![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
:
: এই নিন
: কি এটা?
: একটা অার্টিকেল
: তো ?
: এখানে অাপনার সাইন লাগবে
: কার অার্টিকেলে অামি সাইন করবো?
: অার্টিকেলটটা অামার অার অাপনাকে সম্পাদনার যায়গায় সাইন করতে হবে
: কিন্তু অামি তো সম্পাদনা করিনি!
: তাহলে সম্পাদনা করে দিন!
: সরি এটাও পারবোনা হাতে অনেক কাজ।
: এজন্যই তো বললাম যাস্ট সাইনটা করে দিন।
: কিন্তু এটাতো নিয়মবিরুদ্ধ কাজ হবে
: অাপনি সময়ও দিতে পারছেন না যে ?
: সরি অাপনি অন্য কারো কাছে দেখুন।
অার কিছুনা বলেই মেেয়টি মুখ ঝামটি দিয়ে চলে গেল। মেেয়টির নাম সুপর্ণা অল্প কিছুদিন হলো অামাদের অফিসে জয়েন্ট করেছে। অামি মুর্শিদ, মাহমুদুল হাসান মুর্শিদ, একটা পত্রিকা অফিসে সহ:সম্পাদক হিসেবে কাজ করি। অামাদের অফিসের নিয়মানুযায়ী প্রতিটি অার্টিকেলে একজন সহ:সম্পাদক এর সাইন লাগবে তাহলেই তা সম্পাদকের টেবিলে যায়গা পাবে, অার তাই সুপর্না এসেছিল অামার কাছে কিন্তু অামার হাতে এখন একদম সময় নেই অাবার হাতে অনেক কাজ যার কারনে তারটা দেখেও দিতে পারলাম না। যাইহোক সুপর্ণা চলে গেলে অামি অামার কাজে ধ্যান দিলাম লাঞ্চ অাওয়ারের অাগেই মোটামোটি কাজ গুছিয়ে নিতে হবে লাঞ্চের সময় নাকি বাসায় কি কাজ অাছে অামাকে সেখানে থাকতে হবে এটা প্রধানমন্ত্রী তথা অামার পিতাজির নির্দেশ তার উপর কিছুক্ষণ পরপর হুম মিনিষ্টার তথা মাতাজির ফোন তো অাছেই। যাইহোক মনোযোগ দিয়েই কাজ করছিলাম কিছুক্ষণ পরই পিয়ন এসে জানালো সম্পাদক সাহেব ডেকেছেন। অাচমকা উনার ডাকে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম চকিতে অামার মেমোরিতে একটা ঝটিকা হামলা চাললাম যে, অামাকে দেওয়া উনার কোন কেজ বাকী অাছে কিনা? না তেমন কিছুই পেলাম না। হঠাৎ তলবের রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয়ে ধীরলয়ে এগিয়ে গেলাম স্যারের রুমের দিকে।
: স্যার অাসবো?
: হ্যা অাসো তোমার জন্যই বসে অাছি
রুমে ঢুকেই তো ব্যাবলা কান্ত, সুপর্না স্যারের সামনে বসা। এই মেয়ে অাবার এখানে কেন? রুমে ঢুকার পর স্যার বসতে বলে বললেন সুপর্না তো তোমার নামে অভিযোগ করেছে যে, তুমি নাকি জুনিয়রদের সময় দাও না?
অামি বললাম স্যার সময় দেওয়ার জন্য তো সময় থাকা শর্ত।
স্যার এটা খুব ভালো করেই জানেন যে অামি কাজে কি পরিমান ব্যাস্ত থাকি। তাই তিনি বললেন তা ঠিক অাছে তবে নতুনদের একটু সময় দিও তারা তোমােদর কাছ থেকে কিছু শিখতে পারবে।
অামি বললাম ঠিক অাছে তবে নতুনদের ও তো সিনিয়র দের প্রতি রিস্পেক্ট থাকা দরকার তাই নয় কি?
: তা ঠিক। অাচ্ছা শুনলাম তুমি নাকি অাজ লাঞ্চের পর ছুটি নিয়েছো?
: জি স্যার বাসায় একটু কি কাজ অাছে তাই বাবা যেতে বললেন।
: ও অাচ্ছা ঠিকঅাছে তা এসপ্তাহের অার্টিকোল গুলোর কি খবর?
