নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ও বলতে চাই !

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন

ব্লগিং হউক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার ।

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

নৈতিক কারনেই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ করা জরুরি

৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:৪৬

গত কয়েক দিন যাবত বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন সহ সর্বস্তরের যেই আলাপটি আলোচিত তা হলো আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অপসারন। যদিও ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর অনেকেরই ধারনা ছিল হয়তো রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন নিজেই নিজেকে সকল সমালোচনার উর্ধ্বে রেখে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে নিজের আত্মমর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখবেন। কিন্তু আমরা আর তেমটি দেখলাম না। এখন দেখছি মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনার কমতি নাই। ইতোমধ্যে আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি পদত্যাগের দাবীতে ছাত্র-জনতা আন্দোলনে রাজপথে নেমেছেন। মাঝ রাতের সেই আন্দোলনকে থামাতে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সাউন্ড গ্রেনেড পর্যন্ত নিক্ষেপ করতে হয়েছে। ছাত্র-জনতার কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে ও ভর্তি হয়েছেন। যা এই মুহুর্তে সাধারন দেশবাসী কারোই কাম্য নয়। কারন বর্তমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন আমাদের ছাত্র-জনতার গনঅভ্যুত্থানে ফসল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যার প্রধান হিসেবে আছেন বিশ্ব বরেণ্য ব্যক্তিত্ব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস। ইতোমধ্যে আমাদের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিপাকে ফেলতে পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ও তার দেশী-বিদেশী দোসররা নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এই ষড়যন্ত্রকালীন সংকটময় মুহুর্তে সাধারন মানুষ কোন ন্যায্য দাবী নিয়ে রাজপথে নামা হবে " মরার উপর খাঁড়ার ঘা " এর মত। আর জনগন রাজপথে নামার সুযোগে পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার দোসররা সেখানে নিজেদের অবস্থান শক্ত করে সরকারের অবস্হান দুর্বল করার চেষ্টায় সর্বশক্তি নিয়োগ করবে। যার প্রমান ইতোমধ্যে আমরা বেশ কয়েকবার পেয়েছি। সর্বশেষ প্রমান সদ্য নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের কতৃক ২৩ অক্টোবর এইচএসসি পরীক্ষার ফল বাতিলের দাবিতে জোরপূর্বক সচিবালয়ে প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির পায়তারা।

রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন আওয়ামী জোট সরকার কতৃক মনোনীত রাষ্ট্রপতি। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে অভিযোগের কমতি নাই। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পূর্বে তিনি ছিলেন জেলা ও দায়রা জজ এর পর দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার ছিলেন। ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ কতৃক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড দখল হওয়ার পর বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে ব্যাংকটির পরিচালক করা হয়েছিল পরে তিনি ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেই থেকেই বাংলাদেশ ব্যাংকিং জগতের সেরা ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড লুটের রাজ্যে পরিনত হয়। আজ ব্যাংকটির করুন দশার জন্য লাখ লাখ গ্রাহক এক ধরনের নিঃস্ব।



রাজনৈতিক জীবনে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ২২তম জাতীয় পরিষদে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান পদে ত মনোনীত হন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের অন্যতম কাণ্ডারি হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন পাবনা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতিও। এর ই ফলশ্রুতিতে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার অত্যন্ত বিশ্বস্ততার পুরস্কার স্বরুপ তাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে মনোনয়ন দিয়ে দেশের বাইশতম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করে আনেন।



রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে বিদেশে বিনিয়োগকারী হিসেবে পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি পারমিট নেওয়া অভিযোগ এনে বিভিন্ন প্রমাণাদি সহ কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী জুলকারনাইন সায়ের খান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে ভীষন আলোচনার সৃষ্টি করলে ও অজানা কারনে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যাপারটাকে কোন গুরুত্ব ই দেয়নি। এই নিয়েও জনমনে নানান প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে। সম্প্রতি এক আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, " বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হতে হলে তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হয়। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন সিঙ্গাপুরের নাগরিক। আমরা শুনেছি তিনি বার্বাডোসেরও নাগরিক হয়েছেন। অন্য দেশের নাগরিক কীভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হয়? " জানিনা কোন প্রমানের ভিত্তিতে বিএনপি নেতা ড. আসাদুজ্জামান রিপন এমন মন্তব্য করেছেন? তবে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে এমন বির্তকের জরুরি নিষ্পত্তি জন্য বর্তমান সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।



