![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি পথিক। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। আক্ষরিক অর্থেই আমি পথিক। একে একে জীবনযাত্রার সব সুতো কেটে দিচ্ছি। আবার শূন্যের উপর নির্মাণও করছি। এটাই প্রকৃতপক্ষে জীবন। অথবা- জীবন এমনই। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ির দুরন্ত প্রয়াস, যে সাগরের পাড় নেই। আমি মানবতার মুক্তির জন্য বিবেকের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শোষিত-বঞ্চিতের পাশে দাঁড়াতে চাই।
তসলিমা নাসরিনকে বলা হয় পুরুষবিদ্বেষী। কিন্তু কেন তিনি পুরুষবিদ্বেষী সেটা কি আমাদের ভেবে দেখার প্রয়োজন নেই? আজ তসলিমা দেশে নেই, কিন্তু তার অনুসারী পৃথিবীব্যাপী। বাংলাদেশে সম্ভবত সর্বপ্রথম তিনিই নব্বইয়ের দশকে নারীদের যৌন বিষয় নিয়ে খোলামেলা লিখতে শুরু করেন। তার প্রশ্ন ও আপত্তিগুলো ধর্মতাত্বিক-ধর্মবিশ্লেষকরা গুরুত্ব দিয়ে না ভেবে বরং পাল্টা আক্রমণ করলে তিনি আরও ক্ষেপে যান। অবশ্য তার সেই সময়ের বয়স, উগ্রতা, নাম প্রচারের স্পৃহাও কম দায়ি নয়। শেষফল তিনি কি পেলেন? দু’বছর আগে তার একটা সাক্ষাৎকার দেখেছি, অবিশ্যাস্য। যেখানে তিনি এ বয়সে বড়ই হতাশ, যৌবন শেষ, আস্তিক হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বাংলাদেশে বর্তমানে নারী আন্দোলন তুঙ্গে। কিন্তু রাজপথের আন্দোলন দিয়ে কি নারীদের প্রকৃত সমস্যার সমাধান হবে, না আরও বাড়বে? সামগ্রিকভাবে ভেবে দেখার জন্য এই লেখাটি পেশ করলাম।
(সম্প্রতি অনলাইনে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন যে এটি প্রকৃতই তার সাক্ষাৎকার কিনা। কিন্তু আমার প্রশ্ন, তিনি অনলাইনে এক্টিভ থাকা সত্ত্বেও কি এটি অস্বীকার করেছেন? করেননি। তাছাড়া ভাষা, শব্দ চয়ন, যুক্তি, অভিজ্ঞতার বর্ণনা ইত্যাদি বিশ্লেষণ করলে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে, এটি তারই সাক্ষাৎকার। যদি তার না-ও হয়, তবু কিছু আসে-যায় না। কেননা এর মূল তথ্যগুলো সঠিক। এর একটা সঠিক তথ্য সম্ভবত এই হতে পারে যে, শেষ বয়সে পুরুষের খাঁই খাঁই বেড়ে যায়, কিন্তু নারী দুর্বল হয়ে পড়ে। তখন একজন নারীর পক্ষে একজন পুষের চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না।)
‘নারী’- বিপুল রহস্যঘেরা এক অনন্য সৌন্দর্যের নাম। প্রকৃতির সমস্ত সৌন্দর্য আর রহস্য এক পাল্লায় রেখে অপর পাল্লায় নারীর সৌন্দর্য-রহস্য রাখলে নারীর পাল্লাই ভারী হবে। পৃথিবীর হেন কবি নেই, সাহিত্যিক নেই, সাধু-সন্যাসী বা শিল্পী নেই যিনি নারীসৌন্দর্যে মুগ্ধ হননি, জীবনভর ‘নারীরহস্য’ খুঁজে বেড়াননি। কিন্তু এর কূল-কিনারা করতে পেরেছেন এমন কারও কথা আজ পর্যন্ত শুনিনি। নিঃসন্দেহে এটি স্রষ্টার আরেকটি ভিন্ন জগৎ। এ জগতের গুপ্ত ভাণ্ডারে সম্ভবত সবার প্রবেশাধিকার নেই। স্রষ্টার প্রতি বান্দার অন্তর্নিহিত আকর্ষণের দৃষ্টান্ত হিসেবেই মনে হয় এ বিপরীত মানবপ্রজাতির সৃষ্টি।