: স্যার সেগুলোর কাজ প্রায় শেষ কালকের মাঝে পেয়ে যাবেন।
: ওকে ঠিকঅাছে তুমি এখন যেতে পার।
স্যারের রুম থেকে বের হয়ে মনে মনে সিন্ধান্ত নিলাম মেয়েটার একটা বিহিত করা লাগবে অামার নামে স্যারের কাছে কমপ্লেইন?? দেখাবো মজা!!! যাক এখন হাতের কাজ শেষ করে বাসায় যাবার প্রস্তুতি নেই। তার ব্যাবস্থা পরে করতেছি।
কাজ শেষ করে অফিস থেকে বের হতেই অাবার সেই ঝঞ্ঝাট মানে সুপর্না হাজির।
: কোথায় যাচ্ছেন?
: বাসায়
: অাজকে অামার সাথে লাঞ্চ করেন
: অামার সময় নেই
: শুনলেন স্যার কি বলল জুনিয়রদের কে একটু সময় দিতে
: সেটা অফিস অাওয়ারে অার এটা অফিস না। তাছাড়া লাঞ্চ করাটা অফিসের কাজের অন্তর্গত না।
তাকে অার কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই বাইক স্টার্ট দিয়ে বেরিয়ে গেলাম। যদিও বুঝতে পেরেছি অামার এমন অাচরণে সে কিছুটা কস্ট পেয়েছে। অামি অার পিছনে না দেখে সোজা বাসায় চলে অাসলাম
****
বাসায় ঢুকেই কেমন যেন লাগলো কোন সাড়া শব্দ নেই অামি কিছুই বুঝতে পারলাম না। কাজের মেয়েটা দরজা খুলে দিল বাবা মা বোন কাউকে দেখলামনা। অামি অামার রুমে এসে বসেছি মাত্র বোন হন্তদন্ত এসে বলল কিরে তোকে কখন অাসতে বলেছিলো বাবা?
: কেন লাঞ্চের অাগে?
: অার তুই কখন এলি?
: কেন অামি তো সময়মতই এসেছি।
: এই তোর সময় এখন বাজে দুইটা অার এটা তোর লাঞ্চ অাওয়ারের অাগে অাসা না?
: অাচ্ছা বাদ দে এখন বলতো দেখি বাবা মা কাউকে দেখছি না সবাই কোথায়?
: সবাই তোর জন্য পাত্রী দেখতে গেছে
: মানে??? বলা নেই কওয়া নেই এ অাবার কেমন নাশকতা?
: এখানে নাশকতার কি অাছে? তুই বলেইছিস বাবা মার পছন্দ তোর পছন্দ
: তাই বলে এভাবে?
: কেন তোর মনে নেই অামার বিয়ের সময় কি বলেছিলি?
: দেখ তুই মেয়ে অার অামি ছেলে
: তো কি হয়েছে?
: তুই যাবি অার অামি অানবো
: শুন এত কথা বলার কিছু নেই বাবা মা মামা গেছে মেয়ের সব কিছু দেখতে তাদের পছন্দ হলে তোরা মিট করে নিস। অামি অার কথা বারালাম জানি এখানে কথা বলা মানে উলু বনে মুক্তা ছড়ানো তাই বোন কে খাবার রেডি করতে বলে অামি বাথরুমে ঢুকলাম।
খানা খেয়ে লম্বা এক ঘুম দিলাম। বিকেলে বোনের ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো। বলল সবাই নাকি অামার জন্য বসে অাছে।অামি ফ্রেস হয়ে ড্রয়িং রুমে হেলাম গিয়ে দেখি বাবা অার বড় মামা বসা। সবাই কেমন হাসিখুশী অামাকে দেখে মামা অায় বস এখানে মামার পাসে গিয়ে বসতেই মা চা নিয়ে এলো। চা খেতে খেতে মামা বলল অামরা তোর জন্য মেয়ে দেখতে গিয়েছিলাম। মেয়ে সবার পছন্দ হয়েছে অাশা করি তোরও পছন্দ হবে। তুই একদিন সময় করে মেয়ের সাথে দেখা কর তোর পছন্দ হলে অামরা কথা বলবো। মেয়ে অামাদের সবার কাছেই ভাল লেগেছে তবে তোর বাবার সিন্ধান্ত তোর মতের বাহিরে কিছুই করা হবে না। এই বলে মামা মাকে বললেন ওকে মেয়ের নম্বারটা দিয়ে দিও। অারো কিছু টুকটাক অালোচনার মধ্য দিয়ে সেদিনের মতো চাপর্ব শেষ করলাম। মা অামার হাতে মেয়ের নাম্বারটা ধরিয়ে দিল অামি কিছু না বলে নাম্বারটা পকেটে রেখে দিলাম। চাপর্ব শেষ করে বাহিরে বের হয়ে একটু ঘুড়াফেড়া করে রাতে ল্যাপটপ নিয়ে বসলাম অফিসের কিছু কাজ ছিল তা শেষ করলাম।
****
পরদিন অফিসে যেতেই পিয়ন জানালো অফিসে অাসতেই নাকি স্যার অামাকে দেখা করতে বলেছেন।
অামি সরাসরি স্যারের রুমে গেলাম অাবার সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি মিস ঝঞ্ঝাট সেখানে বসা অামাকে দেখেই স্যারেরও সেই একই কথা তোমার জন্য অপেক্ষা তারপর স্যার বললেন অাজ তো তোমার হাতের কাজ শেষ হতে কতক্ষন সময় লাগবে?
