নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চোখের সামনে যেকোন অসঙ্গতি মনের মধ্যে দাগ কাটতো, কিশোর মন প্রতিবাদী হয়ে উঠতো। তার বহিঃপ্রকাশ ঘটতো কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে। ক্ষুধা ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে, নির্যাতন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কবিতা। তারপর গল্প, উপন্যাস। এ যাবত প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা-২১ টি।

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান

আমি পেশায় একজন প্রকৌশলী। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে লেখালেখির শুরু। আমার প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ:কাব্য: ০১। ছোট্ট একটি ভালোবাসা উপন্যাস: ০২। ভ্যালেন্টাইনস্ ডে (ভালোবাসাবাসির স্মৃতিময় দিনগুলি) ০৩। অবশেষে...(অবশেষে হৃদয়ের টানে) ০৪। বন্ধন (যে বন্ধন শুধু কাছেই টানে) ০৫। স্বপ্ন (যাদের স্বপ্ন ভেঙে গেছে) ০৬। আঁচলে...(যাদের ভালোবাসা আঁচলে বন্দি) ০৭। গডফাদার-০১(দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি) ০৮। গডফাদার-০২ ০৯। গডফাদার-০৩ ১০। দুর্নীতিবাজের ডায়েরি (একজন দুর্নীতিবাজের আত্মকাহিনী) ১১। দাগ (এই দাগ হৃদয়ের, এই দাগ সমাজের) ১২। প্রিয়ন্তী (সংস্কারের প্রাচীর ভাঙা এক তরুণী) ১৩। তবুও আমি তোমার (একটি অসম প্রেমের কাহিনী) ১৪। খুঁজে ফিরি তারে (যে হৃদয় শুধু তাকেই খুঁজে) ১৫। সেই ছেলেটি (কিশোর উপন্যাস) ১৬। অপেক্ষা (পথ চেয়ে থাকা এক তরুণীর কাহিনী) মোবাইল-০১৭১৮১৫৭০৭৬ email:[email protected]

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

পুলিশ: যাঁহাই বেল তাঁহাই বোমা

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪৬

পুলিশেরই বা দোষ কী? প্রতিদিন সকালবেলা বাজার করার জন্য তার শ’তিনেক টাকার প্রয়োজন। এই উর্দ্ধমূল্যের বাজারে তিন’শ টাকারই বা কী দাম আছে। ছোট চাকুরী তাই চাহিদাও কম। মাত্র তিনশ টাকা। কিন্তু এই তিন’শ টাকা না পেলে তার পায়ের রক্ত মাথায় উঠে যায়। ট্র্যাফিক আইল্যান্ডে দাঁড়িয়ে চারদিক তাকায়, মক্কেল খুঁজতে থাকে। তিনশ টাকার মক্কেল।
সেদিন ছিল হরতাল। বেশ কড়াকড়ি হরতাল। রাস্তায় যানবাহন তো দূরের কথা রিকশা-ভ্যান পর্যন্ত চলছিল না। ক্রমেই দুশ্চিন্তা বাড়ছিল। দীর্ঘ দিনের অভ্যাস সকালবেলার তিনশ টাকার বাজার।
তার চোখে পড়ল দূর থেকে একটা চটের ব্যাগ নিয়ে একটু বোকা, বোকা প্রকৃতির একটা লোক আসছে। সে বার বার করে সেই চটের ব্যাগের দিকে তাকাল। লোভে তার চোখ দু’টো চিক চিক করছে। সে ট্র্যাফিক আইল্যান্ড থেকে নেমে সেই বোকা, বোকা লোকটির দিকে একবার আপাদ মস্তক তাকাল। তারপর জিজ্ঞেস করল, নাম কী?
মোখলেস।
ব্যাগের ভেতর কী?
বেল।
দেখি বলে ট্র্যাফিক পুলিশ মোখলেসের ব্যাগের ভেতর হাত ঢুকিয়ে বলল, মিথ্যা কথা বলছিস, না? ব্যাগের ভেতর নিয়েছিস বোমা আর বলছিস বেল, তোর এতবড় সাহস?
মোখলেস জোর গলায় বলল, না এগুলো বেল, আমি এখনই বাজার থেকে কিনে আনলাম।
ট্র্যাফিক পুলিশ মোখলেসকে আইল্যান্ডের কাছে এনে কানে কানে চাপাস্বরে বলল, তিনশ টাকা দে, নইলে চালান দিয়ে দিব।
মোখলেস বলল, আমাকে চালান দিবেন কেন? আমি তো কোনো অপরাধ করিনি।
বেটা নিয়েছিস বোমা আর বলছিস বেল, আবার বলছিস কোনো অপরাধ করিসনি। থানায় গেলেই টের পাবি অপরাধ করেছিস কী না?
মোখলেস সহজ-সরল প্রকৃতির মানুষ। সে ট্র্যাফিক পুলিশের কথায় মোটেই ভয় পেল না। তার ধারণা সেতো নিয়েছে বেল তাকে থানায় নিয়ে গেলেই কী আর কোর্টে নিয়ে গেলেই কী। ছাড়া তো সে পাবেই। সে তার দৃঢ় মনোবলের জন্য জোর গলায় বলল, আমি আপনাকে টাকা দিব কেন? আমি তো কোনো অপরাধ করিনি।
টাকা না পেয়ে ট্র্যাফিক পুলিশের মাথায় রক্ত উঠে গেল। সে জোরে ধমকের সুরে বলল, চল, আমার সঙ্গে থানায় চল।
মোখলেস রেগে বলল, চলুন, আমিও যাবো আপনার স্যারের কাছে কমপ্লেইন করব।
মোড়ের এক কোণে একটা পুলিশ ভ্যান দাঁড়িয়েছিল। তারা হরতাল ডিউটি করছিল। সেই পুলিশ ভ্যানের কাছে আরো একজন ট্র্যাফিক পুলিশ দাঁড়িয়েছিল। দু’জনের তর্ক-বিতর্ক দেখে সে এগিয়ে এলো, কী হয়েছে হারুন ভাই?
হারুন বলল, দেখ তো হরতালের দিন এই বেটা ব্যাগের ভেতর করে বোমা নিয়ে যাচ্ছে আর বলছে এগুলো নাকি বেল?
মোখলেস বলল, না এগুলো বেল।
হারুন বলল, এন্তাজুল তুমি একটু ডিউটি কর, আমি এই বেটাকে থানায় নিয়ে যাচ্ছি। বলে হারুন মোখলেসকে নিয়ে একটা রিকশায় উঠল।
মোখলেসও মনের জোরে তেমন বাড়াবাড়ি করল না।

