![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি পথিক। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। আক্ষরিক অর্থেই আমি পথিক। একে একে জীবনযাত্রার সব সুতো কেটে দিচ্ছি। আবার শূন্যের উপর নির্মাণও করছি। এটাই প্রকৃতপক্ষে জীবন। অথবা- জীবন এমনই। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ির দুরন্ত প্রয়াস, যে সাগরের পাড় নেই। আমি মানবতার মুক্তির জন্য বিবেকের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শোষিত-বঞ্চিতের পাশে দাঁড়াতে চাই।
কৃষাণ কন্যা রাহিলা, উপাধি সংযুক্ত চমৎকার একটি নাম; সমসাময়িক রাজনীতির মঞ্চ কাঁপানো প্রতিবাদী এক নারী, নিরীহ একজন মা। ক'বছর আগে সচিবালয়ে ঝড় তুলেছিলেন। ২০১০ সালের পর মিডিয়ার শিরোনাম হয়েছেন কয়েকবার। তবে ‘বাত্তির’ নিচে অন্ধকারের মতো রাজনীতির অনেক হর্তাকর্তারাও তাকে চেনেন না। যাহোক, বাকিটা তার লেখার মধ্যেই পাওয়া যাবে। ফেসবুকে মুক্তি ও আদর্শ নিয়ে তার সঙ্গে একটি বিতর্ক তুলে ধরলাম।
Krishan Konna Rahila :
আল্লাহ কতগুলি মানুষকে বেশি অপছন্দ করেন। তারা হল সুদখোর, জেনাখোর, মদখোর, ঘুষখোর। স্বাধীনতার ৪১ বছর পরও আজ বাংলার দিকে তাকালে মনে হবে এই দেশটা জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছে দুটি দল। আর বিশাল যুবসমাজ, ছাত্রসমাজ তথা দরিদ্র জনগণকে নাস্তিকে পরিণত করেছে। তারা আল্লাহর কুরআন মানছে। কিন্তু মানছে না মা বাবার কথা। ধীরে ধীরে অন্যায় পথে ধাবিত হচ্ছে। আর দলীয় রাজনীতি তাদের অন্ধভাবে কাছে টানছে। আজ সারা বাংলায় ঘুষখোর, জেনাখোর, নেশাখোরে ভরে গেছে। যার জন্য বাংলার উপর অভিশাপ নেমে এসেছে। আর সেই অভিশাপ হতে দেশকে সুস্থ করার জন্য আজ আমরা ড. ইউনুসের সম্পদ ও সাফল্য ব্যবহার করব। তাতে যদি আমাদের মানুষ সুদখোর বলে, আমাদের কষ্ট নেই। দলীয় রাজনীতি আমাদের তো আর ন্যাকেট করবে না। মেয়েদের সাজুগুজু শার্ট, প্যান্ট, অবাধ মেলামেশা, একভাই অপর ভাইকে হত্যা করা শিখাবে না।
আজ বাংলার দুটি দলের নষ্ট রাজনীতি হতে সকলকে মাওলানা ভাসানীর আর্দশে গড়া প্লাটফরমে আসার জন্য আহবান করছি।
কেন আমি মাওলানা ভাসানীর প্লাটফরম হতে বলছি? কিছুক্ষণ আগেও আমার সন্তান বলেছে, "এবার তোমাকে পাগলা গারদে নিযে যাব। ফাজলামীর একটা শেষ আছে। কিন্ত তোমার শেষ হচ্ছে না। কোথায় তোমার তৃতীয় শক্তি আর কোথায় আমিনি সাহেব, যিনি নাকি তোমাকে ৫ কোটি টাকা দিতে চেয়েছিলেন? কিছুই হবে না। তোমাকে আজ পাগলই হতে হবে।" তাই তো আমি আজ উপায়ান্তর না দেখে, বিএনপির আক্রোশ দেখে, আমি স্থির সিদ্ধান্ত নিয়েছি- মাওলানা ভাসানীর প্লাটফরম হতে ১৯৭১ সনে যুদ্ধ হয়েছিল কিন্ত দেশ সেদিন স্বাধীন হয়নি- তাই আবার যুব সমাজকে সাথে নিয়ে আমরা সেই জামায়াতে ইসলামীসহ সকল দল, মত, জাতি, বর্ণ নির্বিশেষে এবারের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করব। তা না হলে আমি কেবল পাগলই হয়ে রইব। কোনদিন কেহ আমাকে এসে মুক্ত করবে না। তাইতো এটাকে আপাতত গ্রহণ করলাম। ভুলক্রটি ক্ষমা করবেন। কারণ নুতন দল গঠিত হলেই দেশে সত্যিকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় না। অথবা ব্রিটিশ আগ্রাসন, শোষণ, অত্যাচার বন্ধ হয় না। তার প্রমাণ আজ আমরা।
Ami Swapnabaz :
কিন্তু এই কলিকালে আপনের সন্তান যদি পাগলা গারদে নিতে চায় কেমনে হবে? হায়রে মা? আজ কোথায় জেহাদী ভাইয়েরা? জাগো বাহে...