: এই তো ঘন্টা দু এক
: ওকে তারপর একটু সুপর্নার সাথে বাহিরে যেতে পারবে ও নাকি পথ শিশুদের উপর একটা প্রতিবেদন লেখবে তার জন্য ওর কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা অার কিছু বাস্তব ছবি লাগবে। অামি বললাম স্যার এর জন্য তো একজন ভালো ফটোগ্রাফার নিয়ে গেলেই হয়। স্যার বলল অামি বলেছিলাম কিন্তু সে বলল ফটোগ্রাফার সাথে নিলে ভাল ছবি পাওয়া যাবে বাট অভিজ্ঞতা হবে সেটা নাকি তোমাকে নিয়ে গেলে হবে। পথ শিশুদের নিয়ে কাজ করবে ভেবে অামি অার নিষেধ করলাম না বরং ওর সাথে যেতে রাজী হলাম দশটা নাগাদ সে এসে অামার ডেস্কের সামনে এসে দাড়ালো
: এহেম এহেম ( কাশির অাওয়াজ)
: ও অাপনি এসে পরেছেন অাচ্ছা অার একটু সময় দেন অামার কাজ প্রায় শরষ।
: এই একটু কাজ পরে করলেও নিশ্চয় হবে।
তারমানে অামাকে এখনই উঠতে হবে। তারপর সে মোটামোটি অাকারের একটা হুংকার ছেড়ে বলল উঠলো কি হলো উঠুন ! !!
অফিসের অাসে পাসের কেবিনেও মনে হয় ওর অাওয়াজ পৌছে গেছে। অামি ফাইলটা কোনরকম সেভ করে কম্পিউটারটা বন্ধ করে উঠে দাড়ালাম। কেবিন থেকে বের হতেই দেখি সবাই কেমন অামার দিকে তাকিয়ে অাছে বুঝলাম সুপর্নার অাওয়াজ তাদের কান অবধি পৌছে গেছে। অামি কারো দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে বেড়িয়ে গেলাম অফিস থেকে বের হয়ে অামি পথশিশুদের জন্য কিছু খাবার কিনলাম অাসাকে খাবাবার কিনতে দেখে সুপর্না জিজ্ঞেস করলো এগুলো দিয়ে কি হবে? অামি বললাম অাপনি যে পথশিশুদের ছবি তুলবেন অার তাদের বাস্তব জীবন নিয়ে কাজ করে ফায়দা উঠাবেন বিনিময়ে তারা কি পাবে? অাপনার লেখা দ্বারা তো অার কোন দানবীর এগিয়ে অাসবে না কারন তারা এসমস্ত লেখা পড়েই না অন্তত অামাদের কাছ থেকে কিছুতো পাক।
সুপর্ণা অার কোন কথা বলল না অামি বললাম অামার বাইকে যেতে অাপনার কোন সমস্যা অাছে? সে অামার দিকে বিষ্ফোরিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো তারপর বলল বাইকে যাবনা তো কি অাপনার মাথায় চড়ে যাব? বুঝলাম কথা বলা বাতুলতা বৈ কিছু না তাই ওর হাতে খাবার গুলো দিয়ে বাইকে উঠতে বললাম। তারপর তাকে নিয়ে সোজা চলে অাসলাম কমলাপুর। সারাদিন ঘুরলাম দুপুরে পথশিশুদের খাওয়ালাম খুব মজা পেল সুপর্না ।। অামিও মেয়েটাকে যেমন ভেবেছিলাম তার থেকে ভিন্ন দেখলাম খুবই মিশুক প্রকৃতির