নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চোখের সামনে যেকোন অসঙ্গতি মনের মধ্যে দাগ কাটতো, কিশোর মন প্রতিবাদী হয়ে উঠতো। তার বহিঃপ্রকাশ ঘটতো কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে। ক্ষুধা ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে, নির্যাতন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কবিতা। তারপর গল্প, উপন্যাস। এ যাবত প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা-২১ টি।

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান

আমি পেশায় একজন প্রকৌশলী। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে লেখালেখির শুরু। আমার প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ:কাব্য: ০১। ছোট্ট একটি ভালোবাসা উপন্যাস: ০২। ভ্যালেন্টাইনস্ ডে (ভালোবাসাবাসির স্মৃতিময় দিনগুলি) ০৩। অবশেষে...(অবশেষে হৃদয়ের টানে) ০৪। বন্ধন (যে বন্ধন শুধু কাছেই টানে) ০৫। স্বপ্ন (যাদের স্বপ্ন ভেঙে গেছে) ০৬। আঁচলে...(যাদের ভালোবাসা আঁচলে বন্দি) ০৭। গডফাদার-০১(দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি) ০৮। গডফাদার-০২ ০৯। গডফাদার-০৩ ১০। দুর্নীতিবাজের ডায়েরি (একজন দুর্নীতিবাজের আত্মকাহিনী) ১১। দাগ (এই দাগ হৃদয়ের, এই দাগ সমাজের) ১২। প্রিয়ন্তী (সংস্কারের প্রাচীর ভাঙা এক তরুণী) ১৩। তবুও আমি তোমার (একটি অসম প্রেমের কাহিনী) ১৪। খুঁজে ফিরি তারে (যে হৃদয় শুধু তাকেই খুঁজে) ১৫। সেই ছেলেটি (কিশোর উপন্যাস) ১৬। অপেক্ষা (পথ চেয়ে থাকা এক তরুণীর কাহিনী) মোবাইল-০১৭১৮১৫৭০৭৬ email:[email protected]

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

গডফাদার-৭৫

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৪২

কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ কালা মাহবুবের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এলো কালা মাহবুবের সঙ্গে মাদক ব্যবসার সংশ্লিষ্টতার কথা। কালা মাহবুবের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগী লম্বু নাসির জিজ্ঞাসাবাদে প্রসঙ্গ এড়াতে এবং চতুরতায় বেশি দক্ষ তার মুখ থেকে কথা বের করা পুলিশের পক্ষে বেশ কঠিন হলো। অথচ কালা মাহবুবের যে কোন বিষয় জানতে লম্বু নাসিরের মুখ থেকে কথা বের করা একান্ত প্রয়োজন।

ওসি সাহেব লম্বু নাসিরকে হাজতখানা থেকে একটা কক্ষে নিয়ে একটা টুলে বসতে দিলেন। তাঁর সঙ্গে আরো তিনজন কন্সটেবল, পাশে লম্বু নাসিরের বক্তব্য রেকর্ডের জন্য একটা টেপ রেকর্ডার রাখা আছে। ওসি সাহেব লম্বু নাসিরের মুখোমুখি একটা চেয়ারে বসলেন। লম্বু নাসিরের চোখে-মুখে আতঙ্ক আর ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ওসি সাহেবের হাতে একটা লাঠি ছিল সেটা লম্বু নাসিরের থুতনিতে দিয়ে উঁচু করে গম্ভীর স্বরে বললেন, লম্বু কালা মাহবুবকে কে মেরেছে?

লম্বু নাসির বলল, আমি জানি না স্যার, আমি কিচ্ছু জানি না।

তবে কে জানে?

আমি জানি না স্যার।

ওসি সাহেব চাপাস্বরে বললেন, লম্বু তুই সব জানিস সহজভাবে বলবি না, বলে ওসি সাহেব লম্বু নাসিরকে লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে মারতে লাগলেন।

লম্বু নাসির কান্না ভাঙ্গা গলায় বলল, স্যার বলছি স্যার।

ওসি সাহেব থামলেন, বল।

ওস্তাদ আমাকে বলল, লম্বু আমি আজ একবার মার্কেটটা ঘুরে দেখব, তুই রাত দশটায় আমার সঙ্গে দেখা করবি। আমি রাত দশটায় ওস্তাদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে দেখা পাইনি তারপর আর দেখাই করতে পারিনি।

কীসের মার্কেট?

