নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চোখের সামনে যেকোন অসঙ্গতি মনের মধ্যে দাগ কাটতো, কিশোর মন প্রতিবাদী হয়ে উঠতো। তার বহিঃপ্রকাশ ঘটতো কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে। ক্ষুধা ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে, নির্যাতন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কবিতা। তারপর গল্প, উপন্যাস। এ যাবত প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা-২১ টি।

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান

আমি পেশায় একজন প্রকৌশলী। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে লেখালেখির শুরু। আমার প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ:কাব্য: ০১। ছোট্ট একটি ভালোবাসা উপন্যাস: ০২। ভ্যালেন্টাইনস্ ডে (ভালোবাসাবাসির স্মৃতিময় দিনগুলি) ০৩। অবশেষে...(অবশেষে হৃদয়ের টানে) ০৪। বন্ধন (যে বন্ধন শুধু কাছেই টানে) ০৫। স্বপ্ন (যাদের স্বপ্ন ভেঙে গেছে) ০৬। আঁচলে...(যাদের ভালোবাসা আঁচলে বন্দি) ০৭। গডফাদার-০১(দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি) ০৮। গডফাদার-০২ ০৯। গডফাদার-০৩ ১০। দুর্নীতিবাজের ডায়েরি (একজন দুর্নীতিবাজের আত্মকাহিনী) ১১। দাগ (এই দাগ হৃদয়ের, এই দাগ সমাজের) ১২। প্রিয়ন্তী (সংস্কারের প্রাচীর ভাঙা এক তরুণী) ১৩। তবুও আমি তোমার (একটি অসম প্রেমের কাহিনী) ১৪। খুঁজে ফিরি তারে (যে হৃদয় শুধু তাকেই খুঁজে) ১৫। সেই ছেলেটি (কিশোর উপন্যাস) ১৬। অপেক্ষা (পথ চেয়ে থাকা এক তরুণীর কাহিনী) মোবাইল-০১৭১৮১৫৭০৭৬ email:[email protected]

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

রূপার বিয়ে-০৩

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩০

প্রায় ঘণ্টা খানেকের মধ্যে মুহিত এলো। বাসায় ঢুকেই ইয়াসমিনের ওপর এক চট নিলো, কী হয়েছে বলোতো?

আগে বাসায় আসো, বাইরে থেকে চেঁচামেচি করো না, বলে ইয়াসমিন দরজা বন্ধ করে দিলো।

মুহিত ডাইনিং স্পেসে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো, কী হয়েছে?

আগে বেড রুমে চলো, তারপর বলছি।

মুহিত বেড রুমে ঢুকলো। ইয়াসমিন বেড রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে চাপা স্বরে শোনো, বলে বলতে শুরু করলো।

মুহিত দাঁড়িয়ে ইয়াসমিনের কথা শুনছিলো সবকিছু শুনে তার মাথাটা যেন এলোমেলো হয়ে গেলো, আমাদের ছেলে, তমাল এমন কাজ করেছে!! বলে সে ধপাস করে খাটে বসে পড়লো।

হ্যাঁ আমাদের ছেলে, কী পাপ করেছিলাম যে এমন ছেলে পেটে ধরেছি!

কিছুক্ষণের নীরবতা। তারপর ইয়াসমিন প্রথমে কথা তুললো, এখন সবার আগে প্রয়োজন এই পাপ থেকে মুক্ত হওয়া।

মুহিত সরল প্রকৃতির মানুষ, একটু উদাসীন টাইপেরও। খুব সহজে ঘাবড়ে যায়, মাথার ঘিলু এলোমেলো হয়ে যায়। সে ভেঙ্গে পড়লো। মাথা নত করে বসে রইলো।

ইয়াসমিন তাড়া দিলো, চুপ করে বসে থাকো না, কিছু একটা করো?

আমি কী করবো? এই কলঙ্কের কথা কাকে বলবো? কাকে বলবো যে আমার ছেলে..., বলে সে আর বলতে পারলো না, ঘৃণার সুরে বললো, ছিঃ, ছিঃ, ছিঃ।



তমাল বাসায় ফিরল সন্ধ্যা নাগাদ। প্রতিদিন মা দরজা খুলে দিয়েই তমালকে জিজ্ঞেস করে, কী রে দেরি করলি কেনো? মুখটা শুকনা কেনো? ইত্যাদি, ইত্যাদি। সাধারণত মায়েরা যেসব কথা বলে কিন্তু আজ ইয়াসমিন তার মুখের দিকে তাকালো না। তমাল কিছুটা অনুমান করলো, মায়ের মাথা নিচু করে মুখ কালো করে দরজা খুলে দেয়ায় ভয়ে তার বুক কেঁপে উঠলো। সে কিছু বললো না। সোজা তার রুমে চলে গেলো।

তমালের ডাক পড়লো কয়েক মিনিট পরই। মায়ের গম্ভীর কণ্ঠের ডাক, ডাকটা তমালের কানে ভয়ংকর শোনালো, তমাল এই রুমে আয় তো।

তমাল কোনো কথা বললো না। তার রুম থেকে মায়ের রুমে গেলো। বাবা যে বাসায় আছে তমাল আগে বুঝতে পারেনি। সাধারণত মুহিত বাসায় থাকলে চুপ করে রুমে বসে থাকে না। তমাল বাসায় পা দিয়েই বাবার উপস্থিতি টের পায়। অবশ্য বাবা-মা’র সঙ্গে তার সম্পর্কটা ভয় পাবার মতো না, আতঙ্কেরও না, গার্জিয়ান আর সন্তানের মতো না, যেন একেবারে বন্ধুত্বপূর্ণ কিন্তু আজ যেন বাবাকেও তার ভয়ংকর বলে মনে হলো। তার চিরপরিচিত বাবা-মা’কে অন্য গ্রহের মানুষ বলে মনে হলো।

মুহিত বালিশে গা এলিয়ে দিয়ে শুয়ে আছে, ফ্যানটা জোরে চালু করা আছে কিন্তু তারপরও সে শুধু ঘামছে। ইয়াসমিন মুহিতের পায়ের কাছে পা ঝুলিয়ে দিয়ে বিছানায় বসে আছে। দু’জনের চোখে-মুখে যেন একটা দুশ্চিন্তা, একটা অনিশ্চয়তা, একটা গভীর আতঙ্কের ছাপ পড়েছে।

এতক্ষণে তমালের কাছে বিষয়টা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তার মুখের ওপরও একটা কালো মেঘ জমেছে, হৃৎপিণ্ডটা দ্রুতগতিতে চলছে। সে রুমে ঢুকে মাথা নত করে অপরাধীর মতো দাঁড়িয়ে রইলো।

ইয়াসমিন বরাবরই কোনো কথা বলার আগে ভণিতা করে, অনেক বুঝিয়ে-সুজিয়ে কথা বলে, আজ তার কোনোটিই করলো না। সোজাসুজি জিজ্ঞেস করলো, রূপার সর্বনাশ করেছিস্‌ কেনো?

তমাল অস্বীকার করার চেষ্টা করলো, রূপার!!

ইয়াসমিন তমালের গালে ঠাস করে একটা চড় মারলো, মনে হয় বুঝতে পাচ্ছিস্‌ না?

তমাল আর কোনো কথা বলতে পারলো না।

এজন্য তোকে পেটে ধরেছিলাম, না? এজন্য তোকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করতে চাচ্ছি, না? একটা ফুলের মতো নিষ্পাপ মেয়ের জীবনটা নষ্ট করার জন্য...

তমালের দু’চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো। সে আর অস্বীকার করতে পারলো না।

চলবে...

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.