নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য সদা সুন্দর চিরন্তন

অসত্যের কাছে নত নাহি হবে শির ভয়ে কাপে কাপুরুষ লড়ে যায় বীর। -নজরুল

ওয়েলকামজুয়েল

লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।

ওয়েলকামজুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধর্মব্যাবসা বনাম পিকের বাস্তবতা

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:০৩

বলিউডের পিকে মুভিটা নিয়ে সেই দেশে চলছে তুমুল সমালোচনার ঝড়। শুধু ইন্ডিয়াতেই নয় সারা পৃথিবীর অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বী এর প্রতি ক্ষোভ এবং নিন্দা জ্ঞাপন করেছে। তাদের অভিযোগ, এই সিনেমাটিতে হিন্দু ধর্মকে চরমভাবে হেয় করা হয়েছে। পরিচালক রাজকুমার হিরানি একজন হিন্দু হয়ে কিভাবে নিজ ধর্মকে এভাবে অবমাননা করলেন!

কেবল হিন্দু ধর্মই নয়, বৌদ্ধ, খৃষ্টানসহ সকল ধর্মকে(ইসলাম ছাড়া) আঘাত করা হয়েছে বলে অনেকের দাবী।

কিন্তু মুভিটা দেখে আমার মনে হয় নি মুভিটাতে কোন ধর্মকে বিন্দুমাত্র হেয় করা হয়েছে। বরং হিন্দু পণ্ডিতগণ হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যেই ব্যবসা হাজার হাজার বছর ধরে করে এসেছে এবং তার অনুসারিরা যেভাবে সেই ব্যবসাতে কোন লাভ ছাড়াই ইনভেস্ট করে নিজেদের কপাল পুড়িয়েছে সেটাই কঠিন যুক্তির মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে।

তার কয়েকটা বর্ণনা করছি-

১. ভিন গ্রহ থেকে আসা এক এলিয়ান তার ফিরে যাওয়ার রাস্তা খুঁজে পাচ্ছে না। সে পৃথিবীতে এসে দেখেছে মানুষ ভগবান নামে একজনের কাছে প্রার্থনা করছে, তিনি সকলের ইচ্ছা পূরণ করেন। তো সে এক দোকানে গেল ভগবানের খোঁজে। সেখানে বিভিন্ন সাইজ এবং দামের ভগবানের মূর্তি পাওয়া যায়।

সে একটা মূর্তি কিনে তার কাছে প্রার্থনা করল। কিন্তু ফল পেল না। তখন সে দোকানদারের কাছে গিয়ে বলল, ‘এই ভগবানের ব্যাটারি শেষ বা এর ম্যানুফাকচারিং এরর আছে। আরেকটা দিন।’ জবাবে দোকানদার বলল, ‘আরে আমি নিজ হাতে দীর্ঘদিন ধরে এই মূর্তি বানাই। কোন এরর নাই।’

তখন সেই এলিয়ান অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘ভগবান তোমাকে বানিয়েছে নাকি তুমি ভগবানকে???’

২. এক হিন্দু পুরোহিতের সাথে তর্কের এক পর্যায়ে এলিয়েন তাকে জিজ্ঞেস করে, ‘মন্দির বানিয়ে আপনারা কি করেন? আপনাদের দায়িত্ব কি?’ পুরোহিত বলল, ‘আমরা ভগবানের দেখা শোনা করি।’

তখনও এলিয়েন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘সারা মহাবিশ্বের দেখাশোনার দায়িত্ব যিনি নিয়েছেন তার দেখাশোনার দায়িত্ব কিনা আপনাদের মত কিছু সাধারন মানুষের!!!!’

৩. যেই মূর্তিগুলো মানুষ নিজ হাতে বানায় আবার সেই মূর্তিগুলোর সামনেই নিজের ইচ্ছা তুলে ধরে তার কাছে পথের সন্ধান চায়(এই যুক্তি ইব্রাহিম (আঃ) নিজ সম্প্রদায়ের লোকদেরকেও দিয়েছিলেন)। এলিয়েন পরীক্ষার হলের সামনে একটা গাছের নিচে একটা পাথর গুঁজে দিয়ে সেখানে কিছু পয়সা রেখে একজনকে প্রমাণ দেখানোর চেষ্টা করে এরা এই পাথরের সামনে সবাই এসে নিজের ভালো ফলের জন্য প্রার্থনা করবে। আর সেটাই হয়েছে।

সে বোঝাতে চেয়েছে এই শিক্ষিত লোকদেরকে ভয় দেখিয়ে ব্রেন ওয়াশ করেছে পণ্ডিতরা।

৪. এলিয়েন বলে, এই যে পুরোহিত বলছে মনের আশা পূরণ করতে এই বাক্সে টাকা ফেল আর ওইখানে ঠাকুরের মাথায় দুধ ঢাল, এটাও একটা ব্যবসা। কেননা, ঈশ্বর এই দুধ আর টাকা দিয়ে কি করবেন? তার কি এগুলোর প্রয়োজন আছে। বরং ঈশ্বর বলবেন, ‘এই দুধ তুমি একজন ক্ষুধার্তকে খাওয়াও। এই টাকা একজন অসহায়কে দাও।’ এভাবেই ঈশ্বর একজনের মাধ্যমে আরেকজনকে সাহায্য করবেন।

এভাবে হিন্দু ধর্মকে যারা বিভিন্ন ভাবে নিজেদের মত করে ব্যাখ্যা করে অর্থ উপার্জন করেছে তাদের ওই অর্থ উপার্জনের কৌশল বন্ধ করার সব যুক্তিই এই সিনেমাটিতে দেখান হয়েছে। কেননা, হিন্দুদের ধর্ম পালনের মাধ্যমে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার কৌশল তাদের ধর্মগ্রন্থের আলোকে হয় না। এটা হয় অযৌক্তিক এবং ভ্রষ্টতার মাধ্যমে।

