নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন যার কালো মেঘে ঢাকা।

আকাশ za

আমি আজও খুঁজি মানুষ হওয়ার মেশিন!

আকাশ za › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুসলমান ও নামাজ

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৫


আমাদের বাংলাদেশে মুসলমান আছে প্রায় ৯৫/৯৬ ভাগ। কিন্তু নামাজ পড়ে হয়তো সর্বোচ্চ ২০/২৫ ভাগ মানুষ। আর এর মধ্যে শুদ্ধ করে নামাজ পড়ে অর্ধেকেরও কম মানুষ। অনেক মুসলমান জানেও না নামাজের ফরজ, সুন্নত ও ওয়াজিব সমূহ। তাহলে তাদের নামাজ কেন ও কি হবে? মহান আল্লাহ তায়ালা
পবিত্র কুরআনে বলেছেন,
و اقم الصلوة - ان الصلوة تنهى عن الفحشاء و المنكر
অর্থাৎ ''আর নামাজ কায়েম করো। নিশ্চয়ই নামাজ (মানুষকে) অশ্লীল এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।'' (সূরা আনকাবুত, আয়াত নং-৪৫)
এখন প্রশ্ন হলো যারা নামাজও পড়ে আবার মন্দ কাজও করে তাদের ক্ষেত্রে এই আয়াতটি কাজ করছে না কেন? তাদের জন্য উত্তর হতে পারে হয়তো তাদের নামাজ শুদ্ধ হয়না বা তাদের নামাজের উদ্দেশ্য ভিন্ন (তবে আল্লাহই সবচেয়ে ভাল জানেন)। তাহলে নামাজ শুদ্ধ করার জন্য আমরা কি করতে পারি?
নামাজ শুদ্ধ করার জন্য আমাদেরকে প্রাথমিক ভাবে ১৩ টি বিষয় অবশ্যই মেনে চলতে হবে। যেমন:
1. শরীর পাক: অযু বা তায়াম্মুম করতে হবে। গোসলের প্রয়োজন হলে গোসল করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ “হে মুমিনগণ, যখন তোমরা সালাতে দণ্ডায়মান হতে চাও, তখন তোমাদের মুখ ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত কর, মাথা মাসেহ কর এবং টাখনু পর্যন্ত পা (ধৌত কর)“। (সূরা মায়েদাঃ ৬)
2. জামা/কাপড় পাক: টুপিসহ পড়নের সকল কাপড় পাক-পবিত্র হতে হবে।
এ প্রসঙ্গে কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ “আর তোমার পোশাক-পরিচ্ছদ পবিত্র কর“।
(সূরা মুদ্দাসসিরঃ ৪)
3. জায়গা পাক: নামাজের স্থান পবিত্র হতে হবে।
এ প্রসঙ্গে কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ “এবং বললাম মাকামে ইবরাহিমকে নামাজের স্থান কর, আর আমি আদেশ করলাম রুকু ও সিজদাকারীদের জন্য আমার ঘরকে পবিত্র রাখতে।“
(সূরা বাকারাঃ ১২৫-১২৬)
4. সতর/শরীর ঢাকা: পুরুষের নাভির উপর থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত (অবশ্যই পায়ের গোড়ালীর উপর পর্যন্ত) আর মহিলাদের মাথার চুল হতে পায়ের নিচ পর্যন্ত।
এ প্রসঙ্গে কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ “হে বনী আদম, তোমরা প্রতি সালাতে তোমাদের বেশ-ভূষা গ্রহণ কর।“ (সূরা আরাফঃ৩১) হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, “পুরুষের সতর হল নাভি থেকে নিয়ে হাটু পর্যন্ত।“ {মুসনাদুশ শামীন-১৪৩}
কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ “আর মুমিন নারীদেরকে বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।“ (সুরা নুর, আয়াত ৩১)

