![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি পথিক। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। আক্ষরিক অর্থেই আমি পথিক। একে একে জীবনযাত্রার সব সুতো কেটে দিচ্ছি। আবার শূন্যের উপর নির্মাণও করছি। এটাই প্রকৃতপক্ষে জীবন। অথবা- জীবন এমনই। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ির দুরন্ত প্রয়াস, যে সাগরের পাড় নেই। আমি মানবতার মুক্তির জন্য বিবেকের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শোষিত-বঞ্চিতের পাশে দাঁড়াতে চাই।
বাংলাদেশের অনাকাঙ্খিত ও অভূতপূর্ব চলমান এই রাজনৈতিক সংকটে যে মুহূর্তে দেশবাসী মিডিয়াকে নিরপেক্ষ ভূমিকায় দেখতে চায়, দায়িত্বশীল আচরণ আশা করে, ঠিক সেই মুহূর্তে ‘৭১ টিভি’ তাদের কথিত "হেফাজত নামা" প্রকাশ করে দেশের শতকরা নব্বই ভাগ ধর্মীয় জনগোষ্ঠিকে নতুন করে সংঘাতে জড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। কেন? যদিও সেই ‘তাণ্ডব’ নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক, একপেশে প্রচারণা, ষড়যন্ত্র এমনকি সেই ষড়যন্ত্রে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগও আছে তাদের প্রতি। তা না হলে তারা কেন ‘আওয়ামী নামা’ ও ‘বিএনপি নামা’ প্রকাশ করছে না? দেশের শতকরা নব্বই ভাগ জন-সমর্থিত ‘হেফাজতে ইসলাম’ কোনো রাজনৈতিক শক্তি নয় বলে? নাকি অদূর ভবিষ্যতে এটি একটি অপ্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে এই ভয়ে?
যদি বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় সংঘাত-সংকট নিরসনে একান্তই ব্যর্থ হয় এবং এ ব্যর্থতা চলতেই থাকে, তাহলে তারা আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব তথা ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি থেকে জাতিকে উদ্ধারে এগিয়ে আসবেন এটাই তো স্বাভাবিক এবং জাতির প্রত্যাশাও তাই। সুতরাং টিভি কর্তৃপক্ষের সাজানো কিংবা বিশেষ মহলের নির্দেশে একপেশে প্রশ্ন করে একশ্রেণির কথিত ধর্মনিরপেক্ষ ‘প্রতিপালিত’ বুদ্ধিজীবীর মুখ দিয়ে ছলে-বলে-কৌশলে ‘মৌলবাদ’ ‘মৌলবাদ’ ভয় ছড়ানোর উদ্দেশ্যটা কি? (এ শ্রেণির বুদ্ধিজীবীদের রাজনীতির মুখোশ ও মনুষ্যত্বের বিকাশ বইয়ের ২৪-২৭ পৃষ্ঠা দেখে বিতর্কের আমন্ত্রণ রইল)
৭১’এর সাংবাদিক/চাকরিজীবী ভাই-বোনদের বলছি, পেটের জ্বালায় (সবাই নয়) চাকরি করেন ভালো কথা। তাই বলে অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে রিপোর্ট বা ডকুমেন্ট তৈরি করবেন- এটা কি আপনার বিবেচনাবোধ সমর্থন করে? দেশের বিরুদ্ধে, জাতির বিরুদ্ধে সচেতনভাবে নিজে অংশগ্রহণ করতে বুকটা একটুও কাঁপে না? আর এই কথিত হেফাজত নামা যদি আপনাদের ইচ্ছানুযায়ী না হয়ে মালিকপক্ষ অথবা আওয়ামী নির্দেশে হয়, যে নির্দেশ অমান্য করার কার্যত ক্ষমতা আপনাদের নেই, তাহলেও অনুরোধ করব, মিডিয়ার বিদ্যমান গঠনতন্ত্রের নিরপেক্ষ ও জনমুখী নীতিমালা প্রয়োগ করে অথবা অন্তত আপনাদের ‘নিজস্ব সর্বনিম্ন বিবেচনাবোধ’ প্রয়োগ করে হলেও এ থেকে সরে আসুন। খুব অল্প একটা শ্রেণি ছাড়া প্রায় সব মানুষের মধ্যেই “মনুষ্যত্ব” বলে একটা ব্যাপার থাকে। আপনারা হয়তো অনুধাবন করতে পারছেন না এ জাতীয় প্রচার-প্রপাগাণ্ডা জাতি হিসেবে আমাদের কোথায় নিক্ষেপ করবে।
আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, জামায়াতে ইসলামির সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের কোনো সম্পৃক্ততা নেই, কখনো ছিলোও না। সুতরাং ৫ই মের তাণ্ডবের জন্য হেফাজতে ইসলাম কোনোভাবেই দায়ি নয়। তাদের হাতে তাণ্ডব চালানোর মতো কিছুই ছিলো না। তবে যখন পুলিশ ও সরকারদলীয় কর্মীরা তাদের ওপর সম্পূর্ণ অযৌক্তিক আক্রমণ করে, তখন খালি হাতে আত্মরক্ষার্থে তারা দিগ্বিদিক ছুটোছুটি করেছেন। অপরদিকে গতকাল (২৯-১২-২০১৩) হাইকোর্ট প্রঙ্গণে সরকারদলীয় কর্মীদের দ্বারা আগুন লাগানো, ইটপাটকেল ছোঁড়া, সম্মানিতা নারী আইনজীবীদের বুকে লাথি মারা, স্পর্শকাতর স্থানে বেধরক লাঠিপেটা- এগুলো কিন্তু আপনাদের নজরে আসেনি। আসবেও না। অবশ্য এতে আমার আপত্তি নেই। কেননা আপনারা হয়তো ভালো উদ্দেশ্য নিয়েই এটা করেছেন। কারণ আমি মনে করি, শুধু অন্যায়-অত্যাচারের রিপোর্ট তৈরি করে দর্শকদের দেখানোর মধ্যেই সমাধান নেই, বরং যদি সেই অনুযায়ী নীতি-নৈতিকতা ও আদর্শের শিক্ষা সমানতালে দেয়া না যায় তাহলে এইসব খারাপগুলো দেখতে দেখতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে যাব। তখন আর এসব সচিত্র প্রতিবেদনও আমাদের অনুভূতিতে সাড়া জাগাতে পারবে না।
মিডিয়া প্রসঙ্গে রাজনীতির মুখোশ ও মনুষ্যত্বের বিকাশ বইয়ের ৯ নং পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, "প্রতি মুহূর্তে দেশ-বিদেশে ঘটছে অগণিত অসংখ্য ঘটনা-দুর্ঘটনা। এসব ঘটনা-দুর্ঘটনার, বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণগুলোর প্রকৃত সংবাদ প্রাপ্তি মানবসভ্যতার একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। এক্ষেত্রে আমরা সরাসরি মিডিয়ার উপর নির্ভরশীল। আর মিডিয়া অর্থাৎ টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রগুলোও দাবি করে তারা ‘নিরপেক্ষ’ ও ‘বস্তুনিষ্ঠ’ সংবাদ প্রচার করে। অথচ যেকোনো সংবাদ- মালিকের স্বার্থ ও পক্ষপাতিত্ব তো আছেই- সংবাদ সংগ্রহের পর যে সাংবাদিক সেটা তৈরি, সরবরাহ ও পরিবেশন করেন তার চিন্তা-চেতনা-দৃষ্টিভঙ্গির দ্বারাও প্রভাবিত হয়। কখনো ইচ্ছাকৃত, কখনোবা অনিচ্ছাকৃত। এ থেকে বাঁচার উপায় কি? আসলে সব সমস্যার মূল এক জায়গাতেই। সেটা হচ্ছে- মানবিক সঙ্কীর্ণ স্বার্থ, গণ্ডিবদ্ধ চিন্তাধারা ও দৃষ্টিভঙ্গি, সীমিত চাহিদা পূরণের তাড়না ইত্যাদি দ্বারা প্রায় প্রতিটি মানুষ চালিত। এ থেকে বাঁচতে সৃষ্টি দর্শন, মানবিক অসীম চাহিদার বিপরীতে অসীম দুর্বলতা, বিপরীতমুখী অবস্থার চাপ- এ বিষয়গুলো যথাযথভাবে উপলব্ধি করা।"
