নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্তমান সময়ের বিশ্বব্যাপী আতংকের নাম কোভিট-১৯ যারা করোনা ভাইরাস নামে পরিচিত। গেল ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের ইউহান শহড়ে প্রথম এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলে। চীনকে রীতিমতো ধরাসাই করে ভয়াবহ করোনা মৃত্যুরুপে ইউরোপ আামেরিকা অস্ট্রেলিয়ার সহ সারাবিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পরেছে। ইউরোপের দেশ ইতালি আজ এক ভুতুরে রাষ্ট্রে পরিনত হয়েছে। করোনা তন্ডবে আমাদের বাংলাদেশ ও আক্রান্ত। বাংলাদেশে করোয়ান কত জন আক্রান্ত তার সঠিক হিসাব সরকারে কাছে আছে বলে আমার মনে হয় না তবে আমি যখন এই লেখা লিখছি তখনকার সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) করোনা ভাইরাসে দশ জনের আক্রান্তের খবর দিয়েছেন। যাদের সবাই বিদেশ ফেরত ও তাদের পরিবারের সদস্য। করোনা আতংকে ইতোমধ্যে আমাদের সরকার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষনা করেছেন। বিদেশীদের প্রবেশের ক্ষেত্রে কিছুটা কড়াকড়ি আরোপ করেছেন। অনেক দেশের সাথে বিমান যোগাযোগে ও কড়াকড়ি আরোপ করেছেন। তবে এই কড়াকড়ি আরোপ আমাদের দেশকে করোনার থাবা থেকে কতটুকু মুক্তি দিবে সেটাই বড় প্রশ্ন। সম্প্রতি ইতালি ফেরত প্রবাসীদের কোয়ারেন্টিনে রাখা নিয়ে আমরা চরম বিশৃঙ্খলা দেখেছি। এয়ারপোর্টের পাশের আসকোনা হজ্বক্যাম্পকে কোয়ারেন্টিন হিসেবে রাখার হয়েছে সেই সাথে গাজীপুরে পুবাইলের মেঘডুবি ২০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রকে কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। আশকোনা হজ্জ ক্যাম্পের দায়িত্বে আছেন বমাদের সেনাবাহিনী। ইতোমধ্যে চায়নার ইউহান ফেরত বাংলাদেশীদের সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে এখানেই রাখা হয়েছিল। করোনা আক্রান্ত বিভিন্ন দেশ থেকে আসা আমাদের প্রবাসীদের বিমানবন্দরে শারীরিক পরীক্ষা ও তথ্যফরম পুরনের পর সন্দেহের বাহিরে থাকা প্রবাসীদের দুইসপ্তাহের জন্য হোম কোয়ারেন্টিন করার শর্তে ছাড়া হচ্ছে। এখানে প্রশ্ন বিদেশ ফেরত একজন প্রবাসী আদৌ কি সঠিক ভাবে হোম কোয়ারেন্টিন পালন করছেন? না মোটে ও না। কোয়ারেন্টিন কি এবং কিভাবে করতে হয় তা কত জনের জানা আছে। আমরা বাংলাদেশের মানুষ খুবই আবেগ প্রবন তাই দীর্ঘদিন প্রবাসজীবন কাটিয়ে বিপদ মাথায় নিয়ে দেশে ফেরার পর আপন জনের কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখা খুবই কষ্টকর। আর তাই আমরা দেখছি শুধু মাত্র বিদেশ ফেরত ও তাদের পরিবারের সদস্যরাই করোনায় আক্রন্ত হয়েছেন। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে জানতে পারলাম অনেক বিদেশ ফেরত হোম কোয়ারেন্টিনের নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে হাট বাজার মেলা আত্মীয়ের বাড়ী ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন। ইতোমধ্যে কয়েক জনকে আইন ভঙ্গের জন্য জরিমানা করেছেন প্রশাসন আবার কোথায় এলাকার মানুষ অবরুদ্ধ করে রেখেছেন বিদেশ ফেরতদের। আমাদের প্রবাসীদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে তাদের দ্বারা আমাদের দেশের মানুষের কোন ক্ষতি হউক এমনটি কারোই কাম্য নয়। যেহেতু করোনা একটা ছোয়াচে ভাইরাস তাই তাদের অবশ্য সর্তক হতে হবে। যাদেরকে হোম কোয়ারেন্টিনে করতে বলা হচ্ছে তাদের অবশ্যই যথাযথ পদ্ধতি মেনেই হোম কোয়ারেন্টিন করতে হবে। হয়তো তার অসর্তকতার জন্য তার পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রে করোনা মহামরি রুপধারন করতে পারে। করোনা নিয়ে আমাদের সরকারের কর্তাব্যক্তিরা বিভিন্ন কথাবলে আসছেন। সবার ই একই কথা আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায়। কিন্তু বাস্তবে তা কতটুকু সেটাও একটা প্রশ্ন। কয়দিন আগে কানাডা ফেরত নাজমাকে পেটের ব্যাথায় বিনা চিকিৎসায় মরতে হয় খোদ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মত জায়গায়। গ্যাস্ট্রোইন-টেস্টাইনাল জটিলতা নিয়ে কানাডা ফেরত শিক্ষার্থী নাজমা আমিন ভর্তিহন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সরা যখন জানতেপারেন নাজমা কানাডা থেকে এসেছেন তথনই চিকিৎসক নার্স এমন কি রোগীরা ও ওয়ার্ড ত্যাগ করেন। পরে একজন ডাক্তার মাক্স গ্লাভস পরে বীরের বেশে এসে নাজমাকে এ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন পুশ করেন তার পরই মৃত্যু হয় নাজমার। কানাডা থেকে আসার কথা শুনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ কতৃপক্ষ আইইডিসিআর কে অবহিত করলে সেখানকার কতৃপক্ষ নাজার শরীরের নমুনা সংগ্রহ করেন। পরে আইইডিসিআর পরীক্ষার পর নাজমার শরীরে করোনার কোন লক্ষন পান নি।