আমি পিকে মুভিটাকে প্রমোট করছি না। আমি সবসময়ই বলিউডের নোংরা ধারার মুভির বিপক্ষে। তবে মুভি যদি বানাতেই হয় তাহলে এই ধরনের মুভিই বানান উচিত যেগুলো বস্তুতই শিক্ষণীয়।

‘যাদের বুদ্ধি বিবেক বস্তুতান্ত্রিক ইচ্ছা(ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি) কতৃক আচ্ছন্ন তারাই সাকার(প্রতিমা) ঈশ্বরের পূজা করে। আর তারা তাদের প্রকৃতি অনুযায়ী পূজার নিয়ম পদ্ধতি তৈরি করে।’(ভগবদগীতা, অধ্যায়ঃ৭, শ্লোকঃ২০)

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:০৩

বাংলার পথিক বলেছেন: লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো । যুক্তি গুলা আমার নিজেরও অসাধারণ লেগেছে আসলে এই মুভিতে

২| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:১৮

ওয়েলকামজুয়েল বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:৩৯

তাশমিন নূর বলেছেন: গীতার শ্লোকটা দেখে অবাক হলাম।

৪| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৬:২৩

ওয়েলকামজুয়েল বলেছেন: কেন ভাই তাশমিন?

৫| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:২০

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
অতি সুংক্ষেপে আপনার 'পি-কে' মুভি পুনারালোচনা আমার খুব ভালো লেগেছে ।
আপনার চৈতন্য আরও সুন্দর হয়ে জাগরিত হোক কামনা করি ।

৬| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:৫৪

বার্লিন বলেছেন: পিকে ছবিতে একটি দৃশ্যে মুসলিম কাঠমোল্লাদের নারী শিক্ষাবিরোধীতাও সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সে আনন্দে পিকে দুই বোতল মদ নিয়ে মসজিদে গেলে মোল্লাদের ধাওয়া খাওয়ার দৃশ্যটি উপভোগ্য ছিল। আর হিন্দু আনুশকা রে তো বোরখা পড়িয়ে ছাড়ল।

অসাধারণ মুভি। :) :D B-)

৭| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:১৩

নীলপরি বলেছেন: আগেও এই কথাটা অনেকে বলেছেন । জানিনা বোধদয় কবে হবে । তবে আপনার লেখা পড়ে মুভিটা দেখার ইচ্ছে রইল । ধন্যবাদ ।

৮| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:০৩

Ali Khan Russell বলেছেন: অসাধারন মুভি । আমি ৩ বার দেখলাম। এই ছবিটা শুধু ছবিনা আরও বেশি কিছু্।

৯| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:১১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: তবে মুভি যদি বানাতেই হয় তাহলে এই ধরনের মুভিই বানান উচিত যেগুলো বস্তুতই শিক্ষণীয়।

পূজা=িবাদ আর ভৌগবাদ এসব মূলৌকি শিক্ষার ঘোর বিরোধী!!

তাই হয়না ভাই..

হয় শূধূ পূজি আর ভোগের বিকাশের যত আয়োজন তাই.. সংস্কৃতি আর শিল্পের নামে!!

১০| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:০১

রাখালছেলে বলেছেন: ভারতের পক্ষে এইধরনের প্লট নিয়া মুভি বানানো সম্ভব । ধরুন এই মুভি যদি আমেরিকায় বানানো হত আর প্রেক্ষাপট যদি হত মধ্যপ্রাচ্য তাহলে কি হত...:)

১১| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২৬

আমি তুমি আমরা বলেছেন: লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো :)

১২| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:২৯

নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: ‘যাদের বুদ্ধি বিবেক বস্তুতান্ত্রিক ইচ্ছা(ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি) কতৃক আচ্ছন্ন তারাই সাকার(প্রতিমা) ঈশ্বরের পূজা করে। আর তারা তাদের প্রকৃতি অনুযায়ী পূজার নিয়ম পদ্ধতি তৈরি করে।’(ভগবদগীতা, অধ্যায়ঃ৭, শ্লোকঃ২০)

এটাও কি মুভি থেকে সংগ্রহ করা?

১৩| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৬

রুমি৯৯ বলেছেন: লেখাটি ভালো লাগলো,গীতার শ্লোকটিও!কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে গীতা কিন্তু হিন্দুদের মূল ধর্মগ্রন্থ নয়,যেমন আমাদের আছে পবিত্র কুরআন ...

১৪| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২০

তামান্না তাবাসসুম বলেছেন: অসাধারন।

১৫| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪০

কলমের কালি শেষ বলেছেন: ভাল বলেছেন ।

১৬| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:১১

ওয়েলকামজুয়েল বলেছেন: এই ব্যাপারে শুধুমাত্র হিন্দুদের কথা বললে ভুল হবে। মুসলিম সমাজেও কিছু কিছু প্রথা প্রচলিত আছে তবে অন্য আঙ্গিকে যেমন কবর পুজা পীর পুজা। আমি ঢালাওভাবে কারো কথা বলছি না।
মন্তব্যের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।

১৭| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০৩

কম্পমান বলেছেন: ‘যাদের বুদ্ধি বিবেক বস্তুতান্ত্রিক ইচ্ছা(ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি) কতৃক আচ্ছন্ন তারাই সাকার(প্রতিমা) ঈশ্বরের পূজা করে। আর তারা তাদের প্রকৃতি অনুযায়ী পূজার নিয়ম পদ্ধতি তৈরি করে।’(ভগবদগীতা, অধ্যায়ঃ৭, শ্লোকঃ২০

+++++++++++++++++++++++++++++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.