Krishan Konna Rahila :
বড়ই দুঃখ হয়! আমরা আজ এমন একটি সমাজে বাস করছি যেখানে সন্তানদের মানুষ করতে পারছি না। তারা যেটা ভাবছে সেটাই রাইট। আমরা হাজার চিৎকার করলেও তাকে সত্য প্রমাণ করতে পারছি না। যা আমাদের নিয়তি।
Zakir Mahdin :
এরচেয়ে আরও জোরালো লিখনী বর্তমান বাজারে অভাব নেই। সবার মধ্যেই কিছু না কিছু স্বতন্ত্রতাও আছে। 'মুক্তি' ও 'আদর্শ' বলতে আপনি কি বুঝেন? সংজ্ঞাসহ আপনার দৃষ্টিকোণ থেকে এ দু'টোর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করুন।
Krishan Konna Rahila :
মুক্তি বলতে আমি বুঝাতে চাইছি- আমরা আজও মুক্ত নই। কারণ আমি কথা বলি জীবন থেকে। আমি ১৯৭১ সন হতে অশুভ শক্তির সাথে যুদ্ধ করতে করতে একদিন খামারবাড়ী হয়ে বাংলাদেশ সচিবালয়ে সুচঁ হয়ে প্রবেশ করেছিলাম। তারপর সেখানে দীর্ঘ জীবন বন্দীদশায় থেকে জীবনটাকে বুঝেছি যে, আমরা আজ কত বড় অসহায়। সচিবালয়ের চারদেয়ালের মাঝে বন্দী! আমি দেখলাম আমাদের গাছের রুট রুগ্ন হচ্ছে আর মাথা মোটা হচ্ছে। আমরা গাছ কেটে আগায় জল ঢালছি। তখন আমি আমার গাছটিকে বাঁচাবার জন্য চিৎকার করলাম। ওরা আমাকে আরও ক্ষত-বিক্ষত করে তুলল। আমাকে আবর্জনা, ধান্ধাবাজ, ঘুটে কুরানী রাজকন্যা, মানসিক রোগী বলে আখ্যায়িত করল। তারপর আমি এক সময় তাদের (সকল সচিব, মন্ত্রী, বিচারপতি, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, প্রধানমন্ত্রী,উপদেষ্টা) চ্যালেঞ্জ করে আমার পরিবার কৃষি মন্ত্রণালয় হতে বের হয়ে এলাম। তারপর তারা আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করল। আমি আবার চাকুরীর জন্য গেলাম। জানলাম সময় নেই। তারা আমার বিরুদ্ধে স্থায়ী ডিসিশন নিয়েছে। এর পরও আমি সুপারিশসহ আমার আবেদন সাবমিট করেছি। কিন্ত তারা আমাকে কোন পথেই মুক্তি দেয়নি। হয় মুক্তি না হয় মৃত্যু- একটি তো দিবে! সরকার কিন্তু কোনটাই আজও কার্যকর করেনি। আর আমি কেবল আমার মুক্তির জন্য চিৎকার করছি।
আর আদর্শ বলতে আমি বুঝি এটাই যে, আমি নড়াইলের জমিদার এলাকায় জন্মগ্রহণ করেছিলাম। তারপর গোপালগঞ্জের সফিউদ্দিন মিনা পোতা বউ হয়েছিলাম। আমার দীর্ঘ জীবনে আমার বড় ভাই আমাকে বাঙ্গালী বলে ডেকেছিলেন। তাই মনে করেছিলাম আমি হয়তো শেখ মুজিবের বাঙ্গালী হতে পেরেছি। কিন্ত অবশেষে তার আদর্শ মেনে নিতে পারিনি। তারপর বাংলাদেশের সরকারী