নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ জাকির হোসেন লাভলু

মোঃ জাকির হোসেন লাভলু › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহান বিজয় দিবস ..... এবারের মুক্তিযুদ্ধে এটিই হওয়া উচিত ১৬ কোটি মানুষের প্রত্যয়দীপ্ত শপথ

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৮





আজ ১৬ ডিসেম্বর। আমাদের মহান বিজয় দিবস। বিজয়ের ৪৩ বছর পূর্ণ হলো আজ। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পর লাখো প্রাণের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের আজকের দিনে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার সাথে স্মরণ করবে সেই সব শহীদদের যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা। স্মরণ করবে সেই সব বীর সেনানিদের যারা শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে অনাগত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুখীসমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দেয়ার জন্য প্রাণের মায়া ত্যাগ করে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। যেসব নরনারীর সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ স্বাধীন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সম্মান জানানো হবে। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি উদযাপনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এ ছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আজ সরকারি ছুটির দিন। বাংলার শোষিত বঞ্চিত মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে বুটের তলায় স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের অন্ধকারে বর্বর এক হত্যাযজ্ঞের অপারেশনের নামে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি হঠকারী শাসকগোষ্ঠী। আলোচনার টেবিলে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ পরিত্যাগ করে তারা বন্দুকের নল আর কামানের গোলা বেছে নিলো সমাধানের উপায় হিসেবে। যুদ্ধ চাপিয়ে দিলো আমাদের ওপর। নিরস্ত্র ঘুমন্ত মানুষকে নির্বিচারে হত্যায় মেতে উঠল অস্ত্রের জোরে বলীয়ান সামরিক শাসকগোষ্ঠী। শুরু হলো মুক্তির লড়াই, মুক্তিযুদ্ধ। ব্রিটিশের বিদায়ের পর নতুন রূপে এ জাতির ওপর শোষক হিসেবে আবির্ভূত হয় পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক শ্রেণী। যে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ একদিন পশ্চিম পাকিস্তানিদের সাথে আন্দোলন করে মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করেছিল সেই পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকেই আবার অস্ত্র ধরতে হলো পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর হঠকারিতা, অদূরদর্শিতা এবং অবিমৃশ্যকারিতার কারণে দ্ইু অঞ্চলের মধ্যে তৈরি হয় ভেদ রেখা এবং বৈষম্যের বেড়াজাল। পূর্ব বাংলার মানুষের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর শোষণ, বঞ্চনা আর অবহেলা চরম আকার ধারণ করলে প্রতিবাদে ক্রমে অগ্নিগর্ভ হতে থাকে এ অঞ্চল। কিন্তু এ অঞ্চলের মানুষের ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি কর্ণপাত না করে বুটের তলায় তা পিষ্ট করার নীতি গ্রহণ করে তারা। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা না দেখিয়ে তারা ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভকারী আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে টালবাহানা শুরু করে শাসকগোষ্ঠী। ফলে ক্ষোভে-বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান। একাত্তরের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ ‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’ জনগণের স্বাধীনতার স্পৃহাকে প্রবল করে তোলে। ঢাকা যখন অগ্নিগর্ভ, তখন পাকিস্তানি শাসকচক্র আমাদের মুক্তির স্পৃহাকে দমনের পথ বেছে নেয়। রাতের অন্ধকারে নির্বিচারে নিরস্ত্র মানুষ হত্যার মাধ্যমে জন্ম দিলো ২৫ মার্চের কালরাত। এরপরই চূড়ান্ত হয়ে যায় আমাদের পৃথক পথচলার যাত্রা। ওদের সাথে আর নয়। ২৬ মার্চ থেকে শুরু হলো চূড়ান্ত লড়াই। দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিসংগ্রামের পর পরাজয় মেনে নেয় পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ১৯৭১ সালের আজকের দিনে রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ৯১ হাজার ৪৯৮ জন নিয়মিত-অনিয়মিত এবং আধা সামরিক সৈন্য নিয়ে ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান লে. জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী আত্মসমর্পণ করেন সম্মিলিত বাহিনীর প্রধান জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে। শুরু হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের পথচলা। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মুনাজাত ও প্রার্থনা করা হবে। হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রমসহ, বিভিন্ন অনাথ আশ্রয়কেন্দ্র এবং এ জাতীয় বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং রাতে আলোকসজ্জা করা হবে। প্রধান প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলোতে জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হবে। