নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আপনার বিবেক

মুক্তির কথা

আপনার বিবেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

উত্তরসূর: উত্তরসূরি তৈরি করতে হয় প্রথম দিন থেকেই। আমাদের দেশে নেতারা উত্তরসূরি রেখে গেছেন। এমন উত্তরসূরি, যারা দেশকে করেছেন অন্যের সম্পদ। ১৬ কোটি মানুষকে করেছেন গুটি কয়েক মানুষের দাস। ১৬ কোটি মানুষ যেন দাসত্তের শিকল কোন ভাবেই ছাড়াতে পাড়ছেন না।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৫

উত্তরসূরিঃ পৃথিবীর আবর্তনে সব কিছুই চলন্ত। চলন্ত সময়। সময়ের স্রোতে সবই ই রূপান্তরিত হয়। পানি থেকে বাস্প, আবার বাষ্প থেকে বৃষ্টি। শিশু থেকে যুবক, যুবক থেকে বৃদ্ধ। একের স্থান অন্যে গ্রহন করে। কেউ ছেড়ে যায়, তো কেউ অধিগ্রহন করে। যে যায়, সে যেতে চায় না, যে আসে সে হাসে প্রাপ্তির স্বাদে। প্রথম বাবা হয়ে, এমনই অনুভুতি কারও কারও হতে পারে, যে "এইতো সেদিন আমিও ইস্কুলে যেতাম, বন্ধুদের সাথে মাঠে ঘাটে, ছুটে বেড়াতাম, অথচ আজ আমার সন্তান সেই সব দিনগুলিতে ছুটবে। আমার সেই দিনগুলি আর আমার নেই।" যা ই ভাবি, ধীরে ধীরে তৈরি করি নিজের সন্তানকে, নিজের অতিপ্রীয় দিনগুলি তুলে দিতে তার হাতে। নিজের ভালো লাগাকে গেথে দেই তার হৃদয়ে, মস্তিস্কে, মননে। আর অপ্রীয় বিষয়, বস্তু থেকে দূরে রাখি তাকে। শিখিয়ে দেই পথ চলা, কথা বলা। ন্যায় নীতির পরিমাপ, ত্যাগ তিথিক্ষার প্রয়োজনীয়তা সবই তাকে শিখিয়ে দেই নীরবে বা সরবে, চেতনে বা অবচেতনে। ধীরে ধীরে সে গ্রাসে আমার সে সব, সে চলে আমার পথ। সে হয় আমার উত্তরাধিকার।

নিজ সন্তানকে উত্তরাধিকার করারা জন্যে আমরা কখনও উদ্বিগ্ন নই। নিজ সন্তানকে উত্তরসূরি করতে এবং এর জন্যে প্রস্তুত করতে আমরা যেন সহজেই মেনে নিয়েছি, আর মেনে নেওয়ার সাথে সাথেই উৎসাহের সাথেই প্রয়োজনীয় সকল কিছুই করে থাকি।

অন্যদিকে কর্ম ক্ষেত্রে, বা রাজনীতিতে আমরা যেন কিছুতেই নিজেদের স্থান ছাড়তে রাজি না। নতুন স্থান নিতে অতি উৎসাহী হলেও, পুরানো স্থান যেন আঁকড়ে ধরি জোকের মতো। লবন দিয়ে ছাড়াতে হয়। আর এই জন্যেই অতি সচেতনতার সাথে কাছে ধারে এমন কাউকেই রাখি না, যে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারে, আমার স্থানটি গ্রহন করতে। যদিও লবন দিয়ে ছাড়িয়ে দেওয়া হয়, নতুন লোক যেন কিছুই বুঝে উঠতে না পারে। সব কিছুই যেন তার কাছে গোলক ধাঁদার মতো লাগে। এতে করে খোরা উত্তরসূরি, পুরো নির্ভরশীল হয়ে থাকবে। শুধু তাই নয়, সকলে বুঝতে পাড়বে, আমিই ছিলাম প্রকৃত, উৎকৃষ্ট ঐ স্থানের জন্যে। কর্ম ক্ষেত্রে এটি তেমন সম্ভব নাও হতে পারে, যদি কর্মস্থানের মহা ব্যাবস্থাপনাতে ত্রুটি না থাকে। মহাব্যাবস্থাপনা এমন ভাবে সাজানো হয়, যাতে স্বচ্ছতা থাকে সকল পর্যায়ে, সকল কর্মীর কাছে (নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে)।

কিন্তু রাজনীতিতে এমন মহা ব্যাবস্থাপনা নেই। যার ফলে নেতার আশে পাশে যারা থাকেন, তারা খুব সামান্যই শিখতে পারে। যারা শিখার মতো মন মানসিকতা, বা মেধা রাখে, তাদেরকে নেতাজি কখনই কাছা কাছি রাখে না। একবার লক্ষ্য করে দেখুন, আপনার পরিচিত কোন নেতার সাগ্রিদ্দের কথা। মনে হয় মিলে যাবে, আমার এই বিশ্লেষণ। নেতার চার পাশে থাকবে, কিছু মস্তিষ্কহীন গুন্ডা বাহিনী। যারা পোষা কুকুরের মতো নেতার (মালিকের) হুকুম তামিল করে। কাউকে কামড়ে দিতে বললেই, বা ইসারা করলেই হোল। কুকুর গুলি ঝাপ্তে পড়ে বিধ্বস্ত করে ফেলবে তাকে। কিন্তু নেতার অবর্তমানে অন্য কোন নেতা তৈরি হবে না।

আমাদের দেশ জন্ম থেকেই জ্বলছে নেত্রিত্তহীনতায়। যে সব নেতা এসেছিলো এই বাংলার বুকে, তারা যোগ্য নেত্রিত্ত তৈরি করে যান নাই। আর যে নেতা তার যোগ্য উত্তরসূরি তৈরি করতে পারেন না। সে আসলে জনতার যোগ্য নেতাও হতে পারেন না। যুক্তি হচ্ছে, “বৃক্ষ তোমার নাম কি? ফলে পরিচয়।“ নেতার দূরদর্শন থাকতে হবে। পৃথিবীতে কেউ চির স্থায়ী নয়। এবং কেউ জানেও না যে কে কখন যাবে পৃথিবী ছেড়ে। প্রস্তুত হতে হয় প্রথম দিন থেকেই। উত্তরসূরি তৈরি করতে হয় প্রথম দিন থেকেই।

আমাদের দেশে নেতারা উত্তরসূরি রেখে গেছেন। এমন উত্তরসূরি, যারা দেশকে করেছেন অন্যের সম্পদ। ১৬ কোটি মানুষকে করেছেন গুটি কয়েক মানুষের দাস। ১৬ কোটি মানুষ যেন দাসত্তের শিকল কোন ভাবেই ছাড়াতে পাড়ছেন না।

নেত্রিতের অভাব না থাকলেও সঠিক নেত্রিত্তের আসলেই অভাব। একজন নেতার অপেক্ষায় থাকার কোন অর্থ হয় না। প্রয়োজন একগুচ্ছ নেতার যারা নেত্রিত্তের প্রতিটি পর্যায়ে কাজ করবে, দেশ গড়ার, মেধা তৈরি করার। একটি বিশ্ববিদ্যালয় চাই যার ছাত্র হবে পুরো দেশ, যার ক্যাম্পাস হবে পুরো দেশ, যার ফলাফল হবে একদল বুদ্ধি দীপ্ত, অনুকরণীয়, মহান হৃদয়ের কর্মী বাহিনী। দেশ গড়ার সকল স্বপ্ন থাকবে তাদের চোখের পাতায়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.