নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চোখের সামনে যেকোন অসঙ্গতি মনের মধ্যে দাগ কাটতো, কিশোর মন প্রতিবাদী হয়ে উঠতো। তার বহিঃপ্রকাশ ঘটতো কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে। ক্ষুধা ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে, নির্যাতন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কবিতা। তারপর গল্প, উপন্যাস। এ যাবত প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা-২১ টি।

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান

আমি পেশায় একজন প্রকৌশলী। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে লেখালেখির শুরু। আমার প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ:কাব্য: ০১। ছোট্ট একটি ভালোবাসা উপন্যাস: ০২। ভ্যালেন্টাইনস্ ডে (ভালোবাসাবাসির স্মৃতিময় দিনগুলি) ০৩। অবশেষে...(অবশেষে হৃদয়ের টানে) ০৪। বন্ধন (যে বন্ধন শুধু কাছেই টানে) ০৫। স্বপ্ন (যাদের স্বপ্ন ভেঙে গেছে) ০৬। আঁচলে...(যাদের ভালোবাসা আঁচলে বন্দি) ০৭। গডফাদার-০১(দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি) ০৮। গডফাদার-০২ ০৯। গডফাদার-০৩ ১০। দুর্নীতিবাজের ডায়েরি (একজন দুর্নীতিবাজের আত্মকাহিনী) ১১। দাগ (এই দাগ হৃদয়ের, এই দাগ সমাজের) ১২। প্রিয়ন্তী (সংস্কারের প্রাচীর ভাঙা এক তরুণী) ১৩। তবুও আমি তোমার (একটি অসম প্রেমের কাহিনী) ১৪। খুঁজে ফিরি তারে (যে হৃদয় শুধু তাকেই খুঁজে) ১৫। সেই ছেলেটি (কিশোর উপন্যাস) ১৬। অপেক্ষা (পথ চেয়ে থাকা এক তরুণীর কাহিনী) মোবাইল-০১৭১৮১৫৭০৭৬ email:[email protected]

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

গডফাদার-৭৯

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:১২

মাদক ব্যবসায় একক আধিপত্য বিস্তার করলেও মাঝে মাঝে মহল্লা ভিত্তিক কিছু উঠতি বয়সের তরুণ ফেন্সি কুইনদের বাসায় বাসায় চাঁদাবাজি করতো। আর ফেন্সি কুইনরা এসব অভিযোগ আমীর কিংবা হিটলারকে জানাতো তখনই হিটলার সিংহের মতো গর্জন করে উঠত, আমার উপর মাস্তানী করতে চায় কার এতবড় সাহস?

হিটলার তার বাবা-মা’র কথা জানে না, শৈশব থেকে বস্তিতে এক নিঃসস্তান দম্পতির আদর যত্নে বড় হয়েছে। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে সে প্রথমে টোকাইয়ের কাজ করতো, তারপর ছিঁচকে চোর, পরে একসময় শহর নিয়ন্ত্রণকারী টপটেররের দলে যোগ দেয়। শুরু হয় হিটলারের সন্ত্রাসী জীবন। কয়েক বছরের মধ্যে গ্রুপে সে সেকেন্ড ইন কমান্ডের স্থান দখল করে। তার ওস্তাদের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর হিটলার গ্রুপের শীর্ষস্থান দখল করে। তার সন্ত্রাসী জীবনে সে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে কত সম্মানী লোককে অপমান করেছে, কত বড় ব্যবসায়ীকে অপহরণ করেছে, টাকা দিতে অস্বীকার করায় হত্যা করেছে, তার একক আধিপত্য বজায় রাখতে কতজনকে গুলি করে মেরেছে তার ইয়ত্তা নেই । হিটলারের কোন রাজনৈতিক দল ছিল না। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকত তখন সে দলেরই কোন না কোন নেতার আশীর্বাদে সে অবাধে অপরাধ করত। শহরে সমস্ত অপরাধ জগত তার একক নিয়ন্ত্রণে ছিল। অথচ একদিন হিটলারের লাশ রাস্তায় পড়ে রইল। হিটলারের মৃত্যুর খবর শুনে জামাল তাৎক্ষণিকভাবে মন্ত্রীকে জানাল পুলিশ এবং জেলা প্রশাসনকে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করল। হিটলারের মৃত্যুতে জামাল যেমন তার একটা শক্তিশালী হাত হারালো তেমনি তার সমস্ত অপকর্মের একজন সাক্ষীও নিশ্চিহ্ন হলো। জামাল অভ্যাসবশতঃ চোখ বন্ধ করে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে রইল।

কিছুক্ষণ পর আমীর দরজা নক করে বলল, ভাইজান আসি।

এসো।

ভাইজান গালপোড়া সেলিম এসেছে।

আসতে বলো।

আমীর বের হয়ে গেল এবং গালপোড়া সেলিম ভিতরে ঢুকে সালাম দিয়ে দাঁড়াল, বস।

জামাল গম্ভীরস্বরে বলল, সেলিম কী মনে করে?