সরকার যে এত দুর্বল কখনো ভাবিনি। কৌশলগত, নৈতিক, রাজনৈতিক, গণতান্ত্রিক, প্রশাসনিক সবদিক থেকে সরকার পরাজিত হচ্ছে। কাউকে অবরুদ্ধ করে, গণপরিবহন বন্ধ করে, শক্তি প্রয়োগ করে কখনো অশুভ শক্তির মূলোৎপাটন করা যায় না। এত দমন-পীড়নের পরও কি বিএনপি-জামায়াতের শক্তি কমেছে না বেড়েছে? জনসমর্থন, আন্তর্জাতিক সমর্থন কমেছে না বেড়েছে? 'নাগরিক সাধারণ অধিকার হরণ' করে, দলীয় কর্মীদের হাতে আইন তুলে দিয়ে, প্রকাশ্য 'লাঠি' নিয়ে নামার ঘোষণা দিয়ে বিরোধী দলকে মোকাবেলা করা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক। সভ্য সমাজের কেউই এটা সমর্থন করতে পারেন না।
শ্রদ্ধেয় আলেমসমাজের বিরুদ্ধে যারা বিভিন্নমুখি অপপ্রচারে লিপ্ত, সম্মেলন-সভা-সেমিনার-মিডিয়ায় নাম ধরে ধরে বিশিষ্ট আলেমদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা, বয়োবৃদ্ধ সম্মানিত জনকে ‘তেঁতুল হুজুর’ বলে কটাক্ষ করা, আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের অনুরোধ করব আলেমগণের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে এবং হুজুরদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে। এক্ষেত্রে যারা শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান, যারা সমাজের ‘উঁচুস্তরের’ বাসিন্দা, তাদেরই এগিয়ে আসা উচিত। এটাই প্রকৃতিগত নিয়ম। আলেমরাও মানুষ, আপনারাও মানুষ অর্থাৎ আমরা সবাই পরস্পর ইনসানী ভাই। আমরা একজাতি, এক রাষ্ট্রের অধিবাসী। বৈবাহিক ও রক্তের সম্পর্কও আছে অনেকের সঙ্গেই। সিংহভাগ উলামায়েকেরামই দেশের প্রচলিত রাজনীতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ। তারা ‘ক্ষমতার রাজনীতিতে’ বিশ্বাসী নন। তারা চান ক্ষমতার বাইরে থেকেই জনসাধারণের ভেতর ধর্মীয় চেতনা, ধর্মীয় মূল্যবোধ, নীতি-নৈতিকতা, আদর্শ, চরিত্র, জাতীয়তাবোধ শিক্ষা দিয়ে যোগ্য নাগরিক তৈরি করতে।
মানুষ বেঁচে থাকার জন্য পানি ও বায়ু অপরিহার্য। কিন্তু আজকের পৃথিবীতে সর্বত্র এগুলো দূষিত। তাই বলে কি আমরা গ্রহণ করি না? পানি ও বাতাসকে গালাগাল করি, না যথাসম্ভব একে দূষণমুক্ত রাখার চেষ্টা করি? প্রকৃতিতে আমরা দেখতে পাই যে জিনিসটা যত বেশি প্রয়োজনীয়, সেটা দূষিত হওয়ার সম্ভাবনাও তত বেশি। আলেমগণ আজ অবশ্যই কিছু বিষয়ে জাতির কাছে প্রশ্নের সম্মুখীন। বিশেষ করে কিছু সংখ্যক আলেমের অপরাজনীতি, জ্বিহাদ ও জঙ্গিবাদকে গুলিয়ে ফেলা সত্যিই লজ্জাজনক। কিন্তু তাই বলে কি ঢালাওভাবে সবাইকে দায়ি করা যৌক্তিক? সামগ্রিকভাবে সমাজে আলেমদের প্রয়োজনীয়তাকে আমরা অস্বীকার করব, তাদের কটাক্ষ ও গালাগাল করব? বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে অপসংস্কৃতির প্রবল স্রোতের বিপরীতে আলেমগণ ভদ্র ও শালীন পোশাক ব্যবহার করছেন, নীতি-নৈতিকতা শিক্ষা দিচ্ছেন, মরণঘাতি এইড্স-এর ভয়াবহ আক্রমণ থেকে রক্ষা করছেন। সর্বোপরি পরিবার-ব্যবস্থা টিকিয়ে রেখে নিসঃঙ্গতার সীমাহীন যন্ত্রণা থেকে এই প্রাণপ্রিয় লাল-সবুজের দেশকে, দেশের মানুষকে এখনো মুক্ত রাখতে আলেম-উলামাগণের ভূমিকা অপরিসীম। এ দেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে তাদের নাড়ির সম্পর্ক রয়েছে। তাই আমরা আশা করব, জাতীয় উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির কোনো পরিকল্পনা আলেমসমাজকে বাদ দিয়ে হবে না। সুতরাং কথিত “হেফাজত নামার” মাধ্যমে জাতীয় বিচ্ছিন্নতা ও বিভক্তি সৃষ্টি কোনোভাবেই কাম্য নয়।
