নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ফারহান হুদা মুগ্ধ এই না টি হয়তো কমবেশি অনেকের ই জানা । গত বছর গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে নিজের চাহিদা মত মোটর সাইকেল না পেয়ে বাবা-মার শরীরে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ছিল সবে মাত্র এস. এস. সি পাশ করা মুগ্ধ । মুগ্ধের এমন ঘটনা শুনার পরে অনেক বাবা - মা ই সন্তান জন্ম দেয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল ।কারন মুগ্ধ কেন এমনটি ঘটিয়েছিল তা সবাইকে ই কম বেশি ভাবিয়েছিল । সম্প্রতি আমাদের দেশে ঘটে যাওযা বেশ কিছু কিশোর অপরাধ সুস্হ্য জাতি হিসেবে অবশ্যই আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে ।সহপাঠীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বরিশাল নগরীতে দশম শ্রেণির ছাত্র সাইদুর রহমান হৃদয়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয় মাত্র কয়দিন আগ । বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের ভাষ্যমতে হৃদয় খুনের সাথে জড়িত ছয় কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছেন, তারা অপরাধ স্বীকার ও করেছে। হত্যার কারন হিসেবে পুলিশ যে কারন উল্লেখ করেছেন তা হলো হৃদয়ের এক কিশোরী সহপাঠীকে প্রেম নিবেদন করে এক কিশোর কিন্তু ওই কিশোরীকে পছন্দ করে হৃদয়ের এক বন্ধু। তাই প্রেম নিবেদনকারী অন্য কিশোরটিকে হৃদয় বাধা দেয়। ফলে হৃদয়ের সঙ্গে ওই কিশোরের বিরোধ সৃষ্টি হয়।সেই বিরোধের জের ধরেই খেলার মাঠে খুন হতে হয় হৃদয় কে ।
এ বছরের প্রথমেই যে ঘটনাটি আমাদের চোখ কপালে তুলে দিয়েছে তা হলো ঢাকার উত্তরায় স্কুলছাত্র আদনান কবির হত্যাকাণ্ড ।গত ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় দু’গ্রুপের সংঘর্ষে খুন হয় উত্তরা মাইলস্টন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র আদনান । আদনান খুনের পর পুলিশ তদন্তে বেরিয়ে আসে এক ভয়ংকর তথ্য । পশ্চিমা বিশ্বের মত উত্তরার মত অভিজাত এলাকায় আছে বিভিন্ন নামে আছে গ্যাং গ্রুপ । ডিসকো ও নাইনস্টার নামের দুই গ্যাং গ্রুপের দ্বন্দ্বের করণেই খুন হয় আদনান।এর আগে অবশ্য দেশের খ্যাত নামা একজন সাংবাদিক একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানের অপরাধ বিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে এমন টি ই প্রচার করেছিলেন । ওখানে আমরা দেখেছে অভিজাত এলাকা গুলিতে বিভিন্ন কিশোর গ্যাং গ্রুপেরা কেমন উৎপাত করে । নিজেদের এলকায় নিজেদের প্রাধন্য বিস্তার করে এবং নিজের এলাকা কে নির্ধরন করে রাখে একেক গ্রুপ একেক গ্রাফিতির মাধ্যমে । আবার অন্যএলাকায় ঠুকে নিজেদের চিহ্নিত গ্রাফিতি একে নিজেদের শক্তির জানান দেয় অন্য এলাকার আরেক গ্যাং গ্রুপ এনিয়ে চলে সংঘর্ষ পরবর্তীতে সংঘর্ষই রুপ নেয় খুনে । আর এমন ঘটনায় ই খুন হয় আদনান কবির । আদনান কবিরের মত মাত্র কিছুদিন আগে রাজধনীর রাজধানীর তেজগাঁওয়ের তেজকুনি পাড়ায় খেলাঘর মাঠে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে দুই কিশোর গ্রুপের সংঘর্ষে খুন হয় আব্দুল আজিজ নামের এক কিশোর । এর অগে ক্রিকেট খেলা নিয়ে রাজধানীর ফার্মগেইট এলাকায় খুন হয় কিশোর রফিকুল ইসলাম মুন্না , আজমেরি আকাশ নামের এক কিশোর ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে মুন্নাকে।
বয়সে তরুন ও কিশোরদের এ ধরনের ভয়ংকর অপরাধের চিত্র আজ অনেক দীর্ঘ আর কেন জানি এই চিত্র দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর ই হচ্ছে যা আমাদের ভবিষ্যত নিয়ে ভীষন ভাবে ভাবিয়ে তুলছে । সবার মনেই আজ প্রশ্ন তাহলে বিচার হীনতার কালচার ই কি আমাদের কিশোরদের মনের ভিতরে অপরাধ প্রবনাতাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে ? একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের কোন গুরুতর অপরাধের জন্য যে ধরনের বিচার হয় শিশু-কিশোরদের বেলায় তা ভিন্ন । জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ এবং আমাদের দেশের ২০১৩ সালের শিশু আইন বলে, ৯ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীরা যদি কোনো অপরাধ করে, তাহলে তাদের সাধারণ কারাগারে পাঠানো যাবে না। বড়দের মতো তাদের বিচার করে শাস্তি দেওয়া যাবে না। তাদের ‘উন্নয়ন কেন্দ্র’ নামের একধরনের প্রতিষ্ঠানে আটকে রাখতে হবে, সেখানে তাদের