নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।
জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের ছবিখানা দেখে আঁতকে ওঠেনি এমন বঙ্গসন্তান কমই আছে! আমার নিজের এন আইডির ছবিখানা দেখলে মনে হয় পানিতে ডুবে মৃত কোন কৃষ্ণাঙ্গের পচে গলে ফুলেফেঁপে ওঠা লাশের মুখ!
ব্যাংকে এসে এন আইডির আরো কিছু নেতিবাচক বিষয় নজরে পড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরমান অনুযায়ী, ব্যাংক হিসাব চালু করতে হিসাবধারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি প্রদান বাধ্যতামূলক। শুধু তাই নয়, আইডি কার্ডে হিসাবধারীর নামের যে বানান, সেই বানানেই একাউন্টের নামও হতে হয়। গ্রামের স্বল্প শিক্ষিত অথবা অক্ষরজ্ঞানহীন মানুষদের নামগুলোতে বানানের অবস্থা ভয়াবহ। ইংরেজি বানান তো বটেই, বাংলা বানানগুলোর অবস্থাও তথৈবচ। এজন্যই বাধ্য হয়েই জনৈক মোজাম্মেল হকের একাউন্ট খুলতে হয় মোগাম্মাল হোক নামে, কারণ আইডি কার্ডে বানান লেখা Mogammal Hok!
অন্যদিকে, যারা পাসপোর্ট দেখিয়ে একাউন্ট খোলেন, তাদের প্রায় সবারই নামের বানান যথেষ্ট ভদ্রস্থ ও চলনসই। এতে বুঝা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পে ডাটা এন্ট্রির কাজে এমন ব্যক্তিদের নিয়োগ করা হয় যাদের মুরোদ বড়জোর কম্পিউটারের কীবোর্ডে এবিসিডির বাটনগুলোতে গুতাগুতি করা পর্যন্তই সীমিত।
এটা তো গেলো এনআইডির একরকমের দুর্বলতা। আরেকটা বাজে ব্যাপার হচ্ছে, কার্ডে বিবাহিত নারীদের পিতার নামের অনুপস্থিতি। এজন্য সবসময় জেনানাদের একাউন্টের ফর্ম পূরণ করতে গেলে বাড়তি সতর্কতা আরোপ করে পিতার নামটা জেনে নিতে হয়। আমার মতে, এন আইডির সবচেয়ে বড় কৌশলগত ভুল এটা।
শুনলাম নির্বাচন কমিশন আজ থেকে আইডি কার্ডে ভুল সংশোধন করার কাজ আরম্ভ করতে যাচ্ছে। এই কাজ কতোটা সফল হবে, তা নিয়ে আমার পুরাপুরি সন্দেহ আছে। গ্রামে তো বটেই, শহরেও এমন অনেকেই আছে, যারা নিজের নামের বানানের ভুল ধরে তা সংশোধন করতে সমর্থ নন। ফলে বেশ কিছু টাকার শ্রাদ্ধ হবার চেয়ে বেশি কিছু এর দ্বারা অর্জিত হবেনা।
আমার মনে হয়, নির্বাচন কমিশনের উচিত হবে ভোটার তালিকা প্রণয়নের মতো প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে এন আইডির ভুল সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া। পাশাপাশি ডাটা এন্ট্রির কাজে শিক্ষিত লোকদের নিয়োগ করা, এবং মাঠ পর্যায়ে পাঠানোর আগে নামের ইংরেজি ও বাংলা বানানের শুদ্ধরূপ সম্পর্কে একটি বিস্তারিত ও কার্যকর প্রশিক্ষণ বা কর্মশালার আয়োজন করতে হবে। বিবাহিত নারীদের ক্ষেত্রে স্বামীর নামের পাশাপাশি পিতার নাম যুক্ত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। সর্বোপরি, বিদ্যমান ছবিগুলোকে পাল্টে ভদ্রস্থ ছবি যুক্ত করার ব্যবস্থা নিতে হবে।
আমি বিশ্বাস করি, ব্যবহারিক জীবনে মানুষের নাম হচ্ছে তার প্রথম ও সবচেয়ে শক্তিশালী পরিচিতি, নিজেকে অন্যের সামনে উপস্থাপনের প্রথম জরিয়া। আর এই পরিচিতি ও জরিয়া প্রথমেই হোঁচট খায়, যদি তার নামের বানানে ভুল হয়। আর 'নামের বানানে ভুল নেই' এটা নেহায়েতই বাঙ্গালীর আবিস্কার করা একটি সুবিধাবাদী তত্ত্ব। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে, একজন মানুষ নিজস্ব কোন বানানরীতিতে তার নাম লেখতেই পারে। কিন্তু সংঘবদ্ধ সরকারী প্রয়াসে মিঞাকে মেয়া, পেয়ারাকে ফেয়ারা, আহমদ/ আহমাদ বা আহমেদকে আহম্মেদ, শরফুদ্দীনকে সর্প উদ্দিন, সকিনাকে চকিনা করার কোন মানে হয়না...!
