নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ জাহিদ হোসেন

জাহিদহোসেন

দয়া করে আমার কোন লিখা অনুমতি ছাড়া কপি করবেন না। আর আমার আর্টিকেল এর সাথে আমার নাম উল্লেখ করবেন যদি কোথাও শেয়ার করতে হয়। আইন বিষয়ে লিখতে গিয়ে আমার সাহিত্য নিয়ে লিখার দক্ষতা চলে আসে। মুসলিম আইন পড়তে গিয়ে আমি পবিত্র কুরআনের বাংলা অনুবাদও পড়তে শুরু করি সে সাথে হিন্দু আইনের উৎস জানতে গিয়ে বেধ, রামায়ণের অংশ পড়ি। কিন্তু নিন্দুকেরা বলে, আইনে পড়া মানেই মিথ্যা কথা বলবে। আজ পর্যন্ত আইনের বইগুলোতে তো কোন মানুষের নিজের কথা বা যুক্তি দেখলাম না। শুধু নিয়ম আর নিষেধ দেখলাম। তাহলে নিন্দুকেরা কেন এসব বলে। আমি বলি, “অজ্ঞতাই মূর্খতার শামিল”। তাই আসুন এসব মূর্খদের পরিহার করে চলি ও তাদের সাথে তর্ক না করি। কারণ “তর্কে জিতার সব চেয়ে বড় কৌশল হল তর্ক না করা”-(ডেল কার্নেগী)। কি আর করা, ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভেবে দিন কাটানো। আইনের ছাত্র হিসেবে দেশের সাধারণ ও নিম্মবিত্ত মানুষের কাছাকাছি অবস্থান করে তাদের জীবন মান উন্নয়নে নিজেকে নিবেদিত করা আর দেশের আইন ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার সপ্ন। ছোট কাল থেকেই যখন অন্যায়, অত্যাচা্‌র, অবিচার দেখে দেখে নিজের চোখের পানিও ধরে রাখতে পারতাম না তখন থেকেই সিধান্ত নিলাম লড়ে যাব...................

জাহিদহোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

উচ্চ আদালতে বহিরাগতদের তাণ্ডব - একটি সভ্য জাতির অসভ্য নমুনা

০১ লা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:২৮



মোঃ জাহিদ হোসেন: এও কি দেখার বাকী ছিল যে কোন দেশের সর্বোচ্চ আদালতে তার নিজ সন্তানতুল্য উচ্চ শিক্ষিত আইনজীবীরা (যে দলের হোক না কেন) কিছু অশিক্ষিত, অর্ধ শিক্ষিত তাও আবার মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ভাঙ্গানো লাঠিয়াল বাহিনীর হাতে মার খেয়ে রক্তাক্ত হচ্ছে আর খোদ পুলিশেরই প্রশ্রয়ে পবিত্র আদালত প্রাঙ্গণে আগুন দিয়ে উল্লাস করছে!



আমরা জানি কুকুর প্রভুভক্ত। সে তার মনিবের কথা মত কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অশিক্ষিত ও নীতিহীন মানুষ হল পাগলা ককুরের মত। পাগলা কুকুরের গলা থেকে রশি ছেড়ে দিলে কি হতে পারে তা সহজেই অনুমান করা যায়। কে কি তা তার বোধে আসে না। এর উদাহরণ আমরা গতকাল সুপ্রিম কোর্টের ভেতরেই দেখেছি। আর এর ধারাবাহিকতা থেমে নেই আজকেও। যাহোক গতকাল, কিছু ভাড়া করা মুক্তিযোদ্ধা নামে লাঠি হাতে কিছু কিশোর ও যুবক যেভাবে আইনজীবীদের উপর লাফিয়ে পড়ল তাতে একটা সভ্য জাতির ভেতর কতটা অসুস্থতা এখনো কাজ করছে তা আর বলার অপেক্ষা থাকে না! যেন তাদের ভেতর দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিশোধ নেওয়ার স্পৃহা জমে ছিল আইনজীবীদের উপরই। আসলে তাদের সেই পাগলা কুকুরের মত ব্যবহার করে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার বিশ্বাস স্বয়ং উচ্চ আদালতের ভেতরে সরকার দলীয় আইনজীবীরাও কখনো এই ভাবে অন্য কোন দলের আইনজীবীদের উপর আক্রমণ করতে সাহস করত না অথবা তাদের জ্ঞান ও নৈতিকতা তাঁদের তা করতে দিত না। আবার মারামারি যদি করতেই হয় তাহলে সরকারী ও বিরোধী দলের আইনজীবীদের মধ্যে হলেই তো হতো। তাতে জাতির লজ্জা কিছুটা হলেও কমত।