সম্প্রতি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরীর সাথে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের একান্ত আলাপচারিতায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের বিষয় আসলে রাষ্ট্রপতি বলেছিলেন, " আমি শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু আমার কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়তো সময় পাননি। ৫ই আগস্ট সকাল সাড়ে দশটায় বঙ্গভবনে ফোন এলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে। বলা হলো, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে আসবেন মহামান্য প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য। এটা শুনেই প্রস্তুতি শুরু হলো বঙ্গভবনে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফোন এলো তিনি আসছেন না। " রাষ্ট্রপতির সাথে মতিউর রহমান চৌধুরীর ব্যক্তিগত আলাপচারিতা আর ব্যক্তিগত থাকেনি। পরবর্তীতে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সাপ্তাহিক রাজনৈতিক ম্যাগাজিন " জনতার চোখ " এ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য প্রকাশিত হয়। এর পর ই রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্য নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠে।



রাষ্ট্রপতির এমন মন্তব্যের পর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন মিথ্যাচার করেছেন বলে মন্তব্য করেন। তিনি আরো বলেন, " আমার কথা হচ্ছে রাষ্ট্রপতি যে বলেছেন-উনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি। এটা মিথ্যাচার। এটা উনার শপথ লঙ্ঘনের শামিল। উনি নিজেই ৫ই আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে পেছনে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী উনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন। " তিনি আরও বলেন, " আজকে যদি উনি ( রাষ্ট্রপতি) বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগপত্র দেননি। এত দিন পরে, প্রায় আড়াই মাস পরে, তাহলে এটা এক ধরনের স্ববিরোধিতা হয়। উনার শপথ লঙ্ঘন হয় এবং এই পদে থাকার যোগ্যতা ওনার আর আছে কি না প্রশ্ন আসে। কারণ আমরা জানি বাংলাদেশের সংবিধানে বলা হয়েছে, শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা না থাকলে বা গুরুতর অসদাচরণ করলে রাষ্ট্রপতি হিসেবে থাকতে পারে কি না সেটা নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আমাদের দেশের সংবিধানে আছে। "



ড. আসিফ নজরুলের এমন মন্তব্যের পর ই দেশের সাধারন জনগনের একটি বিরাট অংশ মনে করেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে তার পদ থেকে সরে দাড়ানো উচিত। আর এই দাবী নিয়ে গত ২২ অক্টোবর সন্ধ্যার পর থেকে শত শত ছাত্র-জনতা বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন এমকি তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের প্রতিহত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড পর্যন্ত নিক্ষেপ করতে বাধ্য হন এতে বেশ কয়েক জন আন্দোলনকারী আহত হন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি দিয়ে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। সেই দাবির একটি ছিল ছাত্রলীগকে সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করা। যদিও ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার তাদের এই দাবিপূরণ করে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সংবাদ মাধ্যমকে বলেছিলেন, " রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা থাকা না-থাকার বিষয়ে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সমঝোতার ভিত্তিতেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হবে না। " এর পর আমরা দেখলাম তরিঘরি করে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের তিন নেতা প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড.মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁদের অবস্থান পরিস্কার করেলেন যে তারা এই মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চান না। একই দিন বিএনপির আরেক ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু রাষ্ট্রপতির সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বললেন , " রাষ্ট্রপতি ইতিমধ্যে বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানকে অপমান করেছেন এবং স্বৈরাচারীদের সাহস জুগিয়েছেন। তাকে বিদায় না করলে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।" রাষ্ট্রপতির পদ থেকে মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে সরানোর দাবির পক্ষে ঐকমত্য তৈরির জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার অংশ হিসেবে গত ২৬ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা। এই বৈঠকের পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদমাধ্যমকে বলেন, " বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতাদের বক্তব্য তাঁরা শুনেছেন, কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে তাঁদের দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেই বৈঠকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবেন।" রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে তার পদ থেকে অপসারণ বা পদত্যাগে বাধ্য করার প্রশ্নে বিএনপির একেক নেতা একেক মন্তব্য ই প্রমান করছে বিএনপি এখন পর্যন্ত তাদের দলকে সুশৃঙ্খল ভাবে গুছিয়ে নির্দিষ্ট প্লাটফর্মে এনে দাড় করাতে পারে নাই। বিএনপি যে এখনো অগোছালো ভাবেই পরিচালিত হচ্ছে তার আরো একটি প্রমান হলো ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের অবসানের পর বিএনপির তৃনমুল থেকে মধ্যম সারির কিছু নেতা আওয়ামিলীগকে অনুসরণ করে আবার কোথাও কোথাও আওয়ামিলীগের অংশীদার হয়ে দখল চাঁদাবাজি সহ নানান অপকর্মে লিপ্ত হওয়া। যদিও বিএনপির হাইকমান্ড বিশেষ করে জনাব তারেক রহমান এই ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রেখে দলের ভিতর থাকা অপরাধীদের দলীয় ভাবে শাস্তির ব্যবস্হা করে যথাযথ ভাবে দলকে শৃংখলার মধ্যে পরিচালনা করতে সুদূর লন্ডনে বসে যথাসাধ্য চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপির বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা ও বিএনপির কাছে আমাদের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা নিয়ে হয়তো আগামীতে একটি লেখা লিখবো।



