![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি পেশায় একজন প্রকৌশলী। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে লেখালেখির শুরু। আমার প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ:কাব্য: ০১। ছোট্ট একটি ভালোবাসা উপন্যাস: ০২। ভ্যালেন্টাইনস্ ডে (ভালোবাসাবাসির স্মৃতিময় দিনগুলি) ০৩। অবশেষে...(অবশেষে হৃদয়ের টানে) ০৪। বন্ধন (যে বন্ধন শুধু কাছেই টানে) ০৫। স্বপ্ন (যাদের স্বপ্ন ভেঙে গেছে) ০৬। আঁচলে...(যাদের ভালোবাসা আঁচলে বন্দি) ০৭। গডফাদার-০১(দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি) ০৮। গডফাদার-০২ ০৯। গডফাদার-০৩ ১০। দুর্নীতিবাজের ডায়েরি (একজন দুর্নীতিবাজের আত্মকাহিনী) ১১। দাগ (এই দাগ হৃদয়ের, এই দাগ সমাজের) ১২। প্রিয়ন্তী (সংস্কারের প্রাচীর ভাঙা এক তরুণী) ১৩। তবুও আমি তোমার (একটি অসম প্রেমের কাহিনী) ১৪। খুঁজে ফিরি তারে (যে হৃদয় শুধু তাকেই খুঁজে) ১৫। সেই ছেলেটি (কিশোর উপন্যাস) ১৬। অপেক্ষা (পথ চেয়ে থাকা এক তরুণীর কাহিনী) মোবাইল-০১৭১৮১৫৭০৭৬ email:[email protected]
রাজধানীর কোন নামী-দামি ক্লিনিক না। হাসপাতালে চাকরি করা এক নার্সের বাসা। এ ধরণের কেইসে কোনো হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে গেলে অনেক ঝুঁকি-ঝামেলা পোহাতে হয়, অনেক সময় পুলিশ কেইস হয়ে যায়। এসব ভেবেই ইয়াসমিন অনেক খোঁজাখুঁজি করে এই নার্সের ঠিকানা পেয়েছে। তার সঙ্গে মোটা অঙ্কের টাকার দফা-রফা হয়েছে। সবকিছু ঠিকই ছিলো, সফলভাবে এম.আর সম্পন্ন হয়েছে কিন্তু শেষ পর্যন্ত মুহিত যা আশঙ্কা করেছিলো তাই হয়েছে। ব্লিডিং বন্ধ হচ্ছে না।
নার্স বলেছিলো কিছুক্ষণ পরই ব্লিডিং বন্ধ হয়ে যাবে কিন্তু কয়েক ঘণ্টা অতিক্রান্ত হলেও ব্লিডিং বন্ধ হলো না। মুহিত বেশ চিন্তায় পড়লো। সে বার বার করে ইয়াসমিনকে জিজ্ঞেস করলো, দেখো আর মনে হয় দেরি করা ঠিক হচ্ছে না। নাকি কোনো ক্লিনিকে নিয়ে যাবো?
কিন্তু শেষে থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়ার আশঙ্কায় ইয়াসমিন ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না। অবস্থার আরো অবনতি হওয়ায় মুহিত আর ইয়াসমিনের কথা শুনলো না। ফোন করে এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এলো কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম, এম্বুলেন্স এগোচ্ছে খুব ধীর গতিতে আর রূপার অবস'ার অবনতি হচ্ছে দ্রুতগতিতে। আর কয়েক’শ ফুট দূরেই ক্লিনিক, রূপা একবার চোখ তুলে তাকালো, ইয়াসমিন রূপার মাথার চুলগুলো পেছনের দিকে এলিয়ে দিয়ে বললো, এখন ভালো লাগছে মা?
