নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।
অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করলে বলা যায়, পারস্য উপসাগরের তীরবর্তী তেলসমৃদ্ধ ছয় আরব রাজতন্ত্রের জোট গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিল বা জিসিসি। তবে রাজনৈতিক বা আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক কৌশলগত দৃষ্টিকোণে বিচার করলে জিসিসি আসলে শেষ মুসলিম পরাশক্তি উসমানী সালতানাতের ধ্বংসস্তূপের উপর ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা আরব রাজতন্ত্রসমূহের জোট, যার মূল উদ্দেশ্য যেকোন মূল্যে মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতাবস্থা টিকিয়ে রাখতে ভূমিকা পালন করা।
জিসিসি বেশ সক্রিয় রাজনৈতিক চরিত্রের অধিকারী। ২০১১ সালে সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ কতৃক প্রস্তাবিত সাধারণতন্ত্র বা কনফেডারেশনে বাকি পাঁচ জিসিসি সদস্য সায় না দিলেও খনিজ সমৃদ্ধ এই অঞ্চলে অদূর ভবিষ্যতে 'খালিজি' নামে একটি অভিন্ন মুদ্র চালু বা পেনিনসুলা শিল্ড ফোর্সের মতো প্রসঙ্গে জিসিসির সদস্যরা একমত। সম্প্রতি অবশ্য জিসিসির চেয়েও বিস্তারিত পরিসরে এশিয়া ও আফ্রিকার আরব দেশগুলো একজোট হয়ে একটি সামরিক জোট গঠনে একমত হয়েছে।
জিসিসির মূল লক্ষ্য যে আরব রাজতন্ত্রগুলোকে টিকিয়ে রাখা, তার একটা বড় উদাহরণ উপসাগর তীরবর্তী দেশ হয়ে প্রজাতান্ত্রিক ইরাকের এই জোটে না থাকা, এবং উপসাগর থেকে বহু দূরে অবস্থিত হয়েও দুই আরব রাজতন্ত্র জর্দান ও মরক্কোকে এই জোটে শামিল করার উদ্যোগ নেয়া।
যাহোক, জিসিসিভুক্ত ছয় রাজতন্ত্র তথা সৌদি আরব, বাহরাইন, কাতার, আরব আমিরাত এবং ওমানের বাদশাহ, সুলতান এবং আমীরদের নিয়ে আগামীকাল ক্যাম্প ডেভিডে এক শীর্ষ বৈঠক আহবান করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। কিন্তু ছয়টির মধ্যে চারটির শাসকই নানা অজুহাতে এই সম্মেলন এড়িয়েছেন। সৌদি বাদশাহ সালমান প্রথমে ক্যাম্প ডেভিডে যাবার ঘোষণা দিয়েও তাকে বাতিল করে এখন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফ ও উপযুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে সেখানে পাঠিয়েছেন। কেবল কুয়েতের আমীর শেখ সাবাহ বিন আহমদ আল সাবাহ ও কাতারের আমীর শেখ তামিম বিন খলিফা আল থানি ক্যাম্প ডেভিডে আহুত সম্মেলনে যাচ্ছেন।
এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ইরানের সাথে মার্কিন পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে 'উদ্বিগ্ন' আরবদের বুঝিয়েসুঝিয়ে ঠাণ্ডা করা। কিন্তু বিভিন্ন কারণে আমার মনে হয়, এই সম্মেলনের দ্বারা আরবরা উল্টা নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে শিয়া-সুন্নি মেরুকরণে উদ্বুদ্ধ হবে। তাছাড়া যেহেতু নানা অজুহাতে এই বৈঠকে আরব রাজতন্ত্রগুলোর পরবর্তী প্রজন্মের শাসকরা যোগ দিচ্ছেন, সেহেতু ধারণা করা যায়, এটা মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমের বসানো পুরানো সেটআপ ঠিক রাখার একটা ওয়ার্মআপ বৈঠক হতে পারে, যাতে করে নতুন প্রজন্মের আরব রাজণ্যবর্গ তাদের পূর্বপুরুষের মতো মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিম ও ইহুদিদের জন্য সুবিধাজনক হিসেবে বহাল থাকেন। সেক্ষেত্রে আগামীকালের ক্যাম্প ডেভিড বৈঠককে দুই মিত্রগোষ্ঠীর মধ্যকার একটি পুনর্মিলনী বা পরিচিতি সভাও বলা যায়, যাতে নানা অজুহাতে ইচ্ছা করেই পূর্ববর্তী প্রজন্মের বুড়ো শাসকদের যেতে দেয়া হয়নি...!
©somewhere in net ltd.