নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আধ্যাত্মিক পুরুষ, ধর্মগুরু; খানকা থেকে বলছি।

মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ি দেবার দুরন্ত প্রয়াস

জেড মাহদিন

আমি এতিম, দরিদ্র, মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত এক গন্তব্যের উদ্দেশে। আক্ষরিক অর্থেই আমি পথিক। একে একে জীবনযাত্রার সব সুতো কেটে দিচ্ছি। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ির দুরন্ত প্রয়াস, যে সাগরের পাড় নেই। আমি একটি রাজ্যের মালিক, রাজা। রাজ্য পুনরুদ্ধার ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অর্জনে চেষ্টিত। আমি মানবতার মুক্তির জন্য বিবেকের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শোষিত-বঞ্চিতের পাশে দাঁড়াতে চাই।

জেড মাহদিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের বোধ জাগবে কবে!!

১১ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:৩৯

জামায়াতে ইসলামী একটা রাজনৈতিক দল। তবে ধর্মীয় দল হিসেবে দাবী করে ধর্মকে তারা যেভাবে ব্যবহার করে তা ঠিক নয়। যদিও তাদের দুর্বল ধর্মীয় ব্যাখ্যাগুলো যুবসমাজকে প্রভাবিত করে। এর কতক বাস্তব কারণ আছে। যেমন (ক), আলেম-উলামাদের দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ, (খ), দেশি-বিদেশি শক্তির সঙ্গে আঁতাত ও অঢেল অর্থ খরচ, (গ), বিশেষ করে আজকের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর আদর্শিক ও দার্শনিক দুর্বলতা। কথায় বলে, বাঘ নাই দেশে বিড়ালই বাঘ। আজকের আওয়ামীলীগ-বিএনপিকে টেক্কা দেয়ার ক্ষমতা জামায়াতের খুব ভালভাবেই আছে, এটা বাস্তব। এর অর্থ এই নয় যে জামায়াত তুলনামূলকভাবে সঠিক পথে আছে বা এ দেশের জন্য উপকারী। আমি আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট- এসবকে এক নজরেই দেখি এবং কোনটাকেই সমর্থন করি না। কারণ আমার রাজনৈতিক দর্শন ও আদর্শ ভিন্ন। এরা যে কারণে ব্যর্থ, সেই একই কারণ ড. ইউনুস এবং ফখরুদ্দীনের মধ্যেও রয়েছে। রয়েছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও। এছাড়া তাদের মধ্যে আরও কিছু বাড়তি কারণ ইতোমধ্যেই মিডিয়ায় জোরে-শোরে প্রকাশ।



আমাদের উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হলে চলবে না, এই সমাজ ভেতর থেকে নষ্ট হয়ে গেছে এবং সুকৌশলে ব্রিটিশরাই কিছু মৌলিক বিতর্ক সৃষ্টি করে গেছে। এর সাথে স্বাধীনতার পূর্বে ও পরে আরও কিছু যোগ হয়েছে। সুতরাং সাধারণ কোনও উপায়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার বা উন্নয়ন করার পথ নেই। তবে পথ অবশ্যই আছে, কিন্তু সেটা এখনও প্রকাশ না। আমরা এমন একটি দর্শন, এমন একটি আদর্শ, এমন কিছু নীতিমালা এবং এমন একজন নেতা আশা করছি, সূর্য উঠলে যেমন সবাই দেখে এবং স্বীকার করে, এক্ষত্রেও সবাই দেখবে ও স্বীকার করবে। কোনও বিতর্কিত ব্যক্তি নন। প্রাথমিকভাবে রাজনীতির বাইরে থেকেই তাকে আলো ছড়াতে হবে।



বিতর্ক কখনও শেষ হবার নয়। ফলাফল যেই লাউ সেই কদু। তাহলে কি করতে হবে? প্রথম কথা, যারা নির্দিষ্ট কোনও লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে কিছু করতে যাবেন তারা পরস্পর পরস্পরকে কতটুকু ছাড় দিতে রাজি? নিজের মতের উপর অটল থাকলে কখনও কিছু হবার নয়। হলেও ভঙ্গুর। এখন প্রশ্ন, কখন প্রতিটি সদস্য পরস্পরকে সর্বোচ্চ ছাড় দিতে প্রস্তুত হয় এবং নির্দিষ্ট কারও নেতৃত্ব প্রায় বিনা প্রশ্নে মেনে নেয়? দ্বিতীয় কথা, ইস্যুর অভাব নেই। তাই মৌলিক ইস্যুগুলো কি তা খুঁজে বের করে ধীরে-সুস্থে আলোচনা করতে হবে। দাওয়াতে আপনাকে ২০টা আইটেম দেয়া হল। অথচ আপনি খেতে পারবেন বড়জোর ৩টি। তখন কি করবেন? নিশ্চয় ২০টির মধ্যে ৩টি বাছাই করবেন। সুতরাং সব বিষয় আলোচনায় আসতে পারে না, আসার দরকার নেই। আসলে শেষ হবে না। রাজনৈতিক মতবাদগুলোকে আমরা বুঝার সুবিধার্থে ডানপন্থী, বামপন্থী ও মধ্যপন্থী হিসেবে চিহ্নিত করি। আবার জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থান মাপার জন্য উচ্চবিত্ত, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত হিসেবে চিহ্নিত করি। জীবনদর্শনগুলো ধর্ম, দর্শন ও বিজ্ঞানের আলোকে পর্যালোচনা করতে পারি। আবার প্রতিটিতেই চরমপন্থি, উদারপন্থি ও মধ্যপন্থি বের করতে পারি। মোটকথা এভাবে প্রসঙ্গের পর প্রসঙ্গ বাড়বেই।