ফেন্সিডিল, হেরোইনের মার্কেট।

ওসি সাহেব কিছুটা অবাক হলেন, ফেন্সিডিল, হোরোইনের মার্কেট!

লম্বু নাসির কোন কথা বলল না।

ওসি সাহেব বললেন, বল বেটা কালা মাহবুব কোথায় হেরোইন পেত? সে নিজে ব্যবসা করত নাকি কারো হেরোইনের ব্যবসা দেখাশুনা করত?

ওস্তাদ মোস্তাকের হেরোইনের ব্যবসাকে শেল্টার দিত।

মোস্তাক কে?

আমি চিনি না।

স্যান্ট্রি এই বেটার হাত দু’টা পিছনে বাঁধ মুখে টেপ লাগাও, সোজা কথায় কাজ হবে না।

ওসি সাহেবের কথা মতো দুঞ্চজন কন্সটেবল নাসিরের হাত দুঞ্চটো পিছনে করে হ্যান্ড কাপ লাগিয়ে দিল এবং মুখে টেপ লাগিয়ে দিল।

ওসি সাহেব এলোপাতাড়িভাবে লম্বু নাসিরকে মারতে লাগলেন, মুখে টেপ লাগানো থাকায় নাসির কিছু বলতে পারল না। তার চিৎকার ধ্বনি চোখে-মুখে ফুটে উঠল। ওসি সাহেব নিজে মুখের টেপ খুলে দিয়ে বললেন, বল বেটা মোস্তাক কে?

স্যার আমি চিনি না।

মোস্তাক কার কার কাছে মাল পৌঁছে দিত।

স্যার আমি জানিনা।

ওসি সাহেব লম্বু নাসিরের পায়ের গিটে কয়েকবার লাঠির আঘাত করে বললেন, তুই সব জানিস যখন আরো পেদানী পড়বে তখন ঠিকই বলবি।

লম্বু নাসির কিছু বলল না, নীরবে মাথা নত করে বসে রইল।

ওসি সাহেব আবার লম্বু নাসিরের পায়ের গিটে কয়েকবার লাঠির আঘাত করতেই লম্বু নাসির বলল, ফেন্সি কুইন কোহিনুর, ফেন্সিকুইন লাইলী, ফেন্সী কুইন রহিমা আরো বিভিন্ন স্পটে।

তুই দেখিয়ে দিতে পারবি?

নাসির কোন কথা বলল না।

ওসি সাহেব বললেন, স্যান্ট্রি হারেস সাহেবকে আমার সালাম দাও।

একজন কনস্টেবল রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে হারেস সাহেবসহ রুমে প্রবেশ করলেন।

ওসি সাহেব দাঁত কড়মড় করে বললেন, হারেস সাহেব ওদের মুখ থেকে কিছু বের করতে পারলেন?

না স্যার ওরা মনে হয় কালা মাহবুবের তেমন ঘনিষ্ঠ না।

ঠিক আছে আপনি এই ক্রিমিনালটাকে নিয়ে যান ফেন্সি কুইন কোহিনুর, ফেন্সি কুইন লাইলী আর ফেন্সি কুইন রহিমাকে নিয়ে আসুন, বলে ওসি সাহেব তাঁর চেম্বারে গিয়ে বসলেন।

ওসি সাহেব চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে কালা মাহবুব হত্যাকাণ্ড, লম্বু নাসিরের বক্তব্য আর ফেন্সি কুইনদের সম্পৃক্ততা বিষয়ে চিন্তা করতে লাগলেন।

এমন সময় টেলিফোনের রিং বেজে উঠল।

ওসি সাহেব চমকে উঠে টেলিফোন রিসিভ করলেন, হ্যালো।

ওসি সাহেব কতদূর এগিয়েছেন?

