নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত বছরের জানুয়ারীর কোন এক রাতে আমাদের মহল্লার সরকারী দলের স্হানীয় নেতার ছোট ভাইর বিয়ের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান বেশ জমকালো রাত বারার সাথে সাথে পাল্লা দিয়েই রারছিল গান আর বাদ্যযন্ত্রের শব্দ । নানান রোগে আক্রান্ত আমার বয়ো:বৃদ্ধ মা সেই সাথে ছোট ভাইয়ের দুই বছরের ছোট্ট ছেলে গান আর বাদ্যযন্ত্রের শব্দে একেবারেই কাবু হয়ে গিয়েছিলেন। গান আর বাদ্যযন্ত্রের শব্দ কিছুটা কামানোর অনুরোধের জন্য অনেকটা সাহস করেই ঘড় থেকে বের হয়ে গেলেও অনুষ্ঠানের পরিবেশ দেখে টু শব্দ না করেই বাসায় ফিরতে হয়েছিল । এর পর কোন উপায়ন্ত না পেয়ে স্হানীয় থানায় বিনয়ের সুরে ই সমস্যার কথা বলি । থানাতে কর্তব্যরত যিনি ফোন ধরেছিলেন তিনি আমার বিনীত অনুরোধে ঐ নেতার বাড়ীর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের শব্দ সন্ত্রাস যত তাড়া তাড়ি সম্ভব বন্ধ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ত্রিশ মিনিটের মধ্যে গান আর বাদ্যযন্ত্রের ঐ শব্দ সন্ত্রাস থেকে আমার পরিবারে ভুক্তভোগীদের সহ আশেপাশের সবাই কে মুক্তি দিতে পেরেছিলেন । ঐ রাতে আমার মহল্লার নিরীহ মানুষেরা কোন অঘট ছাড়াই মুক্তি পেয়ে ছিল ঐ শব্দ সন্ত্রাসের হাত থেকে ।
তবে রাজধানীর আর কে মিশন রোডের অবসর প্রাপ্ত সরাকারী কর্মকর্তা নাজমুল হককে জীবন দিতে হলো তেমনই একটি অনুষ্ঠানের শব্দ সন্ত্রাসের প্রতিবাদ করায় । তিনি যে বাসায় থাকতেন সেটির ছাদে ফ্ল্যাট মালিকদের কমিউনিটি হলে বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি ২০১৮) রাতে গায়েহলুদের এক অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে গান বাজনা চলছিল। এতে সদ্য ওপনে হার্ড সার্জারীর রোগী নাজমুল হকের সমস্যা হচ্ছিল। তিনি নিচে গিয়ে কেয়ারটেকারকে সমস্যার কথা জানালে ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেনের সঙ্গে তাঁর বাগবিতন্ড হয়। পরে আলতাফ হোসেন যদিও উচ্চ শব্দের গান বাজনা বন্ধ করেন কিন্তু তার মনের ক্ষোপ কোন ভবেই কমে নি । পরের দিন সকাল এগারোটার দিকে কেয়ারটেকারকে দিয়ে নাজমুল হকের ছেলে নাসিমুল হককে নিচে ডেকে পাঠান ছেলের সাথে বাবা নাজমুল হক সহ পরিবারের অন্যরাও নীচে নেমে আসেন । ক্ষিপ্ত আলতাফ হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা নাসিমুল নীচে আসা মাত্রই আর্তকিত হামলা চালা নাসিমুলের উপর ছেলের জীবন রক্ষায় অসুস্হ্য বাবা এগিয়ে এলে তাঁকেও মারধর করা হয়। এতে তিনি পড়ে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান নাজমুল হক ।
বিয়ে, গায়েহলুদ, জন্মদিন, ৩১ ডিসেম্বর, বিবাহ বার্ষিকী এমনকি সুন্নতে খাতনার অনুষ্ঠানে ও গভীর রাত এমন কি শেষ রাত পর্যন্ত উচ্চ শব্দে গান ও বাদ্য যন্ত্রে যন্ত্রনার মুখোমুখি হতে হয় প্রায় প্রতিটি নগর বাসীকে । কখনো প্রতিবাদ করলে হিতে বিপরীদ হওয়াটাই আমাদের সমাজ তথা রাষ্ট্রের নীতি হয়ে দাড়িয়েছে । আর তাই প্রতিটি সময় ই এধরনের নির্যাতন মেনে নিতে হয় আমাদের নিরীহ নগর বাসীকে । স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে এই ধনের শব্দ সন্ত্রাসের জন্য আমাদের দেশে কি কোন আইন নেই ? অবশ্যই আমাদের দেশে শব্দ নিয়ন্ত্রণে আইন এবং আইন প্রয়োগের জন্য কর্তৃপক্ষ ও আছে শুধু নাই তাদের কোন কার্যক্রম । শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০০৬ এ বিভিন্ন এলাকায় শব্দের মানমাত্রা উল্লেখ আছে। বিধিমালা অনুযায়ী, আবাসিক এলাকায় ৫৫ ডেসিবেল এবং রাতের বেলায় সর্বোচ্চ ৪৫ ডেসিবেল শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করা আছে। ওই বিধিমালা অনুযায়ী, খোলা জায়গায়, বিয়ে বা কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, কনসার্ট, রাজনৈতিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান, যাত্রানুষ্ঠানে শব্দের মানমাত্রা অতিক্রম করতে পারে। তবে এসব অনুষ্ঠান কোনো আবাসিক এলাকায় করা যাবে না। এসব অনুষ্ঠান করতে গেলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে থেকে অনুমতি নিতে হবে। এসব অনুষ্ঠানে শব্দের মানমাত্রা অতিক্রম করা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে অনুষ্ঠানগুলো অবশ্যই রাত ১০টার মধ্যে শেষ করতে হবে। অথচ রাতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে যে উচ্চ শব্দে গানবাজনা হয় তা ৮০ ডেসিবেলের নিচে কখনোই নয়। যে যার ইচ্ছামতো মাত্রায় এসব যতক্ষন খুশি গান ও বাদ্য যন্ত্র বাজিয়ে ই যাচ্ছে। আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্তাব্যক্তিদের দাবি ঘড়ে ঘড়ে আজ এই ধরনের অনুষ্ঠান আর তাদের যে লোক বল তা দিয়ে এধরনের অনুষ্ঠান নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব নয় । আমি ও তাদের দাবির সাথে এক মত । আমারা আমাদের নানান পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে আনন্দ অবশ্যই করবো তবে সেই আনন্দ হতে হবে নির্মল বিনোদন । আমার আনন্দ অন্যের জন্য বিরক্তের বা ক্ষতির কারন হবে এটা করোই করা উচিত নয় এমন কি কারো কাম্য ও নয় । কিন্তু আজ কেন জানি আমরা বড়ই স্বার্থপর হয়েগেছি । আমাদের নিজেদের প্রয়োজনের কাছে অন্যের ন্যায় সঙ্গত প্রয়োজন ও অর্থহীন । নাজমুল হক সাহেবে মৃত্যু আমাদের সমাজের জন্য আমাদের বিবেকের জন্য অবশ্যই লজ্জাজনক । আমরা চাইবোনা এই ধরনের উচ্ছৃখলার প্রতিবাদ আর কোন নাজমুল হককে করতে হয় আর কোন নাজমুল হককে যেন আর এ ভাবে জীবন দিতে না হয় ।
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:০৮
ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন বলেছেন: সামাজিক ভয় আজ সবার মনেই নিজের জীবনের ভয় পরিবারের নিরাপত্তার ভয় সব মিলে আমরা আজ ও বাস করছি মগের মুল্লুকে । জোর যার মুল্লুক তার আইন তার ।
২| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: চুপ করে সহ্য করে যান ভাই।
আমিও চুপ করে সহ্য করে যাচ্ছি।
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:১০
ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন বলেছেন: আসুন আমরা সবাই প্রতিবাদী হই যার যার অবস্হান থেকে প্রতিটি অন্যানের প্রতিবাদ করি ।
৩| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৩৫
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: মানুষ ব্যক্তিগতভাবে সৎ আর ভদ্র না হলে জাতির কপালে খারাপী আছে। আমরা সেই খারাপীর মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সামনে আরো খারাপী আছে। সব কিছুর শেষ আছে। শেষের পর যদি আবার ভালো কিছু শুরু হয়।
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:১২
ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন বলেছেন: কেন আমরা শুধুই কপালের দোষ দিচ্ছি । চুপ করে থেকে কপালের দোষ দিলে কি হবে ?
৪| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:১০
কামরুননাহার কলি বলেছেন: আমাদের দেশের সব আইনই সাগরে ভেসে গেছে। এখন আর আইন নাই তাই যার যেমন খুশি সে তেমননি করে। তবে আমাদেরকে এর মধ্যে থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:১৪
ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন বলেছেন: বের হয়ে আসার জন্য নতুন করে আন্দোলনের প্রয়োজন তা হতে হবে যার যার নিজ অবস্হান থেকে কঠিন মনোভাব নিয়ে ।
৫| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:১৩
জনৈক অচম ভুত বলেছেন: আমাদের দেশে প্রতিবাদ করার বা প্রতিবাদকারীকে সাপোর্ট করার মতো মানুষের বড় অভাব। সবাই ঐক্যবদ্ধ না হলে এই শব্দসন্ত্রাস বন্ধ করা কঠিন।
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:১৬
ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন বলেছেন: আপনার সাথে সহমত । ঐক্যের মাধ্যমে সবই সম্ভম ।
৬| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৮
হাঙ্গামা বলেছেন: সরকার চাইলে এক মুহুর্তের বিষয়। চায় না তাই হয় না।
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:১৭
ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন বলেছেন: একটি রাষ্ট্রের সরকারের পক্ষে খারাপ ভাল সব করাই সম্ভব ।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৪:২১
চাঁদগাজী বলেছেন:
এগুলো নিয়ে আইন আছে, সামজিক নিয়ম আছে; যারা মানছে না, সমাজ তাদের ভয়ে আছে; এই ভয় ভাংগার জন্য কিছু তরুণ ছেলেমেয়ের দরকার প্রতি এলাকায়।
গান বাজনা হলের ভেতর হতে হবে।