এবার আসি রাষ্ট্রপতির অপসারণ বা পদত্যাগের কথায়। রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের আইনবিভাগ, শাসনবিভাগ ও বিচারবিভাগের সকল শাখার আনুষ্ঠানিক প্রধান সেই সাথে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক অর্থাৎ কমান্ডার ইন চিফ। যার মানে রাষ্ট্র সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি হলেন রাষ্ট্রপতি যাকে আমরা মহামান্য বলে সম্বোধন করি। তার মানে রাষ্ট্রপতি পদটি শুধু মাত্র সম্মান ও শ্রদ্ধার ই জায়গায়। তিনি দলীয় মনোনয়নে রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেও আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি দলীয় বৃত্তের বহিরে এসেছে জনগনের হতে পারেন নাই। এই অভিযোগ শুধুমাত্র বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে এমনটি নয় পূর্বের কোন রাষ্ট্রপতি দলীয় বৃত্তের বাহিরে আসতে পারেন নাই। বরং অনেকেই দলীয় কর্মীর মত হয়েই ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত দলীয় কর্মীদের মুক্ত করে কম সমালোচিত হন নাই। জনগন যখন নানান ন্যায়সঙ্গত দাবী নিয়ে রাজপথে তখন কোন রাষ্ট্রপতি জনগনের কথায় কান দেন নাই। দেশে যখন ভোটাধিকার বাকস্বাধীনতা হনন, গুম, খুন সহ নানা অপকর্ম চলছিল তখন আমাদের কোন মহামান্য রাষ্ট্রপতি জনগনের পক্ষ হয়ে রাষ্ট্রের ক্ষমতাসীনদের জনগনের ন্যায়সঙ্গত দাবী ও সরকার কতৃক সংগঠিত নানান অপকর্মের জন্য সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করা বা কখনোই সরকারের কানে দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন নাই। অথচ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে রাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনায় নেওয়াই রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব ও কর্তব্য।

ইতোমধ্যে আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে নানান অভিযোগ। রাষ্ট্রপতির প্রতি সাধারন জনগনের আস্হা কতটুকু তা অবশ্যই ভাবার ব্যাপার। ইতোমধ্যে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ নিয়ে বিভিন্নজন বিভিন্ন ব্যাখা দিচ্ছেন। কেউ সংবিধানের দোহায় তুলছেন কেউবা আবার গন অভ্যুত্থানের। গত ৫ আগস্ট সংগঠিত ছাত্র- জনতার গনঅভ্যুত্থান হাজারো মানুষের জীবন ও কয়েক হাজার মানুষের পঙ্গুত্বের বিনিময়ে সংগঠিত গনঅভ্যুত্থানে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা সেই সাথে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয় স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা। ৫ আগস্টের গনঅভ্যুত্থান কোন সংবিধান মেনে হয় নাই। এমনকি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও সংবিধানের আওতায় হয় নাই বা সাংবিধানিক সরকার নয়। তবে এই সরকারকে ইতোমধ্যে একটি সাংবিধানিক রুপ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই এই মুহুর্তে রাষ্ট্র ও জনগণের প্রয়োজনে ও দাবীর প্রেক্ষিতে সব কিছুই যে সাংবিধানিক ভাবে হবে তা কাম্য নয়। আর যেই সংবিধানের কথা বলা হচ্ছে সেই সংবিধান কি আমাদের সাদারন জনগনের আশা আকাংখা প্রতিফলনের সংবিধান? না মোটেও না এই সংবিধানই সংশোধনের মাধ্যমে আমাদের ভোটাধিকার হরন করেছে। আর এই সংবিধানকে সংস্কার বা পুনর্লিখন করে জনগনের আশা আকাংখার একটি সংবিধান হবে এটার জন্যই এত আত্মত্যাগ। যাই হউক আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতি সংবিধানের কোন ধারার কোন অনুচ্ছেদের বলে পদত্যাগ করবেন সেটা বিবেচ্য বিষয় না। আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন জনগনের দাবীর প্রতি শ্রদ্ধারেখে নিজের বিবেকের তাড়নায় রাষ্ট্রপতি পদথেকে পদত্যাগ করে জাতির জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবেন।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:০১