রুলস ভেঙ্গে মনে করেছিলাম আমি হয়ত জিয়াউর রহমানের আর্দশের সৈনিক হতে পেরেছি। কিন্ত তারপর দেখলাম, না। তখন তাকেও আমি মেনে নিতে পারিনি। তারপর যেদিন আমি পবিত্র কুরআনকে বুকে ধরেছিলাম, সেদিন থেকে লিখে গেছি। আর যখন দেখলাম মাওলানা মওদুদীর সত্যের সাক্ষ্য বইটি, তখন জামায়াতের আদর্শও আমি মেনে নিতে পারছি না। কারণ তারা মাওঃ মওদুদীর আর্দশ অনুসরণ করেননি। সো আমি অনুভব করেছি, পৃথিবীতে যার যার নিজস্ব একটি আর্দশ ও ইথিক্স আছে। যা আমার আছে। আজ আমি কেবল মহানবী সা: এর আদর্শের সৈনিক। আমার কাছে সকলেই সমান।
Zakir Mahdin :
অনেক ধন্যবাদ। এ দু'টি বিষয় আপনার লেখা থেকেই নেয়া। এগুলো এমন মৌলিক বিষয় যে, অন্য কোনও বিষয়ে আর আলোচনার প্রয়োজন নেই। মুক্তি ও আদর্শ- এ দু'টি সর্বজনীন বিষয় ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আপনার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি উদাহরণ হিসেবে পরেও আনতে পারতেন। প্রথমে স্থান-কাল-ব্যক্তি নিরপেক্ষভাবে ব্যাখ্যার প্রয়োজন ছিল।
Krishan Konna Rahila :
আমিতো বলেছি, আমি জীবন থেকে কথা বলি। যা বাস্তব, যা দেখি, তাই লিখি। আমি কাউকে অনুসরণ করি না বা জীবনে কারও একটি বইও পড়ার সময় ছিল না। স্থান-কাল বিভক্তি- এসব আমার জানা নেই। কেবল জানি সুঁচ হয়ে প্রবেশ করেছিলাম, ফাল হয়ে বার হয়ে এসেছি বাংলাদেশ সচিবালয় হতে ২০১০ সনে।
Zakir Mahdin :
একটা জিনিসকে যদি আপনি বড় বা ছোট, অথবা ভাল বা মন্দ বলতে চান, তাহলে তুলনা করার অন্য আরেকটি বিপরীত জিনিস থাকতে হবে। আপনি একজন শিক্ষিতা নারী। অথচ বললেন বই পড়ার সময় পাননি, শুনে আশ্চর্য হলাম। আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞান পড়াশুনা ছাড়াও বিকশিত হতে পারে। যেমন আমাদের নবী (সাঃ) এবং অনেক সাহাবা। কিন্তু আজকের বিজ্ঞান-দর্শন ও প্রযুক্তির এই যুগে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র এবং রাষ্ট্রক্ষমতা পরিবর্তনের ইসলামী মৌলিক দিক-নির্দেশনা ইত্যাদি বহুমুখী বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে। আপনি একটি দেশ ও জাতির নেতৃত্ব দিতে চান, অথচ আপনার এ সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকবে না এটা কিভাবে হয়? আর এখনই যদি বই পড়ার সময় না পান তাহলে দায়িত্ব আসার পর কিভাবে পাবেন?
