নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চোখের সামনে যেকোন অসঙ্গতি মনের মধ্যে দাগ কাটতো, কিশোর মন প্রতিবাদী হয়ে উঠতো। তার বহিঃপ্রকাশ ঘটতো কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে। ক্ষুধা ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে, নির্যাতন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কবিতা। তারপর গল্প, উপন্যাস। এ যাবত প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা-২১ টি।

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান

আমি পেশায় একজন প্রকৌশলী। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে লেখালেখির শুরু। আমার প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ:কাব্য: ০১। ছোট্ট একটি ভালোবাসা উপন্যাস: ০২। ভ্যালেন্টাইনস্ ডে (ভালোবাসাবাসির স্মৃতিময় দিনগুলি) ০৩। অবশেষে...(অবশেষে হৃদয়ের টানে) ০৪। বন্ধন (যে বন্ধন শুধু কাছেই টানে) ০৫। স্বপ্ন (যাদের স্বপ্ন ভেঙে গেছে) ০৬। আঁচলে...(যাদের ভালোবাসা আঁচলে বন্দি) ০৭। গডফাদার-০১(দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি) ০৮। গডফাদার-০২ ০৯। গডফাদার-০৩ ১০। দুর্নীতিবাজের ডায়েরি (একজন দুর্নীতিবাজের আত্মকাহিনী) ১১। দাগ (এই দাগ হৃদয়ের, এই দাগ সমাজের) ১২। প্রিয়ন্তী (সংস্কারের প্রাচীর ভাঙা এক তরুণী) ১৩। তবুও আমি তোমার (একটি অসম প্রেমের কাহিনী) ১৪। খুঁজে ফিরি তারে (যে হৃদয় শুধু তাকেই খুঁজে) ১৫। সেই ছেলেটি (কিশোর উপন্যাস) ১৬। অপেক্ষা (পথ চেয়ে থাকা এক তরুণীর কাহিনী) মোবাইল-০১৭১৮১৫৭০৭৬ email:[email protected]

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

গডফাদার-৭৮

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:৫৫

মধুকুঞ্জের কাজ যখন শেষ পর্যায়ে তখন জামাল মনে মনে ঠিক করল সমস্ত কাজ শেষ হলে উদ্বোধন করবে, আনুষ্ঠানিকভাবে নয় একেবারে নিরিবিলিভাবে। সেদিন এই মধুকুঞ্জে থাকবে বিদেশি মদ, একাধিক তরুণী যারা গ্লাসে মদ ঢেলে জামালকে আপ্যায়ন করবে। জামাল মদ আর মেয়ের সাথে এনজয় করে সারারাত কাটিয়ে দিবে। নিজের পরিকল্পনা মোতাবেক জামাল মনে মনে একটা তারিখ ঠিক করে রহমতকে অর্ডার দিল।

রশিদ সাহেব কাজ শেষ হওয়ার খবর জানানোর পর জামাল রশিদ সাহেবকে নিয়ে বের হলো। মধুকুঞ্জের গেটে যেতেই সিকিউরিটি স্যালুট দিল। জামালের বুকটা যেন গর্বে ভরে গেল। সে বীরদর্পে ভবনের দিকে এগিয়ে গেল পিছনে পিছনে রশিদ সাহেব চললেন। জামাল প্রথমে নীচ তলার প্রত্যেকটা রুম ঘুরে ঘুরে দেখল। তারপর সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠল, তার মনে হলো সে যেন ধীরে ধীরে আকাশ ছুঁয়ে দেখতে চলছে। জামাল দ্বিতীয় তলার একটা রুমে ঢুকলো। রুমের সঙ্গে এ্যাটাচ্‌ড বাথ, নদীর দিকে একটা বেলকনি। তখন পড়ন্ত বিকেল জামাল বেলকনিতে দাঁড়িয়ে একবার নীচের দিকে তাকাল ছোট নদীর স্বচ্ছ পানি বয়ে যাচ্ছে। জামাল কিছুক্ষণ নীচের দিকে তাকিয়ে রইল তারপর আবার ঘরে ঢুকতেই রশিদ সাহেব পকেট থেকে একটা চাবির গোছা বের করে দেয়ালের এক কোণায় প্লাষ্টারে হাত দিয়ে সরিয়ে দিলেন সেখানে চাবি ঢোকানোর একটা পয়েন্ট বের হলো। রশিদ সাহেব চাবি দিয়ে খুলতেই দেয়ালের একাংশ খুলে গেল। জামাল অবাক হয়ে গেল।

রশিদ সাহেব বললেন, ভাইজান দ্বিতীয় তলার সমস্ত ওয়াল ক্যাভিটি ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে।

জামাল জিজ্ঞেস করল, ক্যাভিটি ওয়াল জিনিসটা কি রশিদ সাহেব?

