নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আধ্যাত্মিক পুরুষ, ধর্মগুরু; খানকা থেকে বলছি।

মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ি দেবার দুরন্ত প্রয়াস।

জাকির এ মাহদিন

আমি পথিক। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। আক্ষরিক অর্থেই আমি পথিক। একে একে জীবনযাত্রার সব সুতো কেটে দিচ্ছি। আবার শূন্যের উপর নির্মাণও করছি। এটাই প্রকৃতপক্ষে জীবন। অথবা- জীবন এমনই। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ির দুরন্ত প্রয়াস, যে সাগরের পাড় নেই। আমি মানবতার মুক্তির জন্য বিবেকের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শোষিত-বঞ্চিতের পাশে দাঁড়াতে চাই।

জাকির এ মাহদিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

মা মেয়ে নারী : শিক্ষা স্বাধীনতা ও অন্যান্য (নারী-২)

২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৩২

নেপোলিয়ন কোন সূত্রে বলেছিলেন “আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেব” জানি না। তার কথাটি হুবহু এমন ছিল কি না তাও জানি না। তার ‘শিক্ষা’ সম্পর্কিত দর্শনও আমার জানা নেই। তবে আমি এটা বিশ্বাস করি, একজন শিক্ষিত মা একটি ‘শিক্ষিত’ জাতি উপহার দিতে পারেন। এর ব্যাখ্যা আমি পেয়েছি। বাস্তবে দেখারও সুযোগ হয়েছে যে, একজন শিক্ষিত, সংশোধিত ও পরিবর্তিত মায়ের গর্ভের সন্তান পৃথিবীতে আসার আগেই কিভাবে ‘শিক্ষিত’ ও ‘গঠিত’ হয়ে আসে।



মূলত মনুষ্য সমাজে মায়ের আচরণগত, স্বভাবগত, অবস্থাগত, শিক্ষাগত- সার্বিক বৈশিষ্ট্যের প্রভাব সন্তানের ওপর এত বেশি পড়ে যা অবিশ্বাস্য। অনেক ক্ষেত্রে মা নিজেও বিশ্বাস করতে পারেন না, অবশ্য যে মা নিজের স্বভাব-বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল নন তার কথা ভিন্ন।





একই মায়ের একাধিক সন্তান ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্যর অধিকারী হওয়ার পেছনে পিতৃকূল-মাতৃকূলের বংশীয় প্রভাব ছাড়াও মায়ের গর্ভকালীন সার্বিক মন-মানসিকতা, অবস্থা ও আচরণগত বৈশিষ্ট্য দারুণ প্রভাব ফেলে। তাই একজন মাকে অবশ্যই তার নিজের ও অনাগত সন্তানের সুখী, সমৃদ্ধ ও সুস্থ মন-মানসিকতাসম্পন্ন জীবন গঠনের স্বার্থে গর্ভকালীন অবস্থায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এমনকি ভবিষ্যত সন্তানের প্রতি মায়ের (পিতারও) দায়িত্ব শুরু হয়ে যায় বয়ঃসন্ধিকাল বা যৌবনের শুরু থেকেই। তাই শৈশব থেকেই একজন মা (পিতাও) অবশ্যই অবশ্যই সঠিক শিক্ষা, ইতিবাচক আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। নিজেকে- নিজের প্রকৃত ‘স্বত্ত্বাকে’ খুঁজে ফিরতে হবে। স্বাধীনতার অর্থও এটাই- ‘স্ব-অধিনতা’।



স্বাধীনতার অর্থ কোনোভাবেই সবরকম অধীনতামুক্ত নয়। কথিত স্বাধীনতার গড্ডলিকা প্রবাহে বুঝে-না-বুঝে নিজেকে ভাসিয়ে দিলে চলবে না। আমাদের সমাজ অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রিত হয় সামাজিক কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামো, রাজনৈতিক স্বার্থপরতা এবং মনুষ্যত্ববর্জিত শিক্ষাব্যবস্থার দ্বারা। সুতরাং চাপিয়ে দেয়া কোনো নীতি-নিয়মের কাছে মাথা নত না করে একজন ‘আদর্শ’ মা, (পিতাও) মেয়ে ও নারীকে প্রকৃত শান্তি, আরাম ও সহজ-সাধ্যতা তালাশ করতে হবে। এক্ষেত্রে আমার মনে হয় সত্য অনুসন্ধানে একটি পদক্ষেপ এই হতে পারেÑ একজন নারীকে গৃহিনী, ধার্মিক স্ত্রী ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নারীদের সঙ্গে খোলামেলাভাবে নারীদের একান্ত বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলে তারপর জীবনযাপনের পদ্ধতি ও আচার সংস্কৃতি পছন্দ করতে হবে বা সিদ্ধান্ত নিতে হবে।