গালপোড়া সেলিম কাঁপা স্বরে বলল, বস আমাদের বাঁচান, পুলিশের অত্যাচারে আমরা বাসায় থাকতে পারছি না। এতদিন ওস্তাদ আপনার জন্য কাজ করল, ওস্তাদের কথায় আমরাও সব কাজ করেছি। ওস্তাদ অন্য গ্রুপের গুলিতে মারা গেল, পুলিশ ওদের না ধরে আমাদের বাসায় দিন রাত হানা দিচ্ছে, পুলিশের অত্যাচারে আমরা কেউ বাসায় থাকতে পারছি না। আপনি পাওয়ার পার্টির সেক্রেটারি অথচ বিরোধী দলের সেক্রেটারির গ্রুপের সন্ত্রাসীদের হাতে ওস্তাদ মারা গেল আবার পুলিশ আমাদেরকেই ধরার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। আপনি কিছু একটা করেন বস।

জামাল একটা নিঃশ্বাস টেনে বলল, হ্যাঁ হিটলার আমার ব্যবসার কাজে সহযোগিতা করতো। ও আমার খুব বিশ্বস্ত ছিল, তুমি নতুন কাজে দক্ষ হবে কি না জানি না। তার ওপর বিশ্বাসের ব্যাপার তো আছেই।

বিশ্বাস করুন বস আপনি আমাদের এ বিপদ থেকে বাঁচান আমরা সারাজীবন আপনার হয়ে কাজ করবো।

জামাল একবার গালপোড়া সেলিমের চোখের দিকে তাকাল তার চোখে-মুখে ভীতির ষ্পষ্ট ভাব ফুটে উঠেছে।

জামাল জিজ্ঞেস করল, কথা ঠিক রাখবে তো?

বিশ্বাস করুন বস আমার বাপ যদি একটা হয় তবে আমি সারাজীবন আমার ওস্তাদের মতোই আপনার সব কাজ করব শুধু আমি কেন আমার গ্রুপের সবাই আপনার হয়ে কাজ করবে, আপনার জন্য জীবন দিবে।

জামাল কলিং বেল এ টিপ দিতেই পিয়ন চলে এলো।

জামাল বলল, আমীরকে ডাক দাও।

আমীর ভিতরে ঢুকলো।

জামাল আমীরকে বলল, এখন থেকে গালপোড়া সেলিম তোমার সঙ্গে কাজ করবে। সেলিম একটা কথা মনে রাখবে আমার কাছে বিশ্বাস ঘাতকের স্থান নাই। কোনদিন যদি তোমার আচরণে বিন্দুমাত্র বিশ্বাসঘাতকতা দেখি তবে বুঝতে পাচ্ছ কি অবস্থা হবে?

জি বস।

জামাল গম্ভীরস্বরে বলল, তুমি বাইরে বস আমীর তোমাকে সব বুঝিয়ে দিবে।

সেলিম বাইরে চলে গেল।

জামাল আমীরকে বলল, আমীর হিটলারের মতোই সেলিমকে পেমেন্ট দিবে। খেয়াল রাখবে তোমার কাছে বিশ্বস্ত কিংবা ব্যবসার নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট মনে না হলে আমাকে জানাবে।

জি ভাই।

তুমি এখন সেলিমকে সবকিছু বুঝিয়ে দাও।

জি ভাই, বলে আমীর চলে গেল।

আমীর চলে যাবার পর জামাল ওসি সাহেবকে টেলিফোন করল, ওসি সাহেব।

জামাল ভাই বলুন।

আপনাকে আমি সদর থানায় এনেছি কি আমার লোকজনকে হয়রাণী করার জন্য?

এমন কথা বলছেন কেন জামাল ভাই?

হ্যাঁ হিটলারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আপনি অযথা তার সহযোগীদের হয়রাণী করছেন?

জামাল ভাই আসলে গুলিতে নিহত হিটলারের লাশ পাওয়া গেছে কাজেই চিহ্নিত করা যাচ্ছে না কে হিটলারকে খুন করেছে? তার কোন প্রতিপক্ষ নাকি তার সহযোগী কেউ?

দেখুন হিটলারের সহযোগীরা হিটলারের অত্যন্ত অনুগত ছিল তারা সবাই তাকে নিজের জীবনের চেয়ে বেশি ভালবাসতো। আর জনদরদী পার্টি ক্ষমতাসীন দলের সুস্থ রাজনীতিকে ব্যাহত করার জন্য সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করেছে তারাই ছিল হিটলারের প্রতিপক্ষ। আপনি থানায় ওসিগিরি করেন, কি যে করেন তা আপনিই ভাল জানেন?

ওসি সাহেবের বিনয়ী কণ্ঠস্বর ভেসে এলো, জামাল ভাই দেখুন আমি কি করি?

আপনি আর কি করবেন? আপনি তো জনদরদী পার্টিতে যোগ দিয়েছেন, তাই তো আপনাকে আর সদর থানায় রাখা যায় না।

জামাল ভাই বলুন আপনার জন্য আমি কী করতে পারি?

জামাল গম্ভীর স্বরে বলল, শুনুন হিটলারের কোন সহযোগীকে ডিসটার্ব করবেন না। প্রতিপক্ষের সব সন্ত্রাসীকে যতশীঘ্রই সম্ভব এ্যারেস্ট করুন। ওদের ধরে রিমান্ডে নিন দেখবেন হিটলার হত্যার রহস্য পেয়ে যাবেন।

জি ভাই, আমি দেখছি।

শুনুন দেখছি বললে হবে না, যা বললাম তাই করবেন। এর এক বিন্দু নড়চড় হলে সদর থানার মতো এক্ট্রাকটিভ পোস্টিং হারাবেন। আপনি জানেন এটা করার জন্য আমার ইচ্ছাই যথেষ্ট।

জি জামাল ভাই ঠিক আছে।

ওকে। আশা করি আমাকে আর কিছু বলতে হবে না, বলে জামাল টেলিফোন রেখে দিল।

চলবে...

গডফাদার-০১

প্রিয়ন্তী-০১

দাগ-০১

খুঁজে ফিরি তারে-০১

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.