![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি পেশায় একজন প্রকৌশলী। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে লেখালেখির শুরু। আমার প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ:কাব্য: ০১। ছোট্ট একটি ভালোবাসা উপন্যাস: ০২। ভ্যালেন্টাইনস্ ডে (ভালোবাসাবাসির স্মৃতিময় দিনগুলি) ০৩। অবশেষে...(অবশেষে হৃদয়ের টানে) ০৪। বন্ধন (যে বন্ধন শুধু কাছেই টানে) ০৫। স্বপ্ন (যাদের স্বপ্ন ভেঙে গেছে) ০৬। আঁচলে...(যাদের ভালোবাসা আঁচলে বন্দি) ০৭। গডফাদার-০১(দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি) ০৮। গডফাদার-০২ ০৯। গডফাদার-০৩ ১০। দুর্নীতিবাজের ডায়েরি (একজন দুর্নীতিবাজের আত্মকাহিনী) ১১। দাগ (এই দাগ হৃদয়ের, এই দাগ সমাজের) ১২। প্রিয়ন্তী (সংস্কারের প্রাচীর ভাঙা এক তরুণী) ১৩। তবুও আমি তোমার (একটি অসম প্রেমের কাহিনী) ১৪। খুঁজে ফিরি তারে (যে হৃদয় শুধু তাকেই খুঁজে) ১৫। সেই ছেলেটি (কিশোর উপন্যাস) ১৬। অপেক্ষা (পথ চেয়ে থাকা এক তরুণীর কাহিনী) মোবাইল-০১৭১৮১৫৭০৭৬ email:[email protected]
বাংলাবাজারে শত শত পাবলিশার্স। তাঁর হাতের লেখা কয়েকটা ঠিকানা ধরে তিনি অনেক খুঁজলেন। না, তাঁর সেই ঠিকানা খুঁজে পাওয়া অনেক কঠিন কাজ। হঠাৎ করে তার মাথায় নতুন চিন্তা এলো, এতো খোঁজাখুঁজির কী আছে। বইয়ে যেসব প্রকাশকের নাম আছে তাদের কেউ তো আমার পরিচিত না। কাজেই যেকোনো একটা পাবলিশার্সের সঙ্গে কথা বললেই হয়।
কবি আব্দুর রাজ্জাক একটা পাবলিশার্সের দোকানে ঢুকতে গিয়ে একটু ইতস্তত: করলেন। দোকানে বসা ভদ্রলোক অভয় দিলো, কবির চেহারা দেখে শ্রদ্ধাভরে ডাক দিলো, আসুন।
রাজ্জাক সাহেব ভিতরে ঢুকে সালাম দিলেন।
ওয়ালেকুম আস্সালাম।
রাজ্জাক সাহেব জিজ্ঞেস করলেন, এখানে কি বই ছাপানো হয়?
ভদ্রলোকের বয়স রাজ্জাক সাহেবের কাছাকাছিই হবে। হাস্যজ্জ্ব্যেল মুখ। কথা বলার সময় মুখে একটা হাসি লেগেই থাকে। কথার সুর বেশ রসালো, হ্যাঁ। আপনি এক্কেবারে সঠিক জায়গায় এসে পড়েছেন। দাঁড়িয়ে কেন, বসুন।
কবি সাহেব বসলেন, আমি একটা কবিতার বই ছাপাবো।
ভদ্রলোক বললো, বই আপনি ছাপাবেন কেন? আপনি তো কবি, আপনি কবিতা লিখবেন, বই ছাপাবে পাবলিশার্স।
কবি সাহেব নিজেকে সংশোধন করে বললেন, জি আপনি ঠিকই বলেছেন।
ভদ্রলোক এবার নিজের পরিচয় দিলো, আমি ইমরুল, আর আমার প্রতিষ্ঠানের নাম তো দেখছেনই, তরুলতা প্রকাশনা।
কবি সাহেব একবার দোকানটার দিকে চোখ বুলিয়ে দেখলেন। র্যাকে অনেক বই সাজানো আছে।
কবি সাহেব নিজের পরিচয় দিলেন, আমি আব্দুর রাজ্জাক।
কবি সাহেব আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলেন, ইমরুল থামিয়ে দিলো, বুঝেছি আপনি একজন কবি। তো কবি ভাই’র বাড়ি কোথায়?
দিনাজপুর।
ও, খুব সুন্দর। দিনাজপুরের মানুষ তো খুব ভালো হয়। রাজ্জাক সাহেব একটু হাসলেন, তারপর ব্যাগ থেকে পান্ডুলপি বের করে ইমরুলের দিকে বাড়িয়ে দিলেন, এগুলো আমার লেখা কবিতা। আমি আগামী বইমেলায় একটা বই বের করবো।
ইমরুল চেয়ার থেকে উঠে বললো, আপনি একটু বসুন আমি দু’টা চায়ের অর্ডার দিয়ে আসি।
ইমরুল সাহেব অর্ডার দিয়ে আবার ভিতরে ঢুকলো, জি এখন বলুন বলে সে কবিতাগুলো নিয়ে দু’য়েকটা কবিতা পড়ে দেখলো, বাহ্ আপনার লেখা তো খুব সুন্দর।
রাজ্জাক সাহেবর মুখ উজ্জ্বল হলো।
ততক্ষণে চা চলে এসেছে। ইমরুল চায়ে চুমুক দিয়ে বললো, কিন্তু একটা কথা কি রাজ্জাক ভাই জানেন?