ক্যাভিটি ওয়াল মানে ফাঁকা দেয়াল। এই বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় আপনি যে দেয়ালগুলো দেখছেন আসলে এখানে দু’টা করে দেয়াল আছে। ভিতরে এবং বাহিরে একটা দেয়াল মাঝ খানে পাঁচ ইঞ্চি ফাঁকা আপনি যেভাবে বলেছিলেন ঠিক সেভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। প্রত্যেক রুমের সঙ্গে একটা করে বাথরুম একটা করে বারান্দা। উপরে ছাদের পরিবর্তে সবুজ রংয়ের ফাইবার গ্লাস লাগানো হয়েছে।

জামাল লক্ষ্য করল প্রত্যেক রুমে বক্স খাট ড্রেসিং টেবিলসহ প্রয়োজনীয় সব আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে। জামাল মনে মনে হেসে বলল, রশিদ সাহেব আপনার বুদ্ধি আছে, আপনি আমাকে অবাক করেছেন।

রশিদ সাহেব কিছু বললেন না, তাঁর বুকটা গর্বে ভরে গেল।

রশিদ সাহেব আমি যেদিন আপনাকে প্রথম মধুকুঞ্জ তৈরির কথা বলি সেদিন আমি নিজেও কল্পনা করতে পারিনি আপনি এত সুন্দর অপূর্ব করে মধুকুঞ্জ তৈরি করতে পারবেন। বলতে বলতে দু’জনে সিঁড়ি বেয়ে নীচে নামলো। সিঁড়ির নিচে একটা কংক্রিটের ঢাকনা নীচে কংক্রিটের তৈরী সুড়ঙ্গ। দু’জনে সিঁড়ি বেয়ে নীচে নামলো। মাটির নীচে কংক্রিটের তৈরী সুড়ঙ্গ। বেশ কয়েক মিনিট দু’জনে সুড়ঙ্গ বেয়ে চলল। কিছুদূর যাওয়ার পর একটা ছোট্ট রুম, জামাল ভিতরে ঢুকলো তার মনে পড়ল রশিদ সাহেবকে টর্চার সেল তৈরির কথা বলেছিল। জামাল কোন কিছু না বলে রশিদ সাহেবের পিছু অনুসরণ করল। আরো কিছুদূর যাবার পর সুড়ঙ্গ শেষ হলো।

রশিদ সাহেব বললেন, এই সুড়ঙ্গের উপর যে ঢাকানাটা আছে সেই ঢাকনার উপর মাটি দিয়ে ঘাস লাগানো হয়েছে। উপর থেকে কারো বুঝবার উপায় নেই যে, এটা একটা সুড়ঙ্গের উপরিভাগ, সুড়ঙ্গের ঢাকনা খোলার জন্য একটা লোহার হুক আছে যা ধরে টান দিলেই সুড়ঙ্গ থেকে বের হবার পথ পাওয়া যাবে।

জামাল গম্ভীরভাবে বলল, রশিদ সাহেব সবকিছু দেখে আমার মনে হচ্ছে আমরা একটা আশ্চর্যজনক কাজ করতে পেরেছি, কিন্তু-

জামালের মুখের দিকে তাকাতেই রশিদ সাহেব চমকে উঠলেন। জামালের দু’চোখ লাল হয়ে গেছে, বড় বড় চোখ করে ভয়ঙ্কর দৃষ্টিতে রশিদ সাহেবের দিকে তাকিয়ে বলল, রশিদ সাহেব এই বিল্ডিং আর সুড়ঙ্গ নির্মাণের সঙ্গে জড়িত সব লেবার মিস্ত্রী এই বিল্ডিংয়ের ভিতরে কি আছে তার সবকিছু জানে, তাই না?

রশিদ সাহেব মৃদু কন্ঠে বললেন, জি ভাইজান।

জামাল রশিদ সাহেবের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বলল, কিন্তু আমি যে কোন সাক্ষী বাঁচিয়ে রাখতে চাই না।

রশিদ সাহেব ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বললেন, আমি কাউকে বলব না ভাইজান।

কীভাবে বিশ্বাস করব?

