নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।
খুব সম্ভবত ইয়েমেনে সৌদি আরবের আক্রমণ বৈশ্বিক পর্যায়ে মুসলিমদের মধ্যে নতুন পর্যায়ের এক যুদ্ধের জন্ম দিলো! গত বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কতৃক জারী করা এক বিবৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশও যেন এই নতুন মেরুকরণে শামিল হলো। সাধারণত মুসলিম বিশ্বে কোথাও দুই মুসলিম দেশের মধ্যে সংঘাত বাঁধলে বাংলাদেশ মধ্যপন্থা অবলম্বন করে যে সংলাপের বাণী আওড়ায়, তার সুস্পষ্ট ব্যত্যয় দেখলাম এই বিবৃতিতে। হুদি বিদ্রোহীদের খারিজ করা, আবদুর রব মনসুর হাদির প্রশাসনকে ইয়েমেনের বৈধ কতৃপক্ষ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া এবং ইয়েমেনে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন হাওয়াই হামলাকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ যেন মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধে নতুন করে একটি পক্ষ নিলো!
এই খবরের রেষ কাটতে না কাটতেই সৌদি গেজেটে প্রকাশিত এক খবরে দেখলাম পত্রিকাটি পাকিস্তানের জনৈক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলছে, পাকিস্তান ইয়েমেনের যুদ্ধে শরীক হতে সৌদি আরবে সৈন্য পাঠাতে যাচ্ছে। অথচ বাংলাদেশ বলুন, আর পাকিস্তানই বলুন, এক সৌদি আরব বা সাদ্দাম হোসেনের ইরাক বাদে বাকি মুসলিম দেশগুলোর সাথে মোটা দাগে ইরানের সুসম্পর্কই বিরাজমান ছিলো।
যাহোক, এখন এটা হলফ করেই বলা যায়, ইরান-পাকিস্তান সীমান্তে উভয় রাষ্ট্রের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে বিগত কয়েক মাস ধরে চলে আসা খণ্ডযুদ্ধ, পরমাণু কর্মসূচী নিয়ে ইরানের সাথে পশ্চিমের দৃশ্যমান সমঝোতা, সিরিয়া ও ইরাকের যুদ্ধক্ষেত্রের ঘটনাবলী, এবং সর্বশেষ সৌদি আরবের নেতৃত্বে কতিপয় আরব দেশ কতৃক হুদি শিয়াদের দমনে ইয়েমেনে আক্রমণ সম্ভবত একই সূত্রে গাঁথা। এসবই মুসলিমদের মধ্যে নতুন করে একটি প্রলম্বিত যুদ্ধ শুরু করার পাঁয়তারা, যার জন্যই শিখণ্ডী আরবরা এতদিন একে অপরের উদ্দেশ্যে রক্তচক্ষু ব্যাদান করে এলে এখন ঐক্যবদ্ধ সামরিক জোট করার সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে।
বলা বাহুল্য, এহেন সামরিক জোট গোটা মুসলিম উম্মাহ তো বটেই, নিদেনপক্ষে আরব জাহানের প্রতিরক্ষার জন্যও নয়, বরং মুসলিম জাহানে এখনও সলতের শেষ আগুনের মতো টিমটিম করে জাজ্বল্যমান ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধের শেষ চিহ্নটুকু গুঁড়িয়ে দেয়ার চেষ্টার একটা সচেতন বা অচেতন বহিঃপ্রকাশ। এমনকি ঘটনা পরম্পরায় আমার এও সন্দেহ হচ্ছে শিয়া ইরানের সাথে সুন্নি আরবের এ সংঘাত সুদূর প্রোথিত কোন বিষয় নয়, বরং যথেষ্ট মেকী। উভয়ের দৃশ্যমান শত্রুতা হয় নির্জলা ছদ্মবেশ, আর নয়তো উভয় পক্ষের নির্বুদ্ধিতার চরম ও পরম পরাকাষ্ঠা।
জানেন কি, এই লেখাটির সাজাতে যখন মনেমনে মুসাবিদা করছিলাম, তখনই একটি খবরে চোখ আটকে গেলো। সেই খবরটি আমার শেষোক্ত কথাগুলোকে সমর্থন করে। খবরটি দিয়েছে পাকিস্তানী দৈনিক দ্য নেশন। ইয়েমেনের এক রাজনীতিবিদের (সম্ভবত শিয়া) টুইটার পোস্টকে উপজীব্য করে পত্রিকাটি বলছে, ইয়েমেনে বিমান হামলায় সৌদি বিমানবাহিনীর সাথে নাকি ইসরাইলের জঙ্গিবিমানও যোগ দিয়েছে!
খবরটার বস্তুনিষ্ঠতা প্রাথমিকভাবে উড়িয়ে দেয়া যায়, তবে আমার মনে পড়লো, অতীতেও প্রমাণ পাওয়া গেছে, ইরাকের বোমা হামলায়, অথবা ইরানের উপর নজরদারি চালাতে ইসরাইলী বিমান সৌদি আরবের আকাশসীমা ব্যবহার করেছে। এমনকি এও শোনা গেছে পশ্চিমাঞ্চলের দাম্মাম ও দাহরান বিমানঘাঁটিও ইসরাইলকে ব্যবহার করতে দিয়েছে ইবনে সউদ রাজবংশ...!
©somewhere in net ltd.