নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য সদা সুন্দর চিরন্তন

অসত্যের কাছে নত নাহি হবে শির ভয়ে কাপে কাপুরুষ লড়ে যায় বীর। -নজরুল

ওয়েলকামজুয়েল

লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।

ওয়েলকামজুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মমতার ঢাকা সফর : কিছু কথা কিছু দাবি

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:০৩

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চলমান ঢাকা সফরের কিছু বিষয়ে আমার দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। বলা বাহুল্য, আমি কতিপয় জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিবর্গের মতো কখনোই আশা করছি না যে, মমতার এই সফরে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি অথবা ভারতের সাথে বাংলাদেশের অচিহ্নিত সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরে কোনোরূপ অগ্রগতি হবে। আমি আগেও বলেছি, এখনও স্পষ্ট করে বলি, এসব চুক্তি নিকট ভবিষ্যতে আদৌ হবেনা।

তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর এই সফরে কিছু বিষয় আমার কাছে আগের তুলনায় ব্যতিক্রম মনে হয়েছে। আমার প্রায় স্পষ্ট মনে আছে ১৯৯৬ সালে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরের পর সেবছরের শীতে ঢাকায় সফর করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। স্বাভাবিক প্রটোকল ও ওয়ারেন্ট অভ প্রিসিডেন্স অনুযায়ী প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে অনেক নিচের সোপানে অবস্থান করেন। এমনকি আজই শহীদ মিনারে দেখা গেলো প্রটোকলের কারণেই ব্রিটেনের হাউস অভ লর্ডসের স্পীকারেরও পরে মমতা পুস্পস্তবক অর্পণ করলেন।

কিন্তু সেবার সকল প্রটোকলকে অগ্রাহ্য করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ওয়াজেদ আনুষ্ঠানিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, বিমানবন্দরে তিনি নিজে গিয়ে জ্যোতি বসুকে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন। একটি রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী হয়ে অন্য একটি রাষ্ট্রের একজন প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে গিয়ে অভ্যর্থনা জানানোর এই ঘটনা নিয়ে আজো বিরোধীরা সরব থাকে।

কিন্তু এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেলায় সেই বাড়াবাড়ি রকমের উষ্ণতা দেখা যায়নি। প্রচারমাধ্যমে বাস করা কিছু 'ভারতায়িত' লোক ছাড়া সরকারের তরফে খুব একটা আদিখ্যেতা দেখা যায়নি। প্রটোকল মেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী মমতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, বিমানবন্দরে পশ্চিমবঙ্গের নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কবিতা আবৃতি করে, গানের কলি খেলে বিশেষ সুবিধা করতে পারছেন না, প্রায়ই তাকে তিস্তার ব্যাপারে প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে।বস্তুত, আওয়ামী লীগের বর্তমান বিপর্যয়ের পেছনে ছোটখাটো দায় কিন্তু মমতারও রয়েছে। প্রথমেই তিনি ২০১১ সালে চুক্তি স্বাক্ষরে বাগড়া দিয়ে তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরকে একেবারে মাঠে মেরে দিলেন। এরপর ওনার বিরুদ্ধে জোরেশোরে উচ্চারিত হতে থাকে বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সাথে কথিত আঁতাতের ব্যাপারে। সেবার যদি তিনি মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশে সফরের সাফল্য পণ্ড করে না দিতেন, তাহলে এমনকি আজো আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে কিছুটা হলেও শক্ত ভিত্তি পেতো এই বলে যে, আর যাই হোক তারা ভারত থেকে কিছু আদায় করতে জানে!

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সফর একটি সৌজন্যমূলক সফরের চেয়ে বেশি কিছু হবেনা। আফসোস, তিনি আওয়ামী বিরোধীদের অভিনন্দনও পাবেন না! যদিও সেই ২০১১ সাল থেকে আমি বলে আসছি, বিরোধীদের উচিত মমতার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। একা মমতার জন্য বাংলাদেশকে ঘিরে দিল্লীর অনেক অনৈতিক পরিকল্পনা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়েছে, যা সময় গড়াতে গড়াতে স্পষ্টতা পাবে!

তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালে কেন বেঁকে বসেছিলেন সেই রহস্যের ব্যাপারে একটা সম্ভাবনার আলো গত সন্ধ্যায় টকশোতে দেখেছি। টকশো পাড়ায় আমেরিকার মুখপাত্র বলে কথিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক শাহিদুজ্জামান অন্তত দুটি টকশোতে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। প্রত্যেকটিতেই তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর অত্যন্ত ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি এমনও মত দিয়েছেন, কংগ্রেসের পতনের পর ভারতে বিজেপি বিরোধী শিবিরের প্রধান মুখ হতে পারেন মমতাই, এবং সামনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবার মতো প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও সম্ভাবনা নাকি মমতার রয়েছে।

এসব দেখে আমার মনে হলো, ভারতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধীরা, বিশেষত বামপন্থীরা প্রায়শই মমতাকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর এজেন্ট বলে গালমন্দ করে থাকেন। হয়তো এমনও হতে পারে, বাংলাদেশকে ঘিরে বৈশ্বিক পরাশক্তিগুলোর আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক স্বার্থের জন্যই হয়তো কারো ইশারায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিস্তা ও সীমান্ত চুক্তি বানচাল করে দিয়েছিলেন! এর কারণ ছিল এসব চুক্তির দ্বারা রাজনৈতিকভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে ভারত যেন বাংলাদেশের উপর নিরঙ্কুশ আধিপত্য কায়েম না করতে পারে...!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.