নারী মানবসমাজের এক স্বতন্ত্র, স্বাধীন ও পৃথক স্বত্ত্বা। তবে পুরুষ থেকে বিচ্ছিন্ন নয়, সমন্বিত। সমাজে নারীর অন্যান্য অবদান ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বাদ দিলেও শুধু একবার, মাত্র একবার নারী-মন ও নারী-সৌন্দর্য ছাড়া পৃথিবীকে কল্পনা করুন; দেখবেন যাবতীয় ভালোবাসা আর সৌন্দর্য অর্থহীন। ‘নারীপূজারীরা’ নারী সম্পর্কে কত না উক্তি করেছেন! নারী কমনীয়, নমনীয়, রমণীয়, সুন্দরী, রূপসী। কেউ মনে করেন নারীর রহস্য-সৌন্দর্য মনে, কেউ বলেন শরীরে। এ ধারণা ও স্বাভাবিক মানবিক দুর্বলতা থেকে প্রেম ও শারীরিক সম্পর্কের উদ্ভব। কিন্তু মূলত কোনটার প্রতি পুরুষের আকর্ষণের মাত্রা তীব্র তা মানবিক বুদ্ধি নির্ণয় করতে পারে না। পশ্চিমা সমাজ নারী-পুরুষের শারীরিক সম্পর্ককে প্রাধান্য দেওয়ায় সেখানের মানুষগুলো দিন দিন যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে। পশুসমাজেও এমন নেই যে, শারীরিক মিলন করবে অথচ সন্তান রোধ বা হত্যা করবে। কিন্তু মানুষ আজ কি এক জংলী উৎসবে মেতেছে!! কেন এত ঘন ঘন শারীরিক মিলনের প্রয়োজন হয়? প্রতিদিন, প্রতিসপ্তাহে, প্রতিমাসে? বছরে দু’চারবার হলেই তো যথেষ্ট।
ত্যাগের মাত্রার উপরই নির্ভর করে ভোগের স্বাদ, স্থায়িত্ব ও নিয়ন্ত্রণ- এটা বৈজ্ঞানিক সত্য। আর এখানেই জনসংখ্যা সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান নিহিত। পুরুষরা জানে না ঘড়ির কাঁটার হিসেবে একজন নারীর চাহিদা ক’ঘন্টা। নারীও জানে না যৌনক্ষুধার ক্ষেত্রে অল্প খাওয়ার চেয়ে উপোস করা ভালো। তসলিমা নাসরিনের সমস্যাটা ছিল এখানেই। মূলত এটা শুধু তারই সমস্যা ছিল না, ছিল পুরুষদেরও। পুরো ঢাকা শহরের কবি-সাহিত্যিক-সাংবাদিকজগৎ চষে বেড়িয়েও তার সঙ্গে টিকতে পারে এমন একজন পুরুষ তিনি খুঁজে পাননি।
কর্পোরেট যুগে নারীর ‘অন্তর্নিহিত’ সৌন্দর্য সম্পর্কে নারী নিজেও সচেতন বলে মনে হয় না। অথচ একজন কালো ও কুশ্রী নারীও শুধুমাত্র তার চুলের সৌন্দর্যে ভুবন জয় করতে পারেন। আজকাল একশ্রেণির ছেলেপুলে বলে ওদের নাকি ‘প্রবলেম’ হয় না। আমি বলি, সাধারণ অর্থে যে ছেলের ‘মেয়ে’ দেখলে প্রবলেম হয় না সে হয় ফেরেশতা না হয় পশু, মানুষ নয়। হ্যাঁ, ‘প্রবলেম’ আমাদেরও হয় না। আবার হয়ও। রাস্তায় যে এত মেয়ে দেখি, ফিরেও তাকাই না। তাছাড়া প্রায়ই আমার ছাত্রদের মহিলা গার্জিয়ানদের সঙ্গে কথা বলতে হয় যারা পর্দা করেন না। সমস্যা সাধারণত হয় না। তবে মাঝে মধ্যে হয়ও। বিশেষত দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিটা হয় অতি সূক্ষ্ম ও ধীর গতিতে, যা অনেকের পক্ষেই তাৎক্ষণিক উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। সব ছেলে-পুরুষেরই ‘গোপনীয়তা’ বলে একটা ব্যাপার থাকে, যা সে নিজে ছাড়া দুনিয়ার আর কেউ জানে না। এক্ষেত্রে আমি ব্যক্তিগতভাবে বহু সাধু-সন্যাসী ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকেও জানি, আর প্রফেসর-অধ্যাপক এবং ‘ছেলেপুলেদের’ কথা কী বলব?
