নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি নারীদের নিয়ে লিখি , আমি সংসারের গল্প লিখি , সেই সংসার নদীর মতো , প্রমত্তা জলে দুকূল ভাসায় আবার নতুন স্বপ্ন দেখায় । আমার গল্পও তাই , আমি স্বপ্ন দেখি ভালো থাকার , আমি গল্প লিখি ভালোবাসার .।.।.।।।

জাকিয়া মৌ

দুরন্ত , দুর্বার.।.।

জাকিয়া মৌ › বিস্তারিত পোস্টঃ

( গল্প - ভ্রম )

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৪৩

মধ্যরাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলো , আমার পাশে আরেকজনের অস্তিত্ব অনুভব করলাম । লাফ দিয়ে উঠে লাইট জ্বালিয়ে দেখি একটা ছেলে । আমি বিকট চিৎকার দিয়ে বলতে থাকলাম - কে কে ? আপনি কে ? সে ধড়ফড় করে উঠে , আমাকে ধরে বলে - রুদ্মিলা , প্লিজ প্লিজ এমন করো না । আমি অরণ্য , তোমার হাজবেন্ড ...রোজ রাতে কি হয় তোমার ? চিনতে পারো না কেন আমাকে ? আমি ধীরে ধীরে মনে করতে পারি , হ্যা সে অরণ্য । আমি চুপ হয়ে যাই । ও উঠে লাইট অফ করে আমার মাথার পাশে বসে থাকে , আমি ঘুমের চেষ্টা করি ।
***
আমি দেয়ালে রঙ করছিলাম , দেয়ালে ছবি আকা আমার খুব পছন্দের কাজের একটি । সাদিব পিছন থেকে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল । আমিও ওর জামায় ইচ্ছেমত হাত মুছলাম । আমি যাই করি না কেন , সাদিব রাগত না বরং হাসত । সাদিব আমার প্রথম প্রেম , আমার কৈশোরের প্রেম ছিল । আমরা এক বাড়িতেই থাকতাম , ওরা আমাদের বাড়িতে সাবলেট থাকতো । আর আমরা ছিলাম বন্ধু , আজন্মের বন্ধু । আমি ওকে ভালবাসতাম , সেও আমাকে । খুব সুন্দর করে ঘুড়ি বানাত আর আমাকে বলত - রুদ্মিলা , রঙ করে দাও না । বলতাম - কি রঙ দিব ? ও বলত - লাল, নীল , বেগুনী , হলুদ যেমন খুশি । আমিও আঁকতাম ওর ঘুড়িতে , সারা বিকেল দুজন ছাদে গিয়ে উড়াতাম , বয়স তখন কতই হবে বারো কি তেরো । একদিন সেই তিনতলার ছাদ থেকে সাদিব পরে গেলো পা ফসকে , সেদিন আমিও ওর সাথে ঘুড়ি উরাচ্ছিলাম । আমার সামনেই হল , কতক্ষন হবে - এই মুহূর্ত । তারপর সব শেষ , আমি চেয়ে দেখলাম চারিদিকে সব লাল রঙ । সাদিবের সারা মুখ সেই রঙে রাঙা । আমার কাছে সব যেন কেমন ঘোলাটে লাগছিলো , চিৎকার করতেও ভুলে গেলাম ...সাদিব , আমার প্রথম প্রেম ছিল ।
***
আমার বয়স তখন উনিশ , আমি সারাদিন বাসাতেই থাকি । আমার একটা ঝামেলা হয়ে গিয়েছিল , কিছু মনে রাখতে পারি না । সারাদিন পড়লেও একটু পর ভুলে যেতাম । স্কুল পাশ করতে পারলাম না । কি করতাম আমি ! ছবিও আঁকতাম না , গান গাইতাম না । বাবা - মায়ের আফসোসের সীমা ছিল না । একদিন নিশা এসে বলল - জানিস আপু , তোর না বিয়ে । আমি অবাক হয়ে বললাম - সাদিবের সাথে ? নিশা বলল - ধুর পাগল , সাদিব তো মরে গেছে । তোর বর জার্মানি থাকে জানিস ? আমি বললাম - সাদিব জার্মানি গেলো কবে ? খুব আশ্চর্য লাগছিলো আমার কিছুই মনে পড়ছে না । দুদিন পর এক গোলগাল চেহারার লোকের সাথে আমার বিয়ে হয়ে গেলো । আমি বাবাকে বললাম - বাবা , সাদিব কত বদলে গেছে ! বাবা যেন আমার কথায় বোবা হয়ে গিয়েছিল । সেই লোকের হাত ধরে বলল - আমার মেয়েকে দেখো বাবা , তুমি তো সবই জানো । আমারও খুব জানতে ইচ্ছে হল কি জানে সে , যা আমি জানি না ।
***
বছর খানেকের মধ্যে আমিও এদেশে চলে এসেছি । আমাদের বাড়ির সামনে বিস্তর প্রান্তর । শীতকালে বরফ জমে থাকে । সাদিব আমাকে বলেছে ওর নতুন নাম অরণ্য , সবাই ওকে সেই নামেই ডাকে । আমি বলি সাদিব নামটাই তো ভালো । ও হাসে , কি মায়াময় হাসি । আমরা সারাদিন গল্প করি , যখন ও বাড়িতে থাকে । খুব ছবি আঁকি দেয়ালে , লাল , নীল , হলুদ দেয়াল আমাদের । সাদিব একটুও রাগ করে না আগের মত । ও না থাকলে আমি একা একা ঘুড়ি বানাই , কারন সাদিব শুধু এই কাজটাই আমাকে করতে দেয় না । আমাদের সংসারটা খুব সুন্দর । কেবল একটা সমস্যা হয় , রোজ রাতে আমি ওকে চিনতে পারি না । আমার কেবল মনে হয় সাদিব দরজার বাহিরে , আমার পাশে অন্য কেউ যাকে আমি চিনি না ...

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:১৫

প্রামানিক বলেছেন: ভালো লাগল গল্পের কাহিনী। ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.