![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি এতিম, দরিদ্র, মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত এক গন্তব্যের উদ্দেশে। আক্ষরিক অর্থেই আমি পথিক। একে একে জীবনযাত্রার সব সুতো কেটে দিচ্ছি। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ির দুরন্ত প্রয়াস, যে সাগরের পাড় নেই। আমি একটি রাজ্যের মালিক, রাজা। রাজ্য পুনরুদ্ধার ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অর্জনে চেষ্টিত। আমি মানবতার মুক্তির জন্য বিবেকের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শোষিত-বঞ্চিতের পাশে দাঁড়াতে চাই।
Anju Ferdousy :
রাজনীতি একটি ব্যক্তিগত স্তরে মানুষ প্রভাবিত শিল্প বা বিজ্ঞান । যার উদ্ভব হয়েছে রাষ্ট্রীয় নীতিমালাকে পরামর্শ, প্রবর্তন বা এর লক্ষ্যে প্রভাবিত করার জন্য । যার পরিবর্তন বা পরিমার্জন ঘটে আলোচনা, সমালোচনা বা বিতর্কের মাধ্যমে । অপরদিকে, ধর্ম একটি বিশ্বাস বা আচার । যার ভিত্তি 'অতিমানবিক ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণকারী'কে (গড, ঈশ্বর, আল্লা, ভগবান) পূজা বা বিশ্বাস স্থাপনে । ইসলাম ধর্ম হচ্ছে একটি ধর্ম যার পরিবর্তন বা পরিমার্জন সম্ভব নয় । মৌলবাদীদের মতে এর সমালোচনাও করা যাবে না । সেই ক্ষেত্রে, ১৫০০ বছর আগের প্রেক্ষাপটে তৈরি ইসলাম আধুনিক একটি রাষ্ট্রের জনগণের রাজনীতির ধারক/বাহক হয় কি করে ?
বাংলাদেশে এই মুহূর্তে সব চাইতে অসহায় আমজনতা । নির্বাচন যত কাছে আসছে তারা ততই বিভ্রান্ত হচ্ছে । দুটি প্রধান দলের ক্ষমতার শোডাউনের সহিংসতা, করাপশন, প্রশাসনযন্ত্রের যথেচ্ছ রাজনৈতিক ব্যবহারে তিক্ত এই জাতি যদি ধর্মকারিদের বেছে নেয়, তাতে অবাক হবার কিছু থাকবেন না । একটি দেশের জনতা যখন মরিয়া (desperate), ঠকার বা ভুল করার সম্ভাবনা তখনই বেশি । উগ্রবাদী (ধর্ম ), প্রতিক্রিয়াশীল রাজনীতি তখন আকর্ষণীয় মনে হতে পারে । সর্বনাশ তখনই হয় । অনেক উন্নয়নশীল দারিদ্র-পীড়িত দেশকে আমরা সেই পরিণাম বরণ করেত দেখেছি । সময় এসেছে ইতিহাস থেকে শেখার !
Zakir Mahdin
''মৌলবাদীদের মতে এর সমালোচনাও করা যাবে না''। ধর্মের সমালোচনা করা না গেলেও যারা ধর্মের ব্যাখ্যা দেবেন, তাদের ব্যাখ্যা ভুলের উর্দ্ধে নয়, তাই অবশ্যই সমালোচনা করা যাবে। কেউ যদি তার নিজের ব্যাখ্যাকেই সঠিক মনে করেন, তাহলে সেটা সমালোচনার যোগ্যই না।
Anju Ferdousy :
Zakir Mahdin@ সেটা কিন্তু ধর্মের সমালোচনা হল না । বিখ্যাত ধর্ম পন্ডিতদের মতে, পৃথিবীর কোন ধর্ম গ্রন্থই সমালোচনার উর্দ্ধে নয় । মূলত, ধর্মগ্রন্থে পরস্পরবিরোধী কথা এবং অনেক অলৌকিক বিষয়ের অবতরণা এর প্রধান কারণ । অনেক কঠোর সমালোচনা আমরা অন্যান্য ধর্ম-গ্রন্থের ক্ষেত্রে দেখতে পাই । সেই ধর্মানুসারিদের এই ব্যাপারে উদার দেখা যায় । ব্যতিক্রম শুধু ইসলাম । অনেক ইসলাম ধর্ম বিশেষজ্ঞ সংগত কারণেই নিজেদের কাজের বিস্তৃতি ছড়িয়ে দেতে পারেননি । ক্ষতিগ্রস্ত কিন্তু ইসলামই হয়েছে । বিশেষ করে মডারেট মুসলমানদের । ইসলামের প্রতিনিধিত্ব করছে আল-কায়দার মত উগ্রবাদী টেররিষ্ট দল । ভাল থাকবেন ।
