নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সতীত্ব খোয়ানো নারীর গর্ভে সোনা জন্মালো নাকি তামা জন্মালো তাতে কি আসে যায় ? আমি কলংকের সোনা।

zaku

আমি সহ আমার বাকি চার ভাইবোনের জন্ম হয়েছিল একটা গোয়াল ঘরে। সে ঘরে প্রতিদিন সাপ এসে গাভির দুধ খেয়ে যেত। আমরা আতংকে জড়সড় হয়ে সাপের দুধ খাওয়ার দৃশ্য দেখতাম। সাপ সম্ভবত কুকুরের সাথে খুব একটা বিবাদে যায় না। আমাদের সাথে সে সাপের বিবাদের কথা কেউ কখনো বলেনি।

zaku › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিলালিপি- ৩

১৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:১২

কলেজে আমি ও আমার চার বন্ধু মোটামুটি একটা উপদ্রব হিসেবেই আত্ম প্রকাশ করলাম । সকাল থেকে রাত অবধি মাদক আর মাদক। আমার পকেট পয়সার সরবরাহ বেড়েছে। ভাইয়া রোজ ২০ টাকা দেয় । চুরি চামারি করি । বিভিন্ন চিপায় চাপায় বসে টিকটিকির লেজ থেকে শুরু করে বাংলা মদ সবই খাই । ক্লাসের অন্য কোন ছাত্র ছাত্রী কিংবা কলেজের কোন টিচার কে কখনো কোন রকম বিরক্ত করিনি এটা হলফ করে বলতে পারি । একান্তই নিজেরদের জগতে বুদ হয়ে থাকতাম । মাঝে মাঝে আমি খেয়াল করতাম আমাদের কোন বন্ধু নেই । এসব নিয়ে কোন আক্ষেপ আমার কোন দিনই ছিল না । বন্ধু আমার এখনো নেই । দিনে দিনে বড় ভাইয়ার প্রতি আমার দুর্বলতা বাড়তে থাকল । লোকটা প্রতি বেলাতেই না খেয়ে বসে থাকে । আর আমি কিনা একটা ঘোরের মধ্যে থাকি সর্বক্ষণ । ঘরের প্রতি একটু একটু মমতা বাড়তে থাকল কিন্তু ভয়ঙ্কর যে বিষয়টা খেয়াল করলাম তা হল আব্বাকে সহ্য করতে পারছিনা । মনে হচ্ছিল আব্বা, মেঝো ভাই এবং চির অসুস্থ মাও আমাকে আমাকে ঘৃণা করেন । এর কারন কি ? মুখের উপর সত্য কথা বলা ? ভাইয়া বিষয় তা আচ করে তাঁর ঐশ্বরিক দু হাত বাড়িয়ে দিলেন । ক্ষুদে অনাথ শিশু প্রবল আবেগে তাঁর বুকে ঝাপিয়ে পড়ল, কেপে কেপে উঠল বার বার । আমি শক্ত বাধনে জড়িয়ে পড়ছিলাম তাঁর বাহু ডোরে । দুপুরে বাসায় ফেরার জন্য তাড়াহুড়া করি । একদিকে ভাই না খেয়ে অপেক্ষা করে আছে অন্যদিকে শৈশবের বন্ধুরা বিরক্ত হচ্ছে । কমপ্লিকেশন শুরু হল । আমি বাসার পক্ষেই সিদ্ধান্ত নিলাম ।

ঘরে দুটো ধারা তৈরি হতে থাকল । একদিকে আমি আর অন্যদিকে বাবা মা ও মেঝো ভাই । তারা সারাক্ষন বড় ভাইয়ার কান ভারি করার চেষ্টা করে যাচ্ছে । আমি খেয়াল করতে থাকলাম কারন থাকুক আর নাই থাকুক তারা প্রায় প্রতিদিনই আমাকে নিয়ে নানান অভাব অভিযোগ করে অথচ বাইরের কেউ কখনো আমাকে নিয়ে এমনটা করেনি । আমার মেজাজ খারাপ থেকে খারাপতর হতে শুরু করল । স্কুলে পড়াকালীন সময়ে একদিন হেড স্যার বাবাকে জিজ্ঞেস করল আমি কোন ক্লাসে পড়ি । উনি ভেবে চিন্তে উত্তর দিলেন –জানিনা । আমার মনে হল বাবা কোন দেশের কোন প্রেসিডেন্ট যে উনি তাঁর ছেলে কোন ক্লাসে পড়ে তা জানেন না । এসময় ঘরে দুই জাতের ভাত রান্না হত । রেশনের চাল ও চিকন চালের ভাত । শুধু মেঝো ভাই খাবে চিকন চালের ভাত বাকি সব রেশনের । যারা জানেন না রেশন চাল কি জিনিস তাদের বিনীত ভাবে বলি, ঐ চাল গুলো ছিল ৫০% মোটা চাল, ২০% পচা, ২০% পোকা ( সাদা সাদা বাথরুমের পোকা ) আর বাকি সব পচে শুকিয়ে যাওয়া যাওয়া কাল চাল । যে ঘরে এমন চাল সেদ্ধ হত সে ঘরের আশে পাশে কেউ ভিড়তে পারত না গুয়ের গন্ধে । চাল বেছে ও শুকিয়ে পোকা পরিস্কার করতে হত । তারপরও রান্নার পর দেখা যেত প্লেট ভরতি সাদা সাদা পোকা সামান্য খয়েরি রঙের মাথা । এই প্লেট কাছে আনা যেত না এমন গন্ধ । আমি না খেয়ে খেয়ে শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলাম । একসময় খেয়াল করলাম স্কুল থেকে ফেরার পর খেলতে পারিনা । সারাক্ষন মাথা ঘুরায় । মাঠ রাস্তা ঘাট সব মনে হয় উল্টে গেছে । আমি উল্টো হয়ে হাঁটাহাঁটি করি । কিছুদিন পর তাও বন্ধ ওয়ে গেল। এবার ওয়ালে ধরে ধরে হাঁটি । কেউ ফিরেও তাকাল না । তারপর ঘর থেকে বের হওয়া ছেড়ে দিলাম । মনে মনে ভাবতাম আমার বুঝি বড় কোন রোগ হয়েছে । আমি আর বাঁচব না । যেহেতু চিকিৎসার সামর্থ্য নেই তাই কাউকে কিছু বলতাম না । শুধু শুধু যন্ত্রনা বাড়িয়ে লাভ কি ?

১৬ ই অক্টোবর ২০১৩ ইং বেলা ১ টা ১৫ মি



মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:১১

সায়মন এ শুভ বলেছেন: অসাধারন!!!!!! তারপর?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.