নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ রাত সাড়ে আটটা নাগাদ এ্যালিফেন্ট রোডের গাউছিয়া মার্কেটের উল্টাদিক দিয়ে হাটছি দুইজন ভদ্রলোক মোটর সাইকেল থেকে নামছেন এমন সময় পাশ থেকেই একজন এসে ইচ্ছে করে তাদের মোটর সাইকেলের সাথে ধাক্কা খেয়ে পিছনের জনের কলার চেপে ধরেই বললো এই বেটা ধাক্কা দিলি কেন ? ভদ্রলোক যেই নাকি বলে উঠলো আমি আপনাকে ধাক্কা দিবো কেন আপনি তো ইচ্ছাকরেই ধাক্কা খেলেন বলা মাত্রই আরো গোটা সাত আটেক যুবক এসে গনহারে মারপিট শুরু করলেন দুই মোটর সাইকেল আরোহীর উপর । উপস্হিত অনেকেই থামানোর চেষ্টাকরলে উচ্ছ্বংখল যুবকেরা নিজেদের ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী বলে হুংকারের সাথে পরিচয় পেশ করলেন । ততোক্ষনে ভদ্র দুই মোটর সাইকেল আরোহী মার খেয়ে নাস্তানাবুদ । উপস্হিত সাধারন মানুষ কোন মতে ঐ দুইজনকে মার্কেটের ভিতরে ঢুকিয়ে গেইট আটকিয়ে দিয়ে তাদের জীবন রক্ষা করেছেন । ধাক্কা ছেলেটি পকেট থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে কাকে যেন ফোন করলেই আর যত তারাতারি সম্ভব ঘটনা স্হলে আসার আদেশ করলেন । কিছুক্ষনের মধ্যেই নিউ মর্কেট থানার একজন পুলিশ অফিসার গাড়ি নিয়ে হাজির সেই সাথে কয়েকটি মোটর সাইকেলে জনাদশেক উচ্ছৃংখল যুবক । মুহুর্তেই আর বুঝতে বাকী রহিলনা তারা যে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের ই ছাত্র সংগঠনের সদস্য ।নিজেকে অতটা জরাতে চাই নি তার পরে ও নীরিহ দুই জন মানুষ মার খেয়ে মারা যাবে এটা ও সহ্যকরতে পারিনি । পুলিশ এসেই দুই মোটর সাইকেল আরোহীকে খুনির মত খোজছে তাদের মোটর সাইকেল ও ইতোমধ্যে ঘিরেফেলেছে পুলিশ । দুই আসামী কোথায় পুলিশ ধরার জন্য মরিয়া । ইতোমধ্যে উপস্হিত উৎসাহি জনতার পক্ষ থেকে পুলিশ ঘটনা বিস্তারিত বলার চেষ্টা করে ও পুলিশ কিছু শোনতে ও বুঝতে নারাজ । তার পর মার্কেট কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বিনা অপরাধে অপরাধীদের পুলিশের কাছে হাজির করা হলো । মার্কেটের কর্মকর্তারা সহ দুই আসামীকে থানা নিয়ে যাওয়া হলো আমি রিক্সা নিয়ে ঘড়ের দিকে ছুটলাম রাত্র তখন আনুমানিক দশটা হবে পন্থপথের ঠিক মুখে সোনারগা হোটেলের ঠিক উল্টাদিকে প্রস্তাবিত ন্যাশনাল ব্যাংক টুইন টাওয়ারের পাশে কিছুটা অন্ধকার আমার রিক্সা সাথে এসে ধাক্কা লাগে মুখে মাফলার পেচানো এক যুবক । রিক্সাচালককে রেখে উনি আমার উপর চড়াও হলেন । বললাম রিক্সাচালকের তো দোষ নেই আর আপনি আমাকে গালি দিচ্ছেন কেন ? মুহুর্তেই একই ষ্টাইলে মুখে মাফলার পেচানে আর পাঁচ ছয় জন এসে হাজির । প্রথমেই আমার সাথে থাকা ব্যগ নিয়ে টানা টানি তার পর আমার কলার চেপে ধরা ওদেরকে নিজেপরিচয় বলতেই উত্তর লাভ হবে না তাদের পরিচয় আমাকে জানিয়ে দিল । তাদের ও পরিচয় সেই আগের ঘটনার নায়কদের সাথে মিল । আমার কাছে নাকি চার লাখ টাকা আছে তাদের কাছে তথ্য আছে । তথ্যপ্রযুক্তির ঐ যুগে তথ্যপাওয়া খুবই সহজ । মহুর্তেই ফোন চলে গেল অন্য করো কাছে বস মুরগি পাইছি কিন্তু আন্ডাতো নাই । আমার বিবরন বসকে দেয়া হলো উত্তর আসলো ভুল মুরগি ইতোমধ্যে আগ্নেয় অস্ত্র বের করে আমাকে খুন করার হুমকি পর্যন্ত দেয়া হলো । আমি তাদের বিনয়ের সাথে বুঝানোর চেষ্টাকরলাম তাদের ইনফরমেশন ভুল হয়েছে । পরে আমাকে ছেড়ে দিয়ে কোন কিছু না বলে রিক্সার হুট ফেলে তারা তারি চলে যাওয়ার হুকুম পেশ করা হলো । অন্যথায় পিতলের ক্যাপসুল পরিবেশন হবে বলে জানানো হলো আমি ও কোন কিছু না জানার ভান করে ভদ্র ছেলের রিক্সার হুট তুলে কোন মতে জীবন নিয়ে ঘড়ে ঢুকলাম । দ্বিতীয় ঘটনার জন্য আমি পুলিশকে জানানোর নুন্যতম প্রয়োজন বোধ করিনি কারন প্রথম ঘটনা সহ ঘটে যাওয়া আরো নানান ঘটনায় পুলিশে প্রতি আমার আস্হা প্রায় শূন্যের কোটায় । সামান্য সময়ের ব্যবধানে এমন দুইটি ঘটনা আমার মনের অবস্হা কোন জায়গায় এসে দাড় করিয়েছে তা হয়তো কাউকে বুঝানোর নয় ।
