![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি পথিক। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। আক্ষরিক অর্থেই আমি পথিক। একে একে জীবনযাত্রার সব সুতো কেটে দিচ্ছি। আবার শূন্যের উপর নির্মাণও করছি। এটাই প্রকৃতপক্ষে জীবন। অথবা- জীবন এমনই। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ির দুরন্ত প্রয়াস, যে সাগরের পাড় নেই। আমি মানবতার মুক্তির জন্য বিবেকের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শোষিত-বঞ্চিতের পাশে দাঁড়াতে চাই।
সমস্যা সমাধানে সত্যিই যদি আন্তরিকতা থাকে, তাহলে আলোচনার জন্য আহ্বান বা দাওয়াতের অপেক্ষা করতে হবে কেন তা আমার বুঝে আসে না। যদিও অনেকের মতেই আপনার চব্বিশ তারিখের বক্তব্য অনেকটাই ‘গণতান্ত্রিক’। কিন্তু আমার মতে সংকট উত্তরণে তা যথেষ্ট নয়। সেই বক্তব্যে আলোচনার হাল্কা আভাস থাকলেও ‘শক্তির’ মোকাবেলায় পাল্টা ‘শক্তি’ প্রদর্শনের একটা প্রচ্ছন্ন হুমকিও আছে এবং ইতোমধ্যেই দু’দলের ভেতরে-বাইরে যুদ্ধ প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার হল, এ যুদ্ধের সৈনিক সবাই সাধারণ জনতা। আহত-নিহত যা হবার তারাই হবে। শেষ বিচারে দু’পক্ষের সেনাপতি-হুকুমদাতারা বহাল তবিয়তেই থাকবেন। মাঝখান থেকে সাধারণ জনতার রক্তের স্রোত বয়ে যেতে পারে। কেন? আমাদের একফোঁটা রক্তের মূল্য আপনারা দু’নেত্রীর কেউ দিতে পারবেন? জীবনে কোনোদিন গায়ে সামান্য আঁচর খেয়েছেন?
সংবিধানে এবং মুখে যতই বলা হোক “একমাত্র জনগণই রাষ্ট্র ও ক্ষমতার মালিক”, বাস্তবে তা ধোঁকা ছাড়া আর কিছুই নয় এটা আপনি ভালো করেই জানেন। আমরা কতটুকু কিসের মালিক তা তো দেখছিই, নতুন করে আর দেখাবার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। তার চেয়ে বরং ওসব আপনাদেরই থাকুক, আমাদের কেবল শারীরিক-মানসিক মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের যথার্থ আন্তরিকতা দেখালেই চলবে। রাষ্ট্র ও ক্ষমতার মালিক একমাত্র জনগণ- এটা প্রত্যেক শাসকেরই ক্ষমতায় যাবার সিঁড়ি। তা সত্ত্বেও জনগণ যুদ্ধ অংশ নেয় ভাত-কাপড়ের নিশ্চয়তার জন্য।
প্রিয় বেগম জিয়া! আমি আপনাকেই বলছি, কারণ শেখ হাসিনাকে বলার কোনো স্থান দেখছি না। কেন দেখছি না তাও বলার সাহস আমার নেই। আপনি প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সম্মানিতা স্ত্রী। জিয়াউর রহমান সম্পর্কে যতটুকু জানি, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ধার্মিক ছিলেন। তিনি আল্লাহ-রাসুলে বিশ্বাসী ছিলেন। আপনার রাজনীতি তিনি কতটুকু পছন্দ করতেন জানি না, তিনি পরকালে কতটুকু উপকৃত হচ্ছেন তাও জানি না। তবে জাতির দুর্দিনে এবং অপরিহার্য প্রয়োজনে রাজনীতিতে আপনার বিরল আত্মত্যাগ অনস্বীকার্য। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভিত্তিস্থাপনে আপনার ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আপনি আপোষহীন নেত্রী, আবার জাতির প্রয়োজনে যেকোনো ত্যাগ-স্বীকারেরও সামর্থ রাখেন। আপনার বয়স হয়েছে, আরো বেশি ধর্ম-কর্মে মনোযোগ দেবার এখনই সময়। তবে জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে আপনার কাছ থেকে জাতি আরেকটি আত্মত্যাগ আশা করে। সেটি হচ্ছে, আপনি কেবল একটি বার, সকল হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে, ব্যক্তিগত-পারিবারিক ও দলীয় সব স্বার্থ ভুলে অপর নেত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসুন।
আলোচনার সকল পথ যখন বন্ধ, বড় দু’দলের অবস্থা যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে যুদ্ধংদেহি, সেই মুহূর্তে আপনিই তো পারেন সবাইকে চমকে দিতে। আপোষহীনতার যোগ্যতা যার আছে, সমঝোতার সামর্থও তারই থাকার কথা। আমি বলব না আপনার কর্মসূচি প্রত্যাহার করুন, বলব না ২৯ তারিখের “মার্চ ফোর ডেমোক্র্যাসি” বাতিল করুন। সেগুলো বহাল থাকুক। কেননা আপনি গণতন্ত্রের বাইরে যাননি। তাই শুধু বলব, আপনি একটি বার, মাত্র একটি বার বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হোন, যাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গতকাল আপনি স্বীকৃতি দিয়েছেন। জাতি কতকাল দেখেনি সেই চোখ-জোড়ানো মন-মাতানো দৃশ্য! দু’নেত্রীর একসঙ্গে হাসিমাখা মুখ! সংবিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের একজন অন্যতম মালিক হিসেবে যদিও আমি আপনাকে নির্দেশ দেয়ার ক্ষমতা রাখি, কিন্তু আমি আপনাকে অনুরোধ করব, খুব দ্রুতই আপনি তার সঙ্গে মিলিত হোন। এমনকি ২৯ তারিখের আগেই।