মানসিকভাবে ‘শোধন’ করার ব্যবস্থা থাকবে। অর্থাৎ, তারা যে গুরুতর অপরাধ করেছে, তা করা উচিত হয়নি এমন অনুশোচনা তাদের মধ্যে জাগবে এবং ভবিষ্যতে তারা আর কখনো ওই ধরনের কিছু করবে না এমন শুভবোধ সৃষ্টি হবে। আমাদের দেশের মত বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশের শিশু কিশোর অপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া প্রায় একই রকম । স্বাভাবিক ভাবে ই প্রশ্ন আসে তাতে কি শিশু কিশোরদের ভিতর থেকে অপরাধ প্রবনতা কমেছে ? উত্তরে আসবে না মোটেও না বরং আরো বেড়েছে । বেশ কিছু দিন আগে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এনামুল হক শামীমকে গুলি করে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছিল । ঐ ঘটনায় র্যাব সদ্য কৈশোর পার হওয়া মেহেদী হাসান সৈকত নামের এক প্রফেশনাল কিলার কে গ্রেফতার করে ছিল । অপরাধ জগতে সে বুলেট হিসেবে পরিচিত। সৈকত তথা বুলেট সাত বছর বয়সে রাজধানীর তেজতুরী বাজার এলাকায় খেলার মাঠে রফিকুল ইসলাম নামে অপর এক কিশোরকে হত্যার মধ্য দিয়ে অন্ধকার জগতে প্রবেশ ।কিশোর সংশোধনাগারেই কয়েক বন্ধুর সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে সৈকতের । সেখানেই সে অস্ত্র চালনার বিষয়ে জানতে পারে। কিশোর বন্দিদের কাছ থেকে বিভিন্ন অপরাধ সম্পর্কে ও ধারণা পায় । চার বছর কিশোর সংশোধনাগারে কাটানোর পর আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে সে ।
আমাদের দেশের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, কিশোর বয়সীদের মধ্যে সাধারণ অপরাধ যেমন চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ইত্যাদি অপরাধের প্রবণতা কিছুটা কমেছে। কিন্তু খুন, ধর্ষণ এবং ধর্ষণ করার পর হত্যা করার মতো হিংস্র ধরনের অপরাধ করার প্রবণতা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে ই চলেছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো, খুনের পন্থাগুলো খুব নৃশংস ও ভয়াবহ এবং সংঘবদ্ধভাবে দিনের আলোয়ে ই খুন করা হচ্ছে । আমাদের কিশোরেরা কেন দিন দিন এত বেপরোয়া হিংস্র হয়ে উঠেছে এ নিয়ে এখই ভাবার সময় । বিশেষজ্ঞদের অনেকের অভিমত কিশোরেরা তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার কে অপব্যবহায় করছেন , এর ই ফলশ্রুতিতে আমাদের কিশোরেরা খেলাধুলা ও পারিবারিক সম্পর্ককে অনেক দুড়ে ঠেলে দিচ্ছে সাথে আছে আমাদের অপরাজনীতি । বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় লালিত তথাকথিত বড়ভাইরা নিজেদের পেশী শক্তিকে শক্তকরতে নানান অপকর্মের প্রশ্রয় দিচ্ছে আমাদের কিশোরদের । কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রনের জন্য বিভিন্ন সামাজিক ও পারিবারিক ত্রুটি গুলি সংশোধনের পাশাপাশি অবশ্যই কিশোর অপরাধ বিচারের বিদ্যমান ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনার প্রয়োজন। বড়দের মতো শাস্তি হয় না বলে অপরাধপ্রবণ কিশোরদের মনে " সেন্স অব ইমপিউনিটি " বা শাস্তি হবে না এমন বোধ কাজ করে থাকতে পারে। আর সেই বোধ থেকে ই হয়তো কিশোরদের ভিতর অপরাধ প্রবনতা বাড়ছে ।তাই এখনি সময় পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রের যৌথ প্রচেষ্টায় আমাদের শিশুকিশোরদের সুস্হ্য মানসিকতা বিকাশের মধ্যমে অপরাধের মনোবৃত্তি থেকে দুড়ে এনে উজ্জল আগামীর পথে আনা তা না হলে ভবিষ্য প্রজন্ম অচিরে ই অন্ধকারের তিমিরে হারিয়া যাবে ।
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৫৪
ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন বলেছেন: এটা একদম বাস্তব সত্য বর্তমানে আমাদের অনেকেই অতি সোস্যাল হওয়ার পরিমান এমন । ধন্যবাদ
২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:২৪
রক বেনন বলেছেন: কালীদাস বলেছেন: বাসা আর স্কুলের শাসন চালু করেন আবার। অনেক বাপমার হাবভাবে মনে হয় ছেলের ঘাউড়ামিতে প্রাউড ফিল করছে।
সহমত প্রকাশ করছি। মাইরের উপর ওষুধ নাই।
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৫৫
ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন বলেছেন: মাইরে জন্য আমাদের সবাই কে একই প্লাটফর্মে দাড়াতে হবে ।- ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:১০
কালীদাস বলেছেন: বাসা আর স্কুলের শাসন চালু করেন আবার। অনেক বাপমার হাবভাবে মনে হয় ছেলের ঘাউড়ামিতে প্রাউড ফিল করছে।