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: সংবিধান বোঝেন? পাকনামি করার আগে একটু পড়ালেখা করুন। স্বয়ং বিএনপিও রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চাচ্ছে না, কেন চাচ্ছে না মগজ খাটিয়ে বোঝার চেষ্টা করুন।

২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:১১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: লেখাটা কার? অনেকেই এ লেখার গুরুত্ব বুঝবে না। পরিণত লেখা।

কিন্তু রাষ্ট্রপতির অপসারণের ব্যাপারে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো একমত হতে পারে নি, বৃহত্তম দল বিএনপিও রাষ্ট্রপতির অপসারণে সম্মত নয়। উপদেষ্টা পরিষদেও ঐক্যমত হয়েছে বলে মনে হয় না, কারণ, তারা একমত হলে রাষ্ট্রপতি অপসারণের আন্দোলনকে প্রতিহত করা হতো না। এতদিনে রাষ্ট্রপতির অপসারণ কার্যকর হয়ে যেত।

রাষ্ট্রপতির অপসারণ একটা জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। দেশ-বিদেশের সমালোচনা ও গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি তখন সামনে চলে আসবে। সংবিধান তখন অকার্যকর হয়ে যাবে। কিন্তু এতদিনে প্রধান উপদেষ্টাসহ সবার শপথ হয়েছে সংবিধান অনুযায়ী। জগাখিচুড়ি অবস্থার সৃষ্টি হবে। ০৫ আগস্টের সময়েই রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করা হলে সেটা গ্রহণযোগ্যতা পেত। এখন পাবে না, ৩ মাস পর। রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হলে কোন বিধান অনুসরণ করে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হবে, এবং অন্তর্বর্তী সরকার কাজ চালিয়ে যাবে, তা নিয়ে বাঁধবে বিরাট ক্যাচাল। তখন সরকার ঘর সামলাবে নাকি অন্য কাজে ব্যস্ত হবে, সেটা খুব ভাববার বিষয়।

মাননীয় আসিফ নজরুল স্যার এই বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন।

রাষ্ট্রপতি অপসারণের বিষয়টি স্রেফ চেপে যাওয়াই এখন বুদ্ধিমানের কাজ।

৩| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:২৪

ঢাবিয়ান বলেছেন: বিএনপির বর্তমান ভুমিকা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও ন্যক্কারজনক। সংবিধান এর অজুহাত দিয়ে তারা রাস্ট্রপতি অপসারন করতে না চেয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে যে , তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে কোন সংস্কারই আসলে করতে দিতে চায় না। নিএনপি নেতাদের মুখে তাই নির্বাচন ছাড়া আর কোণ কথা নাই। ক্ষমতায় না বসতেই তাদের রাজকীয় চালচলন ও চাঁদাবাজি ডাকাতি শুরু হয়ে গেছে। ১৫-২০ জন সফরসঙ্গী নিয়ে খালেদা জিয়া লন্ডনে যাচ্ছে !!!! কোটি কোটি টাকার এই বিলাশবহুল সফরের খরচ তাদের কে দিল?

এত এত তরুনের মৃত্যূ যাদের মন মানসিকতা ও জীবন যাত্রায় বিন্দুমাত্র পরিবর্তন আনে না , সেই দলের কারনে অন্তর্বর্তী সরকার কোনভাবেই এই রাস্ট্র্রপতি ইস্যূ্তে পিছিয়ে যেতে পারে না। বিপ্লব পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের ভুলে গেলে চলবে না যে , বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুনেরা রক্ত দেয়নি।

৪| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১১:২৯

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: রাজনীতিতে আবার নৈতিকতা! হাঃ হাঃ!
হাসাইলেন ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.