টিভিতে আমরা দেখেছি যারা সুপ্রিম কোর্টের দরজা খুলে বিএনপি পন্থী আইনজীবীদের ধাওয়া ও পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছিল এদের অধিকাংশ অশিক্ষিত, অর্ধ শিক্ষিত কিংবা রাস্তায় ঘুরে ফিরে থাকে এমন উদ্ধাস্তু মানুষ। আর এদের সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ নামের ব্যানার দিয়ে নামিয়ে দেওয়া মানে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা। এরা জানে না আদালত কি? আদালতের পবিত্রতা কি? এরা জানে না উচ্চ আদালতের একেকটা আইনজীবী তৈরি করতে বছর বছর রাষ্ট্রের কত টাকা খরচ করতে হয়! এরা জানে না বাংলাদেশে সুপ্রিম কোর্টের একজন বিজ্ঞ আইনজীবী হতে হলে কতটা বছর নিরলস পড়াশুনা আর নিম্ম আদালতে প্র্যাকটিস করে তারপর তাঁদের তৈরি করা হয়। এদেরও বা দোষ কি? দুই বেলা খাবার পাবার আশায় কিংবা জন প্রতি হাজার টাকা পাবার আশায় এরাও যখন যে দল পায় তখন সেই দলের হয়ে যেখানে সেখানে নেমে পড়ে। আবার কিছু শিক্ষিত জনেরা আছে যারা কথায় কথায় নারী লাঞ্ছনা কিংবা ধর্ষণের ধোঁয়া তুলে টিভিতে টকশো করে কিন্তু যখন ৫০ বছরের উপরে মাতৃতুল্য একজন আইনে ডক্টরেট করা কিংবা বিজ্ঞ মহিলা আইনজীবীকে মাটিতে চিৎ করে ফেলে মুক্তিযোদ্ধা নামধারী কিছু ভাড়াটিয়া অশিক্ষিত কর্মীরা পিটাতে থাকে তখন তাদের অন্তর যেন ধর্ষিত হয় না। যখন কোন মহিলা আইনজীবীকে পুলিশ কর্তৃক লাঞ্ছিত করা হয় তখন তাদের বিবেকে নাড়া পড়ে না। ছোটকাল থেকে শুনেছি ও দেখেছি কোন দেশের সর্বোচ্চ আদালত নাকি ধর্মীয় স্থানের মতই পবিত্র। কারণ ইহকালের সকল হিসাব নিকাশ ও ভাল মন্দের বিচার এখানেই হয়। অসহায় ও নির্যাতিত মানুষদের সব দ্বারে দ্বারে ঘুরতে ঘুরতে যখন কোন আর উপায় থাকে না তখন তাঁরা এখানে আসে শেষ ন্যায় বিচারের আশায়, মুক্তির আশায়। হাজার হাজার মানুষের কান্না জড়িত এই আদালত প্রাঙ্গণ। হাজারো নির্দোষ মানুষের আত্মা ভেসে বেড়ায় এই আদালতের প্রতিটি অলিতে গলিতে। কত মানুষের ভাল মন্দের বিচার হয় এই আদালতে কিন্তু এখন থকে যুগ যুগ ধরে স্বয়ং এই আদালতই সাক্ষী হয়ে থাকবে তার সন্তানতুল্য আইনজীবীদের উপর এমন ঘৃণ্য আক্রমনে।



যা হোক এইসব নামধারীরা যখন কোর্ট প্রাঙ্গণে আইনজীবীদের উপর আক্রমণ করে তখন কোথায় ছিল আমাদের সেই জনগণের বন্ধু পুলিশ বাহিনী? সরকার কথায় কথায় বলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতেই নাকি পুলিশের কঠোর হওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। কিন্তু যখন কুকুরের মত লেলিয়ে দেওয়া সেই বাহিনী কোর্টের ভেতর হামলে পড়ল, আগুন ধরিয়ে দিল আদালতের ভেতরই তখন পুলিশ কেন বিড়ালের মত লেজ গুটিয়ে লুকিয়ে ছিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।



সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবীর যেই কোন দলের হোক না কেন নিরাপদ আশ্রয় নেওয়ার ও অবস্থান করার আইনি অধিকার তাঁর রয়েছে। তবে কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অবশ্যই নয়। কিন্তু তাই বলে কোর্টের দরজা ভেঙ্গে বাহিরের কিছু মানুষকে যদি লাঠি দিয়ে তাঁদের মারার জন্য লেলিয়ে দেওয়া হয় আবার তার সমর্থনে খোঁড়া যুক্তি দেওয়া হয় তাহলে আমাদের স্তব্ধ হওয়া ছাড়া আর কিছু করার থাকে না। সরকারী দল হোক আর বিরোধী দল হোক তাদের সুপ্রিম কোর্টের ভেতর এমন তাণ্ডব লীলা চালাতে উস্কানি দেওয়া আর সুপ্রিম কোর্টকে গণধর্ষণ করার সামিল।



আর মুক্তিযোদ্ধার নাম ভাঙ্গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ভেতর বিরোধী দলের আইনজীবীদের পিটিয়েই কি দেশের গণতন্ত্র উদ্ধার হয়ে গেছে? অথবা কোন রকম উস্কানি ছাড়াই পুলিশের জল কামান থেকে সুপ্রিম কোর্টের ভেতর বিজ্ঞ আইনজীবীদের উপর নোংরা বিষাক্ত পানি ছুঁড়ে কি আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করা গিয়েছে? বরং এর পরেই তো পুলিশ কোর্ট প্রাঙ্গণে কথিত লাঠিয়াল বাহিনীকে ঢুকিয়ে দিয়ে অদৃশ্য কারো নির্দেশে নিজেরাই সটকে পড়েছে। তাহলে কি দরকার ছিল এইসব নাটকের। আজ যেহেতু আওয়ামীলীগ এই নজীর সৃষ্টি করেছে কাল হয়ত বিএনপিও প্রতিশোধ নিতে একই কাজ করবে। মাঝখান দিয়ে উচ্চ আদালতের সম্ভ্রমহানী হয়েছে। লজ্জিত হয়েছে আইন অঙ্গনের মানুষরা। কষ্ট পেয়েছে তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। বহির্বিশ্বের কাছে আমাদের মাথা কাটা গিয়েছে। কোন দিন আইনে বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য কোন দেশে পড়তে গেলে সেখানে হয়ত আমাকে বিদেশী বন্ধু ও শিক্ষকরা বলে বসতে পারে “তুমি সেই দেশের নাগরিক না! যেই দেশের সর্বোচ্চ আদালতে তাদের বিজ্ঞ আইনজীবীরা আদালতের ভেতরেই মার খায় তাও আবার বহিরাগত কিছু অশিক্ষিত ও অসভ্য মানুষের দ্বারা” লজ্জায় সেই দিন আমি কি উত্তর দিব জানিনা!



এইবার ব্যক্তিগত একটা কথা না বললেই নয়। আমার বাবার স্বপ্ন ছিল আমি ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হব, কিন্তু পরে আমার সেই ইচ্ছে ছিল না বলে সায়েন্স থেকে কমার্সে চলে আসি। স্বপ্ন দেখি দেশের আইন ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করার, সাধারণ মানুষকে সচেতন করার, যতটুকু পারি সাধ্যমত আইনি সেবা দেওয়ার। তাই ১৬,০০০ শিক্ষার্থীর মাঝে যুদ্ধ করে নিজের স্থান করে নিতে রাতের ঘুম হারাম করে ফেলেছিলাম ১ টা বছর। স্বপ্ন দেখছি এই উচ্চ আদালতের একজন গর্বিত বিজ্ঞ আইনজীবী হওয়ার।



কিন্তু লজ্জায় আজ মাথা নত হয়ে আসে, নিজেকে আইনের ছাত্র হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জা লাগে, রাস্তায় হেঁটে গেলে পাড়ার মানুষরা আজ টিটকারি করে বলে, ঐ পোলা আর কি আইনে পড়ে! ৫/৬ বছর এতো এতো বই পইড়া কি বালস্টার হইব বুইঝা গেছি, দুই দিন পর তো কোর্টে গিয়া ঠিকই পুলিশ প্রটেকশনে হেই টোকাই আর ছেমড়া পোলাগো হাতেই মাইর খাইব.........টিভিতে যা দেইখাছি......



প্রকাশিতঃ Click This Link



আইনের শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

[email protected]



মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ২:১৭

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: একটি সভ্য জাতীর অসভ্য কাণ্ড
আসলেই পাষণ্ড ।।
শুভনববর্ষ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.