কিন্তু মানুষ হিসেবে সমস্ত মানবজাতির এমন কতগুলো মৌলিক মিল এবং ঐক্য রয়েছে যাতে সবাই এক প্লাটফরমে আসতে পারে। জ্ঞানের সর্বোচ্চ স্কেলে সমস্ত মানবজাতি একমত হতে বাধ্য। একমাত্র অসুস্থ ও পাগল ব্যতীত। এটাই জ্ঞানের বৈশিষ্ট্য। বিরোধ মীমাংসা করা, ঐক্য সৃষ্টি করা, মনুষ্যত্ব ও মানবতাবোধ জাগিয়ে তোলাই জ্ঞানের কাজ। স্বাভাবিকভাবে কে কোন ধর্মের, কোন দলের সেটা বিবেচ্য নয়। এমনকি জাতি হিসেবে বিভিন্ন দল, ধর্ম ও গোষ্ঠীর অতীতের ভুলগুলোও নমনীয়তার দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করতে হবে এবং জাতির সামগ্রিক মঙ্গল অনুসন্ধান করতে হবে। মোটকথা, যেসব ইস্যু ও দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রায় সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা যায় সেগুলো নিয়েই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় গোষ্ঠী ও বিশাল অংশের তরুণ সমাজকে এগুতে হবে। আজ বিশেষ কোন দল বা গোষ্ঠীর প্রতি অন্ধ আক্রোশ ও প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার কুফল পুরো জাতি ভোগ করছে। সবাই নিজ নিজ মতবাদ ও দর্শন প্রচার করছে এবং নিজেদেরটাকেই সত্য বলে দাবি করছে। তাই ভুল-শুদ্ধ পার্থক্য করার জ্ঞান যুব সমাজেকে রপ্ত করতে হবে। অযথা বুঝে-না-বুঝে চিৎকার-চেঁচামেচি ও বিতর্কে কোনও লাভ নেই।



একজন রাজনীতিকের সরল স্বীকারোক্তি- ‘রাজনীতিকদের কখনো বিশ্বাস করতে নেই’। সত্য ও বাস্তব কথাটি তিনি আমাদের বললেন। নিশ্চয় তার নিজের মধ্যেও এই বাস্তবতা পরিবর্তনের একটা আকাঙ্খা প্রায়ই কাজ করে, কারণ সময়ে সময়ে তারা নিজেরাও এর নির্মম শিকার হন। কিন্তু ‘পরিবর্তন সম্ভব’- এই বিশ্বাসটা মনে হয় কাজ করে না। তাই রাজনীতির গতানুগতিক নীতিমালাই তারা অনুসরণ করেন। রাজনীতিকরা দোষ চাপান জনগণের ওপর, আর জনগণ রাজনীতিকদের ওপর। একদল রাজনীতিক মনে করেন, যে ধারায় উন্নতি ঘটছে, দীর্ঘ একটা সময় পর আমাদের আশা-আকাঙ্খা পূরণ হবে। এখন শুধুই অপেক্ষা। কিন্তু আমি মনে করি অপেক্ষার সর্বোত্তম ব্যবহার হওয়া উচিত। যে হারে পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে, সে হারে কিন্তু উন্নতি ঘটছে না। আর মূলকথা, ‘বিশ্বাস’ ছাড়া মানবজীবন অচল, স্থবির। তাই পারস্পরিক বিশ্বাস পুনরুদ্ধার করতে হবে। এই বিশ্বাসের উন্নতি ঘটায় জ্ঞান।



অর্থনৈতিক মুক্তিই জীবনের সবকিছু নয়। তাই উন্নত বিশ্বের অর্থনৈতিক মুক্তি সত্ত্বেও তাদের অর্থনৈতিক চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। তাই তাদের নজর এখন উন্নয়নশীল ও অনুন্নত বিশ্বের প্রতি। তাই বাংলাদেশকে বিশেষত যে কোন মুসলিম দেশকে ইরাক-আফগানিস্তানের পরিণতি বরণ বা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না। সুতরাং জ্ঞানগত বিপ্লব, একটি জ্ঞান- সমৃদ্ধ সমাজ গঠন, সকলের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন এবং সমস্ত মানবজাতির মুক্তিই আমাদের মূলকথা। মানুষ কি চায়, তার মৌলিক (আধ্যাত্মিক) চাহিদা কি, সমস্যা ও সম্ভাবনা কি, সার্বিক মুক্তি অর্জনের পথ কি এসব আমাদের ভাবতে হবে। তর্ক-বিতর্ক, দলাদলি, হিংসা-বিদ্বেষ এসবে সময় নষ্ট আর নয়। আসুন নিজেদের সম্পর্কে সজাগ হই, পরিচয় অর্জন করি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.