নারীদের জীবনে যৌন বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একে কেন্দ্র করে জীবনের অনেক কিছুই আবর্তিত হয়। যদি কোনো কারণে এর ব্যত্যয় ঘটে- এটা ঘটতে পারে কোনো সমাজ বা জাতির পুরুষশ্রেণীর যৌনশক্তিতে ধ্বস নামলে- তাহলে জীবনের সুখ-শান্তি নিশ্চিত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। ব্যাপারগুলো কোনোভাবেই এড়িয়ে যাবার নয়। একটি সমাজের পুরুষশ্রেণীর যৌন আচরণ নারীদের তখনকার সামাজিক অবস্থা, চলাফেরা ও কৃষ্টি-কালচারকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়। তাই পুরুষদের এ শক্তি সংরক্ষন ও নিয়ন্ত্রণে নারীদেরও অনেকটা ভূমিকা থাকে। পুরুষের জাগ্রত-বহির্মুখী যৌনশক্তি বাহিরের নারী-সৌন্দর্য দর্শনে সহজেই স্খলিত হয় এবং পর্যাপ্ত শরীরচর্চা, শারীরিক পরিশ্রম ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অভাবে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়ে। পরিশেষে এর ফল নারীদেরগও ভোগ করতে হয়। একটি সমাজের যুবশ্রেণী নিয়ন্ত্রণ করে মূলত সেই সমাজের মেয়েরা। তাই যুবসমাজ ধ্বংসের দায়ভার তাদের উপরও বর্তায় বৈকি। এদিক থেকে নারী-পুরুষ পরস্পরের প্রতি একান্তই নির্ভরশীল।





বাস্তবজীবনে নারী এবং পুরুষ কেউ কারো প্রতিপক্ষ নয়, বরং একে অপরের ‘পরিপূরক’। তবে প্রকৃতিগতভাবে তাদের শারীরিক-মানসিক গঠন-বৈশিষ্ট্যের ভিন্নতা ও ‘বৈপরিত্য’ কোনোভাবেই অস্বীকারের উপায় নেই। চূড়ান্ত আকর্ষণ-বিকর্ষণের প্রাকৃতিক সূত্রও তাই বলে। যেখানে যে পরিমাণ আকর্ষণ থাকবে, সেখানে সে পরিমাণ বিকর্ষণেরও উপাদান থাকবে এ-ই স্বাভাবিক। সুতরাং এমন পরিস্থিতিতে অর্থাৎ নারী-পুরুষ বা স্বামী-স্ত্রীর সাংসারিক জীবন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিপরীতমুখী অবস্থার উদ্ভবে ধৈর্য, সহনশীলতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও খোলামন নিয়ে সমঝোতা সমন্বয় পরামর্শের বিকল্প নেই। সমস্যাকে ‘উত্তমভাবে’ মোকাবেলা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। ঘরের সমস্যা ঘরেই সমাধান করতে হবে, ‘রাজপথে’ নয়। তবে এ বিষয়গুলো নিয়ে আরও বেশি অনুসন্ধান, উপলব্ধি ও খোলামেলা আলোচনার দাবি রাখে। আমি একবার এক গ্রামের ২০টি ঘরে জরিপ করেছিলাম। আশপাশের আরও প্রায় ৮০টি ঘরের সম্ভাব্য তথ্য সংগ্রহ করেছিলাম। কোনো ঘরে ‘শান্তির’ দেখা পাইনি এবং দেখেছি অধিকাংশ ক্ষেত্রে অশান্তির মূল কারণ ‘স্বামী-স্ত্রীর একান্ত’ সমস্যা। এটা উভয়ের শারীরিক-মানসিক সুস্থতা-অসুস্থতার ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। সাংসারিক, কর্মক্ষেত্র ও অন্যান্য ক্ষেত্রে তো প্রভাব ফেলেই এমনকি সমাজে পতিতাবৃত্তি, সমকামিতাসহ অসংখ্য নতুন নতুন ও জটিল সমস্যারও জন্ম দেয়। যা প্রকারান্তরে নারীসমাজকেই ধ্বংস করে। তাই এক্ষেত্রে প্রকৃতিপ্রদত্ত সমাধান ও তথ্যগুলো খুঁজে বের করতে হবে। আদি কাল থেকেই নারী-পুরুষ ‘উভয়ের’ শান্তি, সুস্থতা, ভালোবাসা, সহযোগিতা ও নির্ভরশীলতার উপর ভিত্তি করে মানবসমাজ ও সভ্যতা গড়ে উঠেছে। পরস্পর মুখোমুখি দাঁড়ানো কিংবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যেকোনো আন্দোলন, সংগ্রাম ও মতবাদের প্রচার একটি জাতিকে সমূলে ধ্বংস করে দিতে পারে।





