নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্য সদা সুন্দর চিরন্তন

অসত্যের কাছে নত নাহি হবে শির ভয়ে কাপে কাপুরুষ লড়ে যায় বীর। -নজরুল

ওয়েলকামজুয়েল

লেখালেখি পেশা নয় নেশা। তাই শত প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও ছাড়তে পারি না। লিখেছি লিখছি লিখব। কিছুটা আবেগী হওয়ায় মনের রাগ ক্ষোভ দমিয়ে রাখতে পারিনা বিধায় কিছুটা প্রতিবাদী হয়ে যাই। লিখার ভালো মন্দ বিচার বিশ্লেষণ করা হয় না। তাই অনেকে খেপাটে ও বলতে দ্বিধাবোধ করে না।মনে মাঝে আঘাতটাকে শক্তিতেই রুপান্তরিত করি।চেষ্টা করি সমসাময়িক বিষয়ে লিখতে। হয়তো সফল হয়তো বিফল। কিন্তু সবার ভালবাসা ই আমার প্রেরণা।

ওয়েলকামজুয়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের নামে আধুনিক যুগে প্রতিটি দেশের জনগণই প্রকৃতপক্ষে নিজ দেশে কারাবন্দী

১৬ ই মে, ২০১৫ রাত ৯:৩১

গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের নামে আধুনিক যুগে প্রতিটি দেশের জনগণই প্রকৃতপক্ষে নিজ দেশে কারাবন্দী জীবনযাপন করেছে। কিন্তু মিশরীয়দের জন্য বুঝি ব্যাপারটা আরো স্পষ্ট হয়ে প্রতিভাত হয়েছে। ভৌগলিক কারণে মিশর বরাবরই ইহুদীবাদীদের ষড়যন্ত্রের লীলাভূমি হয়ে থেকেছে। পাশাপাশি প্রাচীন ইতিহাস ও ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব থাকায় মিশর বরাবরই পুঁজিবাদী ও কমিউনিস্ট সাম্রাজ্যবাদীদের মল্লযুদ্ধের ক্ষেত্র হিসেবে থেকে যায়।
মিশরের ক্ষমতাসীন মোহাম্মদ আলী পাশা রাজবংশ নীলনদের দেশকে যাবতীয় বৈদেশিক ষড়যন্ত্র থেকে মুক্ত রাখার মতো প্রয়োজনীয় যোগ্যতার অধিকারী ছিলেন না। এদের অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বিলাসব্যসন আর ইন্দ্রিয়পরায়ণতায় ডুবে থাকেন। এই বংশের শেষ বাদশাহ ফারুক ছিলেন বয়সে তরুণ। বৈদেশিক ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় তাঁর সামর্থ তো ছিলোই না, উল্টো ব্যক্তিগত কিছু বিপর্যয় ও চারিত্রিক সমস্যার জন্য তিনি এক ভাঁড়ে পরিণত হন।
বাদশাহ ফারুক ছিলেন আমার প্রায় দ্বিগুণ মোটা। এর গাড়ি দুর্ঘটনার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় তিনি স্হুলদেহী হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর মা রাজমাতা নাজলি সাবরি ছিলেন উদ্ভট চরিত্রের মহিলা, যিনি প্রাসাদের কর্মচারী ও স্বামী বাদশাহ ফুয়াদের জ্ঞাতি ভাইয়ের সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত থাকেন।
একজন সৌখিন গাড়ি ও মুদ্রা সংগ্রাহক হবার পাশাপাশি ফারুক ছিলেন তৎকালীন বিশ্বের শীর্ষ পর্ন ছবি ও চলচ্চিত্রের সংগ্রাহক। ১৯৫৩ সালে তাঁকে ক্ষমতাচ্যূত করার পর সেনাবাহিনী রাজপ্রাসাদের অভ্যন্তরে একটি প্রকাণ্ড দ্বিতল ভবনের খোঁজ পায়, যার ছাদ থেকে মেঝে পর্যন্ত ঠাঁসা ছিলো হাজারো পর্নগ্রাফিক উপাদান।
যাহোক, ১৯৫৩ সালে ফারুকের পতনের পর মিশরীয় সেনানায়করা ক্ষমতায় এসেও মিশরকে ইহুদীবাদী ষড়যন্ত্র থেকে মুক্ত করতে পারেননি। উল্টো তারা মূল শত্রু হিসেবে বেছে নেন ইখওয়ানুল মুসলিমীন নামের একটি ডানপন্থী সংগঠনকে। জেনারেল নাসের মধ্যপ্রাচ্যে সোভিয়েত ইউনিয়নের মিত্র হিসেবে পশ্চিমের বিরোধিতার অংশ হিসেবে বেশ কয়েকবার ইসরাইলের সাথে যুদ্ধ করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তিনি পরাজিত হন। নাসেরের পরবর্তী আনোয়ার সাদাত তো খোলাখুলিভাবেই ইসরাইলের সাথে ঝগড়াঝাটি শেষ করে মিশরকে, মিশরের বিশাল সেনাবাহানীকে ইসরাইলের শিখণ্ডী মিত্রতে পরিণত করেন।
২০১২ সালে হোসনি মোবারকের পতনের মধ্য দিয়ে প্রায় ছয় দশকের সামরিক শাসনে সাময়িক ছেদ পড়ে। মিশরীয়রা ভোটে নির্বাচিত করে মোহাম্মদ মুরসিকে। দেশটির হাজার হাজার বছরের ইতিহাসে তিনিই ছিলেন প্রথম নির্বাচিত শাসক। ইখওয়ানের নেতা হলেও তিনি দৃশ্যত পশ্চিমের বিরাগভাজন ছিলেন না। কিন্তু বছর না ঘুরতে তাঁকেও বরতরফ হতে হয়। মিশরে আবার পুরানো দিন ফিরে আসে। ইসরাইল তাদের দক্ষিণ সীমান্তে এবার এমন একজন মুসলিম নামধারী শাসক পায়, যার মা ইহুদী। বলা বাহুল্য, ইহুদী ধর্ম অনুযায়ী ইহুদীর গর্ভে অন্য ধর্মাবলম্বীর ঔরসে জন্মানো সন্তানও ইহুদী হিসেবেই গণ্য হয়।
মোহাম্মদ মুরসিকে ফাঁসীর দণ্ড প্রদান তাই খুব একটা অপ্রত্যাশিত ছিলোনা। মিশরীয়রা যে প্রকৃতপক্ষে একদম স্বাধীন নয়, এই রায় তারই প্রমাণ। আমার মনে হয়, যতোদিন ইসরাইল থাকবে, ততোদিন মিশরীয়দের স্থায়ী মুক্তি আসবে না...।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.