নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্তমান সময়ে দেশের সবচেয়ে আলোচিত মানুষটির নাম শামীমা নূর পাপিয়ার ওরফে পিউ। আওয়ামী যুবমহিলালীগের নরসিংদী জেলার সাধারন সম্পাদকের পদ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত। নরসিংদীর রাজনৈতিক মহল সহ সবাই তাকে পাপিয়া নামে চিনলে ও ঢাকার বাসিন্দারা তাকে পিউ নামেই চিনতেন। পাপিয়া নরসিংদীর বাগদী এলাকায় পেট্রোবাংলার অবসরপ্রাপ্ত গাড়িচালক সাইফুল বারীর মেয়ে। স্বামী মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমন গানের শিক্ষক মতিউর রহমান চৌধুরীর বড় ছেলে। পাপিয়ার স্বামী সুমন ছিলেন ২০০১ সালে নরসিংদীর পৌর কমিশনার মানিক মিয়া হত্যার আসামী ও প্রায়ত পৌর মেয়র লোকমানের ক্যাডার বাহীনির নেতা। লোকমান মেয়ার হওয়ার পর তার দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োগ পান সুমন যদিও পরবর্তীতে লোকমানকে ও খুন হতে হয়। এর পর সুমন কমিশনার মনিক মিয়া হত্যার আসামী হিসেবে গ্রেপ্তার হয়ে ২০১০ সাল পর্যন্ত কারাবাস করে বের হলে কারাগারের ফটক থেকে সুমনকে ফুলের মালা দিয়ে বরন করে আনেন তৎকালীন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক। এর পর আর সুমন কে পিছু তাকাতে হয় নি। ২০১২ সালে প্রেমকরে বিয়ে করেন পাপিয়াকে। সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুমনকে বিয়ে করেই ভাগ্যের চাকা ঘুরে পাপিয়া ওরফে পিউর। স্বামী সুমনই তাকে অপরাধ জগতের অলিগলি চিনতে ভূমিকা রাখেন। ২০১২ সালে বিয়ের পর সুমনের প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপ সুমনকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালালে গুলিতে আহত হয় পাপিয়া। এর পর নিজেদের জীবন রক্ষার জন্য সুমন -পাপিয়া দাম্পত্যি ঢাকা চলে আসে। ঢাকা এসে পাপিয়া নিজেকে পিউ হিসেবে গড়ে তোলার রাস্তার সন্ধান পায়। ২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ বাগিয়ে নেয় পাপুয়া পিউ। যদিও পাপিয়া পিউরকে এই পদে নির্বাচিত করার জন্য স্হানীয় আওয়ামিলীগ নেতাদের যথেষ্ট মতো বিরোধ ছিল। কিন্তু কে শোনে কার কথা এখন আর কোন রাজনৈতিক দলে ত্যাগী আর্দশ নীতিবান মানুষের কোন মুল্যায়ন নেই। আর এই অবমুল্যায়ন ই আমাদের দেশে আ এমন হাজারো পাপিয়া পিউ বা সম্রাট ও এনু রুপনদের জন্মদেয়।
পাপিয়ার জন্ম ও বেড়ে উঠা আমাদের সমাজের অন্য আরো পাঁচ দশটি মেয়ের মত ই। সাধারন পাঁচ দশটি মেয়ের মত হয়ে ও কেন পাপিকে পিউ হতে হলো কারা পাপিয়াকে পিউ বানালো এটাই বড় প্রশ্ন। আজ আমাদের সমাজ সংবাদমাধ্যম আইন প্রশাসন সবাই পাপিয়া পিউকে আপরাধী হিসেবে প্রমান করে যাচ্ছে। পাপিয়াকে জন্মদেয়া তার বাবার নাম আজ রাষ্ট্র সমাজ প্রশাসন রাষ্ট্রের জনগন সবাই জানেন। কিন্তু পাপিয়াকে যারা পিউ হিসেবে জন্ম দিলেন তাদের নাম কি আমাদের রাষ্ট্র সমাজ বা প্রশাসন কেউ উচ্চারন করতে পারছে? না মোটে ও না। পাপিয়ার বাবা একজন সামন্য সরকারী গাড়ীচালক ছিলেন তাই নিজের সাধ্যমত মান সম্মান রক্ষাকরে মেয়েকে মানুষকরার চেষ্টা করেছেন এটা আমি নিশ্চিত। কারন একজন পিতার কাছে তার কন্যার চেয়ে আদরের আর কিছুই থাকে না। কিন্তু পাপিয়াদের যারা পিউ হিসেবে জন্মদেয় তাদের কাছে পিউদের শরীর ও পিউদের দিয়ে স্বার্থ আদার ই মুখ্য। আর পিউরা ও চায় তাদের সব কিছু উজার করে দিয়ে নিজদেরকে ক্ষমতাবান করে বিত্তবৈভবের জীবন পার করা । আমাদের রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন ও দুর্নীতি নতুন কিছুই না। স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার চলে আসছে। স্বাধীনতার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখ মজিবুর রহমান কে ও দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা অতিষ্ঠ করে তুলেছিলেন। তাই জাতিরজনক বলেছিলেন সকলে পেয়েছে স্বর্নের খনি তেলের খনি আর আমি পেয়েছি চোরের খনি। সাতকোটি মানুষের জন্য আসা সাড়েসাত কোটি কম্বলের নিজের কম্বল ই পান নি আমাদের জাতির জনক। জাতির জনকের সকল অবদাননই চাটার দলপরা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য চেটে খেয়ে শেষ করে দিয়েছিলেন। এমনকি এই চাটার দলেদের মদদেই পরিবারের প্রায় সকল সদস্যদের নিয়ে জীবন দিতে হয়েছিল জাতির জনককে।
