নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চোখের সামনে যেকোন অসঙ্গতি মনের মধ্যে দাগ কাটতো, কিশোর মন প্রতিবাদী হয়ে উঠতো। তার বহিঃপ্রকাশ ঘটতো কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে। ক্ষুধা ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে, নির্যাতন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কবিতা। তারপর গল্প, উপন্যাস। এ যাবত প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা-২১ টি।

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান

আমি পেশায় একজন প্রকৌশলী। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে লেখালেখির শুরু। আমার প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ:কাব্য: ০১। ছোট্ট একটি ভালোবাসা উপন্যাস: ০২। ভ্যালেন্টাইনস্ ডে (ভালোবাসাবাসির স্মৃতিময় দিনগুলি) ০৩। অবশেষে...(অবশেষে হৃদয়ের টানে) ০৪। বন্ধন (যে বন্ধন শুধু কাছেই টানে) ০৫। স্বপ্ন (যাদের স্বপ্ন ভেঙে গেছে) ০৬। আঁচলে...(যাদের ভালোবাসা আঁচলে বন্দি) ০৭। গডফাদার-০১(দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি) ০৮। গডফাদার-০২ ০৯। গডফাদার-০৩ ১০। দুর্নীতিবাজের ডায়েরি (একজন দুর্নীতিবাজের আত্মকাহিনী) ১১। দাগ (এই দাগ হৃদয়ের, এই দাগ সমাজের) ১২। প্রিয়ন্তী (সংস্কারের প্রাচীর ভাঙা এক তরুণী) ১৩। তবুও আমি তোমার (একটি অসম প্রেমের কাহিনী) ১৪। খুঁজে ফিরি তারে (যে হৃদয় শুধু তাকেই খুঁজে) ১৫। সেই ছেলেটি (কিশোর উপন্যাস) ১৬। অপেক্ষা (পথ চেয়ে থাকা এক তরুণীর কাহিনী) মোবাইল-০১৭১৮১৫৭০৭৬ email:[email protected]

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

রূপার বিয়ে-০৪

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৫২

রূপার গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার অষ্টমীর চরে। চার বোন এক ভাইয়ের মধ্যে রূপা সবার বড়। বাবা দিনমজুর। এই অষ্টমীর চরে সারা বছর কাজ থাকে না, আশ্বিন-কার্তিক এই দু’মাসকে এ অঞ্চলে মঙ্গার মাস বলে। মঙ্গার এ দু’মাস বাবা হারু মিয়া প্রায় বেকার থাকে, তখন প্রায় দিনই ভাত রান্না হয় না। কোনদিন কারো বাড়ি থেকে ভাত চেয়ে এনে ভাগাভাগি করে খেয়ে দিন কাটাতে হয়। অনেক দিন ক্ষুধার জ্বালায় ঘুম হয়নি, তখন রূপার মনে হতো পৃথিবীতে ক্ষুধার জ্বালাই সবচেয়ে বেশি কষ্ট।
রূপার দূর-সম্পর্কের এক ফুপু এমনি এক মঙ্গার দিনে এলো তাদের বাড়িতে। কথায় কথায় রূপার মা তাদের অভাব অভিযোগের কথা বললো। হরুরেই বা দোষ কী? খালি হাতের উপরত এত বড় একান সংসার ওয় চলায় ক্যাংকরি, তার উপরত মঙ্গার সময় আবার কাম থাকে না।
রূপার মা ফিসফিস করে বললো, বুজান ছাওয়া দুকনে আইজ সাড়াদিন কিচু খায় নাই, মুকের ভিতি নজর দিবার পাং না। তোমার ভাই গ্যাইচে জোড়গাছের হাটৎ, একান টেকাও নাই, কি ঝে বাজার করি আইনবে আর ছইল পইলের মুকে যে কি দেমো, সেই চিন্তেৎ মুর আর কিচ্চুই ভাল্‌ নাইকচে না, বলতে বলতে রূপার মা’র দু’চোখ পানিতে ভরে উঠলো।
রূপার এই ফুপুটিও গরীব কিন্তু তার তার স্বামী নৌকার মাঝি, কাজেই তার অবস্থা ততটা খারাপ নয়। তাদের দিনে দু/একবার ভাত জোটে।
তছিরন বললো, মুই তুমার গড়ৎ একান কাম নিয়ে আইচ্চং।
রূপার মা কষ্টের হাসি হেসে বললো, হামার গড়ৎ ফির কি কাম?
কয়দিন আগে তুমার দুলাভাই বাড়িত আসি কইল, ঢাকার কোনো সায়েব একান মেয়ে চাইচে বাড়িত কাম করার জন্যে।
রূপার মায়ের মুখটা উজ্জ্বল হলো, সায়েবের বাড়ি কন্টে?
কুড়িগ্রাম।
আইজ রাইতত হারুক কয়য়া যুদিল দিবের চাও তো তোমার দুলাভাইয়োক কইও, উমরা আসি উপাক ধরি যাইবে, পতথমে উপার সাতে হারুকও ঢাকা যাওয়া খাইবে।
রূপা অদূরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ফুপু আর তার মায়ের কথা শুনছিলো। মা তাকে কাছে ডেকে নিলো, উপা যাবু?
কন্টে মা?
ঢাকা।
রূপা সারাদিন কিছু খায় নি। দুপুর এবং বিকেলে পানি খেয়ে খিদে নিবারণের ব্যর্থ চেষ্টা করেছে। তার এই দূর-সম্পর্কের ফুপুকে তার খুব আপন, খুব কাছের মনে হলো। রূপার চোখের সামনে এক থালা ভর্তি ভাতের ছবি ভেসে উঠলো। তার দু’চোখ পানিতে ছলছল করে উঠলো। রূপা জিজ্ঞেস করলো, উমরা ভাত খাবার দিবে?
রূপার একথার উত্তর দিলো তার ফুপু, হয় খালি ভাত ক্যানে? কাপড় ধরিও দিবে, বড়লোক মানুষতো, উমার কি টেকার ঠেকা আচে? বলে তছিরন রূপার মায়ের দিকে তাকিয়ে বললো, উপা বড় হইলে ওর বিহার সুমায় ডিমান্ডের টেকাও দিবে।
রূপার মায়ের দু’চোখ পানিতে ভরে গেলো। দু’য়েক ফোঁটা পানি গণ্ডদেশ বেয়ে পড়লো। সে রূপাকে আবার জিজ্ঞেস করলো, যাবু মা?
রূপা একবার উঁচু আরেকবার নিচু করে তার সম্মতি জানালো।
চলবে...

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:০২

আবদুল্লাহ আল কাফী বলেছেন: ধন্যবাদ

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩১

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান বলেছেন: স্বাগতম।

২| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:০৯

আহসানের ব্লগ বলেছেন: পাঠে মুগ্ধ

৩০ শে নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩২

ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। আশা করি শেষ পর্যন্ত সঙ্গে থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.