নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।
নাইজেরিয়া দেশটার সাথে বাংলাদেশের বেশ কিছু মিল আছে। উভয় দেশই উন্নয়নশীল আট যবন দেশের জোট ডি এইটের সদস্য। প্রভাবশালী মার্কিন লগ্নিকারক গোল্ডম্যান স্যাকসের বর্ণিত নেক্সট ইলেভেন ইকোনমিতেও দুই দেশ আছে। তবে দুর্ভোগের দিক থেকে নাইজেরিয়ার অবস্থা আমাদের চেয়ে কিছুটা খারাপই।
পুরো শীতল যুদ্ধব্যাপী পৃথিবীর অন্যতম জনবহুল ও তেলসমৃদ্ধ দেশটি দুই অক্ষের ঝগড়ার ক্ষেত্র হিসেব পিষেছে। দেশটির ৫০% জনগণ মুসলিম, ঈসায়ী ৪৮%। ধর্মীয় অবস্থিতির এমন মিশ্র রূপটিও কিন্তু নাইজেরিয়াকে ভুগিয়েছে অনেক। দেশটিতে খ্রীষ্টান মিশনারীদের ধর্মান্তরকরণ তৎপরতা নিয়ে আছে বিস্তর অভিযোগ। শোনা যায়, নাইজেরিয়ায় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। ওলুসেগান ওবাসানজো বা গুডলাক জোনাথনের মতো প্রেসিডেন্টদের আমলে ধর্মান্তরকরণের হার বেড়ে যাবার অভিযোগও আছে। আলোচিত সশস্ত্র সংগঠন বোকো হারামের জন্মও কিন্তু খ্রীষ্টান মিশনারীদের রুখতেই।
দেশটিতে কাল প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থী দুজন। খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বী বর্তমান প্রেসিডেন্ট গুডলাক জোনাথন, আর মুসলিম ধর্মাবলম্বী মোহাম্মাদু বুহারি। সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি সুবিধার না হলেও উভয় প্রার্থীই নির্বাচনী ফল মেনে নেয়ার ওয়াদা করেছেন।
গুডলাক জোনাথন পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট উমারু মুসা ইয়ারাদুয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০১১ সালে রহস্যজনকভাবে প্রেসিডেন্ট মুসা মারা যান। অভিযোগ ওঠে তাঁকে বিষপ্রয়োগে খুন করা হয়েছে। ফেবুতে আমার এক নাইজেরীয় বন্ধুর মতে কাজটা খ্রীষ্টানদের, যেন গুডলাক জোনাথনের ক্ষমতায় আরোহণের পথ মসৃণ হয়।
সম্ভবত মুসলিমদের এহেন মনোভাবকেই কাজে লাগাতে চান অপর প্রার্থী মোহাম্মাদু বুহারি। সাবেক এই মেজর জেনারেল ১৯৮৩ সালে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট সেহো সেগারিকে ক্ষমতাচ্যূত করে ক্ষমতায় আসেন। তাঁর রাজনৈতিক দর্শন বুহারিজম বা বুহারিবাদ হচ্ছে কট্টর জাতীয়তাবাদ, যাতে ইসলামের ব্যবহার আছে। ১৯৮৫ সালে তিনি জেনারেল ইবরাহীম বাবাঙ্গিদার নেতৃত্বাধীন একটি অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যূত হন।
১৯৯৯ সাল থেকে নিরবিচ্ছিন্ন গণতন্ত্রে চালিত নাইজেরিয়ায় হয়তো সহসাই সামরিক শাসন আসবে না। মুসলিমরা সারা বিশ্বেই পরীক্ষার সম্মুখীন। তবে নাইজেরিয়ায় পরিস্থিতি নীরব ঘাতকের মতোই। তেলসমৃদ্ধ এই দেশটি আজো বিজাতীয় ষড়যন্ত্র থেকে মুক্ত নয়। গুডলাক জোনাথন জিতলে বোকো হারাম দমনের ছুতায় নাইজেরিয়ায় পশ্চিমের উপস্থিতি দেখা যাবে। আবার মোহাম্মাদু বুহারু জয়লাভ করলে সেই পুরানো সংখ্যালঘু নিবর্তনের ছুতায় নাইজেরিয়াকে অস্থির করা হবে। আর এই পরিস্থিতি তাদের জন্যই সুবিধাজনক, যারা নাইজেরিয়ার তেল লুট করে আসছে...!
©somewhere in net ltd.