নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আদনান সাদেক

আদনান সাদেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইয়াসিনের বিশ্বকাপ, গাজা থেকে

১১ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:২৬

৯ বছরের ইয়াসিনকে যখন গতকাল জ্ঞানহীন অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল তখন মধ্যরাত পেরিয়ে গেছে। মূল সড়কের সব বাতি বন্ধ। তারপরও ইসরাইলী রকেটের আলোতে সমস্ত আকাশ আলোকময়। ইয়াসিন আর্জেন্টিনা আর মেসির অন্ধভক্ত। ছোট টিভি সেটটার সামনে ভীষণ উৎকণ্ঠায় বসে ছিল সে, আর মাত্র ঘন্টা খানেক আগেও। উৎকণ্ঠার অনেকটাই হঠাত করে শুরু হওয়া রকেট হামলা নিয়ে, কিন্তু তার চেয়েও বেশি প্রিয় দলের সেমিফাইনালের ফলাফল নিয়ে। তার মা ইয়াসিনের ছোট ভাইটিকে কোলে নিয়ে আতঙ্কের মুখে বারান্দায় হাঁটতে হাঁটতে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছেন। ইয়াসিনের মনোযোগ খেলার দিকে।



ট্রাইব্রেকারে মেসির বাঁ পায়ের শট যখন জালে জড়ালো তখন ইয়াসিনের চিৎকার ঢাকা পড়ে গেল বারান্দায় হামলে পড়া রকেটের গর্জনে। শিশু সন্তান কোলেসহ তার মার শরীরটা মুহুর্তের মধ্যে ইট পাথরের সাথে মিশে গেল। রক্ত মাখা ছোট শরীরটা বয়ে নিয়ে যখন তার বাবা হাসপাতালের জরুরী বিভাগে হাজির হলেন, তখন সেখানে এলেমেলো হয়ে অযত্নে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আরও অনেকগুলো অথর শরীর। এদের মধ্যে অনেক বেশিরভাগই শিশু কিশোর। তাদের আর্ত চিৎকারে কেঁপে কেঁপে উঠছে হাসপাতালের দেয়ালগুলো।



সকালে ইয়াসিনের যখন জ্ঞান ফিরল, তার বেডের সামনে দাঁড়িয়ে পাশ্চাত্যের নামকরা এক পত্রিকার ফটো সাংবাদিক। গাজাতে নতুন করে ইসরাইলের আক্রমণ শুরু হয়েছে, হতাহতদের বেশিরভাগই শিশু কিশোর। বিশ্বকাপ নিয়ে পৃথিবীবাসি ব্যস্ত, এখন গাজার খবর নেবার সময় কারও নেই।



ইয়াসিন অস্ফুট স্বরে জানতে চাইল, আর্জেন্টিনা কি জিতেছে? মেসি কি ফাইনালে খেলবে?

সাংবাদিক সাহেব কিছু বলতে গিয়েও থমকে গেলেন। ইয়াসিনের বাবার চোখদুটো ভাবলেশহীন।



ইয়াসিনের বাঁ পা-টি কেটে ফেলে দেওয়া হয়েছে। নামকরা আন্তর্জাতিক পত্রিকায় মেসির বাঁ পায়ের জাদুর খবরের পাশাপাশি শিশু ইয়াসিনের বাঁ পায়ের মুল্য বড়ই নগণ্য।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:০০

ভারসাম্য বলেছেন: সুন্দর করে লিখেছিলেন। বাস্তবতা এর চেয়েও ভয়াবহ।

১৪ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৩

আদনান সাদেক বলেছেন: বাস্তবতা এর চেয়েও ভয়াবহ।

২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ ভোর ৫:৩১

কালের সময় বলেছেন: হে পরম করুনা ময় আল্লাহু এখন আপনি ছারা গাজার পাশ্বে আর কেহ নাই তাই আল্লাহু আপনার কাছে গাজা বাসীর জান মালের হেফাজত ও গাজা বাসীর মুক্তি চাই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.