস্ট্রমন্ত্রীর সফরে বলা হয়েছে যে খুব শীঘ্রই চীনা প্রেসিডেন্ট অথবা প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২২
খেলাঘর বলেছেন:
"এজন্যই ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হওয়া, এবং ওয়াং ইর এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ঘিরে ওয়াশিংটন ও দিল্লীর দুশ্চিন্তা আরো বেড়ে যাওয়ার ক্ষেত্র গোচরীভূত হলেও আপাতত এই সফরের খুব একটা ভৌত বা বাস্তব প্রাপ্তি এখনো আমি দেখিনা। "
- আপনি বাস্তব প্রাপ্তি বুঝতে পারছেন না, কারণ আপনার সময়ের অভাবে চীনা মন্ত্রি কোনভাবেই আপানার সাথে আলাপাের সুযোগ পাননি; আপনাকে বুঝায়ে বলত পারেননি।