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বাদক দল বাদ্য বাজাবে। বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় সংবাদপত্রে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে। রেডিও, টেলিভিশনে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারিত হবে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিশুএকাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আলোচনা সভা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে। বাণী : বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিজয়ের মর্যাদাকে সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতির বাণী : রাষ্ট্রপতি মো: আবদুল হামিদ তার বাণীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশকে সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করতে হবে। দলমত নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও চেতনা বাস্তবায়নের জন্য প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যেতে হবে। তিনি বলেন, বাঙালির স্বাধীনতার ইতিহাসে বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের ল্য ছিল একটি সমৃদ্ধ ও মর্যাদাপূর্ণ পৃথক জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা; যেখানে সাধারণ জনগণ স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করবে। বর্তমান সরকার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে সামনে রেখে ভিশন-২০২১ ঘোষণা করেছে। ‘আমাদের রয়েছে উন্নয়নের বিপুল সম্ভাবনা। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশ ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে সবাই একযোগে কাজ করলে আমরা কাক্সিত ল্েয পৌঁছতে পারব, বাস্তবায়ন করতে পারব রূপকল্প-২০২১। প্রধানমন্ত্রীর বাণী : বিজয় দিবসের বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আসুন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রা করি। দেশ সেবায় আত্মনিয়োগ করি। এটিই হোক ২০১৪ সালের বিজয় দিবসে আমাদের অঙ্গীকার।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজয় দিবসে স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মোৎসর্গকারী সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন। দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে সবার শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি ুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, শান্তিপূর্ণ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার ল্য নিয়ে তার সরকার কাজ করছেÑ এ কথা উল্লেখ করে তিনি আশা করেন রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করতে সম হবেন। মহান বিজয় দিবসকে বাঙালি জাতির অনন্য গৌরবের দিন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি দীর্ঘ তেইশ বছর রাজনৈতিক সংগ্রাম ও নয় মাস মরণপণ যুদ্ধ করে ১৯৭১ সালের এই দিনে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। বেগম খালেদা জিয়ার বাণী : বিজয় দিবসের বাণীতে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, মহান বিজয় দিবস উপলে আমি প্রবাসী বাংলাদেশীসহ দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। তাদের অব্যাহত সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করি। আজকের এ দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সেই সব বীর শহীদদের কথা, যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন স্বদেশভূমি পেয়েছি। আমি স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনা করি। স্বাধীনতার জন্য যেসব মা-বোন সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেনÑ আমি জানাই তাদের সশ্রদ্ধ সালাম। বাণীতে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ১৯৭১-এ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি শত্র“মুক্ত হলেও চক্রান্তকারীদের চক্রান্ত আজো বিদ্যমান। আধিপত্যবাদী শক্তি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে গ্রাস করে আমাদের একটি পদানত জাতিতে পরিণত করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত। ওই অপশক্তির এ দেশীয় দোসররা নানাবিধ চক্রান্তের জাল রচনা করে আমাদের বহু ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বিপন্ন করে চলেছে। ওদের হাত থেকে প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রা এবং গণতন্ত্রকে বিপদমুক্ত করতে স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান হয়ে আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। বি. চৌধুরীর বাণী : বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও দারিদ্রমুক্ত এবং উদার গণতন্ত্রের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনীতিবিদদের আন্তরিক প্রতিশ্র“তি কামনা করেছেন। মহান বিজয় দিবস উপলে গতকাল দেয়া এক শুভেচ্ছাবাণীতে তিনি বলেন, বহু রক্ত এবং মা-বোনদের ইজ্জতের বিনিময়ে ছাত্র-কৃষক, শ্রমিক-জনতার অংশ নেয়ার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয় অর্জিত হয়েছে। এই বিজয়ের পেছনে সাধারণ মানুষের প্রধান দাবিই ছিল, গণতন্ত্র এবং দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত একটি দেশ। কিন্তু আজকে প্রশ্ন উঠেছে স্বাভাবিক জীবন ও মৃত্যুর গ্যারান্টি আমাদের নেই কেন? তিনি আজকের এই আনন্দ-বিধূর দিনে দেশের মানুষকে সংগ্রামী অভিনন্দন জানান। এরশাদের বাণী : মহান বিজয় দিবস উপলে গতকাল এক বাণীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের উজ্জ্বলতম অধ্যায় এই মহান বিজয় দিবস। পরাধীনতার শৃঙ্খল চূর্ণ-বিচূর্ণ করে অকুতভয় মুক্তিযোদ্ধারা ৯ মাসের সংগ্রামের পর আমাদের কাক্সিত বিজয় এনে দিয়েছেন। এরশাদ বলেন, মহান বিজয় দিবসে আমাদের অঙ্গীকার হোক- বিজয়ের সেই গৌরবদীপ্ত সাহস, শক্তি ও চেতনা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাবো সামনের দিকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার ল্েয। রওশন