| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
zaku
আমি সহ আমার বাকি চার ভাইবোনের জন্ম হয়েছিল একটা গোয়াল ঘরে। সে ঘরে প্রতিদিন সাপ এসে গাভির দুধ খেয়ে যেত। আমরা আতংকে জড়সড় হয়ে সাপের দুধ খাওয়ার দৃশ্য দেখতাম। সাপ সম্ভবত কুকুরের সাথে খুব একটা বিবাদে যায় না। আমাদের সাথে সে সাপের বিবাদের কথা কেউ কখনো বলেনি।
সন্ত্রস্ত পায়ে এগিয়ে গিয়ে কলিং বেল টিপলাম। কেন জানি শুধু মাত্র এই বাসাতে আসলেই আমার এমনটা হয়। খুব নার্ভাস বোধ করি। নিজেকে ফাকা এবং অসহায় লাগে। ইদানিং এখানে নিয়ম কানুন যথেস্ট কঠিন হয়ে গেছে। পুলিশ গোয়েন্দাদের চোখ, নানান রকমের সিসি ক্যামেরা ফাকি দিয়ে মন্ত্রীর বাড়িতে প্রবেশ করা বেশ কঠিন হয়ে গেছে। এসব কানুন আমাকে কখনো বিচলিত করেনি। অথচ বাসার দরোজায় আসা মাত্রই আমি সামান্য পরিমানে হলেও ঘামতে শুরু করি।
- আরে কি খবর ফরহাদ? তোমারে আমি বাত্তি দিয়া খুজতাছি।
: আমি আপনেরে একশ বার বলছি আমি ফরহাদ না। রাগে আমার চোখ লাল হয়ে গেল।
- আসো আসো ভিতরে আসো। মন্ত্রী আন্তরিক ভঙ্গিতে দরজা ছেড়ে দাড়ালেন।
আমি নি:শব্দে তার পাশের চেয়ারটায় বসে পড়লাম। এখানেই বসি সবসময়।
- ঈদের আছে আর মাত্র তিন দিন। অথচ তোমার কোন খবর নাই। সবাই সব কিছু নিয়া গেছে গা। এখন আর কিছু নাই। ফিনিস। আমার হাতও খালি ..... মন্ত্রী বকবক করেই চলেছেন। এখানে আরো মানুষ বসে আছে। সেদিকে তার কোন ভ্রুক্ষেপ নাই। আর আমি চিন্তা করছি কে কি নিল। আর কিছু নাই মানে কি? হাত খালি মানে কি? সে কি ভাবছে আমি টাকা পয়সা চাই? নাকি সে নিজেই ক্র্যাক হয়ে গেল?
- তোমার বউরে এই ঈদ উপলক্ষে কিছু কিন্না দিছ? আমি জানি কিছু কিন্না দিবানা। কারন তুমি একটা ফাজিল ছেলে। শোন ইন্ডিয়া গেছিলাম। আমার মেয়েটার জন্য দুইটা থ্রি পিস আনছি। দেখ পছন্দ হয় কিনা - বলে আলমিরা থেকে একটা শপিং ব্যাগ নামিয়ে আমার হাতে দিল।
: জি. সুন্দর বলে ব্যাগ ফেরত দিলাম।
- আরে গাধার বাচ্চা এইগুলা তোর বউরে নিয়া দে। আর এই ধর বিশ হাজার টাকা। এইটা তোর ঈদের সালামি। যা এখন বিদেয় হ। আমার হাতে শতেক কাজ।
আমি নি:শব্দেই ঘর থেকে বের হলাম। সারা জীবন শুনে এসেছি মন্ত্রী মিনিস্টাররা গু টা পর্যন্ত খায়। কিছু দেয় এমন শুনি নাই। যে কারনে গেছিলাম সেইটাও বলা হলোনা। বাসায় ফিরে আসছি। হঠাৎই আমার মাথায় দারুন একটা বুদ্ধি এলো। বাসায় ফিরে কাপড় গুলা দেখি বউয়ের কাছে অল্প দামে বেইচা দেয়া যায় কিনা। দ্রুত ফিরে আসলাম।
: তারানা অই তারানা তুমি কই? দেখ দেখ কি সুন্দর জিনিস নিয়া আসছি। দুই সেট কাপড়ের দাম মাত্র দুই হাজার টাকা। এক লোক বিপদে পইড়া এমন কান্নাকাটি শুরু করছে যে না করতে পারলাম না। কিন্তু আফসোস আজ আমার হাতে একশ টা টাকা পর্যন্ত নাই।
তারানা আমার হাতে দুই হাজার টাকা গুজে দিয়ে বলল, আজ সবে কদরের রাত। নিশ্চয়ই একজন লোক বিপদে পড়েছে। যাও দিয়া আসো। কেউ বিপদে না পড়লে এত ভাল কাপড় এই দামে বিক্রি করতো না।
আমি টাকাটা হাতে নিয়ে বের হয়ে এলাম। ভীষন মন খারাপ। নস্ট হতে হতে এমন পর্যায়ে চলে এসেছি যে ইদানিং শবে কদরের কথাও মনে পড়েনা। টিএনটি কলোনীর মাঠে শুয়ে রইলাম দীর্ঘ সময় ধরে। আকাশ ভরা সর্য তারা এই অনন্ত নক্ষত্র বিথীকে সাজিয়েছে ফুলে ফুলে। যতদুর দ্রিস্টি যায় ততদুর পর্যন্ত বিস্ত্রীত এই অসীম ভ্রমের বাসর ঘর্।
( ২য় খন্ড আগামি কাল।)
২|
১৫ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:৫৭
মাজহার_২৫ বলেছেন: খুব ভাল লাগল। পরের খন্ডের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
কিছু বানান ভুল আছে; ঠিক করে দিলে সুন্দর হতো। যেমন-
"যতদুর দ্রিস্টি যায় ততদুর পর্যন্ত বিস্ত্রীত এই..."
শুদ্ধঃ দৃষ্টি; বিস্তৃত।
৩|
১৬ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৪
zaku বলেছেন: ট্যাবে লিখি। তাই এ সমস্যাটা ফেস করি। ক্ষমা করুন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:২১
আমি আনোয়ার বলেছেন: দ্বিতীয় খন্ড লিখে পেলুন পড়ার আগ্রহে আছি