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩০
জাকির এ মাহদিন বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
২| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪২
উড়োজাহাজ বলেছেন: তবে কথিত আলেমগণকেও সংশোধন হতে হবে। তারা ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে, অতি গবেষণা করে ইসলামকে জটিল ও দুর্বোধ্য করে ফেলেছে। চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে করতে আল্লাহর দেওয়া সেরাতাল মোস্তাকীমকে মাকড়সার জালের ন্যায় জটিল দুর্বোধ্য করে ফেলেছে। তারা যে ভুলটা করেছে এবং এখনো করছে তাতে করে মনে হয় না প্রাকৃতিক ফেতনা তাদেরকে ছাড়বে।
আল্লাহর রসুল বলেছেন, তোমরা কি জানো দীনকে কিসে ধ্বংস করবে? সাহাবাগণ উত্তর না দিতে পারলে তিনি নিজেই বললেন, আলেমদের ভুল ফতোয়া এবং মোনাফেকদের বিতর্ক (বাহাস।। এই দুইটা জিনিস অনেক আলেমরা এখন সওয়াবের কাজ মনে করে করে থাকে।
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৬
জাকির এ মাহদিন বলেছেন: আপনার সঙ্গে একমত।
৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০৩
মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন: হেফাজত নামা তে কি ছিলো , এ ব্যাপারে যদি বিস্তারিত বলতেন ...
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২৭
জাকির এ মাহদিন বলেছেন: ওরা এখনও প্রকাশ করেনি, তবে শীঘ্রই করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর কি থাকবে বুঝেনই তো। দেখাবে টুপি মাথায় দিয়ে আগুন লাগাচ্ছে, গাছ কাটছে, মানুষের গলা কাটছে, হাতে ইয়া বড় বড় তলোয়ার, রামদা ইত্যাদি। সবই এদের কল্পিত ও পরিকল্পিত। আর ক্যামেরার কারসাজি।াছ কাটতে সরাসরি কাউকে দেখাতে পারবে না, কিন্তু বলা হচ্ছে হেফাজত সব গাছ কেটে..... হেফাজত হঠাৎ করে কড়াৎ পেল কই? নাকি একাত্তরের সাংবাদিকরা কড়াৎ রেডি রেখেছিলেন......?
৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:১৩
মুহসিন বলেছেন: ভাই এখনই যদি হেফাজতকে না ঠেকানো যায়, ভবিষ্যতে জনমতকে আর নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবেনা। কাজেই হেফাজত=জঙ্গী=তালেবান= ইত্যাদি ইত্যাদি।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:২৪
জাকির এ মাহদিন বলেছেন: হুম! এদের পরিকল্পনা ঠিকই আছে বলা যায়।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২৪
মেনন আহমেদ বলেছেন: ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্য।