এরশাদের বাণী : মহান বিজয় দিবস উপলে গতকাল এক বাণীতে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ বলেছেন, মহান বিজয় দিবস বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে আনন্দের ও গৌরবের দিন। লাখো শহীদের আত্মাহুতি ও দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের ফলে অর্জিত হয়েছে আমাদের এই স্বাধীনতা। আমরা পেয়েছি প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশের ইতিহাসে মুক্তিযোদ্ধাদের অপরিসীম ত্যাগ ও বীরত্বগাথা চিরদিন স্বর্ণারে লেখা থাকবে। প্রস্তুত জাতীয় স্মৃতিসৌধ : প্রত্যুষে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাগণ, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশী কূটনীতিক, আমন্ত্রিত ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সাধারণ জনগণ জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। শহীদদের প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে শ্রদ্ধা জানাতে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। সশস্ত্রবাহিনীর কুচকাওয়াজ ও অন্যান্য কর্মসূচি : সকাল ১০টায় তেজগাঁও পুরনো বিমানবন্দরের জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে মুক্তিযোদ্ধা, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনীসহ সম্মিলিত বাহিনীর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি সালাম গ্রহণ এবং কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করবেন। এ সময় বিমানবাহিনীর মনোজ্ঞ ফাইপাস্ট, অ্যারোবেটিক ডিসপ্লে এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের যান্ত্রিক বহরের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রীও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। আজ নৌবাহিনীর নির্ধারিত জাহাজগুলো ঢাকার সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জের পাগলা নেভাল জেটি, খুলনার বিআইডব্লিউটিএ রকেট ঘাট, মংলার দিগরাজ নেভাল বার্থ এবং বরিশালের বিআইডব্লিউটিএ জেটি রকেট ঘাটে জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। বিভিন্ন দল ও সংগঠনের কর্মসূচি : আওয়ামী লীগ : আওয়ামী লীগের দুই দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, সূর্যোদয়ের সাথে সাথে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারা দেশের সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৬টা ৩৪ মিনিটে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন। সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। সকাল ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ জিয়ারত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। দুপুরের আগে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সব থানা ও শাখা নেতৃবৃন্দ ও জাতীয় সংসদ সদস্যগণ নিজ নিজ এলাকা থেকে বিজয় র‌্যালিসহ পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণের ঐতিহাসিক স্থানে সমবেত হবেন এবং সেখানে শিখা চিরন্তনে বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এরপর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর অভিমুখে বিজয় মিছিল। আগামীকাল বেলা ৩টায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি : মহান বিজয় দিবস উপলে ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৮টায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির জাতীয় নেতৃবৃন্দ জাতীয় স্মৃতিসৌধে গমন এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এ ছাড়া এ দিন সকাল ৯টায় বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির জাতীয় নেতৃবৃন্দ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন। বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে যথাসময়ে ওই সব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। জামায়াতের কর্মসূচি : ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলে আলোচনা ও দোয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াত। দলের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ এক বিবৃতিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, আমাদের জাতীয় জীবনে এ দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। যারা মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে জীবন দিয়েছেন সেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধার অবদানের কথা আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি এবং শহীদদের মাগফিরাতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করছি। তিনি আলোচনা সভা ও দোয়ার অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে ‘মহান বিজয় দিবস’ পালন করার জন্য জামায়াতের সব শাখার প্রতি আহ্বান জানান এবং দেশবাসীর সুখ-সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল সাড়ে ৬টায় ভিসির ভবনসহ প্রধান প্রধান ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জমায়েত এবং সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের উদ্দেশে যাত্রা। সন্ধ্যা ৬টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বেলা ১১টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও চিত্র/পোস্টার প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদসহ বিভিন্ন হল মসজিদ ও উপাসনালয়ে শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনা এবং দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নতির জন্য দোয়া করা হবে। -

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.