নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য সদা সুন্দর চিরন্তন

অসত্যের কাছে নত নাহি হবে শির ভয়ে কাপে কাপুরুষ লড়ে যায় বীর। -নজরুল

ওয়েলকামজুয়েল

লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।

ওয়েলকামজুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিবিসি বাংলার সংবাদ : কিছু বিশ্লেষণ

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৫৩

বেশ কয়েকজন বন্ধুবর আমাকে বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত একটি খবরের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। একজন দুইজন না, বেশ কয়েকজন। বুঝাই যাচ্ছে, খবরটি বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। খবরটি হচ্ছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের এক বিজেপি নেতা বলেছেন ভারতের ক্ষমতাসীন দক্ষিণপন্থী দল বিজেপি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত প্রশাসনকে সমর্থন দিতে বকের মতো দাঁড়িয়ে আছে।

এটা অস্বীকার করা যায় না, রিপোর্টটির বক্তব্য বেশ স্পষ্ট, এবং বিবিসির মতো স্বনামখ্যাত প্রচারমাধ্যমে খবরটি আসায় এটি উড়িয়ে দেয়ার অবকাশ কম।

তবে যারা আমাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করেছেন, তাদের অনেককেই আমি ভালো করে বিবিসির ভারতীয় সাংবাদিক শুভজ্যোতি ঘোষের লেখা সেই রিপোর্ট আরো খুটিয়ে খুটিয়ে পড়ার পরামর্শ দিয়েছি। সেই রিপোর্টেই আছে তাদের যাবতীয় প্রশ্নের জবাব।

একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে, এই রিপোর্টে সিদ্ধান্তমূলক শব্দের চেয়ে 'ইঙ্গিত' বা 'আশঙ্কার' মতো দ্ব্যর্থবোধক শব্দের ব্যবহার বেশি। এছাড়াও আমার মনে হয়েছে, সিদ্ধার্থ নাথ সিং নামের ওই নেতা ভারত সরকারের চেয়ে বিজেপির মুখপাত্র হিসেবেই নিজেকে জাহির করেছেন।

আর একটি রিপোর্টেই অতীতের সবকিছু উল্টে যায়না। গত বছরে ভারতে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয়েই বিজেপির সমর্থন নিয়ে নির্লজ্জভাবে রশি টানাটানি করেছে।

বর্ধমান পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। ১৯০৫ সালে নবগঠিত পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানী ঢাকায় একটি ত্রিতল প্রাসাদ নির্মান করেন বর্ধমানের মহারাজা উদয় চাঁদ মাহতাব। তিনি ছিলেন নবগঠিত পূর্ববঙ্গ প্রদেশের গভর্নর জোসেফ বামফিল্ড ফুলারের নির্বাহী পরিষদের সদস্য। এই প্রাসাদটির নাম বর্ধমান হাউস, পাকিস্তান আমলে প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন ও এরপর থেকে অদ্যাবধি বাংলা একাডেমীর নামে যে ভবন স্বমহিমায় উজ্জ্বল।

যাহোক, এই বর্ধমানে গত বছর এক রহস্যজনক বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। বাংলাদেশের সরকার পশ্চিমবঙ্গীয় কতিপয় সহযোগীর সাথে ত্বারস্বরে চেঁচিয়ে বলে যে এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী। আরো মজার বিষয় হচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখলাম, ভারতীয়দের মধ্যে এই প্রচারণায় সবচেয়ে বেশি সরব যারা, তাদের প্রায় সবাই আরএসএস বা বিজেপির ভক্ত মুসলিম বিদ্বেষী হিন্দু জাতীয়তাবাদী।

