নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অযথা এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়ে জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ফেলায় আমি সিদ্বহস্ত। ব্যাপারটা লেখার ক্ষেত্রে যতটুকু সত্য রান্নার ক্ষেত্রেও তাই।

জোলারোভিচপইজোলারোভিচ

অদ্ভুত দুনিয়ার অদ্ভুত মানুষ! কি বিভৎস আবার কি সুন্দর! আমি তিন নম্বর টাইপের লোক যার কাজ তামাশা দেখতে থাকা মানুষগুলোকে দেখা, বাকি দু টাইপ তো তামাশা করা আর তামাশা দেখায় ব্যস্ত।

জোলারোভিচপইজোলারোভিচ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাসনেহেনা হাউজ - ১

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:৪৬

জাফর সাহেব, বয়স মধ্য ষাট। তিনি নিজেকে ষাটুয়া জাফর বলে পরিচয় দিতেই পছন্দ করেন। এই যেমন সেদিন এক অপরিচিত নম্বর থেকে কল এলো,

হ্যালো।

হ্যালো।

ফারুক কইরে তুই?

আমি ফারুক না আমি ষাটুয়া জাফর।

কি? কে?

ষাটুয়া জাফর।
মানুষ এমন এক প্রাণী যে কনভেনশনাল পরিস্থিতির বাইরে কিছু ঘটলেই সেটা মেনে নিতে পারে না। যেমনটা পারেন না মিসেস কেয়া। জাফর সাহেব ষাটুয়া নামের মাধ্যমে যে ছেলে মানুষীটা বিগত কয়েক বছর ধরে করে যাচ্ছেন সেটা মেনে নিতে তার কষ্ট হচ্ছে। তিনি বুঝতে পারছেন না, একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ নিজেকে নিয়ে এইরকম একটা মস্করা করতে পারেন কেমনে, নিশ্চয় তার মাথায় ছিট আছে। তবে জাফর সাহেব কিন্তু রসিক মানুষ নন। তিনি যথেষ্ট গুরুগম্ভীর এক ব্যক্তিত্ব। এ ব্যাপারে তার অভিমত, ডায়াবেটিকে আক্রান্ত হওয়ার পর তার রসিকতা করার ক্ষমতা চলে গিয়েছে, মিষ্টির অভাবে রসিকতার যে বিষয়গুলো তার মধ্যে ছিলো, সেগুলো তার শরীর শোষণ করে ফেলেছে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত আর আট দশজন রোগীর মত তিনিও সকালে হাটাহাটি করেন। তিনি হাটাহাটি করেন এ নিয়েও মিসেস কেয়ার বিরক্তির অন্ত নেই। জাফর সাহেবের হাটতে বের হওয়ার একটা নমুনা দেয়া যাক। তিনি সকালে সাদা পাঞ্জাবি আর নীল চেক লুঙ্গি পড়বেন, পায়ে থাকবে চপ্পল। এরপর শুকনো সুপারি আর হাকিমপুরী জর্দা দিয়ে বানানো পানটা মুখে গলে, বগল তলায় বাজারের ব্যাগ চাপিয়ে বের হয়ে পড়বেন। মিসেস কেয়ার সমস্যা এই বাজারের ব্যাগটা নিয়েই। কারণ প্রায় যেহেতু ব্যাগটা খালি ফেরত আসে তাহলে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন কি তা তিনি ঠিক ঠাহর করতে পারেন না। আর যেদিন ব্যাগের ভর্তি থাকে সেদিন সমস্যা অন্য দিকে মোড় নেয়। একদিন তিনি নিয়ে এসেছিলেন তিতা শাক, যার একটা পাতাও তিনি মুখে দেননি। একদিন ব্যাগটা ভরে নিয়ে এলেন বিশাল বড় বোয়াল মাছ, সেটাও তিনি গলধঃকরণ করেননি। এইজন্য মিসেস কেয়া বিরক্ত।
তবে বিরক্ত হওয়াটাই জেনো তার অভ্যেস হয়ে গেছে, কয়েক দিন আগে একদিন জাফর সাহেব ব্যাগটা রেখে হাটতে চলে যাচ্ছিলেন, তিনি এগিয়ে দিলেন,

এটা আবার রেখে যাচ্ছ কেন?

মনে থাকে না গো, বয়েস হয়ে গেছেতো।

পরে ব্যাপারটা ভেবে তিনি কিছুক্ষণ হাসলেন। বাসায় ফিরে জাফর সাহেব চা পান করেন। মিসেস কেয়া সেই চা বানিয়ে কাপে করে নিয়ে এসে বারান্দায় হাজির হন, এই দৃশ্যেও জীবন নাটকের একটা সাসপেন্স এসে উপস্থিত হয়। চায়ের কাপে চুমুক দেয়ার পর জাফর সাহেব দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে উঠবেন,

আজকে চল্লিশ বৎসর,

কি দুধ কম?

এই চল্লিশ বৎসরে একবারও আমি কি এক কাপ পারফেক্ট চা পেয়েছি?

কি হয়েছে বল।

চায়ের কাপের বাইরে চায়ের দাগ।

মিসেস কেয়া কটমট করে তাকাবেন। জাফর সাহেব বলে যাবেন,

চা শুধু একটা পানীয় নয় কেয়া, চা হলো......

শেষ করার আগেই প্রস্থান ঘটে মিসেস কেয়ার। জাফর সাহেব তখন নিজ মনে গজগজ করতে থাকেন, একে বকা দেনতো ওকে দেন ঝকা।

এই হলো হাসনাহেনা হাউজের সাথে আমাদের পরিচয়ের প্রথম পর্ব।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:২০

মোঃ আক্তারুজ্জামান ভূঞা বলেছেন: হাসনাহেনা হাউজের সাথে পরিচিত হয়ে সুখি হলাম। ষাটুয়া জাফর এবং মিসেস কেয়াই কি হাসনাহেনা হাউজের একমাত্র বাসিন্দা? পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম....

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৮

জোলারোভিচপইজোলারোভিচ বলেছেন: অবশ্যই অপেক্ষার ফুল সুমিষ্ট হয়। আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে :D

২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ২:৪৯

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
পর্বাকারে চলবে?
আচ্ছা, পুরোটা না পড়ে মন্তব্য করা যাচ্ছে না কোন।

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১০:১০

জোলারোভিচপইজোলারোভিচ বলেছেন: এইটাই একটি মন্তব্য হিসেবে গৃহিত হলো। :P

৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:৫৮

হাসান মাহবুব বলেছেন: প্রথম পর্ব তো বেশ ভালো হয়েছে। চালায়া যান।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.