মেয়ে কেমন যেন একটা ভাল লাগা কাজ করতে লাগল। সেও খুব হাসি খুশী কাটালো। বিেকলের দিকে তাকে নিয়ে ফিরে অাসলাম। সে বলল অাজ অার অফিসে যাবে না। অামার মন চাচ্ছিলো তাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে অাসি কিন্তু মুখে কিছু বলতে পারতেছিলাম না। ব্যাপারটা কেমন যেন সে বঝতে পারলো। তাই সে নিজ থেকেই বলল। ইচ্ছে করলে অামাকে নামিয়ে দিয়ে অাসতে পারেন। অামি কোন কথা খরচ করলাম মিষ্টি হেসে তাকে বাইকে বসার প্রতি ইঙ্গিত করলাম। তার সাথে কাটানো মুহুর্ত গুলো কেমন যেন দ্রুত চলে যেতে লাগল তাদের এলাকার সামনে অাসতেই সে বলল এলাকার ভিতর এভাবে যাওয়া যাবে না। তাই এখানেই নেমে যেতে হবে। অামি খেয়াল করে দেখলাম এটা অামাদের সম্পাদক স্যারদের এলাকা অার সুপর্ণাদের এলাকা একই এজন্য ই মনে হয় সে স্যারের কাছে একটু বেশী স্নেহ পায়। যাক বাইক থেকে নেমে মিষ্টি করে অামাকে একটা ধন্যবাদ দিয়ে বলল সাবধানে যাবেন। কেমন যেন একটা অান্তরিকতার ছোঁয়া খোঁজে পেলাম।। ****
বাসায় ফিরতেই বোন অার মা একযোগে হামলা চালালো অামার উপর
কিরে তুই নাকি মেয়েটার সাথে এখনো যোগাযোগ করিস নি?
: অাসলে অাজ সারাদিন বিজি ছিলাম তো তাই।
: তুই এখন মেয়েটাকে ফোন দিবি
: এখন??? একটু পরে দেই???
: না তুই এখন অামাদের সামনে দিবি
জানি অাম্মুর মাথায় একবার যা উঠে তা নামানো যায় না।মেয়েটার নম্বার বের করতে গিয়ে ভিতরটা কেমন জানি নড়ে উঠলো বারবার সুপর্নার কথা মনে পরছে কিন্তু মেয়েটা অামাকে কিভাবে দেখে তা তো অামি জানি না। যাক অাপাতত এদের হাত থেকে বাচি পরে অবস্থা বুঝে না হয় সুপর্ণা কে মায়ের সামনে পেশ করবো। নম্বারটা বের করে ফোন দিলাম মা অার বোন পাসে দাড়িয়ে অাছে কেমন যেন একটা অস্বস্তি কাজ করে ভিতরে মনে মনে দুঅা করতেছি যেন ফোন টা পিকাপ না করে। কল ঢুকার সাথে সাথেই রিসিভ হলো মনে হচ্ছে এ ফোনটার জন্যই বসে ছিল।
: হ্যালো অামি মুর্শিদ বলছিলাম
: জি বলুন?
ভাব কত মেয়ের যেন অামাকে চিনেই না। মনে হচ্ছিলো লাইনটা কেটে দেই কিন্তু বোন অার মায়ের কারনে পারলাম না। তাই ভদ্র ভাবেই বললাম
: না মানে মা বলছিলেন অাপনার সাথে দেখা করতে অার সেজন্যই অাপনাকে ফোন দিলাম।
: ও অাচ্ছা তা কোথায় অাসতে হবে?
: জোৎস্না সরেবর চিনেন?
: হ্যা
: ঠিক অাছে তাহলে সেখানেই দেখা হচ্ছে।
: কখন অাসবো?