কিন্তু ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র যেদিন বললেন, বর্ধমানে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় বাংলাদেশের কেউ জড়িত নেই, সেদিনই প্রথম ভারতের বর্তমান পররাষ্ট্রনীতিতে নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি, আওয়ামী লীগের বিদ্যমান প্রভাবের আলাদা ত্রিবিধ সত্বা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এরপর আরো অনেক নিদর্শনই দামোদর দাস-আত্মজ দেখিয়েছেন, তবে গত মাসের শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দিল্লী সফরের সময় অনেক কিছুই আরো স্পষ্টতা পায়।

যাহোক, আজ সরকার সমর্থিত বিডিনিউজ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জানায়, দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সৈয়দ আকবর উদ্দীন আবার বলেছেন, বাংলাদেশের ব্যাপারে নাকি ভারত নিরপেক্ষ থাকবে। এটাকেই আমি বর্তমানের সত্যিকারের অবস্থা বলে মনে করি। কংগ্রেস আমলে এই নিরপেক্ষতার অভাব ছিলো। কিন্তু বিএনপির সাথে সক্রিয় সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা ও তা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা এবং ভারতের পরিবর্তিত আচরণ প্রকাশ্য হবার পর ভারতের এই 'নিরপেক্ষ' নীতির ভিন্ন অর্থই প্রতিভাত হচ্ছে।

অধিকিন্তু পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি এখনও ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা। বামপন্থীদের পতনের পর পশ্চিমবঙ্গে যে রাজনৈতিক শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, তাতে ফায়দা লুটে নিজেদের পশ্চিমবঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থায় আসীন করতেই বিজেপি এখন ব্যস্ত। তবে হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল হিসেবে বিপুল সংখ্যক মুসলিম জনগোষ্ঠী অধ্যূষিত পশ্চিমবঙ্গে ঘাঁটি গাড়তে প্রয়োজন প্রদেশের লাগোয়া বাংলাদেশের মতো একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের বিরুদ্ধে উত্তেজনাকর বক্তব্য প্রদান করা, এবং প্রদেশের যেসকল নাগরিক তৃণমূল কংগ্রেসের মুসলিম তোষণ নীতিতে বীতশ্রদ্ধ, তাদের নিজের পক্ষপুটে আনা। বলা বাহুল্য পশ্চিমবঙ্গে তাবৎ বাংলাদেশী রাজনৈতিকের মধ্যে হাসিনা ওয়াজেদের জনপ্রিয়তা একচেটিয়া। আর হাসিনা সরকারের সাথে ইসলামপন্থীদের বিবাদের বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গে সুবিদিত। এটাই সিদ্ধার্থ নাথ সিং নামের পশ্চিমবঙ্গে বহিরাগত বিজেপি নেতার বক্তব্যের পেছনে অণুঘটক। একই কারণেই কয়েকমাসে আগে তথাগত রায় নামের আরেক প্রাদেশিক নেতা ঢাকায় এসে এদেশের হিন্দুদের আওয়ামী লীগের প্রতি সমর্থন অব্যহত জানানোর আহবান জানানোর মতো ধৃষ্টতা দেখিয়েছিলেন।

উপরিউক্ত ব্যাপারগুলো যদি মাথায় থাকে, তবে বিবিসির রিপোর্টে উল্লেখিত নেতাদের বক্তব্যকে তেমনই মনে হবে, যেমনটা মনে হতো, সীমান্তবর্তী মেহেরপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর তাজউদ্দীন খান বলেছেন, জামায়াত সর্বোতভাবে বিজেপির সাথে সহযোগিতা বজায় রাখতে ইচ্ছুক- এমন খবর বিবিসিতে প্রকাশিত হলে...!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:১২

সরদার হারুন বলেছেন: কি বলতে চান সোজা বলে ফেলুন ।

২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৩১

নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: এদেশে কোন রাজনৈতিক দল বিজেপির পা চাটতে চায়, তাতে কিছুই এসে যায়না। প্রক্রিতপক্ষে ক্ষমতার স্বাদ সেই পাবে, দাদাবাবুরা যাকে পা চাটার সুযোগ করে দেবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.