অধিকাংশ বিখ্যাত পুরুষেরই নাকি ‘নারী-সমস্যা’ থাকে। কাজেই বিখ্যাত হলে আমার আপনারও কিন্তু...। তাই সাবধান! এসব শুনলে অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে। কথাটা তেমন মিথ্যে নয়। যে যত কথিত মহাপুরুষ, নারীর প্রতি তার আকর্ষণের মাত্রা ততবেশি। তবে খাঁটি ধর্মীয় মহাপুরুষদের ব্যাপারটা একটু ভিন্ন। এর কারণটা উপরে কিছুটা বলেছি- ‘স্রষ্টার প্রতি বান্দার অন্তর্নিহিত আকর্ষণের দৃষ্টান্ত হিসেবেই মনে হয় এ বিপরীত মানবপ্রজাতির সৃষ্টি।’ আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সা.-কে সমালোচকরা এখানেই বুঝতে ভুল করেন। তার একাধিক বিবাহের পেছনে ধর্মীয়-সামাজিক-রাজনৈতিক ও মানবিক কারণই প্রধান ছিল। তবে প্রচণ্ড মানবিক আকর্ষণও ছিল, শুনা যায় তার শরীরে চল্লিশজন যুবকের শক্তি ছিল।
অবশ্য আধ্যাত্মিক ক্ষমতা, মৃত্যুচিন্তা, স্রষ্টার প্রতি প্রবল আকর্ষণবোধ, ধর্মীয়-সামাজিক-রাজনৈতিক-মানবিক দায়িত্ববোধ- এসবের সামনে শারীরিক অতিরিক্ত ক্ষমতা বা প্রবৃত্তিজাত চাহিদা টিকতে পারে না। আর হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর এ বিষয়গুলো কি পরিমাণ ছিল তা আমরা কমবেশি জানি। যদিও অবিশ্বাসী বা অল্পবিশ্বাসীরা এ পার্থক্যগুলো বুঝে না। আবার ধর্মীয় মহাপুরুষগণ নারীর সঙ্গে ‘বৈধ’ সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে স্রষ্টার নৈকট্যও অনুসন্ধান করেন। হাদিস শরীফে আছে, ‘বিবাহ ছাড়া ঈমান পূর্ণ হয় না’ অথবা ‘বিবাহ ঈমানের অর্ধেক।’ অর্থাৎ আল্লাহ তাকে পেতে বান্দার জন্য একজন নারীকে গ্রহণ করা প্রায় শর্ত করে দিয়েছেন। এই একটিমাত্র বাক্যেই ইসলামে নারীর মর্যাদা সুপ্রমাণিত। ইসলামে নারীকে গ্রহণ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ছাড়া আল্লার দরজাও বান্দার জন্য বন্ধ।
নারী- (প্রথম পর্ব)
নারী- (দ্বিতীয় পর্ব)
২| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৩
জাকির এ মাহদিন বলেছেন: হুম। রোকেয়াও এমনই বা প্রায় এমনই অথবা আরও কয়েকধাপ উপরে ছিলেন। তিনি তার বংশের অশিক্ষা, কুসংস্কৃতি ও ধর্মীয় গোড়ামীগুলো সব মুসলমানদের বলে চালিয়ে দিয়েছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১০
নিষ্কর্মা বলেছেন: যে বেগম রোকেয়ারে নিয়া মুসলমানদের গর্বের অন্ত নাই, সেও কিন্তু সেই আমলে আরেকটা তসলিমা নাসরিন ছিল। যারা বেগম রোকেয়ার লেখা না পড়ে তাকে নারী জাগরণের প্রাণ বলে অবভিহিত করেন, তারা আসলেই উনার লেখা পড়েন নাই। সেই জন্য তসলিমা নাসরিনকে নিয়ে এতো মাতামাতি না করাতাই শ্রেয়।