: কাল বিকেল পাচটায়
: ওকে ঠিক অাছে
****
জোৎস্না সরেবরে বসে অাছি প্রায় পনের মিনিট তবুও অাসার খবর নাই একবার ভাবলাম ফোন দেই তারপর ভাবলাম থাক ফোন দিব না যদি না অাসে না অাসলো সেটা তো অারো ভালো। পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করে উঠে যাব ভেবে বসে অাছি অার চারপাস টা ভালো করে দেখছি হঠাৎ হলুদ ড্রেস পড়া মেয়ের দিকে দৃষ্টি গেল কেমন চেনা চেনা লাগছে হ্যা চেনাই তো এ যে সুপর্ণা কিন্তু ও এখানে কেন?? দেখলাম সে অামার দিকেই এগিয়ে অাসছে। অামি চুপচাপ বসে রইলাম কারন সুপর্ণার সাথে কথা বলতেছি এমন সময় যদি মায়ের মহারাণী চলে অাসে তাহলে ব্যাপার টা ঘোলাটে হয়ে যােব কিছু বুঝানোর অাগেই উভয়ে ভুল বুঝবে। সুপর্ণাও অামার পাস কেটে সামনে চলে গেল অামি চুপচাপ মাথা নিচের দিকে দিয়ে মোবাইল টিপছি যেন অামি তাকে দেখতেই পাইনি। অামাকে পাস কাটিয়ে কিছুদূর গিয়ে অাবার দেখলাম অামার দিকেই ফিরে অাসছে। একেবারে অামার সামনে এসে দাড়ালো।
: অারে মুর্শিদ স্যার অাপনি এখানে?
অামি মাথা তুলে অবাক হবার ভঙ্গি কনে অারে সুপর্ণাযে অাপনি এখানে কখন অাসলেন
: এইতো মাত্র তা স্যার অাপনি এখানে কি মনে করে??
: এমনিই অাসলাম একটু ঘুড়তে (মিথ্যা বললাম) তা অাপনি এখানে ??: অামার এক ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে এসেছি
জানতে ইচ্ছা করছিলো ফ্রেন্ড ছেলে না মেয়ে কিন্তু জিজ্ঞেস করতে পারছি না
: তা অাপনার ফ্রেন্ড কোথায়??
: এখনো অাসে নি
: ও অাচ্ছা
: স্যার অামার ফ্রেন্ড অাসার অাগ পর্যন্ত অাপনার সাথে বসি
ইচ্ছে না থাকা সত্তেও বসতে বললাম। তারপর তার সাথে গল্প করতে করতে ভুলেই গেলাম যে অামি কারো সাথে দেখা করতে এসেছি সন্ধার পর সুপর্ণা বলল তাকে নিয়ে ফুচকা খেতে তার সাথে ফুচকা খেতে গিয়ে মনে পরলো অারে অামি না কার সাথে দেখা করতে এসেছিলাম। কই সে তো একবারও অামায় ফোন দিল না। যাক মনে মনে খুশই হলাম অন্তত এই বাহানায় বিয়ে টা বাদ দেয়া যাবে। তারপর সুপর্ণা কে রিক্সায় তুলে দিলাম। অার অামি একরাষ অানন্দ নিয়ে বাড়ী ফিরলাম। এর মাঝেই ঠিক করে নিলাম বাড়ি গিয়ে কাকে কি বলবো। এবং কিভাবে সুপর্ণার কথা উঠাবো ।
বাসায় ডুকতেই পরিবেশটা অামার কাছে কেমন যেন অচেনা অচেনা মনে হলো কেমন যেন গুমটযুক্ত। অামি কিছুই না বলে অামার রুমে গেলাম কিছুক্ষণ পর বোন অাসলো।
: ভাই তুই এটা কি করলি?
অামি হতবাক হয়ে বললাম কি করলাম মানে
: কি করলাম মানে বুঝতেছিস না?
: যা বলবি স্পষ্ট করে বল
: তুই একজনের সাথে দেখা করতে গিয়ে অারেক জনকে নিয়ে গল্প করছিলি???
অামিতো পুরাই থ মেয়ে গেলই বা কখন অার অামাকে দেখলোই বা কোথা থেকে অার গেলোই যখন অামার সাথে দোখি না করেই চলে অাসলো??
: তোকে কে বলেছে
: কে বলেছে মানে? মেয়ে নিজে অাম্মার কাছে ফোন দিয়েছিলো।
: মেয়ে অামাকে চিনে কিভাবে?
: মা তোর ছবি দিয়ে অার অামার কাছ থেকে তোর ফেসবুক একাউন্ট নিয়েছে।
: কি জাদরেল মেয়েের বাবা!! তা মা কি বলল?
: কি বলল জানিনা তবে ভাবে বুঝলাম তোর খবর অাছে। অাচ্ছা ভাই মেয়েটা কেরে??
: অামার অফিসের কলিগ
: শুধুই কলিগ না অারো কিছু??
