নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আদনান সাদেক

আদনান সাদেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

হিটলার বনাম আধুনিক জার্মানি

১৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৪

মার্চ ১৭, ২০১৩।



মাত্র ২০ বছর বয়েসী গ্রিক তারকা স্ট্রাইকার গিওর্গাস কাটিদিস লোকাল লিগের খেলায় গোল করে তার উদযাপন করতে গিয়ে নাৎসি সময়ের মতন হিটলারি নড করলেন ডান হাত উঁচু করে। আর যায় কোথায়, তাকে ব্যান করা হল জাতীয় দল থেকে বাকি জীবনের জন্য (বলা বাহুল্য গ্রিকের একটি ন্যাশনালিস্ট পার্টিকে দেখা গেছে নিও নাৎসিকে সমর্থন দিয়ে র‍্যালি করতে)। নাৎসিদের প্রতি ঘৃণা জানিয়ে সমস্ত বিশ্বেই হিটলার ও তার আদর্শকে সমর্থনের দায়ে শাস্তি পেয়েছে এমন অনেকেই।



খোদ জার্মানিতে হিটলারকে এখন কেমন চোখে দেখা হয়? কয়েকটি ঘটনার কথা উল্লেখ না করলেই নয়।



ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বার্লিন।



বার্লিনে জার্মান পার্লামেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে ছবির জন্য পোজ দিয়েছিল এক কানাডিয়ান টুরিস্ট। মজা করতে গিয়ে তার গার্ল ফ্রেন্ডের কথা মত হেইল হিটলার বলে সে হাত উঁচু করে পরের ছবির পোজ দিল। ছবি তোলা শেষ হতে যা বাকি, পাঁচ মিনিট পর কানাডিয়ান ভদ্রলোক তার গার্ল ফ্রেন্ডসহ পুলিশ হেফাজতে হাতকড়া পরে গরাদে হাজির। অনেক বলে কয়ে তবে তারা ছাড়া পেলেন পাঁচ ঘণ্টা পর, তবে মোটা অঙ্কের ফাইন দিয়ে এবং ক্যামেরার মেমোরি কার্ড বাজেয়াপ্ত হবার পর।



জুলাই, ২০০৮। কোলোন এয়ারপোর্ট।



এয়ারপোর্টে নেমে গাড়ি ভাড়া করতে গিয়ে এক ব্রিটিশ ভদ্রলোক তর্কে জড়িয়ে পড়লেন জার্মান ক্যাশিয়ারের সাথে। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে, ব্রিটিশ ভদ্রলোক রেগে গিয়ে ক্যাশিয়ারকে রাগানোর জন্য হাইল হিটলার বলে গালি দিলেন। ক্যাশিয়ার জার্মানের লাল মুখ প্রায় আগুন লাল। সে ফোন তুলে নিয়ে হুমকি দিল, ৯০ সেকেন্ডের মধ্যে তোমাকে পুলিশ ধরতে আসছে, পারলে পালাও। ব্রিটিশ ভদ্রলোক হাত নামালেন না। ৮৪ সেকেন্ডের মাথায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করল।



খুব সাম্প্রতিক একটা ঘটনা।

ভেস্টফালেন স্টেডিয়াম

১লা নভেম্বর, ২০১৩।



ডর্টমুন্ডের বিখ্যাত ভেস্টফালন স্টেডিয়ামে খেলছিল বোরশিয়া ডর্টমুন্ড ও স্টুটগার্ট। বোরশিয়ার একচেটিয়া আক্রমণে ৪-১ এ পিছিয়ে পড়ল স্টুটগার্ট দল। এমন সময় স্টেডিয়ামে এক ডর্টমুন্ডের সমর্থক পিলারের উপর উঠে হিটলারের সাইন দেখাল। খেলায় ডর্টমুন্ড জিতল ৬-১ গোলে, ইতিহাসে স্টুটগার্টের বিপক্ষে বিশালতম বিজয়। তবে এই ঐতিহাসিক বিজয়কে ছাপিয়ে সেই ফ্যান হয়ে উঠল আলোচনার মধ্য বিন্দু। গত সপ্তাহে অবশেষে ডর্টমুন্ড ক্লাবের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হল, সেই সমর্থক আগামী ২০১৭ পর্যন্ত শুধু ভেস্টফালন স্টেডিয়াম নয়, বরং জার্মানির সকল স্টেডিয়াম থেকে তাকে নিষিদ্ধ করার। আপাতত এই নাৎসি সমর্থককে সামনের চার বছর প্রিয় দলের খেলা টিভিতেই দেখতে হবে।



