নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বর্ষণমুখর সন্ধ্যা

বর্ষনমূখ

বর্ষনমূখ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা সব বন্ধু সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার

২৪ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:৩৩

আহ্বানে একসাথে জেগে উঠি বন্ধুতের শ্লোগানে। চলো মেলে দেই পাখা, অভিমান ভুলে বন্ধুত্বের ছবি আঁকি। নেচে যাই গানে, মেতে যাই সুরে, সব ভুলে একসাথে। ‘বন্ধু আমরা সবাই বন্ধু’ জে এস সাহেদ ও নাসির হাসানের এই গানটি খুব ভালো লাগে বন্ধু আফসানা রুবির। কক্সবাজারে করা বন্ধুতের গানের ভিডিও দেখে তার খুব ইচ্ছে ব্যাচের সব বন্ধুদের নিয়ে কক্সবাজার যাবে।
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগের পঞ্চান্নতম ব্যাচের শিক্ষার্থী আমরা। সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হতে আর দুটো বিষয় বাকী। কিছুদিন ঘুরে আসার জন্য বিষয়টি রুবি আলোচনা করলো বন্ধু সাকিবের সাথে। ভার্সিটিতে ‘দূরদর্শন ৫৫’ নামে ব্যাচের পরিচিত থাকলেও ব্যাচের ভ্রমন নিয়ে পিছিয়ে আমরা তাই সময়টা কাজে লাগানো যায় বলল দীপ্ত। তাছাড়া লালবাগ কেল্লা ছাড়া ব্যাচের বন্ধুদের নিয়ে কোথাও যাওয়া হয়নি কারো। সিদ্ধান্ত হল ১৯ আগস্ট ২০১৭ শুক্রবার সন্ধ্যা ব্যাচ থেকে সবাই কক্সবাজার যাব। ব্যাচের ফেইচবুক গ্রুপের মাধ্যমে বিষয়টি সবাইকে জানানো হল। কিন্তু রুবি হতাশ। কক্সবাজার ভ্রমনের সময় দুইদিন থাকলেও কারো কোন খবর নেই। এক পর্যায়ে সে গ্রুপে পোষ্ট দিলো ট্যুর হবে না। আশেক,দীপ্ত আর সোহানের অনুরোধে যাবার। সিদ্ধান্ত হল যাওয়া বন্ধ করা যাবে না দুজন হলে দুজনই যাওয়া হবে। আমি যাবার ইচ্ছা থাকলেও পরিবারের নানান সমস্যার কারনে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলাম। বন্ধু সাগরের যাওয়া ঠিক নেই। বড় সমস্যা রুবিকে নিয়ে পরিবারের বাঁধায় তারও নাকি যাওয়া হবে না। পরে তার দুলাভাই পলাশ ভাইকে বুঝিয়ে শেষ পর্যায় যাবার অনুমতি পেল সে। সে ট্যুরের বিষয়ে বন্ধু সুমনা আমাকে বুঝালো, দোস্ত পরিবারের সমস্যা সব সময় থাকে। কিন্তু এমন যাওয়া আর সবসময় হবে না। তাই যাবার শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্তটা নিয়েই নিলাম, যাই হোক যাব। সন্ধ্যায় বাস কাঊন্টারে দেখলাম সাগর,আশেক,রুবি,সাকিব,দীপ্ত,সুমনা,সোহান,রাব্বি,সজিব,সুমন সবাই যাবে। আর মানষ কক্সবাজারে আছে সেখান থেকে আমাদের সাথে যোগ দিবে। গাড়ি ছাড়লো রাত ৯টায়। আকাশে চাঁদ আর বাতাসের সাথে প্রতিযোগিতা করে দূর গন্তবে ছুটে চলা গাড়িতে এতো গুলি