: অারে না শুধুই কলিগ
: অাচ্ছা তাহলে তো ভালই যাক তুই তৈরী হয়ে নে কিছুক্ষনের মাঝেই তোর উপর অাইলা সওয়ার হবে।বলতে না বলতেই মা রুমে ডুকলো মার চেহারার দিকে তাকানো যাচ্ছে না অন্ধকার হয়ে অাছে।
: তোর কাউকে পছন্দ অাছে এটা অামাদের অাগে বললেই পারতি?
: না মা তোমরা যা বুঝতেছো তা ঠিক না অামার কোন পছন্দ নাই অার ঐ মেয়ে তো কেবল মাত্র অামার কলিগ। (অাগে নিজে বাচি)
: তা কলিগের সাথে কতক্ষন কথা বলা লাগে ?
: ( এবার একটু সুযোগ পেলাম) তোমাদের মহারাণী না অাসলে অামি কি করবো??
: অাসে নি তোকে কে বলল?
: অাসলে সে অামার কাছে অাসবে তো??
: হুম তোমার কাছে অাছে অাসবে মেয়ে এত অভদ্র না যে তুমি একজনের সাথে কথা বলতেছো অার সে এসে তোমাকে ডিস্টার্ব করবে
: কিন্তু অামি তো ওর অপেক্ষাতেই ছিলাম।
: এখন এসব বাদ অাগে বল তোমার কোন পছন্দ নেই তো?
এবার পরলাম বিপাকে যদি বলি হ্যা অাছে অার সেই মেয়ে হলো সুপর্ণা যার সাথে অাজ বিকাল টা কাটালাম। তাহলে অার রক্ষে নেই। তাই অাপাতত বাঁচার জন্য বললাম না অামার কোন পছন্দ নাই।
: ঠিক অাছে মেয়ে তোমাকে দেখে পছন্দ করেছে এবং সে বিয়েতে রাজি
: কিন্তু অামি তো তাকে দেখিনি??
: এটা তোমার শাস্তি তুমি তাকে দেখতে পাবানা তবে কথা বলতে পারবা।
: এটা কেমন কথা?
: কেমন কথা মানে তোমার জন্য অামাদের মান ইজ্জত যেতে বসেছিলো।
: তাই বলে,,,,,,,,,,,
অামার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে মা বললেন এটাই তোমার বাবার সিদ্ধান্ত।
এর মধ্যে অাবার বাবা কেন এমনিতেই বাবা কে অামি ভয় পাই অাবার এখানেও উনি মা অামাকে অার কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বেরিয়ে গেলেন।
বোন বলল এখন দেখ কেমন লাগে। অার তোর যদি কোন পছন্দ থাকে এখনো বলতে পারিস সময় অাছে এই বলে সেও বের হয়ে গেল। অামি চিন্তা করতে লাগলাম কিভাবে কি করা যায়? কিন্তু কোন কুল কিনারা খোজে পেলাম না। সবশেষ সরাসরি অাব্বুকে বলার প্রস্তুতি নিলাম। কেননা বাবা অামার কোন কাজে বাধা দেয় না।
রাতে খাবার খেতে বসেছি দেখি সবার মুখ ভার কথা বলার কোন সুযোগই নই কেবল চামুচের শব্দ। কি করবো মাথায় কিছুই ডুকতেছে না। খাবার মাঝেই হঠাৎ বাবা মুখ খুললেন। অামার দিকে তাকিয়ে বললেন মেয়ের বাবা ফোন দিয়েছিলেন মেয়ের তোমাকে পছন্দ হয়েছে এখন তোমার মতামত জানাতে বলেছে। অার তোমরা রাজী হলে কাজটা দ্রুত সেরে ফেলতে চাচ্ছেন। অামি কিছু বলার অাগেই মা বলে উঠলেন মুর্শিদেরও মেয়ে পছন্দ হয়েছে।