হারুন থানায় ঢুকে ওসি সাহেবের কানে কানে কী যেন বলল। ওসি সাহেব চটকে উঠল, স্যান্ট্রি।
একজন পুলিশ কনস্টেবল এসে স্যালুট দিল, স্যার।
ওর ব্যাগটা খোলো তো।
স্যান্ট্রি ব্যাগ খুলে দেখাল।
ওসি সাহেব ভ্রু কুঁচকে বলল, সর্বনাশ, এতো দেখছি বোমা। কাকে মারার প্লান ছিল?
এবার মোখলেস কিছুটা ঘাবড়ে গেল। সে কাঁদ কাঁদ গলায় বলল, স্যার আমার কোনো দোষ নেই। আমি বাজার থেকে বেল কিনে নিয়ে যাচ্ছিলাম। এগুলো বোমা না, আমি কাউকে বোমা মারার প্লান করিনি।
ওসি সাহেব বলল, স্যান্ট্রি একে লোকাপে ঢুকাও।
স্যান্ট্রি মোখলেসের শার্টের কলার ধরে জোর করে টেনে হিঁচড়ে যেতে শুরু করল। মোখলেস কাঁদতে কাঁদতে বলল, স্যার এগুলো বোমা না, বেল।
ওসি সাহেব বলল, কাঁদছিস কেন? এইতো ক’দিনের ব্যাপার শুধু পরীক্ষার জন্য ঢাকা পাঠাবো, ঢাকা থেকে পরীক্ষার রিপোর্ট এলেই বোঝা যাবে এগুলো বেল না বোমা।
মোখলেস জোরে বলল, স্যার আমি সত্যি কথা বলছি, এগুলো বোমা না, আমি বাজার থেকে বেল কিনে আনছিলাম আর উনি আমাকে ধরে নিয়ে এলেন আর বললেন এগুলো নাকি বোমা।
সেটাই তো পরীক্ষা করতে পাঠাচ্ছি এগুলো বেল নাকি বোমা।
সমাপ্ত

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১২

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: :|| /:) :-<

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪৭

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৫

ঢাকাবাসী বলেছেন: পৃথিবীতে সবচাইতে দুর্ণীতিবাজ অদক্ষ অকর্মন্য অশিক্ষিত লোভী বাট সবচাইতে ক্ষমতাবান পুলিশ হল বাং....

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪৯

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান বলেছেন: বাস্তবতা তা-ই বলে।

৩| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:২০

আমিনুর রহমান বলেছেন:




অনেকেই এখন এই ধরনের বিপদে পড়ছে। প্রায় মাসখানেক আগে আমার এক কলিগ এমন একটা চক্রের হাতে পড়েছিলো। এবং তারা কিছু পোশাকধারী এবং কিছু পোশাকবিহীন পুলিশই ছিলো। ঘটনা একদম সেইম। তাকে ধরা হয়েছিলো মিরপুর ১১ থেকে। ১ লাখ টাকা না দিলে তাকে ইয়াবা ধরিয়ে কেইস দিয়ে দিবে এমনটিই হুমকি দিয়েছে। আমার কলিগ প্রথম আমাকেই জানালো তাকে ৫০ হাজার (সে ওখানে ওদের সাথে রফাদফা করে এই এমাউন্টে এনেছিলো) টাকা বিকাশে পাঠে হবে এখনই। আমি বললাম আমি কিভাবে দিবো। ওর গলার স্বরে আমি ব্যাপারটা আন্দাজ করি ও বিপদে। অফিস থেকে নিয়ে তারপর বিকাশে টাকা পাঠানোর পর ও অফিসে ফিরে আসার পর ঘটনাটা জানি। যেহেতু পুলিশই করছে কাজটা তাই কেউ সাহস করছে না পুলিশের কাছে রিপোর্ট করতে। তেমনি আমার কলিগও এই নিয়ে কোথাও রিপোর্ট করেনি।

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫১

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান বলেছেন: আমার লেখার স্লোগান, ‘উপন্যাস হোক সমাজের প্রতিচ্ছবি’’। আমার যেকোনো লেখাতেই আপনি বাস্তবতা পাবেন। আমার লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আশা করি আমার সব লেখা পড়বেন।

৪| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০৯

কলমের কালি শেষ বলেছেন: রক্ষক যে বক্ষক সে তো অনেক আগে থেকেই প্রমানিত । :(

১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৩

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান বলেছেন: দেশের অবস্থা এখন তাই।

৫| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৮

আহমেদ রব্বানী বলেছেন: অবশেষে বেল বোমা বলিয়াই প্রামণিত হইল!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.