২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:০১
আশালিনা আকীফাহ্ বলেছেন: হুম, অনেক ভালো একটি পোষ্ট। জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে বেশিরভাগ মানুষকেই অভিযোগ করতে শুনি। এতে ছবি এতটাই বিকৃত হয়েছে নিজেই নিজেকে চিনতে পারিনা। আর এখন অনেক জালিয়াতিও হচ্ছে তা হলো একজন মানুষের অনেকগুলো জাতীয় পরিচয় পত্র। এটা রোধ করা উচিত।
৩| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:১০
অভয়ারন্য বলেছেন: আমি নিজে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পের প্রথম থেকে শেষ অব্দি কাজ করেছি। ডাটা এন্ট্রি থেকে শুরু করে সার্ভার ম্যানেজমেন্ট পর্যন্ত সব পর্যায়ে কাজ করেছি। আপনা পয়েন্টগুলোর ব্যাপারে পর্যায়ক্রমে বলছি......
## ২ মেগাপিক্সেল ওয়েবক্যাম এবং ২৫/৩০ ওয়াট এর এনার্জি বাল্ব এর সাহায্যে মানুষের ছবি তোলার অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর না। যেখানে প্রফেসনাল ফটোগ্রাফার ছাড়া উজ্জল আলো এবং ভাল ক্যামেরা দ্বারাও সঠিকভাবে ছবি তোলা কষ্টকর।
## নামের বানান এ ক্ষেত্রে বলা যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নয় তথ্য সংগ্রহকারীরা ভূল গুলো করে থাকেন। কারন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরেরা কাগজ দেখে নাম সহ অন্যান্য ডাটা এন্ট্রি করে থাকেন। ডাটা এন্ট্রি অপারেটরেরা যদি বানান পরিবর্তন করে থাকে তাহলে ভোটারের অন্যান্য কাগজের সাথে অমিল দেখা দিবে। ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের তথ্য সংগ্রহ করা ফর্মে যেভাবে লেখা থাকে সেভাবে এন্ট্রি করার নির্দেশ দেয়া থাকে। এ ক্ষেত্রে তথ্য সংগ্রহকারীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন এবং নির্দেশনা দেয়া উচিত।
## সকল এনআইডি একই ফরম্যাট হওয়ার কারনে বিবাহিত মেয়েদের ক্ষেত্রে বাবার নাম এ স্থলে স্বামীর নাম চলে আসে। নাহলে অবিবাহিত মেয়েদের ক্ষেত্রে স্বামীর নাম খালি থাকবে।
সর্বশেষ বলতে চাই যারা ডাটা এন্ট্রির কাজ করেছেন তাদের সবার কম্পিউটার দক্ষতা শুধোমাত্র এ বি সি ডি গুতোগুতিতে সীমাবদ্ধ নয়। তাদের তথ্য ফর্মের ব্যাতিরেক তথ্য পরিবর্তন করার সুযোগ দেয়া হয় নাই (অবশ্যই নির্দিষ্ট কারনে)। আপনার তথ্য আপনি সঠিক ভাবে দিয়ে থাকলে কার্ডটি সঠিক হবে ( দু-একটা ব্যাতিক্রম বাদ দিয়ে)। মিয়া এর ক্ষেত্রে অনেক এম ই এ পেয়েছি যারা কমপক্ষে এস এস সি পাশ করা ছিল। তাদের তাদের নামের বানান ঠিক করে এম আই এ করা সম্ভক ছিল না। যাদের এস এস সি সার্টিফিকেট নেই তাদের নামের বানান পরিবর্তন করা হয় নাই কারন তাদের অন্য কাগজে যেমন প্রশিক্ষন সার্টিফিকেট / পরিচয়পত্র / পাসপোর্ট / দলিল/ সন্তানের সার্টিফিকেট এ নামের বানান হয়তবা এম ই এ দেয়া আছে। আপনার উদাহরন স্বরুপ দেয়া সকল নাম এবং অন্য যেকোন নামের বানানের ক্ষেত্রে বানান এর দায়ভার শুধুমাত্র ভোটারের। কারন নামের বানান ফর্ম এ যেমন আছে তেমন হবে। তাছাড়াও কার্ড প্রিন্ট করার আগে সংশোধনের জন্য ভোটারের কাছে ভোটার লিষ্ট প্রেরন করা হয়।
আমার কমেন্ট এ বানানসহ অন্যান্য ভূলের জন্য অগ্রিম দু:ক্ষিত। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:০৮
আজীব ০০৭ বলেছেন: +++
ভালো বলেছেন..।