অামি পুরা হবাক হয়ে বসে রইলাম জীবনে কখনো বাবা মার মুখের উপর কথা বলিনি কারন তারা কখনো সন্তানের অমঙ্গল চায় না বরং নিজের সর্বস্ব দিয়ে সন্তানের সুখের চিন্তা করে। তাই অামি চুপ রইলাম। বাবা বললেন যেহেতু তাদের একে অন্যকে পছন্দ হয়েছে তো অামি কালকে মেয়ের বাবাকে জানিয়ে দিচ্ছ যে অামাদের মেয়ে পছন্দ হয়েছে এবং অামরা অাগামী শুক্রবার অাংটি পড়ানোর জন্য অাসতেছি তারপর বোন কে বললেন সুমি (অামার বোন) কাল কে তুই অার তোর মা অার তোর বড় মামা গিয়ে মেয়ের অাংটি বানাতে দিয়ে অাসিস।
খানা খেয়ে বিছানায় শুয়ে চিন্তা করতে লাগলাম কিন্তু কোন কূল কিনারা খোঁজে পেলাম না কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম। একদিকে বাবা মা অার অপর দিকে সুপর্ণা। অাবার অামাদের ফুল ফ্যামিলিতে অামিই সবার বড় ছেলে অামি যদি উল্টা পাল্টা কিছু করিরি তাহলে সবা কাছে বাবার মাথা নিচু হয়ে যাবে। অাবার এখন এই সময় সুপর্ণার কথাও বলা যাবেনা কারন বাবা ঐ মেয়ের বাবার সাথে বিয়ের কথা দিয়ে দিয়েছে এখন অামি না করলে এখানেও বাবার সম্মানহানী হবে। অথচ বাবা অামাকে নিয়ে সবার কাছে গর্ববোধ করে। যাক বাবার জন্য না হয় অামার ভাললাগাটাকে বাদই দিলাম। তবুও তো বাবার জন্য কিছু করতে পারলাম ভেবে ভাল লাগলো। এই ভালো লাগা নিয়েই ঘুমালাম।পরদিন যথা নিয়মে অফিসে গেলাম সব কিছুই ভালোই ছিল কিন্তু সুপর্ণার সামনে অাসাতেই কেমন যেন হয়ে গেলাম। কিন্তু বাবার মুখটা সামনে ভাসতেই অাবার নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে নিলাম কাজের অযুহাত দেখিয়ে লাঞ্চ অাওয়ার পর্যন্ত বিরত রইলাম কিন্তু লাঞ্চ অাওয়ারে অার পারলাম না জোড় করে তার সাথে লাঞ্চ করালো। অামি কোন কথাই বললাম না একবার সে জিজ্ঞেস করেছিলো কি হয়েছে অামি এড়িয়ে গিয়ে বললাম কিছুনা। তারপর সেও কোন কথা বলে নি। অফিস থেকে বাসায় অাসার সময় দিনকয়েক ছুটি নিলাম। । একটু একাকী সময় কাটানোর জন্য।
****
শুক্রবার বাসায় বসে অাছি তিনদিন অফিসে যাইনি সুপর্ণাা একবারও ফোন দেইনি। মনে মনে হাসতে লাগলাম নিজের বোকামির জন্য যে অামি তার জন্য কি করতে চাচ্ছিলাম অার অামার প্রতি তার অনুভতিটা কি? যাক ভালোই হলো। । বিকেল বেলা মেয়েদের বাড়িতে যাব অাংটি পড়াতে সুপর্ণার চিন্তাটা অাপতত বাদ দিলাম মেয়ে যদি জিজ্ঞেস করে সেদিন তার সাথে দেখা করতে গিয়ে অারেকজন কে নিয়ে ঘুরলাম এর কি জবাব দিব?
