নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কি আর বলিব,বলার তো কিছুই খুঁজে পাই না।শুধু একটা কথায় বলি আল্লাহ এক, হযরত মোহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর প্রেরিত নবী ও রাসূল। [email protected]

ক্ষনিকের ছায়াবাজি

আয় সুখ তোর বুকে মাথা রেখে কাঁদি, ভোরের স্বপ্ন আমার ভেঙ্গেছে আলোর নদী। সুন্দর মদের চেয়েও ভয়ঙ্কর! [email protected]

ক্ষনিকের ছায়াবাজি › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের শেষ গল্প

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৯:২৯

রুবি বেগম এবং সন্ধা রানী বৃদ্ধাশ্রমের ঘড়টাতে
পাশাপাশি থাকে।একদিন কৌতুহল নিয়ে সন্ধা রানী রুবি
বেগমকে বললেন,আপা আপনার ছেলে শুনলাম কোটিপতি একটাই
মাত্র ছেলে আপনার তাহলে আপনি এই বয়সে এখানে কেনো?
রুবি বেগম:সবটাই নিয়তি
সন্ধা রানী:যদি কিছু মনে না করেন আমাকে বলতে পারেন রুবি বেগম:একাত্তরে যখন যুদ্ধ চলেছিলো তখন বাবলু(আমার
ছেলে)আমার পেটে ছিলো।ওর বাবা যুদ্ধে শহীদ হয়।
বাহাত্তরে ওর জন্ম হয়।ছেলের আমার চেহারা হয়েছিলো
রাজপুত্তুরের মতো(চোঁখে কোনে পানি)
সন্ধা রানী:তারপর?
রুবি বেগম: ঘড়ে যেগেতু উপার্যন করার মানুষ ছিলোনা তাই আমি নিজেই মানুষের দারে দারে ভিক্ষা করে খাবারের
জোগার করি,এরকম তো আর চলেনা তাই গ্রামের এক মুরুব্বির
কথায় ঢাকায় তার ছেলের বাসায় কাজ নেই।দিনগুলো ভালো
ছিলো সারাদিন খাটুনির পরে মানিক যখন আমার বুকে ঘুমাতো
তখন সব কস্ট দূর হয়ে যেত
সন্ধা রানী:আপনার হাতের পোড়া দাগটা কিসের? রুবি বেগম:আমার বাবলু একদিন মজা করে বল মেরে ছিলো
(একটু মুচকি হাসি) আমি তখন রান্না করছিলাম,বলটা গরম
তেলে পরাতে তেল আমার হাতে ছিটকে পরে
সন্ধা রানী:ও.....হ্যাঁ তারপর বলুন
রুবি বেগম:ওখানে কাজ করেই ছেলেকে বি এ পাস
করাই,যাদের বাসায় কাজ করতাম তারাও অনেক সাহাজ্য করে বাবলুর পড়াশুনার জন্য।এরপর ও একটা কোম্পানিতে ভালো
বেতনে চাকরি পায় আমিও কাজ ছেরে দেই শরীরেরও বয়স
বেড়েছে কাজ করতেও অক্ষম হয়ে গেছি।বাবলুকে নিয়ে
ভালোই ছিলাম
সন্ধা রানী:তারপর কি হলো ভালোই তো চলছিলো
রুবি বেগম:ছেলে আমার রাজপুত্র ছিলো,দেখার মতো।একদিন কোম্পানির মালিক রফিক সাহেব বাবলুকে দেখলো এবং তাকে
দেকে পাঠালো
রফিক সাহেব:বাবলু তোমার কে কে আছে?
বাবলু:স্যার শুধু মা
রফিক সাহেব:বাবলু তোমাকে আমার অনেক পছন্দ,আমি তোমাকে
কিছু কথা বলতে চাই বাবলু:জ্বী স্যার বলুন
রফিক সাহেব:বাবলু আমার একটা মাত্র মেয়ে আছে মেরিনা
আমি চাই তুমি ওকে বিয়ে করো,তবে তার জন্য তোমাকে কিছু
শর্ত মানতে হবে
বাবলু:বলুন স্যার(কিছুটা লোভি দৃস্টি)
রফিক সাহেব:আমার যেহেতু একটি মাত্র মেয়ে তাই আমি চাই যে আমার মেয়েকে বিয়ে করবে সে সারাজীবন আমার কাছেই
থাকবে এবং আমার সব বিজনেস সে পরিচালনা করবে।এখন
কথা হলো তুমি যদি আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চাও তাহলে
আমার কথাগুলো মানতে হবে
বাবলু:স্যার তাহলে আমার মা এর কি হবে
রফিক সাহেব:বাবলু তুমি এখনও মধ্যযুগেই রয়ে গেছো,তুমি হয়তো যানোনা এই শহরে এমন কিছু যায়গা আছে যেখানে
শতশত বৃদ্ধ মানুষ একসাথে থাকে।ওখানে পাঠিয়ে দাও
মাসেমাসে দেখা করবে খরচ দিবে আর কি চাই
বাবলু:স্যার আমি ভেবে যানাবো(চিন্তাযুক্ত স্বরে)
রফিক সাহেব:ওকে তাহলে এখন আসতে পারো।
সেদিন বাবলু ঘড়ে এলো খাবার দিলাম বলল মা এখন খিদে নেই পড়ে খাবো(চিন্তিত ভংগি)
রুবি বেগম:কি হয়েছে তোর?শরীর খারাপ নাকি?অফিসের
কেনো ঝামেলা?
বাবলু:না মা তেমন কিছু নয়
রুবি বেগম:কিছু তো হয়েছে মাকে বল কি হয়েছে
বাবলু:একে একে সব কথাগুলো বললো রুবি বেগম:সব শুনে ধুর পাগল আমি আর কয়দিনই বা বাঁচবো
তোর তো জীবন শুরু,রফিক সাহেব যা বলেছে মেনে নে আমিও
মানিয়ে নেবো!
সন্ধা রানী এতক্ষন চুপ করে ছিলেন,এবার একটা বড়
দীর্ঘশ্বাষ ছেরে বললেন আপনি মা আপনি সন্তানের জন্য
সবকিছু ছারলেন কিন্তু সন্তান কিভাবে আপনাকে ছেরে দিলো রুবি বেগম:বাবলু বলেছিলো আমাকেও তাদের সাথে রাখবে
কিন্তু ওর বউ রাজী হয়নি,সে বলেছে মানিয়ে নিতে
পারবেনা আমার আর তাদের সমাজ অনেক আলাদা
সন্ধা রানী:আপনি কি সুখি?
রুবি বেগম:হ্যাঁ আমি অনেক সুখি কারন আমার ছেলে এখন
সমাজের দশজনের একজন সন্ধা রানী:আর আপনার ছেলে সে কি সুখি?
রুবি বেগম:সারারাত কাঁদলেন এবং উত্তর খুজলেন,তার বাবলু
কি সুখি?যে সব ছেলেরা মা বাবাকে ছেরে আলাদা থাকে
তারা কি আসলেই সুখি???
প্রশ্নটা আমারও রইলো সমাজের এই ধরনের মানুষগুলোর কাছে

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.