5. কিবলামুখী হওয়া: কাবার দিকে মুখ করে নামাজ পড়া।
এ প্রসঙ্গে কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ “আকাশের দিকে বার বার তোমার মুখ ফিরানো আমি অবশ্যই দেখছি। অতএব আমি অবশ্যই তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরাব, যা তুমি পছন্দ কর। সুতরাং তোমার চেহারা মাসজিদুল হারামের দিকে ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক, তার দিকেই তোমাদের চেহারা ফিরাও। আর নিশ্চয় যারা কিতাবপ্রাপ্ত হয়েছে, তারা অবশ্যই জানে যে, তা তাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য এবং তারা যা করে, সে ব্যাপারে আল্লাহ গাফিল নন।“
6. ওয়াক্ত অনুযায়ী নামাজ পড়া: প্রত্যেক ওয়াক্তের নামাজ সময়মতো আদায় করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ “নিশ্চয় সলাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয“। (সূরা নিসাঃ১০৩)
7. নামাজের নিয়্যাত করা: নামাজ আদায়ের জন্য সেই ওয়াক্তের নামাজের নিয়্যাত করা আবশ্যক। এ প্রসঙ্গে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “নিশ্চয়ই আমলের গ্রহণযোগ্যতা নিয়্যাতের ওপর নির্ভরশীল।“ (বুখারী, হাদিস-১)
8. তাকবিরে-তাহরিমা বলাঃ আল্লাহর বড়ত্বসূচক শব্দ দিয়ে নামাজ আরম্ভ করা। তবে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে নামাজ আরম্ভ করা সুন্নাত। এ প্রসঙ্গে কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ “আর তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর।“ (সূরা মুদ্দাসসিরঃ৩)
9. দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া: এ প্রসঙ্গে কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ “তোমরা সালাতসমূহ ও মধ্যবর্তী সালাতের হিফাযত কর এবং আল্লাহর জন্য দাঁড়াও বিনীত হয়ে।“(সূরা বাকারাঃ ২৩৮) তিনি আরও বলেন, “আপনার পালনকর্তা জানেন, আপনি এবাদতের জন্যে দন্ডায়মান হন রাত্রির প্রায় দু’তৃতীয়াংশ, অর্ধাংশ ও তৃতীয়াংশ এবং আপনার সঙ্গীদের একটি দলও দন্ডায়মান হয়। আল্লাহ দিবা ও রাত্রি পরিমাপ করেন। তিনি জানেন, তোমরা এর পূর্ণ হিসাব রাখতে পার না। অতএব তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমা পরায়ন হয়েছেন। কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ, ততটুকু আবৃত্তি কর। তিনি জানেন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হবে, কেউ কেউ আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে দেশে-বিদেশে যাবে এবং কেউ কেউ আল্লাহর পথে জেহাদে লিপ্ত হবে। কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ ততটুকু আবৃত্তি কর। তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও। তোমরা নিজেদের জন্যে যা কিছু অগ্রে পাঠাবে, তা আল্লাহর কাছে উত্তম আকারে এবং পুরস্কার হিসেবে বর্ধিতরূপে পাবে। তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।“ (সূরা মুযাম্মিল,আয়াতঃ ২০)
10. ক্বেরাত পড়া: চার রাকাতনিশিষ্ট ফরজ নামাজের প্রথম দু’রাকাত এবং ওয়াজিব,সুন্নাত,নফল নামাজের সকল রাকাতে ক্বিরাত পড়া ফরজ। এ প্রসঙ্গে কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ““আপনার পালনকর্তা জানেন, আপনি এবাদতের জন্যে দন্ডায়মান হন রাত্রির প্রায় দু’তৃতীয়াংশ, অর্ধাংশ ও তৃতীয়াংশ এবং আপনার সঙ্গীদের একটি দলও দন্ডায়মান হয়। আল্লাহ দিবা ও রাত্রি পরিমাপ করেন। তিনি জানেন, তোমরা এর পূর্ণ হিসাব রাখতে পার না। অতএব তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমা পরায়ন হয়েছেন। কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ, ততটুকু আবৃত্তি কর। তিনি জানেন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হবে, কেউ কেউ আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে দেশে-বিদেশে যাবে এবং কেউ কেউ আল্লাহর পথে জেহাদে লিপ্ত হবে। কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ ততটুকু আবৃত্তি কর। তোমরা নামায কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও। তোমরা নিজেদের জন্যে যা কিছু অগ্রে পাঠাবে, তা আল্লাহর কাছে উত্তম আকারে এবং পুরস্কার হিসেবে বর্ধিতরূপে পাবে। তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।“ (সূরা মুযাম্মিল,আয়াতঃ ২০)

11. রুকু করা: নামাজের প্রত্যেক রাকাতে রুকু করা ফরজ। এ প্রসঙ্গে কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ “তোমরা যথাযথ ভাবে নামাজ কায়েম কর ও যাকাত দাও এবং রুকুকারীদের সাথে রুকু কর।“ (সূরা বাকারাঃ ৪৩
12. সিজদা করা: নামাজের প্রত্যেক রাকাতে সিজদা করা ফরজ। এ প্রসঙ্গে কুরআনে আল্লাহ বলেনঃ “হে মুমিনগণ, তোমরা রুকূ কর, সিজদা কর, তোমাদের রবের ইবাদাত কর এবং ভাল কাজ কর, আশা করা যায় তোমরা সফল হতে পারবে।“ (সূরা হজ্জঃ৭৭)
13. নামাযে শেষ বৈঠকে বসা (নামাজের শেষে তাশাহুদ পরিমাণ বসা) এবং সালাম ফিরানো: মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন, “অতঃপর ধীর স্থিরভাবে উঠে বসবে। পরে উঠে দাঁড়াবে। এইরূপ করতে পারলে তবে তোমার সালাত পূর্ণ হবে।“
নামাজের কোনো ফরজ বাদ পড়লে নামাজ বাতিল হয়ে যায়। সাহু সিজদা করলেও নামাজ শুদ্ধ হয় না। (আল বাহরুর রায়িক, ১:৫০৫) ফাতাওয়া শামি, ১:৪৪৭/হিদায়া, ১ : ৯৮)

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১:২৫

আবু তালেব শেখ বলেছেন: নামাজ মানেই আল্লাহর ইবাদতে মনোনিবেশ হওয়া,আল্লাহ কে স্বরণ করা, প্রশ্ন হলো বেশি শুদ্ধতা করতে গিয়ে তো শুদ্ধ হচ্ছে কিনা সেদিকে মননিবেশ করতে হবে,। তাহলে আল্লাহকে স্বরণ করবেন কিভাবে??

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:১৬

আকাশ za বলেছেন: আমরা যারা খাই তারা কিন্তু বারবার দেখে খাই না, নাক দিয়ে খাচ্ছি না মুখ দিয়ে খাচ্ছি? খাওয়ার সময় যেমন আমাদের হাতটা সংক্রিয় ভাবে মুখের কাছে চলে যায়, ঠিক তেমনি আল্লাহ উদ্দেশ্যে নামাজ পড়া শুরু করলে নামাজের প্রয়োজনই নামাজকে শুদ্ধ করবে। শুদ্ধ করে নামাজ পড়াটাই আল্লাহকে স্মরণ করা।
আল্লাহর নিকট পছন্দ হলো সুন্দর ইবাদত, বেশি ইবাদত নয়।

২| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:১১

রাজীব নুর বলেছেন: এত এত নিয়ম কানুন মনেও থাকে না। পোড়া কপাল আমার।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.