আজ ও আমাদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিতদের মধ্যে চাটার অভাব নাই। তারা তাদের স্বার্থহাসিলের জন্য নানান ভাবে তাদের ক্ষমতাকে ব্যবহার করছে। স্বৈরাচার এরশাদ ক্ষমতাদখলের পর আমরা দেখেছি রাজনীতিতে পাপিয়াদের উত্থান। নারীলোভী এরশাদের লালনাদের তালিকা ছিল অনেক দীর্ঘ। বিভিন্ন জন তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য সুন্দরী রমনীদের তোফা হিসেবে পাঠাতেন নাকি এরশাদের বিছানায়। এমন কি একজন আমলা তার প্রোমশনের জন্য নিজের স্ত্রীকে হাদিয়া হিসেবে প্রেরন করতেন এরশাদের বিছানায়। ঐ আমলা ও তার স্ত্রীর দাপটা তখন সচিবালয় ও প্রশাসন সবসময় ই আতংকে দিন কাটাতেন। এর পর থেকেই শুরু হয় বিভিন্ন স্বার্থ হাসিলে নারীর ব্যবহার। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আমরা জানতে পারি এখন ও নাকি সচিবায় সহ সরকারে বিভিন্ন দপ্তর দাপিয়ে বেড়ান কয়েক জন নারী। আর এই দাপুটে মহিলাদের একজন ছিলেন পাপিয়া পিউ। পিউর মুল হাতিয়ার ই ছিল গ্রাম থেকে আসা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পুড়ুয়া কিছু সুন্দরী মেয়ে। যাদেরকে পন্যকরে পাপিয়া তার পাপ সাম্রাজ্য গড়ে তুলেন। তার বাসা ও দেশের খ্যাতনামা পাঁচতারকা হোটেলই ছিল পাপিয়ার আস্তানা। আর পাপিয়া নানান কৌশলে কব্জায় আনেন দেশের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের। আর এদের দ্বারাই পাপিয়া ও তা স্বামী সন্ত্রাসী কর্মকান্ড দেশের বড় বড় টেন্টার বাজদের সহযোগিতা সহ নানান অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন। পাপিয়া পিউ তার স্বামী ও সহযোগীরা গ্রেফতার না হলে অবশ্যই আমরা তাদের এসকল অপকর্মের কিছুই জানতাম না। এর জন্য অবশ্যই আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ। তবে প্রশ্ন হলো পাপিয়ারা কিন্তু হুট করেই পিউ বনে যায় নি দীর্ঘদিন সময় অতিবাহিত করেই পাপিয়ারা পিউতে পরিনত হন। যদি আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আগেই যদি পাপিয়াদের দিকে সজাগ নজর রাখতেন তা হলে পাপিয়ারা পিউ হয়ে এত ভয়ংকর হতে পারতো না। পাপিয়া পিউ গ্রেফতার হয়েছে আশাকরি তার যথাযথ বিচার হবে। কিন্তু পাপিয়া পিউদের যারা জন্ম দিয়েছে পাপিয়া পিউদের ক্ষমতার নেপথ্য যারা কাজ করেছেন পাপিয়া পিউদের দিয়ে যারা নিজেদের আখের গুছিয়েছেন আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র কি পারবেন তাদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করতে? সাম্প্রতি আমাদের দেশে ক্যাসিনোর ঘটনায় আমরা দেখেছি যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট এনামুল হক এনু ও রূপন ভূঁইয়া জিকে শামীম সহ বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছেন অনেক টাকা ও উদ্ধার হয়েছে এর মধ্যে বহুল আলোচিত কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক ওরফে সাঈদ সহ অনেকেই আবার পার পেয়ে গেছেন। ক্যাসিনোর ঘটনায় কি শুধু মাত্র সম্রাট এনু রুপন শামীরাই জড়িত ছিলেন? না মোটেও না তাদের সাথে অনেক বড় বড় রাঘব বোয়ালেরাই ছিলেন ঘটনা ক্রমে ঐ রাঘব বোয়ালেরা সবসমই থেকে যায় ধরা ছোয়ার বাহিরে। আজ শামিমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউ কে নিয়ে যেই সাময়িক তোলপাড় শুরু হয়েছে তা যদি স্হায়ী ভাবে বন্ধ করতে হয় তাহলে যারা পাপিয়াকে পিউ বানিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছেন তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় এনে বিচারের মাধ্যমে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্হা করতে পারলেই আমাদের সমাজে আর কোন পাপিয়া পিউ হিসেবে জন্ম নিবেন না। নয়তো এক পিউ যাবে আবার অন্য কেউ অন্য নামে পিউর স্হান পুর্ন করবে পিউরা বলির পাঠী হয়েই থেকে যাবে।
২| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:৫০
জাহিদ হাসান বলেছেন: হেইচ্চো................
৩| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:১৩
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: ওকে ব্যবহার করা শেষ তাই ছুঁড়ে ফেলেছে যেমন ব্যবহার করেছিল ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে।
৪| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:১৭
ইলি বলেছেন: পাপিয়াকে আমার ভালো লাগে।
৫| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:২০
নেওয়াজ আলি বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: পাপিয়াকে বেকসুর খালাস দেওয়া হোক।
পাপিয়া কে ক্ষমা করে দেওয়া হোক।
পাপিয়াকে আমার ভালো লাগে।