নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশের রাজনীতির বর্তমান অবস্হা বিশ্লেন করলে রাজনীতির অবস্হা খুব সুখকর নয় । রাজনীতি আজ কি আর রাজনীতিবিদের হাতে আছে ? এমন প্রশ্ন প্রায় সবার মনেই কেউ প্রকাশ করছেন কেউ করছেন না । সত্তরের সাধারন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকরী রাজনৈতিক দল গুলির প্রার্থীতালিকা আর বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক গুলির নির্বাচনের প্রার্থীর তালিকা একটু খতিয়ে দেখলেই বর্তমান রাজনৈতিক অবস্হা কিছুটা হলে ও অনুমান করা সম্ভব । কথা গুলি বলতে হলো এই করনে যে অতি সম্প্রতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটি ঘোষনা দেশের সচেতন মহলকে বিশেষ ভাবে ভাবিয়ে তুলেছে । এই নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ সংবাদ মাধ্যমে আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে ।মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে।সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে প্রত্যেক মাধ্যমিক স্কুলে কমিটি গঠন করতে সব সাংগঠনিক ইউনিটকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এমন নির্দেশ ই আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি কারন । অনেকেই একে জাতির জন্য অশনি সংকেত বলেও আখ্যায়িত করেছেন। কোমলমতী শিক্ষার্থীদের যেন ছাত্র রাজনীতি ছুঁতে না পারে এমন টাই সকলের প্রত্যাশা। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভাষ্য যে স্কুল পর্যায়ে তাদের সংগঠনকে বিস্তার করার মাধ্যমে স্কুল ছাত্রদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ছড়িয়ে দেয়া ।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন প্রত্যেক আন্দোল সংগ্রমেই অসামান্য ভূমিকা রয়েছে যার একটি অংশের দাবীদার স্কুলগামী ছাত্ররা । ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে অনেক স্কুল ছাত্রের অংশগ্রহন সহ আত্মত্যাগের ইতিহাস আমাদের জানা । বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর কথা । ক্ষুদিরাম বসু তার স্কুল জীবনেই জড়িয়ে পড়েছিলেন বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে।বৃটিশদের বিরোধিতা করেছিলেন বলে হাসতে হাসতে ফাঁসীর কাষ্ঠে নিজেকে উৎসর্গ করতে হয়েছিলো বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর । জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমান ও রাজনীতিতে জরিয়েছিলেন স্কুল জীবনেই । আমাদের মহান স্বধীনতা যুদ্ধে ও অনেক স্কুল ছাত্রের অংশ গ্রহন ছিল ।সব কিছু মিলে বাংলাদেশের জন্মের পিছনে স্কুলগামী তরুনদের একটা বিশেষ ভূমিকা ছিল । কিন্তু কালের বিবর্তনে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে স্কুলগামী কোমল শিশুদের রাজনীতিতে জড়ানো কতটা যুক্তিসঙ্গত সেটাই ভাববার বিষয় ? আমি আগেই বলেছিল আমাদের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তেমন সুখকর নয় । আর ছাত্র রাজনীতির অবস্হা তো আরো করুন । ছাত্র রাজনীতির নামে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, চাঁদাবাজি, আধিপত্যের সংঘর্ষ, গোলাগুলি, টেন্ডারবাজী, দখল বাণিজ্য,ধর্ষন , মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, হলের সিট নিয়ন্ত্রণসহ ছাত্রনেতাদের নানা অপকর্মে দেশের মানুষ অতীষ্ঠ। ২০০৯ সাল থেকে গত ৮ বছর ১০ মাসে শুধু ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলেই অন্তত ৬১ জন নিহত হয়েছেন। টেন্ডার, আধিপত্য বিস্তারসহ নানা বিষয় নিয়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ শ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব কারণে দেশের অন্তত ৬০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিভিন্ন মেয়াদে বন্ধ ছিল। শুধু ছাত্রলীগ ই নয় আমাদের বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের ই এক ই অবস্হা ।
গত কয়েক বছর যাবৎ আমাদের অভিবাকরা তাদের সন্তাদের নিয়ে বিশেষ ভাবে চিন্তিত । প্রতিনিয়তই সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হচ্ছে আধিপত্য বিস্তার কিংবা ছোট ভাই বড় ভাই দ্বন্দ নিয়ে স্কুল ছাত্র খুনের ঘটনা । উত্তরার মাইলস্টন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেনীর ছাত্র আদনান কবির খুনের ঘটনায় সমগ্র দেশে এ নিয়ে বিশেষ আলোড়ন সৃষ্টি হয় । স্কুল পর্যায় থেকে প্রতি টি পাবলিক পরীক্ষায় ই আজ প্রশ্ন পত্র ফাঁসের মহোৎসব চলছে । ছাত্রদের অনেকেরই ধরনা পড়ালেখা না করে ও পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা যায় । আজ আমাদের রাজনীতি ও শিক্ষার যে করুন দশা তাতে কোমলমতি মনে রাজনীতির বিষবৃক্ষ রোপন করা হবে জাতির জন্য ভয়াবহ পরিনাম । আজ আমাদের দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দল ই দুই নেতার আর্দশের কথা বলে আসছেন । আমি নিজ দায়িত্বে বলতে চাই তারা সবাই তাদের আর্দশ থেকে অনেক দুরে সরে এসেছেন । ছাত্রলীগ আজ বলছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মহান আদর্শ ও মুক্তি যুদ্ধের চেতনা, মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার মহৎ উদ্দেশ্য সামনে নিয়ে স্কুল কমিটি গুলো গঠন করছেন। খুব ভাল কথা সেই জন্য কোমল মতি শিশুদের রাজনীতির নামে বিভক্ত করে নয় বরং পাঠ্যপুস্তকে যথাযথ সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মহান আদর্শ ও মুক্তি যুদ্ধের চেতনাকে বুঝানো ও পৌছানো সম্ভব । আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু একই সুতায় গাঁথা । তাই জাতির জনকের আদর্শের ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়তে হলে কোমল মতি শিশুদের মনে রাজনীতির বিষবৃক্ষ রোপন না করে সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন গড়ে তুলতে হবে ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: একের পর এক ভুল সিদ্দান্ত নিয়ে যারা দেশের বারোটা বাজাচ্ছে- ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না।