ইন্টারনেট সংস্কৃতির পর এ দেশের যুবসমাজের যৌন সমস্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ব্যাপারে ধার্মিক-অধার্মিক সবাই একমত। বিশেষ করে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত একটা শ্রেণী ‘পঙ্গু’ হতে চলেছে। রাস্তার প্রতিটি মোড়ে, আবাসিক এলাকার দেয়ালে দেয়ালে রঙিন পোস্টার সাটানো, চটকদার বিজ্ঞাপন, বড় বড় অক্ষরে লেখা... জাপানি-কলকাতা হার্বাল সমাধান। তা দেখে স্কুলের পথে হাঁটা ছোট্ট শিশু মাকে প্রশ্ন করে, ‘আম্মু, যৌন সমস্যা কী?’- এসব নতুন নয়। পুরুষের যৌন ইচ্ছা সাধারণ অবস্থায় ক্রিয়াশীল থাকে এবং সামান্যতেই দুর্বল হয়ে পড়ে। কিন্তু নারীর বিষয়টি এমন নয়। তাছাড়া মানুষের ক্ষমতাও সীমিত। তাই প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে এর ব্যবহার চলে না। এর সংরক্ষণ এবং প্রয়োজনের মুহূর্তে সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। পশুসমাজে বছরের সব সময় এ ‘চেতনা’ থাকে না, একটা বিশেষ সময়ে জাগ্রত হয় এবং সম্ভবত কেবল বংশবৃদ্ধির প্রয়োজনেই তাদের মিলন ঘটে। কিন্তু মানবসমাজে এ পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। মানুষ বরং বংশবৃদ্ধির পথ রুদ্ধ করে যৌন সম্ভোগে পাগলের মতো ঝাপিয়ে পড়ে। পশুদের আজও যৌন সমস্যা, এইড্স- এ জাতীয় রোগের কথা শুনিনি। কিন্তু মানুষের হচ্ছে। কেন?





শুনেছি উন্নত বিশ্বে ৩০ বছর বয়সেই ছেলেদের উৎপাদন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। ভারত-চীন-আমেরিকার তুলনায় (পাকিস্তানের কথা জানি না) বাংলাদেশি পুরুষের সেক্স পাওয়ার এখনও অনেক বেশি। তা সত্ত্বেও এ দেশের মুসলিম সমাজের শতকরা ৯০ ভাগ ঘরে ‘তালাক’ সমস্যা রয়েছে। বছর পাঁচেক আগে এক গ্রামে কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন থাকার সুযোগ হয়েছিল। সেখানে এ জাতীয় অনেক সমস্যা দেখেছি। আমাদের সার্বিক সহযোগিতায় যিনি ছিলেন- একজন স্কুল মাষ্টার- তিনি একদিন বললেন, “হুজুর! পুরো দুনিয়া বুঝে ফেললাম, কিন্তু নিজের ঘরকে এই বৃদ্ধ বয়সেও বুঝতে পারিনি। এলাকার লোকজন আমার কথায় উঠ্বস করে, স্কুল-কলেজের হিসেব-নিকেশসহ যাবতীয় পরিচালনার দায়িত্ব আমার, কিন্তু একমাত্র ‘তাইনের’ কথায়ই আমার চলতে হয়। ঘর-ছেলেমেয়ে-বউ আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।” সত্যিই তো, বহু আলেম, শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় গুরু ও চিন্তাশীল ব্যক্তিও এ সমস্যা থেকে মুক্ত নন। কারণ এক্ষেত্রে কেবল ‘আধ্যাত্মিক’ ক্ষমতায় পার পাওয়া যায় না। শারীরিক সক্ষমতাও থাকতে হয়। নারী-১

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫২

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: ভাল লেখায় ধন্যবাদ
শুভকামনা

২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৬

জাকির এ মাহদিন বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.