আপনি যা লিখছেন, মূলত আত্মজীবনী। আপনার বিশেষ চিন্তা ও দর্শনগুলো আত্মজীবনীর সাথে গুলিয়ে ফেলছেন। তাই বারবার গোপালগঞ্জ, সচিবালয়, কৃষি অফিস চলে এসেছে। পরিবারের লোকেরা 'পাগল' বলার এটাও একটা কারণ। আপনি অস্থির। নিজে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে কিছুটা আক্রমণাত্মক, প্রতিহিংসাপরায়ণ। জ্বিহাদের মাঠে হযরত আলি (রাঃ) একবার এক কাফেরের বুকে চড়ে ছিলেন। তারপর ওই কাফের থু থু নিক্ষেপ করে। আশা করি ঘটনাটা জেনে থাকবেন। আপনি নেটে এত সময় না কাটিয়ে মনে হয় কিছু বই পড়া উচিত। নেটে মূলত পড়া ও গবেষণা হয় না। লেখা যায়। আমি গত প্রায় দেড় বছর ধরে ফেসবুকে লিখছি, কিন্তু বই পড়তে পারছি না। নেটে সময় কাটানো একটা নেশা। এ কারণেও অনেকে পাগল বলতে পারে। আবার আপনি একেক সময় একেক জনের কথা বলেন। অথচ তাদের সম্পর্কে আপনি যথেষ্ট জানেন না। আপনি একজন মুসলিম নারী হিসেবে তসলিমা নাসরিনের প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়া ফরজ। বেগম রোকেয়া সম্পর্কে আপনি কি জানেন? তার সঙ্গে আপনি কতটুকু একমত এবং কতটুকু না, এসব লিখতে হবে। আপনি নারী জাগরণের কথা বলছেন, অথচ আজকের বিশ্বের নারীদের মৌলিক সমস্যাগুলো কি?
'মুক্তি' ও 'আদর্শ' সম্পর্কে আমি পরে আসছি। আপনাকে ইনফরমেশন দেয়ার জন্য দুঃখিত। তসলিমা নাসরিনের লেখায় বিভিন্ন অভিজ্ঞতার বর্ণনা আছে। তত্ত্ব ও দর্শন আছে। সমস্যার বর্ণনা আছে। আবার আলাদাভাবে তার আত্মজীবনীও আছে। বেগম রোকেয়া ও তসলিমা যে নারী জাগরণের কথা বলেন আপনি কি তাই বলছেন? আপনি ড. ইউনুসের পক্ষে বলছেন? কখনো আমিনি, কখনো সাঈদি-গোলাম আযম, আবার কখনও বিএনপি। এসবের মূল কারণ মুক্তি ও আদর্শ সম্পর্কে আপনার সুস্পষ্ট জ্ঞান না থাকা। আপনি কি বলেন কখনো নিজেও বুঝতে পারেন বলে মনে হয় না। আর একজন খাটি মুসলমান শুধুই একটি দেশের মুসলমানদের মুক্তির কথা ভাববে না। সারা বিশ্বের মুসলমানদের মুক্তির ডাক দেবে। বাংলাদেশে মুসলমান ১৬ কোটি, ভারতে সম্ভবত ২৩ কোটি। এর চেয়ে বড় কথা, একজন সাচ্চা মুসলমান সারা বিশ্বের শুধু মুসলমান নয়, সমগ্র মানবজাতির মুক্তির চিন্তা করবে এবং ডাক দেবে।
আজ মানবজাতির মূল সমস্যাগুলো কি? সমগ্র বিশ্ব অশান্তির আগুনে পুড়ে ছারখার হচ্ছে। দোজখের আগুন তো এখানেও তারা ভোগ করছে। কেউ অত্যধিক অহংকারি, আবার কেউ হতাশ। অশান্তির আগুনে জ্বলে-পুড়ে ছারখার হচ্ছে না এমন একটি পরিবার দেখান। আজ সমগ্র বিশ্বই একটি আদর্শ চায়। যে আদর্শ তাদের মুক্তি দিতে পারবে। পৃথিবীতে এখন চলছে যুদ্ধযুদ্ধ খেলা। আমেরিকার প্রতিটি নাগরিক সর্বক্ষণ আতংকিত, ইসরাইলের নাগরিকেরা ভবিষ্যৎ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। পারিবারিক ভালবাসাহীনতা, অতিরিক্ত ভোগ-বিলাস ও যান্ত্রিকতা তাদের অনুভূতি নষ্ট করে দিচ্ছে। মুসলমানদের দুরবস্থা তো দেখছেনই। এছাড়া বিশ্ববাসী গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়া, এইডস-ক্যান্সার ইত্যাদি অনেক সমস্যায় আক্রান্ত এবং উদ্বিগ্ন। আপনি বাংলাদেশের যে মুক্তির ডাক দিচ্ছেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) কি এই মুক্তিরই ডাক দিয়েছিলেন? সাহাবাগণ কি একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর ভোগ-বিলাসের উন্নতির জন্য জীবন দিয়েছিলেন? আমিনী সাহেব আমার জেলার লোক। আমি শহরেই থাকি। তার সম্পর্কে আমি মনে হয় আপনার চেয়ে ভাল জানি। ছোটবেলায় তার ওয়াজ প্রচুর শুনেছি। মওদুদী সাহেব আমার জানামতে ইসলামের প্রতি আন্তরিক ছিলেন। তবে তিনি নিজ বুদ্ধিকেই বেশি অনুসরণ করতেন। তার কোরআনের 'বুদ্ধিপ্রসূত ব্যাখ্যা' উলামায়ে কেরামের নিকট অগ্রহণযোগ্য।
আমিও পড়েছি মওদুদীর লেখা, গ্রহণ করতে পারিনি। ইউনুস সাহেবের কথা আর কি বলব? তসলিমা নাসরিন, বেগম রোকেয়াদের কথা না বললেও চলবে। শেখ মুজিব, জিয়া এরা ছিলেন রাজনীতিক। মাওলানা ভাসানি রাজনীতির পাশাপাশি নবীর আদর্শেরও একজন খাটি অনুসারী ছিলেন। কিন্তু তিনি নিজে একটি আদর্শ দাঁড় করাতে পারেননি। আদর্শ হচ্ছে একটি সামগ্রিক ও সর্বজনীন মডেল। অনুকরণযোগ্য শ্রেষ্ঠ বিষয়। নমুনা, দৃষ্টান্ত। এখানে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বিশ্বজনীন সব পর্যায়ের আদর্শ থাকতে হবে। অর্থাৎ প্রতিটি ক্ষেত্রের সমস্যার লিখিত সমাধানও থাকতে হবে। আবার এর বাস্তবতাও থাকতে হবে। এটা আমরা পাই হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও সাহাবাগণের জীবন, কর্ম, তাদের পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের মধ্যে। এ আদর্শ পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। নতুন কেউ আর এমন আদর্শ স্থাপন করতে পারবে না। মাওলানা ভাসানীর কাছে কি আমরা ইসলামি সমাজ ও রাষ্ট্রের আদর্শ পাই? অথবা মওদুদী সাহেবের কাছে, আমিনীর কাছে, অথবা তাদের পরিবার ও সমাজের কাছে? কেউ কেউ অবশ্য ব্যক্তিজীবনে কারও কাছে আদর্শ হতে পারেন। কেউ আবার সমাজ ও রাজনীতির ক্ষেত্রেও কিছুটা আদর্শ হতে পারেন। তবে ব্যক্তির বাইরে এর প্রয়োগ করতে চাইলে কতগুলো শর্ত আছে।
আর মুক্তি কি? মানুষের পক্ষে কি মুক্তি অর্জন সম্ভব? মানসিকভাবে তার মধ্যে সবসময়ই বিভিন্ন ধরনের চাহিদা ও শূন্যতা বিরাজ করবে যা পূরণের কোনও পথ নেই। সুতরাং ইলম ও মহান আল্লাহ্র ভালোবাসা অর্জনের মাধ্যমেই মানুষ মানসিকভাবে মুক্তি পেতে পারে। আর এই মুক্তি পেলে সচিবালয় বা ঘরের চার দেয়াল কোনও ফ্যাক্টর না। স্বামী-সন্তানের নির্যাতন তার ক্বলবে অশান্তি দিতে পারে না। এমনকি জেলখানায় বন্দী থেকেও তিনি মুক্ত। নিত্য আঘাত, অভাব-অনটন তিনি হাসিমুখে বরণ করতে পারবেন। আপনি সরকারের কাছ থেকে গাড়ি, মজবুত বাড়ি আর ৫০ কোটি টাকা নিয়ে কোন শান্তির বাণী প্রচার করতে চান? ক্ষমতায় বসে কোন ইসলাম প্রচার করতে চান?