রাজ্জাক সাহেব ইমরুলের মুখের দিকে তাকালেন, আজকাল টি.ভি, মোবাইল, ইন্টারনেট নিয়ে সবাই ব্যস্ত। তাই কবিতা আজকাল আর কেউ পড়ে না। তো কত পৃষ্ঠার বই হবে আপনার?
এই একশটা কবিতা।
তাহলে তো বই ছয় ফর্মার চেয়ে বেশি হবে। অনেক খরচ পড়বে।
কতো?
ইমরুল একবার রাজ্জাক সাহেবের আপাদমস্তক তাকালো। তারপর বললো, এই ধরুন ছত্রিশ হাজার টাকা।
রাজ্জাক সাহেব আকাশ থেকে পড়লেন, এতো টাকা!
আরে ভাই কাগজ-কলমের যা দাম। আমি আবার খারাপ কাজ করি না। আপনার বই হবে ঝকঝকা। মানুষ দেখলেই নিতে চাইবে। বইয়ের গেট আপ ভালো না হলে আজকাল চলে না। আগে কথা ছিল চকচক করিলে সোনা হয় না আর এখন উল্টো, চকচক না করিলে সোনা হয় না।
টাকা কিছু কম করা যায় না?
রাজ্জাক ভাই আপনাকে আমি একটা পরামর্শ দিই?
বলুন?
আপনি বরং বইটা একটু ছোটো করুন।
মানে?
মানে এই ধরুন তিন বার চার ফর্মার একটা বই ছাপাবেন।
তাহলে ক’টা কবিতা ছাপানো যাবে?
এই ধরুন তিন ফর্মার হলে আটচল্লিশটা আর চার ফর্মার হলে চূষট্টিটা কবিতা।
চার ফর্মার একটা বই দেন তো একটু দেখি।
ইমরুল রাজ্জাক সাহেবের হাতে একটা বই দিলেন।
রাজ্জাক সাহেব বইটা হাতে নিয়ে দেখতে দেখতে কিছুটা উদাস হয়ে গেলেন, আমার এরকম একটা বই প্রকাশিত হবে। অমর একুশে বইমেলায় টি.ভি ক্যামেরার সামনে আমি ইন্টারভিউ দিবো। সারাদেশের মানুষ দেখবে, আমার বইটাও থাকবে এবার একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হওয়া কয়েক হাজার বইয়ের একটা। উ: আমি তো পৃথিবীতে অমর হয়ে...
ইমরুল ডাক দিলো, কবি ভাই কী ভাবছেন?
রাজ্জাক সাহেব চমকে উঠলেন, না, কিছু না।
ইমরুল রাজ্জাক সাহেবের মনের অবস্থা বুঝতে পেরেছে। সে বললো, কবি ভাই একবার ভাবুন এরকম একটা বই একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হবে। এটা কিন' কম ভাগ্যের কথা নয়। এটার সঙ্গে কি কখনো টাকার তুলনা হয়।
কীরকম টাকা খরচ হবে ভাই? রাজ্জাক সাহেব বিনয়ের সঙ্গে জিজ্ঞেস করলেন।
ইমরুল তার ড্রয়ার থেকে ক্যালকুটের বের করে কিছুক্ষণ নিবিষ্ট মনে টিপতে থাকলো তারপর বললো, পঁচিশ হাজার টাকা।
রাজ্জাক সাহেব বিনয়ের সঙ্গে বললেন, ভাই একটু সেক্রিফাইজ করুন। টাকার পরিমাণটা একটু কমান। বই তো ছোটো হলো সে অনুযায়ী টাকার পরিমাণটা একটু যদি কমাতেন।
দেখুন কবি ভাই। বইয়ের সাইজ কমালেও বইয়ের কভার, বাইন্ডিং এসব তো আর কমে না।
রাজ্জাক সাহেব কিছুটা মিনতির সুরে বললেন, ভাই একটা কথা বলবো। আপনাকে কিন' রাখতে হবে। আমি কিন' ধনী মানুষ নই। অনেক কষ্ট করে আমাকে বই ছাপানোর খরচের টাকাটা জোগাড় করতে হবে। আমি আপনাকে বিশ হাজার টাকা দিবো।
অবশেষে বিশ হাজার টাকা ঠিক হলো। রাজ্জাক সাহেব ইমরুলের মোবাইল নাম্বার নিলেন। তারপর বললেন, ভাই পান্ডুলিপিটা কবে পাঠাবো?
আপনি যতো তাড়াতাড়ি দিবেন, আমি ততো তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করবো। তবে বলে... ইমরুল একটা টান দিতেই রাজ্জাক সাহেব জিজ্ঞেস করলেন, তবে কী ভাই?
তবে পান্ডুলিপি আর টাকা একসঙ্গে দিবেন।
রাজ্জাক সাহেব ভেবেছিলেন টাকাটা কিস্তিতে দিবেন কিন' ইমরুল যেভাবে বললো তাতে তিনি কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন। তার মুখের ওপর একটা হালকা কালো মেঘ খেলে গেলো। তিনি বললেন, আচ্ছা ভাই।
চলবে...
২| ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:১৬
সুমন কর বলেছেন: ভালই লাগল। চলুক .......
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:০১
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ভাল লাগল| চালিয়ে যান| কিন্তু, কিন্তু বানানে কিন্তু থেকে গেল