করোনা ভাইরাস ও এর প্রতিষেধক নিয়ে সারা বিশ্বে আজ গুজবের কমতি। প্রতিটি মহামরি বা মহাদুর্যোগেই গুজবের ডাল পালা গজায়। এই গুজব কখনো কখনো গজবে ও রুপ নেয়। যেমন বাংলাদেশের মুফতি ইব্রাহিম ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসের স্বাক্ষাৎকারের একটি ওয়াজ ভাইরাল হয়েছে। ইতালি প্রবাসী মামুন মারুফ স্বপ্নযোগে করোনা ভাইরাসের সেই স্বাক্ষাৎকার নিয়েছেন আার তা বর্ননা করেছেন মুফতি ইব্রাহিম। তার ভাস্য মতে চীনের উইঘুরের মুসলিম এক নারীরকে মুখ সেলাই করে চীনা সৈন্যরা যৌন নির্যাতন ও হত্যা করার জন্য ঐ নারীর অভিশাপের করনে চীনাদের উপর করোনার গজব নাযিল হয়। যা সমগ্র বিশ্বের ইসলাম বিদ্বেষীদের উপর বিরাট প্রভাব পরবে। তবে বাংলাদেশ সহ মুসলিম বিশ্বে এর তেমন কোন প্রভাব পরবে না । মুফতি ইব্রাহিমের ভাষ্যনুযায়ী বাংলাদেশে শুধু মাত্র দুর্নীতিবাজ ঘুষখোররাই করোনায় আক্রান্ত হবে। মুফতি ইব্রাহিম সেই সাথে করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধকের ফর্মুলা ও প্রদান করেছেন যা হলো 1.Q7+6=13 । বাংলাদেশের অনেক হোমিওপ্যাথিক ঔষধের দোকান রাস্তার ধারের কবিরাজেরাতো ইতোমধ্যে করোনার প্রতিষেধক বিক্রি শুরু করে দিয়েছে।
করোনাভাইরাস থেকে বাঁচার উপায় নাকি জেনে গেছে ভারতের হিন্দু মহাসভা! তাদের দাবি, করোনাভাইরাস সারাতে পারে একমাত্র গোমূত্র! ভারতের বিখ্যাত ইয়োগা গুরু রামদেব নাকি ইতোমধ্যে অতিরিক্ত গোমুত্র পান করে নাকি হাসপাতে ভর্তি। ভারতে এখন ইতোমধ্যে গোমুত্র পানের আসর চলছে। বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হচ্ছে গোমুত্র। যুক্তরাজ্যের এক চাইনিজ নাকি মধু সাথে মদ মিশিয়ে খেয়ে করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পেয়েছে।
রাশিয়া এখনো করোনা আক্রমনের কথা শুনা যাচ্ছেনা এর কারনে অনেকে বলছেন রাশিয়া করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে আবার অনেক রাশিয়ান বলছেন ভোদকাপায়ীরা করোনায় আক্রান্ত হয় না। ভারতের আদালতে একজন ভারতীয় করোনা ছরানোর দায়ে চীনের বিরুদ্ধে ভারতীয় আদালতে মামলা করেছে। চীনপর অভিযোগ আমারিকা চীনের অর্থনীতিকে ধ্বংসকরার জন্য করোনা ছড়িয়েছে। ইউরোপীয় দেশগুলির অভিযোগ বিশ্বঅর্থনীতিকে ধ্বংসকরে অর্থনৈতিক মোড়ল হিয়ার জন্য চীন করোনা ভাইরাসকে সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র করোনা প্রতিষেধক টিকা বের করতে সক্ষম হয়েছে। জেনিফার হ্যালার নামে এক নারীর শরীরে ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলক ভাবে করোনা প্রতিষেধক ঐ টিকা প্রয়োগ ও করা হয়েছে। জানিনা এর ফলাফল কি হবে?
ইতোমধ্যে যেহেতু আমাদের দেশ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে তাই আমাদের সাবাইকেই এই ব্যাপারে দায়িত্বশীল হতে হবে। সরকারের একার পক্ষে করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব না। তাই আমাদের উচিত হবে সবাইকে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সর্তকতার সাথে করনীয় ও বর্জনীয় বিষয় গুলি মেনে চলা। করোনা ভাইরাস যেহেতু একটি বৈশ্বিক সমস্যা তাই এ নিয়ে কোন গুজব বা আতংক ছাড়ানো কোন ভাবেই ঠিক হবে না। বরং আমাদের জনসাধারনের উচিত হবে সঠিক তথ্য দিয়ে সরকার প্রশাসনকে সহযোগিতা করা আর সরকারের উচিত হবে সঠিক তথ্য দিয়ে সাধারন মানুষের মনে জন্ম নেয়া ভয় দুর করা। সরকারের সঠিক তথ্যই এই কঠিন সময়ে জাতিকে নানান গুজবের হাত থেকে রক্ষাকরতে পারে।
২| ১৮ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৯:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: আতংক আর সচেতনতা করতে করতেই বাঙ্গালী মরতে শুরু করবে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১২:৩৫
নেওয়াজ আলি বলেছেন: আল্লাহ তুমি দুনিয়ার সব মানুষকে হেফাজত করো।