এই ঘোষণার প্রতি সমর্থন জানিয়ে পরের খেলায় “নাৎসিরা থাকুক বাইরে” – এই প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্টেডিয়ামে হাজির হল হাজার হাজার ডর্টমুন্ড সমর্থক।



নাৎসিরা থাকুক বাইরে - এই প্ল্যাকার্ড নিয়ে ডর্টমুন্ডের ফ্যানরা।



জার্মানির স্কুলে সব ছাত্রছাত্রীদের অবশ্য পাঠ্য নাৎসি ইতিহাস। সেখানে তুলে ধরা হয়, কেন হিটলার ও তার ফ্যাসিবাদ মানব সভ্যতার জন্য অভিশাপ নিয়ে এসেছিল। কেন নাৎসি বাহিনীর আদর্শ মানবতা বিরোধী ছিল, কেন সব জার্মান নাগরিককে সচেতন হতে হবে, যেন এমন ঘটনার আর কখনই পুনরাবৃত্তি না ঘটে।



যুদ্ধের অনেক বছর পর সারা পৃথিবী খুঁজে খুঁজে নাৎসি বাহিনীর সর্দারদের সাজা দেয়া হয়েছে এই জার্মানির মাটিতেই। অনেককে তুলে আনা হয়েছিল কবর খুঁড়ে। জার্মানিকে যতই হিটলারের দেশ বলে অনেকেই এখনো চিহ্নিত করুক না কেন, হিটলার ও তার আদর্শ জার্মানিতে যতটা বেশি ঘৃণ্য, ততটা আর পৃথিবীর কোথাও নয়।



আদনান সাদেক, ২০১৩। স্টুটগার্ট, জার্মানি

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৫

বোকা ছেলে ৯৮৯ বলেছেন: ভালো লাগলো পড়ে।

আপনি নাৎসি নিয়ে লিখছেন আপনার কোন সমস্যা হবে না

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:০৫

আদনান সাদেক বলেছেন: নাৎসি নিয়ে লেখাতে দোষ কেন থাকবে।

এদেরকে বা এদের আদর্শের পক্ষ নিয়ে জন সম্মুখে কথা বলা আইনত নিষিদ্ধ।

একইসাথে এদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে অনেক বছর।


২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২৯

দিশার বলেছেন: কত বড় দুর্ভাগ্য বাংলাদেশ এর যে আমরা রাজাকার দের মন্ত্রী বানাই , জামাত কে রাজনীতি করতে দেই।

৩| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১:১২

নতুন বলেছেন: দিশার বলেছেন: কত বড় দুর্ভাগ্য বাংলাদেশ এর যে আমরা রাজাকার দের মন্ত্রী বানাই , জামাত কে রাজনীতি করতে দেই।

৪| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৫০

বেকার সব ০০৭ বলেছেন: একজন ঘৃণ্য ব্যাক্তি হিটলার,তাকে ঘৃণা করা ছারা আর কিছুই নেই

৫| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ২:১৩

দিবা স্বপ্ন বলেছেন: জার্মানিতে হিটলার কতটা অজনপ্রিয় এবং ঘৃণিত তা এই দেশে থাকার কারনে দেখতে পাচ্ছি।

৬| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ২:২৬

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:
ভাল লাগল !

