নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।
১৯৯৭ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রাম অঞ্চলে বেশ বড় মাপের একটা ভূমিকম্প হয়েছিলো। সে ভূমিকম্পে চট্টগ্রাম শহরে দালান দেবে গিয়ে দুইচারটা প্রাণ নিধন হয়েছিলো।
এরপর থেকেই মিডিয়া, বিশেষত প্রথম আলো যেন ভূমিকম্প নিয়ে মানুষের মধ্যে দুর্বার আতংক ছড়ানোর মিশনে অবতীর্ণ হয়। বলা হতে থাকে ১৮৯৭ সালে সংঘটিত আসাম ভূমিকম্পের শত বছর পর আরেকটি বড় ভূমিকম্প আসন্ন। কারণ এই অঞ্চলে নাকি প্রতি একশো বছর পর একটা প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প আঘাত হানে।
১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পটা ছিলো মারাত্মক। রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার সেই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিলে মেঘালয়ের খাশিয়া পাহাড়ে। তখন এদেশে পাকা ভবন ছিলো হাতে গোনা। অাজকের মেগাসিটি ঢাকা তখন ছিলো নেহায়েত একটা 'abandoned Mughal ghost town'। তারপরও ঢাকা শহর সেই ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিলো। বেশ কিছু লোক মারা গেছিলো, আহসান মঞ্জিল প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছিলো। এখানে পোস্ট করা ছবিটা ভূমিকম্পের পরপর আহসান মঞ্জিলের বিধ্বস্ত অবস্হার।
১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে আরো যে মারাত্মক ঘটনা ঘটেছিলো, তা হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদের দফারফা হওয়া। ভূমিকম্পের কারণে ব্রহ্মপুত্রের মূল প্রবাহ, যা আজ ময়মনসিংহ শহরের পাশ দিয়ে ধুঁকে ধুঁকে প্রবাহিত হচ্ছে, সেটি শীর্ণ হয়ে যায়। বর্তমানের প্রমত্তা যমুনা নদী তখন ছিলো শীর্ণকায়। সে শীর্ণকায় নদীতেই ব্রহ্মপুত্রের মূল প্রবাহ বইতে শুরু করে।
যাহোক, বলা হতে থাকে যেকোন সময় তেমনই একটি প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের অাঘাত হানা কার্যত সময়ের ব্যাপার। মাণিকগঞ্জে নাকি একটা ভূগর্ভস্হ চ্যূতি আছে, যাতে মাঝারি মাত্রার কোন ভূমিকম্প হলেই ঢাকা ধ্বংস হয়ে যাবে।
আল্লাহর অশেষ রহমতে বিগত ১৭ বছরে সেরকম কোন ভূমিকম্প আঘাত হানেনি। আজো যেন ঠিক কানের পাশ দিয়ে মস্ত ফাঁড়াটা গেছে। তবে কয়েকজন মারা গেছে, এবং দেশজুড়ে অনেক দালানের হেলে পড়া আর ফাটল ধরার খবর পাওয়া গেছে।
আমার মনে হয় না, কোন পূর্বপ্রস্তুতি নিয়েও পূর্ণরূপে ভূমিকম্পের মতো ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব। বাংলাদেশের আশেপাশেই বেশ কয়েকটি সক্রিয় ভূগর্ভস্থ চ্যূতি আছে। মাণিকগঞ্জ, বৃহত্তর সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামে রয়েছে বেশ কয়েকটি সুপ্ত চ্যূতি।
আমার মনে হয় নেপালে বাংলাদেশের পূর্ণরূপে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যে শামিল হওয়া উচিত। তাতে আর যাই হোক, তাতে ভূমিকম্পজনিত দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের উদ্ধারকর্মীদের অভ্যাসে খানিক ঝালাই হবে। এছাড়া আমাদের কীইবা করার আছে?
©somewhere in net ltd.