Zakir Mahdin :
Anju Ferdousy, আমি আপনার এ যুক্তিগুলো আগেই খেয়াল রেখে কথা বলেছি। সব ধর্ম আর ইসলাম ধর্ম এক না। ইসলাম সব পূর্ববর্তী ধর্মের স্বীকৃতি দেয়, কিন্তু অন্যগুলো দেয় না। ইসলাম ধর্ম এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক সংরক্ষিত, যা অন্যগুলো নয়। ইসলাম শান্তিপূর্ণ সমাজব্যবস্থার বাস্তব মডেল দেখিয়েছে। তবুও আলোচনা ও সঠিক উপস্থাপন বা বুঝাপড়ার অভাবে তা নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে। শুধু আপনি কেন, অনেক বড় বড় চিন্তাশীলও এ ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন। তাই এ নিয়ে আমাদের দীর্ঘ আলোচনা করতে হবে। এখানে শুধু একটি কথাই বলছি, আল্লাহ বা গডকে একক ও সর্বশক্তিমান বলে বিশ্বাস করা, আবার তার প্রদত্ত বিধানের মৌলিক সূত্রগুলোর সমালোচনা করা স্ববিরোধী। ''বিখ্যাত ধর্ম পন্ডিতদের মতে,'' আপনি কাদের কথা বলেছেন জানি না। তবে আমি এর বিপরীতও জানি। আর সবসময়ই নিজে কোন প্রমাণ পেলে আমরা সব বিখ্যাতদেরই ছুড়ে ফেলি। তা যুক্তিসংগতও বটে। নতুবা পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যক্তিটি কে? আপনি নিশ্চয় বুঝতে পারছেন আমি কার কথা বলছি। কিন্তু আপনি কি তার সমালোচনা করতে এক মুহূর্তও দ্বিধা করবেন? যেহেতু আপনি হাতে কলমে এর প্রমাণ পাননি?
Zakir Mahdin :
ধর্ম আর থিওরি এক নয়। ধর্মে অলৌকিক বিষয় থাকবেই। আপনি ধর্মগ্রন্থের সমালোচনার মাধ্যমে যে উন্নয়নের কথা বলছেন, সেটা বুদ্ধিপ্রসূত মতবাদের ক্ষেত্রে খাটে, আর খাটে কেউ যদি পরিত্যক্ত ধর্মকে বাঁচিয়ে রাখতে চায়। আপনি যদি ধর্মই বলেন, অর্থাৎ কোন না কোনভাবে ধর্মের অস্তিত্ব স্বীকার করেন, তাহলে ধর্মের সমালোচনার সুযোগটি আপনার থাকে না। আর যদি সমালোচনাই করতে চান তাহলে ধর্ম না বলে মানব রচিত মতবাদ বা থিওরি বলুন। ধর্ম আপনাকে সেই সুযোগটি দিয়েছে। অর্থাৎ বিশ্বাস করা না করা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ধর্ম কোন জবরদস্তি করে না। আমি আপনাকে কোন একটি দিকে ঠেলে দিচ্ছি না। কিন্তু আলোচনার স্বার্থে কথা ক্লিয়ার করে বলা দরকার। আপনি যদি ধর্মকে আল্লাহপ্রদত্ত হিসেবে বিশ্বাস না করেন, আবার একে ধর্ম বলেন তাহলে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়। কোন রাষ্ট্র ধর্মের মৌলিক বিশ্বাসে আঘাত না করলে ধর্ম সেই রাষ্ট্রের আনুগত্যকে অপরিহার্য বলে। আবার কোন ধর্মীয় রাষ্ট্র আপনার বিশ্বাসের স্বাধীনতা ও স্বাভাবিক সুযোগ-সুবিধা ও স্বাধীনতা দিলে সেই রাষ্ট্রের আনুগত্য করতে আপনারইবা অসুবিধা কোথায়? এ বিষয়গুলো নিয়ে অন্তত আমরা খোলামেলা কথা বলতে তো কোন সমস্যা দেখি না। তাহলে আপনি আমাকে কেন ঘৃণা করবেন বা আমিই আপনাকে ঘৃণা করব কেন?