আমাদের মনে রাখতে হবে, নবী (সা.)-এর দাওয়াতের প্রথম পর্যায়ে তিনটি জিনিষ অফার করা হয়েছিল। অর্থ, নারী ও ক্ষমতা। অর্থ ও ক্ষমতা দিয়ে যদি ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা যেত, তাহলে তিনি গ্রহণ করেননি কেন? আপনি আল্লাহকে পেতে কতটুকু কষ্ট করতে রাজি? দৈনিক কয় রাকাত নামাজ পড়েন এই যুগের রাবেয়া বসরী? আপনি কি অর্থ-বিত্ত আর ক্ষমতা চান? যারা অসুস্থ, মৃত্যু শয্যায় শায়িত, জেল খানায় বন্দি, তাদের জন্যও ইসলামে সেই অবস্থায় থেকেই মুক্তির পথ আছে।
আপনি বর্তমানে যে অবস্থা আছেন, এই নিত্য নির্যাতন-নিপীড়নের ভেতর দিয়েও যদি আপনি অন্তরে শান্তি অনুভব করেন, মহান আল্লাহর ভালবাসা অনুভব করেন, নামাজে দাঁড়ালে সব দুঃখ ভুলে যান, শত্রুদের ভুলে যান, তাহলে আপনি ইসলামী আদর্শের ডাক দিন। যে লিখনী পাঠের পর পাঠক-পাঠিকা উত্তেজিত হয়, প্রতিহিংসা জাগে, মাথা গরম হয়, অন্তরে আগুন জ্বলে, সে লেখা তো উপস্থিত পাঠককেই মুক্তি দিতে পারল না, অন্তর ঠাণ্ডা করতে পারল না, সুস্থ চিন্তা জাগ্রত করতে পারল না।
Krishan Konna Rahila :
কৃষান কন্যাকে অত সহজে বুঝা যাবে না। বেশি বলেছেন। আমি বাংলার সেই মানুষটি নই যাকে আপনি আর পাঁচজনের সাথে তুলনা করবেন। আগে কৃষান কন্যার পা হতে মাথা পর্যন্ত পড়তে হবে তারপর আসবেন কথা বলতে। আমি আপনার সকল কথার উত্তর দিব। ধন্যবাদ।
Zakir Mahdin :
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর ও শালীন প্রতিক্রিয়ার জন্য। আর বেশি কথা বলার জন্য দুঃখিত। আপনাকে বুঝতে না হয় মাথা থেকে পা পর্যন্ত পড়লামই। কৃষাণ কন্যা তো হাজার হাজার না, সারা বিশ্বে একজনই। আপনাকে অনেকে পাগল মনে করে এটা সমস্যা না। সমস্যা হল আপনি নিজেই নিজেকে পাগল ও মানসিক রোগী ভাবেন। যে কারণে চিকিৎসার জন্য চেঁচামেচি করেন। আমি বিশ্লেষণ করে দেখেছি আপনি পাগল নন। আর পাগল হলেও এর চিকিৎসা জাগতিক কোনও ডাক্তার করতে পারবেন না। যাহোক, আমি কিন্তু মুক্তি ও আদর্শের একটা সর্বজনীন সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা দিয়েছি যা বিশেষ কোনও ব্যক্তি বা সময়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। যে কোনও যুগে, যে কোনও মানুষের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য। আমার এ ব্যাখ্যা ও দৃষ্টিভঙ্গির সাথে আপনি কতটুকু একমত তা জানাবেন আশা করি। জানতে পারলে কৃতজ্ঞ থাকব। আমার জন্য দোয়া করবেন। মহান আল্লাহ্ আপনার মঙ্গল করুন।
©somewhere in net ltd.