স্যার আমি আগামীকাল সকালে আপনার কাছে রিপোর্ট করব।

আচ্ছা ঠিক আছে একটা কথা মনে রাখবেন এই কেইসটার উপর আপনার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।

জি স্যার।

তারপর ওসি সাহেব টেলিফোনের রিসিভার রেখে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। তাঁর সমস্ত শরীর থেকে ঘাম ঝরতে লাগল। এভাবেই চেয়ারে বসে তাঁর কয়েক ঘণ্টা কেটে গেল। তাঁর দু’চোখে ঘুম নেমে এলো। এমন সময় থানার সামনে পিকআপ এসে দাঁড়াল। হারেস সাহেব ফেন্সি কুইনদের হাজতে ঢুকিয়ে এবং লম্বু নাসিরকে পুরুষ হাজতে ঢুকিয়ে রেখে ওসি সাহেবের সামনে স্যালুট দিয়ে দাঁড়ালেন, স্যার।

ইউ আর স্যাকসেসফুল?

ইয়েস স্যার।

ওসি সাহেব গভীর রাত পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করলেন, জিজ্ঞাসাবাদে যে তথ্য বেরিয়ে এলো তাতে কালা মাহবুব হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত খুনী চিহ্নিত হলো না। কালা মাহবুবকে হিটলার ধরে নিয়ে গেছে ফেন্সি কুইন লাইলীর বাসা থেকে তারপর কালা মাহবুবের সঙ্গে আর কারো কথা হয়নি। এখন হিটলারকে ধরতে পারলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। হিটলার জামালের ক্যাডার তাকে ধরা ঠিক হবে কি না এ নিয়ে ওসি সাহেব কিছুক্ষণ ভেবে নিলেন তারপর ফোর্স পাঠালেন হিটলারকে ধরার জন্য। কিন্তু হিটলারকে ধরার খবর পুলিশ পৌঁছার আগেই হিটলার জেনে ফেলেছে হিটলারও সে খবর জানিয়েছে জামালকে।

হিটলারকে ধরার জন্য ফোর্স পাঠিয়ে ওসি সাহেব চেয়ারে বসে ছিলেন তাঁকে ক্লান্ত ও বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। তিনি যে কঠিন পরীক্ষায় পড়েছেন এবং তাঁর এ পরীক্ষায় সফল হওয়া যে সহজ হবে না সে কথাও তিনি বুঝতে পেরেছেন। তিনি বুঝতে পারছেন মাদক ব্যবসার প্রাধান্য বিস্তার নিয়ে কালা মাহবুবকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু হিটলারকে ধরা কিংবা ধরে রাখা সহজ কাজ না। এমনিভাবে ওসি সাহেবের মাথায় নানান চিন্তা ঘুরপাক করছিল। আবার টেলিফোনের রিং বেজে উঠল।

ওসি সাহেব টেলিফোন রিসিভ করে বললেন, হ্যালো।

অপরপাশ থেকে জামালের কন্ঠস্বর ভেসে এলো, ওসি সাহেব আপনি নাকি হিটলারকে এ্যারেস্ট করতে যাচ্ছেন?

ওসি সাহেব কোন কথা বললেন না।

আপনি কীভাবে নিশ্চিত হলেন কালা মাহবুব হত্যার সঙ্গে হিটলার জড়িত?

জিজ্ঞাসাবাদে হিটলারের নাম বেরিয়ে এসেছে। হিটলার মাহবুবকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার পর তাকে আর কেউ দেখেনি কারো সঙ্গে তার কথাও হয়নি। কাজেই মাহবুব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে হিটলারের সম্পৃক্ত থাকার নানাবিধ কারণ আছে। এখন হিটলারকে ধরতে পারলেই কালা মাহবুব হত্যার প্রকৃত খুনিদের সনাক্ত করা যাবে।

দেখুন আপনাকে আগেই বলেছিলাম যা করবেন ভেবেচিন্তে করবেন। এখন বলছেন হিটলারকে এ্যারেস্ট করবেন। কিন্তু হিটলারকে এ্যারেস্ট করার পরও যদি কালা মাহবুব হত্যার ক্লু খুঁজে না পান তখন আবার কাকে এ্যারেস্ট করবেন।

চলবে...

গডফাদার-০১

প্রিয়ন্তী-০১

দাগ-০১

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.