ঢাকা শহর কত বড়, এখানে কত বিচিত্র মানুষ, চোখের সামনে বিল্ডিংগুলো কীভাবে তরতর করে বেড়ে উঠছে। ব্রহ্মপুত্রের চর থেকে ঢাকা আসার সময় ক্ষুধার্ত রূপার চোখের সামনে ভেসে উঠেছিলো এক থালা ভাত আর একদিন চিলমারীতে রাস্তার সামনে দাঁড়িয়ে টি.ভি’তে দেখা ঢাকা শহর। খুব সুন্দর আলো ঝলমলে রূপকথার মতো শহর ঢাকা। ঢাকায় এসে সেই স্বপ্নের এক থালা ভাত পেয়েছে, ক্ষুধা কী তা এই ক’বছরে সে টেরও পায় নি। রূপার ক্ষুধা নিবারণ হয়েছে, ক্ষুধার জ্বালা থেকে মুক্তি পেয়েছে কিন্তু ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে গিয়ে সে যা হারিয়েছে তা তার জীবনের অমূল্য সম্পদ। নিজের ওপর রূপার ঘৃণা হলো।
আর তার কাছে রুপকথার মতো ঝলমল ঢাকা শহর! তার কাছে ঢাকা শহর আবার আলাদা কী? সেতো সেই যে চার দেয়ালে বন্দী বাসায় ঢুকেছে আর বেরোতে পারেনি। এই ক’বছরে রূপা বাসা থেকে বেরিয়েছে হাতে গোনা কয়েকবার। সে ঢাকা শহর দেখেছে জানালায় দাঁড়িয়ে। আগে বাসা থেকে দূরে দেখতে পেত অন্তত: কয়েক’শ ফুট দূরে, তারপর কাছাকাছি অনেক বড় বড় বিল্ডিং গড়ে উঠলো। রূপা আগে বাসার জানালার কাছে দাঁড়িয়ে যে ঢাকা শহর দেখতো তা আর দেখা হলো না।
এই তো কয়েক মাস আগে ইয়াসমিন একবার রূপাকে মার্কেটে নিয়ে গিয়েছিলো। মাকেট কী? না, মার্কেট না, মেলায়। আসলে ইয়াসমিন তাকে নিয়ে গিয়েছিলো মেলায় কিছু কেনাকাটার জিনিস ক্যারি করার জন্য। এই যেমন: ঝাড়-, বালতি, পিঠা বানানোর বেলন ইত্যাদি। রূপার চোখ ঝলসে গেছে সেই আলোক সজ্জায়। এটা যেন মেলা না, রূপার কাছে অন্য এক পৃথিবী।
হ্যাঁ সত্যি রূপার কাছে অন্য এক পৃথিবী! চরে আমাবস্যার চেয়ে অন্ধকারেও মানুষগুলোকে আপন মনে হয় আর এখানকার অনেক কাছের মানুষগুলোও যেন একেবারে অপরিচিত। এই যে ইয়াসমিন রূপাকে খালাম্মা বলে ডাকে সে কি রূপাকে কোনোদিন আপন করে নিয়েছে? প্রথম থেকেই রূপাকে তুই তুই বলে সম্বোধন করেছে। আজ রূপা যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তখন রূপাকে মা বলে সম্বোধন করেছে এটা কি উদ্দেশ্য প্রণোদিত না? রূপার চোখের সামনে ভেসে উঠলো প্রতারক তমালের ছবি, সে একবার চোখ মেলে তাকালো, তার চোখের সামনে বসে আছে ইয়াসমিন। রূপা ঘৃণায় মুখ ফিরিয়ে নিলো। দু’চোখ বন্ধ করতেই স্নেহময়ী মায়ের ছবি ভেসে উঠলো, ভেসে উঠলো এক নৌকা বরযাত্রীসহ এক অপরিচিত বরের ছবি। রূপা একটা জোরে নি:শ্বাস নিলো, যেন কষ্টের শেষ নি:শ্বাস। তারপর মেহেদি মাখা হাত দু’টো ছড়িয়ে পড়লো এ্যাম্বুলেন্সের সিটে।
চলবে...
২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৩
ঔপন্যাসিক জিল্লুর রহমান বলেছেন: আমার লেখা পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আশা করি আমার সব লেখা পড়বেন।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০০
জোহরা উম্মে হাসান বলেছেন: অন ব দ্য । মন ছুঁয়ে গেল !