নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।
কাজ করতে করতেই কালাশনিকভে ঝাঁঝরা হলেন বিখ্যাত ফরাসি ব্যঙ্গাত্মক পত্রিকা ‘শার্লি এব্দো'-র সাংবাদিকরা৷ কিন্তু কেন ‘শার্লি এব্দো' আবার সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য?
কী তাদের কাজ?
কেনই বা বার বার হামলার শিকার হচ্ছে তারা?
সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘শার্লি এব্দো'৷ তাই সপ্তাহের একটি দিন তাদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ৷ সেই বিশেষ দিন, বুধবারকেই ‘টার্গেট' করেছিল সন্ত্রাসীরা৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারীদের মুখ ঢাকা ছিল, হাতে কালাশনিকভ ছাড়াও ছিল রকেট লঞ্চার৷ আল্লাহ-র নাম নিয়ে চিৎকার করতে করতে তারা বলেছিল: ‘‘পয়গম্বরের হয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছি আমরা''৷
কী এমন ছাপিয়েছিল শার্লি এব্দো?
কোনো মুসলমান যদি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হন, তাহলে কেমন হবে দেশের পরিস্থিতি? – এটাই হলো বিতর্কিত ফরাসি লেখক মিশেল উলেবেক-এর সাম্প্রতিকতম উপন্যাসের কাহিনি৷ আর সেটা যে স্যাটায়ারে ভরপুর একটা গল্প – তা বলাই বাহুল্য৷ এখন এই উলেবেককেই তাদের সর্বাধুনিক সংস্করণের প্রচ্ছদ হিসেবে বেছে নিয়েছিল বাম ভাবধারায় বিশ্বাসী পত্রিকাটি৷ আর তাতেই যত সমস্যা!এটা অবশ্য প্রথম নয়৷ এর আগেও বহুবার হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন ছেপেছে শার্লি এব্দো এবং সে'জন্য একাধিকবার হুমকির মুখেও পড়েছে তারা৷ ২০০৬ সালে ডেনমার্কের ‘‘ইলান্ড্স পোস্টেন'' পত্রিকায় হজরত মোহাম্মদের যে সব ব্যঙ্গচিত্র বেরিয়েছিল, তা সে সময়েই ছাপিয়েছিল ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত ফরাসি এই ব্যঙ্গ-পত্রিকা৷বলা বাহুল্য, সেই ব্যঙ্গচিত্রগুলো গোটা বিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে ক্ষোভ ও উষ্মার সৃষ্টি করে৷ চলে বিক্ষোভ, বিভিন্ন মুসলিম অধ্যুষিত দেশে ডেনমার্ক ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশের দূতাবাসের ওপর হামলা৷ এমনকি ২০১১ সালে প্যারিসে শার্লি এব্দো-র দপ্তরেবোমাও ছোঁড়া হয়৷ তা সত্ত্বেও কিন্তু পত্রিকাটি হজরত মোহাম্মদ এবং ইসলামকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক রচনা ও ছবি ছাপানো বন্ধ করেনি: বিশেষ করে তাদের ‘‘শরিয়া'' সংস্করণটিতে সম্পাদকের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘‘প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ''৷
ইসলামবিরোধী না বাকস্বাধীনতার সপক্ষে?
মুসলমান, অমুসলমান অনেকের কাছেই এ ধরণের লেখা ইসলামবিরোধী মনে হতে পারে৷ অনেকে হয়ত ব্যঙ্গাত্মক লেখার রসাস্বাদনে পটু নন, সক্ষমও নন৷ তবে এ পত্রিকাটি কিন্তু বরাবরই ধর্ম, সাধু-সন্ত, ঈশ্বর-আল্লাহকে নিয়ে রসিকতা করে আসছে, দিচ্ছে উসকানি৷ কারণ এখানেই স্যাটায়ারের মজা, এটাই যে তাদের ঐতিহ্য৷ অবশ্য শুধু ইসলাম নিয়ে কটাক্ষ নয়, একাধিকবার পোপকে নিয়েও ঠাট্টা-মশকরা করেছে শার্লি এব্দো, ক্যাথলিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়েছে বিরোধে৷ কিন্তু প্রতিবারই মামলায় জিতেছে তারা৷ ক্যাথলিক খ্রিষ্টানরা পোপকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টায় রুষ্ট হতে পারেন, কিন্তু শেষমেষ সেটা তাঁরা মেনে নেন৷ মুক্ত, গণতান্ত্রিক সমাজ এবং সরকারও এর বিপক্ষে যেতে পারে না৷ কিন্তু এবার একটা অনুরূপ ‘অপরাধের' জন্যই প্রাণ হারালেন শার্লি এব্দো-র প্রধান সম্পাদক স্টেফান শাবনিয়ের এবং জর্জে ভলিনস্কি, বের্বা ভের্লাক ও জঁ কাবু'র মতো প্রতিভাধর কার্টুনিস্ট৷আর তাই শার্লি এব্দো-র পত্রিকা অফিসে হামলার ধিক্কার জানিয়েছে, জানাচ্ছে অগুন্তি মানুষ৷ ফরাসি হ্যাশট্যাগ ‘‘#জেসুইশার্লি', অর্থাৎ ‘আইঅ্যামশার্লি' ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে৷
je suis Charlie pour le droit à la satire , contre les lâches et en solidarité avec #CharlieHebdopic.twitter.com/TtzL52ZeDD— NicoladiaZ (@nicoladiaz)
জানুয়ারি 7, 2015ফ্রান্সের বেন পোয়েল লিখেছেন, ‘‘বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু আমাদের নিস্তব্ধ করা যায়নি৷
''La liberté tremble mais ne rompra pas! #JeSuisCharlie #CharlieHebdo— Benoit (@PoilBen)
জানুয়ারি 7, 2015ফ্রান্সের ‘শার্লি এব্দো' অনেকটা জার্মানির অন্যতম স্যাটায়ার পত্রিকা ‘টিটানিক'-এর মতো৷ তাই জার্মানিও দাঁড়িয়েছে তার পাশে৷ আইনজীবী এবং সাংবাদিক ডানিয়েল মার্টিনসন #এব্দো ব্যবহার করে লিখেছেন, ‘‘বাকস্বাধীনতা, স্যাটায়ার এবং মুক্ত সমাজের জন্য এ ছিল একটা কালো দিন৷''
©somewhere in net ltd.