বন্ধু একসাথে তাই মনে অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করছিল। সেতু থেকে নিবো নিবো প্রদীপ জ্বলা আলোয় নৌকাগুলি দেখতে অনেক ভালো লাগছিলো। এক সময় মাথায় আইডিয়া আসলো যারা ট্যুরে এসেছি তাদের নিয়ে একটা ফেসবুক গ্রুপ চ্যাট খুলি। কিন্তু সরাসরি আড্ডার কারোনে চ্যাটে তেমন সাড়া মেললো না কারো। গাড়িতে বসে আড্ডায় আড্ডায় কখন যে সকাল হয়ে গেল বুঝতেই পারিনি। সকাল আটটায় চলে এলাম কক্সবাজার। মানষ কে সাথে নিয়ে সুগন্ধা বিজের পাশেই লেগুনা বিজ হোটেলে উঠলাম আমরা। একটু বিশ্রাম নিয়েই চলে গেলাম সমুদ্রের কাছে। নিল আকাশের নিচে খেলা করা সমুদ্রের ঢেউয়ে হারিয়ে গেলাম বারো বন্ধুর সকল। ঢেউয়ের পানিতে শরীর ভিজিয়ে নাচানাচি ভারী মজা পেলাম। দেখলাম সাগর পাড়ের ফটোগ্রাফারদের। যাদের ক্যামেরায় ফুটে ফ্রেমে বাঁধা থাকে স্মৃতিময় জীবনের আনন্দের মুহূর্তগুলি। আমাদের সাথে দুটি ক্যামেরা থাকায় আমরা নিজেরাই তুলি আমাদের সবার ছবি। দুপুরে বাহিরে বৃষ্টি থাকায় হোটেলেই চলে আড্ডা আর আড্ডা। সাথে সেলফি বয় সুমন, রুবি, সাগর কারো না কারো মাধ্যমে প্রতি মুহূর্তের ছবি ছড়িয়ে যায় ফেসবুক পাড়ায়। রাত ১০ কিংবা ১১ টায় আমরা সমুদ্রের পাড়ে আড্ডা দেবার জন্য যাই। রাতের খোলা আকাশের তারার মেলা আর নিচে আমরা আড্ডায় গানের কলির খেলায় মেতে থাকি সুমদ্রের পাড়ে। দূর থেকে বাতাসের সাথে রাতের সাগরের গর্জন রাতে শুনতে কি ভালো লাগে বুঝানোর ভাষা থাকে না। সাগর পাড়ের থাকা লাইটের আলোয় স্বল্প আলোয় আলোকিত হওয়া সমুদ্রের ঢেউ দেখতে অসাধারণ লাগছিল। ভোঁর রাত প্রায় সাড়ে চারটা। গানের আড্ডায় এতো রাতে সমুদ্রের পাড়ে আমরা নিজের কাছে অবিশ্বাস মনে হচ্ছিল। পরদিন সকালে চাঁদের গাড়িতে চড়ে ইনানি বিজ যাবার সময় দু’দিকে পাহাড়ে ঘেরা মাঝে আমাদের রাস্তায় আবার চলে গানের আড্ডা। হুইহুল্লোর করতে করতে চলে গেলাম ইনানি বিজ সমুদ্রের পাড়। ছবি তোলা আর ডাব খাওয়ায় মেতে উঠি সবাই। ঐ দিন সন্ধ্যায় আমরা সবাই ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেই। ২৩ আগস্ট মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় আমরা ঢাকায় পৌছে যাই। গাড়ি থেকে একে একে সবাই নেমে যেতে মনে হল শুধু একটা স্মৃতি রাখতে গিয়েছিলাম জীবনের ডাইরিতে। এই ভেবে বন্ধু সাগর আর সুমনার চোখে জল গড়িয়ে পরল। কক্সবাজার আমার করা ফেসবুক গ্রুপ চ্যাটটিতে সাড়া না দিলেও এখন সবাই এখানে চ্যাট করি। একটি ট্যুর যে এতো আনন্দ আর বন্ধু কাছে এনে দিতে পারে সেটা এখন বুঝতেছি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.