৭| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ২:২৭

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: যাই হোক, লেখাটা ভাল লাগল। তবে আমাদের দেশে হিটলার থাকলে ঘটনা অন্য হত।

১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:০৬

আদনান সাদেক বলেছেন: ভাল লাগত যদি বাংলাদেশেও যুদ্ধ অপরাধীদের এমন করে বিচার হতো। আর নিষিদ্ধ হতো যদি জামাত শিবিরের রাজনীতি।

৮| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৩:১৫

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: আমাদের দেশের হিটলাররা রাজনৈতিক নেতা হয়।

৯| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:০৬

অদৃশ্য বলেছেন:





দারুন পোষ্ট... ঘটনাগুলো জানা হলো

ঠিকই লিখেছেন আপনি... হিটলার পৃথিবীর সব জায়গাতে যতোটা না ঘৃণ্য তার সবার যোগফলের থেকেও বেশি ঘৃণ্য সম্ভবত জার্মানিতেই... এমনটা আমিও শুনেছি...

মজার ব্যাপার হলো... এই হিটলারকেই আমরা অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গাতে উদাহরণ হিসেবে টানি... অধিকাংশই তার খারাপ ব্যাপারগুলোর জন্য, তবে এর মাঝে মনে হয় তার একটি গুনাবলী বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য( লিডারশিপ )...

শুভকামনা...

১০| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২০

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: খুব ভালো পোষ্ট, কিপ ইট আপ।+।

১১| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪০

শাহরিয়ার খান রোজেন বলেছেন: ভালো লাগল লেখাটা।

১২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২০

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


তথ্যগুলো জেনে ভালো লাগল।

১৩| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪৩

আখিলিস বলেছেন: আর আমরা জামাতি-দের মন্ত্রী বানাই। জামাত কে রাজনীতি করার অনুমতি দেওয়াকে 'বহুদলীয় গনতন্ত্র' বলে আহ্লাদিত হই। আবার ৪২ বছর পরে এসেও রাজাকারদের ফাঁসিদাবী করে যারা তাদের 'নাস্তিক' উপাধি দেই !

১৪| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪৪

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খুব চমৎকার একটা পোষ্ট!!!

১৫| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:১৫

অন্য কথা বলেছেন: আমি তো হিটলারকে খারাপ বলে মনে করি না । হিটলার এতো ইহুদি মারার পরও ছোট্ট ইহুদি দেশ ইসরাইল পুরা বিশ্ব শাসন করছে । ইহুদি না মারলে কি যে হৈত কে জানে । আমেরিকা নাগাসাকি, হিরোশিমার লাখ লাখ মানুষ মারছে ঐটার কথা কেও কয় না । হিটলার, আমেরিকা সমান পাপী । কিন্ত্ু

ইতিহাস বিজয়ীরা লেখে, ইতিহাস বিজয়ীদের কথাই বলে।

১৬| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪১

আদনান সাদেক বলেছেন: হিটলার আমেরিকা সমান না হলেও দায়ী বটে.। আরেকটা মজার তথ্য হল নাতসিদের কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পে আই বি এম এর মেশিন ব্যাবহার করা হত। আমেরিকা তাদের সুবিধাজনক সময়ে যুদ্ধে নেমেছে এবং ফায়দা লুটেছে।

তবে এই পোস্টের মূল উদ্দেশ্য ছিল এইটা বলা যে, বিশ্ব জুড়ে যুদ্ধাপরাধীদের এবং তাদের আদর্শকে বর্জন করা হয়েছে। এবং এতে সবার আগে এগিয়ে আসতে দেখা গেছে নিজ দেশের জনগণকে।

আমাদের ও সময় এসেছে সেই পথে অগ্রসর হবার।

১৭| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৬

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: এতোটা জানতাম না। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

১৮| ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৩৩

সিদ্ধার্থ. বলেছেন: এদের মধ্যে আবার উগ্র জাতীয়তাবাদ (নিও ফ্যাসিসম ) চাগার দিয়ে উঠছে ।

১৯| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৮

কাজী কিংশুক হোসাইন বলেছেন: ভালো লাগলো....

২০| ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৩৭

উৎকৃষ্টতম বন্ধু বলেছেন: ভালো লাগলো লেখাটি পড়ে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.