Anju Ferdousy :
Zakir Mahdin, আমি সমালোচনার ক্ষেত্রে ব্যাবহারিক উন্নয়নের কথা বলেছি (হয়ত খুব স্পষ্টভাবে বলা হয়নি) । "ধর্ম" শব্দটিও সেই অর্থে ব্যবহার করা । আমি সেটাই করব । আর, সমালোচনা যে করে সে কোন বিশ্বাস নিয়ে করে না । যাই হোক, ইসলাম ধর্ম নিয়ে সমালোচনা করলে যে উগ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, এর খুব ভাল সাইকোলজিক্যাল ব্যাখ্যা আছে । সেই ব্যাখ্যায় না গিয়েও বলা যায়, যে ধর্মগুলোর ধর্মানুসারীরা সমালোচকদের সহজভাবে গ্রহণ করেছে, তারা কিন্তু সমালোচনা শুনে ধর্ম ত্যাগ করেনি । বরং অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে উল্টো । পৃথিবীতে খ্রীষ্টান ধর্মানুসারীরা সব চাইতে বেশি, অথচ এই ধর্মটিকে সব চাইতে বেশি কঠোর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে । অধিকাংশ ক্ষেত্রে (বিশেষ করে ধর্ম) দেখা গেছে সমালোচনা সহজভাবে গ্রহণ করলে, বিষয়টির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে । এবং সমালোচক ও তার টার্গেট গ্রুপের দূরত্ব কমে যায় । তারা একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করে । উন্নয়নটি সেখানেই ঘটে।
Anju Ferdousy
"স্বাভাবিক সুযোগ-সুবিধা ও স্বাধীনতা"র কথায় আসি । "স্বাভাবিক সুযোগ-সুবিধা ও স্বাধীনতর" কিন্তু কোন সীমারেখা নেই । সভ্যতার ক্রম-উন্নতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল মানবিক উন্নয়ন । সেই অনুযায়ী চাহিদার পরিবর্তন । সেই ধারায় আমরা দেখেছি সমাজ ব্যবস্থায়, রাষ্ট্রীয় কাজকর্মে, প্রশাসনে সময়ের চাহিদার সঙ্গে ধীরে ধীরে পরিমার্জন পরিবর্তন ঘটেছে । রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সেক্যুলারিজম স্থান করে নিয়েছে । মাত্র ১৭০০ শতকের শেষের দিকে হুইচ হান্টের মত একটি নির্মম কাজ রাষ্ট্রীয় আইনের আওতায় করা হয়েছে । অথচ মাত্র ২০০ বছর পরে সেই একেই দেশে, একই এ্যাক্ট রাষ্ট্রীয় আইনে সর্বোচ্চ শাস্তিযোগ্য অপরাধ । আজকে সিভিল আইনে যেখানে যে কোন অপরাধেই মৃত্যুদন্ড জাষ্টিফায়াবল কিনা সেটা নিয়ে মত পার্থক্য দেখা দিয়েছে । এবং অনেক দেশে যেটা তুলে দেওয়া হয়েছে । সেখানে সাধারণ চুরির দায়ে হাত পা কেটে নেওয়া বা শিরশ্ছেদ করা, কতটুকু আধুনিক বিচারে "স্বাভাবিক সুযোগ-সুবিধা ও স্বাধীনতাকে" সংরক্ষণ করে, বা আদৌ করে কিনা সেটা নিয়ে ভাববার প্রয়োজন আছে । একটি ধর্মীয় রাষ্ট্র "সবাইকে স্বাধীনতা" দেয় না । বৈজ্ঞানিকভাবে গে-কমিউনিটি একটি প্রকৃতির স্বাভাবিক সৃষ্টি । তার existence কোন ধর্ম স্বীকার করে না । মানবাধিকারের যে পরিব্যাপ্তি আজ একটি সেক্যুলার রাষ্ট্রের সিভিল আইন সংরক্ষণ করে । সেটা কি কোনভাবে কোন ধর্মীয় রাষ্ট্র দিতে পারে? পারে না । পারে না যে সেটাও খুব স্বাভাবিক । কারণ সর্বশেষ ধর্মীয় আইন কানুন তৈরি হয়েছিল ১৫০০ বছরের আগের প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করে । সেক্যুলারিজমও পারফেক্ট নয় । কিন্তু সেটাই স্বাভিবিক, এবং মানুষ তা সময়ের দাবিতে ধীরে ধীরে পরিমার্জন পরিবর্তন করে এগিয়ে নিয়ে যাবে । কিন্তু পিছনে যাবে না । সেটা মানুষের প্রকৃতি বিরুদ্ধ বৈকি!
