নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।
ভাষাভিত্তিক জনসংখ্যার নিরিখে বাঙ্গালীরা বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম। আমেরিকার অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রিচার্ড ইটন, যিনি বাংলায় ইসলামের প্রতিষ্ঠা নিয়ে চমৎকার ও বস্তুনিষ্ঠ গবেষণা করেছেন, তাঁর মতে বাঙ্গালীরা মুসলিমদের মধ্যে সর্ববৃহৎ ভাষাভিত্তিক নৃগোষ্ঠী। এমনকি ভাষাগোষ্ঠী হিসেবে সংখ্যায় আরবদের চেয়েও বাঙ্গালীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ।
অথচ আমাদের ওজনের তুলনায় আমরা বিশ্ব এবং মুসলিম জাহানে খেলো অবস্থায় আছি। বাংলা ভাষাতেই চলছে একধরণের নৈরাজ্য। সবচেয়ে বড় নৈরাজ্য প্রমিত বানানরীতির নামে। বাংলা ভাষার পণ্ডিতদের মধ্যকার এই লড়াইয়ে নাকাল হয়ে আমরা নাদান বাঙ্গালী এখন যে বানানরীতি ব্যবহার করি সেটা দুই বানানরীতির এক জগাখিচুড়ী ছাড়া আর কিছুই নয়। এমনকি 'বাংলা', 'বাঙ্গালী' শব্দগুলোর বানান নিয়েও পণ্ডিতেরা ফাসাদ বাঁধিয়ে বসে আছেন!
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা নামের প্রহসনের এমনই রমরমা অবস্থা যে, আমরা অনেকেই ঠিকমতো পাঁচ লাইন বাংলা লিখতে অপারগ। আবার আমাদের ইংরেজি জ্ঞানও এতোই অসাধারণ যে, এটা আমাদের প্রায়ই একটি ভাঁড় জাতিতে পরিণত করেছে।
আসলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ভাষাগোষ্ঠী হবার পরও বিশ্ব দরবারে তেমন কোন স্থান না পাওয়া নির্ভেজালভাবে সকল বঙ্গভাষীর অপদার্থতার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। সবচেয়ে বড় কথা ভাষা নিয়ে প্রায় সব মহলে আদিখ্যেতার কমতি দেখা না গেলেও এই আদিখ্যেতা আসলে ভণ্ডামি ছাড়া আর কিছুই নয়। এটা বারবার প্রমাণ হয়েছে যে, বাংলায় ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবোধের চেয়ে ধর্মভিত্তিক জাতীয়তাবোধ অনেক বেশি শক্তিশালী।
এর সবচেয়ে শক্তিশালী ও চিরস্থায়ী উদাহরণ ১৯৪৭ সালের বঙ্গভঙ্গ। ১৯০৫ সালেও বাংলা প্রদেশ বিভক্ত করা হয়েছিলো। সেসময় যারা এর তীব্র বিরোধিতায় লিপ্ত হয়ে সশস্ত্র আন্দোলনে নেমেছিল, তাদেরকেই ১৯৪৭ সালে এসে বঙ্গভঙ্গের পক্ষের কুশীলব হিসেবে দেখা যায়। অনুরূপভাবে, যারা ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের পক্ষে মরিয়া হয়ে পক্ষাবলম্বন করেছিলো, ১৯৪৭ সালে তারা বঙ্গভঙ্গের পক্ষে ছিলোনা। এই দুইয়ের পেছনেই জড়িত ছিল বাঙ্গালীদের মধ্যে ভাষাভিত্তিক একাত্মতার চেয়ে অধিক ক্রিয়াশীল ধর্মীয় একাত্মতা।
যাহোক, এবার নিজের কথা বলি। বাংলায় আমার দখল গতানুগতিকই। প্রমিত বাংলায় আমার দখল বেশি নেই। কিন্তু তারপরও গত প্রায় চার বছর যাবত অনলাইনে বাংলা ভাষায় মনের ভাব প্রকাশ করতে করতে এই পর্যায়ে এসে আমি অনুধাবন করছি, ভাষার উপর পূর্ণ দখল না এলেও আনুষ্ঠানিক বা প্রমিত বাংলায় ভাব প্রকাশে আমি অনেকটাই সক্ষমতা অর্জন করেছি। এর জন্য আমি পূর্ণ কৃতিত্ব দেই বাংলা টাইপের সফটওয়ার অভ্রকে। আমার বিশ্বাস, কেবল আমার ক্ষেত্রেই নয়, অনলাইনে বিচরণ করা বেশিরভাগ বাঙ্গালীর কাছে বাংলাকে নতুন করে কাছে আনার জন্য একটি নীরব বিপ্লব সাধিত হয়েছে অভ্রের মাধ্যমে। আমার বিশ্বাস, ইতিহাসের পাতায় একদিন বিপ্লব হিসেবে অভ্র বিপ্লব ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পরই অবস্থান করবে।
কিন্তু সেই অভ্রের প্রতিষ্ঠাতা মেহদী হাসান খান ও তাঁর দল কোন স্বীকৃতিই পায়নি। অত্যন্ত জটিল ও সাধারণভাবে দুর্বোধ্য ধরণের এক বাংলা কীবোর্ডের উদ্ভাবকের শত্রুতার জন্যই নাকি অভ্রকে তার প্রাপ্য রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এখনও দেয়া হয়নি। প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর আগে শর্শিনার পীর অথবা আগামীকাল এ টি এম শামসুজ্জামানকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় মর্যাদাসম্পন্ন রাষ্ট্রীয় পুরস্কার একুশে পদক দেয়া ঠিক না বেঠিক, সেটা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করার পাশাপাশি অভ্র টিমের ব্যাপারেও কি আমাদের সচেতন হওয়া উচিত নয়?
২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:০৮
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: অনেকটা একমত| তবে এটিএম শামসুজ্জামান একজন শক্তিশালী ও প্রকৃত অভিনেতা|তাঁকে একুশে পদক দেয়ায় কোন ভুল নেই| আমরা বাংলাকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে পারিনি তার অন্যতম একটা কারণ গুনীদের সঠিক মূল্যায়ন করতে না পারা| মেহেদী হাসান খানের অবশ্যই রাষ্ট্রীয় পদক পাওয়া উচিৎ|কিন্তু এটিএম শামসুজ্জামানকেও পাশ কাটানোর উপায় নেই
৩| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:৫৪
ওয়েলকামজুয়েল বলেছেন: অভিনেতা/অভিনেত্রীদের জন্য রাষ্ট্রীয় পদকের অভাব নেই। তাই বলে একুশে পদক ? ঠিক না।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৩৫
রামগড়ু বলেছেন: দাদা ঠিক বলেছেন ৷ আরে অভ্র না থাকলে তো আমি এই কমেন্টটুকুও করতে পারতুম না৷ এ যে কী যন্ত্রনার সে আৱ বলে বোঝানো যাবে না৷