আমার এই লেখায় কোন দল বা গোষ্ঠিকে খাট করা উদ্দেশ্য নয় । কারন আমি আদৌ কোন রাজনৈতিক দলের সাথে স্পৃক্ত নই ৯১ ও ২০০১ এর জাতিয় নির্বাচনে ভোটদেয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল জীবনের প্রয়োজনে দেশের বাহিরে থাকায় ও ২০১৪ তে আমার এলকায় কোন প্রার্থী না থাকায় ভোটদেয়ার সেই সৌভাগ্যা আর হয়নি তবে স্হানীয় সরকার নির্বাচনে দুইবার ই ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছি । আজ থেকে প্রায় চারশত বছর আগে আমাদের এই অঞ্চলে মগদের ভীষণ উপদ্রব ছিল । আরাকান, অর্থাৎ আজকের মিয়ানমার থেকে আসা মগ জলদস্যুরা সে সময় আমাদের এই অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় রীতিমতো ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল ।ঢাকার সুবেদার ছিলেন তখন খান-ই-দুরান কথিত আছে তিনি একটু নাকি একটু ভীতু প্রকৃতির মানুষ ছিলেন । তাই তিনি মগদের বিরুদ্ধে না দাড়িয়ে উল্টো মগদের ভয়ে রাজমহল থেকে পালিয়ে যান । পরে ১৬৬৬ সালে শায়েস্তা খান চট্টগ্রাম জয় করার পর মগদের সন্ত্রাসের রাজত্বের অবসান হয়৷ আমাদের বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে আমি যে একুশ শতকে একটি রাষ্ট্রের নাগরিক তা কোন ভাবেই ভাবতে পারছি না । গুম হত্যা আর সন্ত্রাসের আধিপত্ত রাষ্ট্রকে আজ গ্রাস করে নিয়েছে. গলি থেকে রাজপথ সংসদ থেকে গাওগ্রামের পঞ্চায়েত সব জায়গাতেই একধরনের রাজনৈতিক একক আধিপত্ত । সাধারন মানুষ আজ প্রতিকারের পথ ও প্রতিবাদের ভাষা হারিয়েফেলেছে । তাই স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন আমাদের দেশ ও রাজনীতি কি তা হলে সাধারন মানুষের নিয়ন্ত্রনের বাহিরে ? গত কয় যুগে যে রাজনৈতিক দলই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাভার গ্রহন করেছেন বা দখল করেছেন সবার ই আভিন্ন চরিত্র । সরকারদলীয় সাবেক সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী স্বর্গীয় সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত কয়েক বছরে আগে কোন এক সময় রেগেমেগে অভিযোগ করেছিলেন, দেশটা একদম মগের মুল্লুক হয়ে উঠেছে৷ যখন একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ দেশের অবস্থা মগের মুল্লুকের সঙ্গে তুলনা করেন, তখন ধরে নিতেই হবে , অবস্থা সত্যিই সহ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে৷ আজ একুশ শতে বিশ্ব অনেক এগিয়ে গেছে কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আজ আমাদের দেশ ভুতের পিঠে ভর করেছে । সন্ত্রাস , দূর্নীতি গুম হত্যা সহ নানা রকম নিপীরনে জাতি আজ আতিষ্ঠ । আমরা চাইবো আমাদের রাষ্ট্রপরিচলনায় যারা ই আছেন বা আসবেন সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে । নয় তো কোন শায়েস্তা খান এসে তাদের শায়েস্তা করে একুশ শতকের মগদের হাত থেকে দেশ ও জাতি কে মুক্ত করবে ।
২| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: ভালো একটি বিষয় অবতারনা করেছেন।
৩| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৫২
ফ্রিটক বলেছেন: কি ভয়ানক অভিজ্ঞতা,শুনলে গা শিউরে ওঠে! আজব এক দেশে আছি,এজন্যতো বলি, ফখরুদ্দিনের সরকার মাঝে মাঝে দরকার।৫ বছর পর পর এদের পিটুনী না দিলে এরা সোজা হয় না,আগাছা কর্তন এর মত।
৪| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:০৩
আজমান আন্দালিব বলেছেন: দুঃখজনক!
৫| ০৬ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৭:২৯
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: এমন হলে তো পথ ঘাটে চলাটা সত্যিই বড় কঠিন
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:২৮
সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: একজন শায়েস্তা খানের আজ খুব বেশি প্রয়োজন।