Anju Ferdousy :
Zakir Mahdin @ আমার মতে, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে একজন মানুষ অন্য একজন মানুষকে ভালবাসবে বা শ্রদ্ধা করবে সেটাই স্বাভাবিক । একজনের মতবাদের বিপরীতে অন্য একজনকে যদি জীবনও দিতে হয়, তার জন্য তাকে করুণা করা চলে কিন্তু ঘৃণা নয় । সব শেষে বন্ধুবর সেজান মাহমুদের একটি মন্তব্য সরাসরি তুলে ধরে আমি এই আলোচনা close করব । ভাল থাকবেন । সেজান মাহমুদ : "আমি নিজেকে ধর্মের কোন পণ্ডিত বলে মনে করি না। কিন্তু আমি এই বিষয়ে পড়ালেখা করি। ধর্ম, ধর্মতত্ত্ব, ধর্মের দর্শন, ধর্মের ইতিহাস, তুলনামূলক ধর্ম-তত্ত্ব ইত্যাদি বিষয়ে পড়ি এবং মনে হয় যে কোন ব্যক্তির সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতে পারবো, বিনয়ের সঙ্গে। আমি যদি মনে করতাম যে, যে কোন একটি ধর্ম দিয়েই পৃথিবীর মানুষের কল্যাণ হবে তবে আমি তাই মন-প্রাণ দিয়ে করতাম। আমার কাছে মনুষ্যত্ব, মানবতা বড়, মানব কল্যাণ বড়। তা যা দিয়ে হবে তাকেই আমি সমর্থন করবো। আমি মনে করি বিজ্ঞান-সম্মত চিন্তা চেতনা, অহিংসার দর্শন, মানবতাবাদ এগুলো দিয়েই মানুষের কল্যাণ সম্ভব। লক্ষ্য করো সব ধর্মের মূল কিন্তু এগুলো দিয়েই, কিন্তু বাস্তবতায় মানুষ এগুলো থেকে দূরে সরে গিয়ে 'রিচুয়াল' কে বড় করে দেখে এবং মূলত কল্যাণের চেয়ে অকল্যাণই বেশি করছে। এজন্যেই পৃথিবীর ইতিহাসে ধর্মের নামেই সবচেয়ে বেশি খুন হয়েছে, বেশী মানবতা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। আমি নিজে কোনদিন কোন ধর্মকে অশালীন ভাষায় আক্রমণ করি নি, কোন ধর্মগুরুকে অশ্রদ্ধা করি নি। কিন্তু সত্য কথা বলেছি যা কখনো কখনো ধর্মের বিরুদ্ধ যায়, যাবে। কিন্তু যুক্তির বাইরে যাই নি। আমি এই একটি আয়াত আনলাম, আরো গোটা দশেক আয়াত আনতে পারি যা দিয়ে প্রমাণ করা যায় যে আসলে মানুষ-ই সব কিছু করে। একটি ছুরি দিয়ে তুমি জীবন বাঁচাতে পারো আবার খুনও করতে পারো। তাহলে সেই মানুষ যদি ভাল না হয়, ছুরির দোষ যেমন দেয়া যায় না, তেমনি ছুরির গুণ গেয়েও লাভ হয় না। এটাই একমাত্র পয়েন্ট এখানে বলা। যদি সত্যি শান্তি চাও তাহলে ধর্ম কে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার আন্দোলন করো, ধর্মের অপব্যবহার বন্ধের জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করো। না হলে এই অশান্তি মধ্যযুগের মতো আমাদের তাড়িয়ে বেড়াবে।"
©somewhere in net ltd.