বিকেল বেলা সবাই মেয়েদের বাড়িতে বসে অাছি মেয়ে এখনো অাসেনি অাপ্যায়নের তুফান চলছে। কিন্তু অামার ভিতরটা কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে কারন যে এলাকায় অামরা এসেছি এটা সম্পাদক সাহেবদের এলাকা অাবার সুপর্ণাদেরও এলাকা। কিছুক্ষণ পর মোটামোটি একটা ভালো ঘোমটা দিয়ে মেয়েকে নিয়ে তার মা অাসলেন অামি অাড় চোখো তাকালাম না দেখতে পেলাম না।অাবার মেয়েকে এনে মা অার বোন অামার পাসেই বসালো। অারে একটু সামনে বসাতি অন্তত চেহারটা দেখতে পেতাম! এখন চেহারা দেখতে হলে পুরো ঘুরে যেতে হবে। যাক কিছুক্ষণ কথা বার্তা বলার পর এবার পালা অাসলো অাংটি পড়ানোর। বোন অামার পাসে বসে মেয়েকে অাংটি পড়িয়ে দিতে বলল এই সুংযোগে অামি তার দিকে ভাল করে তাকালাম। তাকিয়েই তো অামার হাত থেকে অাংটি পরে যাওয়ার উপক্রম। বাবা বললেন মুর্শিদ কোন সমস্যা অামি অনেক কষ্টে বললাম না সব ঠিক অাছে অাংটি টা কোনক্রমে পড়িয়ে ঝিম মেরে বসে রইলাম তখন বাবা বলল যে ওরা একটু অালাদা হয় কথা বলুক অামরা বিয়ের দিন তারিখ টা ঠিক করে নেই। তখন মেয়ের বাবা বলল সুপর্ণা মা যাও মুর্শিদ কে নিয়ে তোমার রুমে যাও। রুমে গিয়ে অািম চুপ করে সে রইলাম। সুপর্ণা এক গ্লাস পানি নিয়ে এসে অামার দিকে বারিয়ে দিয়ে বলল নেন স্যার পনি টুকু খেয়ে নেন অািম কিছু না বলে পানি টুকু খেলাম তারপর অাবার চুপ করে বসে রইলাম। সুপর্ণা অামার সামনে একটা চেয়ার নিয়ে বসলো উভয়ে চুপচাপ অামি তার দিকে তাকিয়ে অাছি সে অামার দিকে তাকিয়ে অাছে। সুপর্ণায় মুখ খুলল কি হলো কিছু বলছেন না যে?
এসবের মানে কি কথাটা হঠাৎ মুখ থেকে বের হলো মনে হয় একটু জোড়েই বলা হয়েগেছে সাথে সাথে সুপর্ণা অামার মুখ চেপে ধরলো অাস্তে মানুষ তো মনে করবে অামরা ঝগড়া করতেছি। তারপর অামি স্বাভাবিক কন্ঠেই বললাম এসবের মানে কি?: কেন কি হয়েছে?
: কি হয়েছে মানে তুমি অামাকে কিছুই তো বললা না?
: বললে কি অার অাজকের সারপ্রাইজটা পেতেন স্যার
: তা ঠিক কিন্তু মা বাবা বোন তারা
: মা অার সুমি অার কবির অাঙ্কেল (সম্পাদক সাহেব) উনারা সবাই অামার সাথে অার কবির অাঙ্কেলই তো প্রস্তাব নিয়ে অাসলো অার অামি অাপনাকে বুঝার জন্য অাঙ্কেলে অফসে চাকরীর অভিনয় করলাম কিন্তু বাবা এসবের কিছুই জানতো না। ।
: তাই বলে তুমি এভাবে,,,,,,,,,,,
: অামার মুখের কধা কেড়ে নিয়ে বলল যাকে বাইকের পিছনে বসিয়ে ঘুরবন যার সাথে বসে বিকেল কাটাবেন যার সাথে বসে ফুচকা খাবেন তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করবেন তাতো অামি হতে দিতে পারিনা। শত হলেও তো অামি একচন সাংবাদিক মানুষের সুখে দুঃখের সঙ্গী।
: কিন্তু তুমি কি জান অামার কতটা কস্ট হয়েছে?
: কেন কষ্ট হবার কি অাছে?
: কি অাছে মানে? অামি তোমাকে কতটা ভালোবেসসে ফেলেছিলাম তুমি জান?
: দেখলামই তো ভালোবাসার নমুনা অামাকে ছেড়ে অারেককজনকে বিয়ে করতে নেচে নেচে চলে অাসলেন।
: অামি এই তিনদিন শুধু তোমার একটা ফোনের অপেক্ষায় ছিলাম। তুমি একবার অামাকে ফোন দিয়ে দেখতে
: তাই!!! তোমার অনেক কষ্ট হয়েছে তাই না যাও বিয়ের পর সব সুদ করে দিব এই বলে সুপর্ণা অামার হাতে হাত রাখলো। অামার অবাধ্য হাতটাও তার হাতের ছোঁয়া পেয়ে অারো চঞ্চল হয়ে উঠলো। দুজনে দুজনে হাত ধরে বসে অাছি তখন বোন এসে বলল এই যে মিস্টার সাংবাদিক সাহেব অাপনি নাকি মেয়ে দেখেননি তাহলে প্রথম দেখাতেই হাত ধরে ফেললেন নাকি প্রপোস করতেছেন? অামি মিস্টি হেসে মনে মনে বোন কে একটা ধন্যবাদ দিলাম অআমাকে এতবড় একটা সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য।
©somewhere in net ltd.