ভাইজান অনেকদিন ধরে আপনার ফার্মে কাজ করছি। কোনদিন তো আপনার বিশ্বাস হারাবার মতো কাজ করিনি। প্লিজ আমাকে জানে মারবেন না।

জামাল রশিদ সাহেবের চোখের দিকে তাকাল, তার মায়া হলো অনেক দিনের স্টাফ তাছাড়া রশিদ সাহেব এতদিনেও বিশ্বাস ভঙ্গ করার মতো কোন কাজ করেনি।

জামাল পিস্তল নামিয়ে বলল, আপনাকে না হয় বিশ্বাস করলাম কিন্তু লেবার মিস্ত্রীরা যদি বলে বেড়ায়?

ভাইজান আপনার কাছে হেড মিস্ত্রীকে হাজির করে দিব আপনি বলে দিলে আর কেউ বলার সাহস পাবে না।

জামাল কিছুটা আশ্বস্থ হলো।

রশিদ সাহেবকে বললেন, চলুন রশিদ সাহেব বের হই।

দু’জনে সুড়ঙ্গ থেকে বের হলো ততক্ষণে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে।

জামাল রশিদ সাহেবকে বলল, রশিদ সাহেব আপনি এখন আসুন।

রশিদ সাহেবকে বিদায় দিয়ে জামাল দোতলায় তার বেডরুমের সঙ্গে বেলকনিতে একটা চেয়ার টেনে নিয়ে বসে রহমতকে মোবাইল করল।

ভাইজান।

হ্যাঁ আমি মধুকুঞ্জে, তোমার আয়োজন শুরু কর, বলে জামাল মোবাইল অফ করল।

পূর্ণিমার রাত বেলকনিতে চাঁদের আলো ছড়াচ্ছে। জামাল কিছুক্ষণ বেলকনিতে বসে রইল তারপর বারান্দায় একটা চেয়ার নিয়ে বসে রইল জামালের চোখের সামনে যেন ঐশীর ছবি ভেসে উঠল। ঐশী তার প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি তারপর একান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বে বাবা-মা’র অনুরোধ এবং সামাজিকতা রক্ষার জন্য জামালকে তার বাবা-মা অনন্যার সঙ্গে বিয়ে দেয়। অনন্যা তার বিবাহিতা স্ত্রী যার সঙ্গে জামালের অন্তরের কোন সম্পর্ক নেই শুধুমাত্র আইন আর সামাজিকতার বন্ধন আছে। অনন্যা সুন্দরী, ভদ্র, মার্জিত ব্যবহারের অধিকারিণী, তার কোন দোষ নেই কিন্তু ঐশী আর আরিফের বিয়ের পর থেকে জামাল বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, সে ক্রমাগত নারী বিদ্বেষী হয়ে উঠেছে, পণ্যের মতো ভোগ করতে থাকে একের পর এক নারীকে তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মদ।

মধুকুঞ্জের গেটের বাইরে দু’টা রিক্সা এসে দাঁড়াল। সিকিউরিটি রহমতকে আগে থেকেই চিনে কাজেই কিছু জিজ্ঞেস করল না।

জামাল দোতলার উপর থেকে বলল, রহমত চলে এসো।

রহমত এবং তার সঙ্গে দু’জন তরুণী উপরে এলো। জামাল একবার করে তরুণী দু’জনের আপাদমস্তক তাকাল। একটা মেয়ে ফর্সা লম্বা, মাংসল। চুলগুলো কাঁধ পর্যন্ত ঝুলানো। মেয়েটার চোখে চোখ পড়তেই জামালের সমস্ত শরীরে বিদ্যুত খেলে গেল। মেয়েটার বয়স বিশ কিংবা বাইশ বছর হবে। অপর মেয়েটার গায়ের রং শ্যামলা, স্লিম ফিগারের অধিকারিণী চোখ দু’টা আকর্ষণীয়, বয়স ষোল কিংবা সতেরর বেশি হবে না।

রহমত তার নিয়ে আসা মদ এবং কোল্ড ড্রিংসের বোতলগুলো পাশের রুমে রেখে বলল, ভাইজান আমি এখন আসি।

জামাল ইশারা করে বলল, আচ্ছা।

রহমত চলে যাবার পর জামাল মেয়ে দু’টাসহ তার বেড রুমে ঢুকলো।

চলবে...

গডফাদার-০১

প্রিয়ন্তী-০১

দাগ-০১

খুঁজে ফিরি তারে-০১

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:১৮

টাইটান ১ বলেছেন: ভালো লাগে পড়তে।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:১৪

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান বলেছেন: আমার লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আশা করি উপন্যাসটির শেষ না হওয়া পর্যন্ত সঙ্গে থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.