নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গৃহকর্মী আদুরিকে নির্যাতন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত ও এক লাখ টাকা অর্থ দন্ডে দন্ডিত হয়েছেন গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদী ।এমন একটি বিচারে রায় আমাদের সমাজ তথা রাষ্ট্রের জন্য একটি উদাহরন হয়ে থাকবে । আদুরির এই রায়ের পর আমাদের সমাজে লুকিয়ে থাকা ভদ্রবেশী কিছু অমানুষের মনে কিছুটা হলে ও ভয়ের সঞ্চার হবে । ভবিষ্যতে হয়তো অন্য কোন আদুরি আর এমন নির্মমতার শিকার হবে না ।২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারা ও ডিওএইচএস তেলের ডিপোর মাঝামাঝি রেললাইন সংলগ্ন একটি ডাস্টবিনের পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় কঙ্কালসার ও মৃতপ্রায় অবস্হায় পাওয়া যায় ১১ বছর বয়সী আদুরিকে ।পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে, তার গৃহকর্ত্রী পল্লবীর ১২ নম্বর সেকশনের ২৯/১, সুলতানা প্যালেসের দ্বিতীয় তলার বাসিন্দা নদী আগের দিন ধারালো চাকু দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে, ইস্ত্রি দিয়ে ছ্যাঁকা দিয়ে মারাত্মক জখম করে মেয়েটিকে সেখানে ফেলে রাখেন। আদুরির বয়স এখন ১৪ বা তার একটু বেশি প্রায় চার বছরের ও মুছে যায়নি তার শরীরের নির্যাতনের অসংখ্য কাটা ও পোড়া দাগ৷ নির্যাতনের সেই স্মৃতি এখনও দুঃস্বপ্ন হয়ে কিশোরী আদুরির ঘুম ভাঙিয়ে দেয়।শরীরে যেসব জায়গায় নির্যাতন করা হয়েছিল, এখনও মাঝেমধ্যে সেসব জায়গায় ব্যথা হয়, চুলকায় অসহ্য শারীরিক যন্ত্রনায় ভুগছে আদুরি ।শারীরিক যন্ত্রনার সাথে আদুরির মানষিক যন্ত্রনা ও কম নয় নিশ্চিত মৃত্যুর ঘর থেকে ফিরে আসা আদুরির শিশু মনে সব সময় ই ভেসে উঠে নির্মম-নিষ্ঠুর নির্যাতনের সেই ভয়াভ স্মৃতি যা চির দিন ই আদুরিকে পিছুকরে থকবে।
আদুরিকে নির্যাতনকারি গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদীর নাম থেকে আমি নদী টা মুছে দিতে চাই ।মানব সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পেছনে নদীর অবদান সবচেয়ে বেশ তাই মানুষ রুপি একটি দানবের নাম কখনো ই নদী হতে পারে না ।আদুরির গৃহকর্ত্রী আদুরিকে নির্যাতন করেই ক্ষান্ত হয়নি মৃত ভেবে বিড়ালের বাচ্চার মত বস্তায় পেচিয়ে ফেলে এসেছিল ডাস্টবিনে । আদুরি আজ সুবিচার পেয়েছে কিন্তু আমাদের সমাজের আনাচে কানাচে হাজারো আদুরির আত্মচিৎকার বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে কারো কান্না আমাদের কানে পৌছে কারো কান্না হারিয়ে যায়।আমাদের সমাজের প্রচলিত কথা গরীব মানুষ কখনো ই বিচার পায় না ।আদুরির বেলায় তেমন টি হয় নি আদুরি বিচার চেয়েছে তাই বিচার ও পেয়েছে । তবে এমন ঘটনার প্রায় প্রতিটি ই অর্থ পেশীশক্তি অথবা প্রসাশনিক শক্তির কাছে হার মেনে তথাকথিত আপসের মাধ্যমেই সমাধান হয় ।" আপস" নামক সেই নাটক আদুরিকে কবু করতে পারেনি।আদুরির বিচার যেমন আমাদের স্বস্তি দিয়েছে সেই সাথে কিছু পরিসংখ্যান আমাদের চিন্তিত ও ব্যথিত করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ি বাংলাদেশে নারী গৃহকর্মীর সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ৷বিভিন্ন এনজিও প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায় এই গৃহকর্মীদের একটা বড় অংশ ই নির্যাতনের শিকার৷গত আড়াই বছরে সারাদেশে ১৪৯ জন গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হন এদের মধ্যে নির্যাতনের ফলে হত্যা ও আত্মহত্যার শিকার হন ৮৬ জন ।আইন ও শালিস কেন্দ্রের মতে, শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৫ সালে মোট ৩২ জন গৃহকর্মী মারা গেছেন৷এদের মধ্যে ২৩ জনের বয়স ১৮ কিংবা কম এবং ১৩ জনের বয়স ৭ থেকে ১৩ বছরের মধ্যে৷ আর ২০১৬ সালে মারা গেছেন ৪০ জন গৃহকর্মী, যাদের মধ্যে ২৩ জনের বয়স ১৮ বা তার কম৷ ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ লেবার স্টাডিজ' বা বিলস-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সারাদেশে অন্তত ১৮২ জন নির্যাতিত গৃহকর্মী মারা গেছেন৷ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন আরও ১৪৩ জন৷
আদুরিদের যারা নির্যাতন করে তারা আমাদের সমাজের ই কেউ উচ্চবিত্ত কেউ বা আবার মধ্যবিত্ত শ্রেনির তথাকথিত মানুষ । পেশায় কেউ খেলোয়ার কেউ সরকারি আধা সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পদস্হ কর্মকর্তা কেউ বা আবার ব্যবসায়ি সবাই শিক্ষিত । আর এই বিত্তবান শিক্ষিত মানুষ রুপিদের কাছে বার বার পরাজিত হচ্ছে সুবিধা বঞ্চিত গরীব আদুরিরা।তাই আমাদের চাওয়া আদুরিরা যাদের ঘরেই আছেন তারা অন্তত একটি বারের জন্য হলেও আদুরিদের চেহারায় খোজ করুন আপনার নিজ সন্তানের প্রতিচ্ছবি।আদুরিদের নূন্যতম ভালবাসা দিতে পরলে আপনি ও সমাজে একজন মানুষ হয়ে ই থাকবেন নয় তো আপনার দ্বারা আদুরিরা নির্যাতিত হলে আপনাকে ও মানুষ রুপী দানব নওরীন জাহানের মত পরিনতি ভোগ করতে হতে পারে।
২| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:২২
আহা রুবন বলেছেন: এই নদী নামের পশুটি রায় শুনে উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে বলেছে আমাকে বাইরে নিয়ে যাও, পাঁচ তলা থেকে লাফিয়ে আত্ম হত্যা করব। এত কিছুর পরে ....র কোনও অনুতাপ নেই!
৩| ২১ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:০৯
ঢাকাবাসী বলেছেন: শাস্তি এরকম আরো হওয়া দরকার, কারণ এরকম নির্যাতন সারা ঢাকা শহরে প্রতিদিন শত শত বাড়িতে হচ্ছে, দেখতে পারছিনা বলে কেউ জানছেনা।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১১:২১
কানিজ রিনা বলেছেন: বেশ ভাল লিখেছেন তবে ক্ষতি পুরোন আরও
বেশী হওয়া দরকার ছিল। ধন্যবাদ।