আপনি এবং আপনার দুই ছেলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। আপনার দলও প্রতিহিংসার শিকার। কেন্দ্রিয় ও তৃণমূল লাখ লাখ নেতাকর্মী আজ জেলে। অনেকে হত্যা-গুমের শিকার; মামলা-মোকাদ্দমা, জেল-জুলুমে নিস্পৃশ্য। তবে তাদের এই রাজনীতি, এই ত্যাগ-স্বীকার জাতির বৃহত্তম স্বার্থেই তো! তাই জালেমদের ক্ষমা করে দিন না! আল্লাহ আপনাদের ক্ষমা করবেন। হযরত মুহাম্মদ (সা.) আমাদের ক্ষমার আদর্শ শিক্ষা দিয়ে গেছেন। তার কলিজার টুকরা নাতি হযরত হোসাইন (রাঃ) তৎকালিন মুসলিম জাতির দু’দলের একটি বিশেষ দ্বান্দ্বিক মুহূর্তে এমনকি নিজের রাজনৈতিক স্বাভাবিক অধিকার খলিফাত্ব ত্যাগ করেছিলেন। ফলে বহুদিনের জন্য সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে এসেছিল। আপনার সম্মুখে সেই বিরল মুহূর্ত আজ সমুপস্থিত। আপনি একটি বৃহত্তর সমঝোতার আদর্শ শিক্ষা দিয়ে জাতিকে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করুন।
হে আপোষহীন নেত্রী! আপনি বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। আপনার হাত ধরে বাংলার নারীরা রাজনীতি ও নারীর ক্ষমতায়নের পাঠ নিয়েছে। কিন্তু আর একটি পাঠ বাকি। আপনি সমঝোতার পাঠটাও এ দেশের নারীদের হাতে-কলমে শিখিয়ে দিন। অপরজন কতটুকু সাড়া দিলেন বা কতটুকু সমঝোতায় এলেন কি এলেন না সেটা দেখা আপনার কাজ নয়। আপনি আপনার চেষ্টা করে যান, জাতি আপনাকে ক্ষমার চোখে দেখবে। আল্লাহ আপনাদের দু’নেত্রীর সীমাহীন মঙ্গল করুন। আমীন।
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৬
জাকির এ মাহদিন বলেছেন: ধার্মিক বলতে আপনি কি বুঝেন ভাই সাহেব?
হুজুর-মাওলানা ও মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রাপ্তরা ছাড়া সাধারণ মুসলমানদের মধ্যে অনেকেই ধার্মিক আছেন। অনেকে প্রকাশ্য পোশাক-আসাক এমনকি ধর্মীয় বিধি-নিষেধ পালন করতে না পারলেও অন্তরে ধর্মীয়বোধ থাকে। আর বিধি-নিষেধ পালন না করার দরুন আল্লাহ শাস্তি দিবেন বা ক্ষমা করবেন।
২| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০০
কবিগরু বলেছেন: "পাঠক১৯৭১ বলেছেন: @লেখক,
আপনি লিখেছেন, " জিয়াউর রহমান সম্পর্কে যতটুকু জানি, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ধার্মিক ছিলেন। তিনি আল্লাহ-রাসুলে বিশ্বাসী ছিলেন। "
মানুষ সম্পর্কে কিছু বলতে হলে, সে মানুষকে জানতে হয়: জিয়া ধার্মিক ছিলেন কি করে জানেন আপনি? মোল্লারা এখনো পাথের যুগে আছেন; অংক, অর্থনীতি ও পলিটিক্যাল সায়েন্স পড়েন। "
ধর্মপ্রান শুনে পাঠক৭১ এর শরীরে আগুন লাগলো কেন বুঝলামনা!! আপনি কি করে জানেন যে জিয়া ধর্মপ্রান ছিলনা? ধর্মের কথা শুনলেই লাফ দিতে ইচ্ছে করে নাকি?
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ ভোর ৬:৩৪
জাকির এ মাহদিন বলেছেন: আমাদের সমাজেরই গুটিকতক মানুষের ধর্মের বিরোধিতা দুঃজনক।
আমি বলতে চেয়েছি শহীদের যেমন কয়েকটি স্তর আছে, ধার্মিক বা ধর্মপ্রাণ মানুষেরও কয়েকটি স্তর আছে।
জিয়া ধর্মের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন- একথা শুনার পর আশা করি কেউ আবার তাকে পাকিস্তানের চর, অমুক-তমুক ইত্যাদি গালাগালি শুরু করবেন না।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৪৬
পাঠক১৯৭১ বলেছেন: @লেখক,
আপনি লিখেছেন, " জিয়াউর রহমান সম্পর্কে যতটুকু জানি, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ধার্মিক ছিলেন। তিনি আল্লাহ-রাসুলে বিশ্বাসী ছিলেন। "
মানুষ সম্পর্কে কিছু বলতে হলে, সে মানুষকে জানতে হয়: জিয়া ধার্মিক ছিলেন কি করে জানেন আপনি? মোল্লারা এখনো পাথের যুগে আছেন; অংক, অর্থনীতি ও পলিটিক্যাল সায়েন্স পড়েন।