নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আধ্যাত্মিক পুরুষ, ধর্মগুরু; খানকা থেকে বলছি।

মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ি দেবার দুরন্ত প্রয়াস

জেড মাহদিন

আমি এতিম, দরিদ্র, মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত এক গন্তব্যের উদ্দেশে। আক্ষরিক অর্থেই আমি পথিক। একে একে জীবনযাত্রার সব সুতো কেটে দিচ্ছি। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ির দুরন্ত প্রয়াস, যে সাগরের পাড় নেই। আমি একটি রাজ্যের মালিক, রাজা। রাজ্য পুনরুদ্ধার ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা অর্জনে চেষ্টিত। আমি মানবতার মুক্তির জন্য বিবেকের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শোষিত-বঞ্চিতের পাশে দাঁড়াতে চাই।

জেড মাহদিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সব খেলা পুরনো

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:১১

আমার রাজনৈতিক লেখাগুলোয় "আজকের রাজনৈতিক সংকট" কথাটি আমি প্রায়ই ব্যবহার করি। অথচ সত্য হল, পাক-ভারত উপমহাদেশের গত দুইশত বছরের রাজনৈতিক ইতিহাসে এরচেয়ে সুসময় কখনো ছিল না। আজ যারা মনে করেন চূড়ান্ত সংকটই আমাদের একটি চূড়ান্ত মীমাংসায় উপনীত করবে, তা স্পষ্টই ভুল। সামান্য ভুল থেকেই যারা শিক্ষা নিতে পারে না, বড় ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া আরো কঠিন। অতীতে বহু বড় বড় ভুল সংঘটিত হয়েছে, কিন্তু তা থেকেও এ জাতির শিক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। প্রকৃতপক্ষে “এরচেয়ে সুসময় কখনো ছিল না” কথাটি ভুল। আমাদের সামগ্রিক সমস্যা দুইশত বছর আগে যেখানে ছিল, এখনো ঠিক সেখানেই আছে। বরং কোন কোন ক্ষেত্রে বেড়েছে। আজ আমরা যে সুখ-স্বাধীনতা উপলব্ধি করি, ব্রিটিশ আমলের কোন কোন সময় পরিস্থিতি এরচেয়ে আরো অনেক অনেক ভালো ছিল। আমি বারবার একটি কথা বলি, কোন সমস্যাই বিচ্ছিন্ন নয়। এমনকি পৃথিবীর অপর প্রান্তের ভিন্ন জাতির সমস্যাও এক সূত্রে গাঁথা। সুতরাং নির্দিষ্ট কোন ভূখণ্ডের একাধিক জাতি-গোষ্ঠী বা ধর্ম-বর্ণের অধিবাসীদের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক সমস্যা বিচ্ছিন্ন হতেই পারে না। তবুও কেন এ অঞ্চলের ধর্মতত্ত্ববিদ, আলেম, রাজনীতিক, চিন্তাশীল, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষকগণ একটি জাতির সমস্যাকে এক করে দেখতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং সামগ্রিক সমাধান তালাশে বারবার সাম্প্রদায়িকতার পরিচয় দিয়েছেন আমার বুঝে আসে না। আমার চ্যালেঞ্জটি সেখানেই।



ইদানিং কিছুদিন ধরে এমন হচ্ছিল যে, ব্লগের জন্য বিভিন্ন বিষয়ে অর্ধেক বা তারচেয়ে বেশি লিখার পর যখন আত্মসমালোচনার মুখোমুখি হই, লেখাগুলো টেকে না, ছিঁড়ে ফেলতে হয়। এত কষ্টের লেখা... কলিজায় আঘাত লাগে। আবার মনে এক ধরনের প্রশান্তিও আসে, নিজেকে শুদ্ধ করতে পেরে। সবার প্রতি মমতা, মানবতা ও ভালোবাসার স্বাদই আলাদা। এটি সম্ভব নয়, যদি মানুষের সৃষ্টিগত, স্বভাবগত, বংশগত, পরিবেশগত ও মানবিক সীমাহীন দুর্বলতাসমূহের প্রতি দৃষ্টি দেয়া এবং নিজের অক্ষমতা, দায়িত্ববোধ, প্রতিনিধিত্বের জ্ঞান ইত্যাদির প্রতি লক্ষ্য রাখা না যায়। সেদিন সংসদের বক্তব্যের উপর দ্বিতীয় লেখাটি অর্ধেক লিখার পর মাগরীব নামাজের পূর্বে যখন মুরাকাবায় বসলাম, দেখি এ লেখার মাধ্যমে আমি অন্যদের যেভাবে সমালোচনা ও আঘাত করেছি, এর পেছনে নিজের আহত অন্তরের ছটফটানি স্পষ্ট। অন্যের প্রতি ঘৃণা, অপরের দোষ অনুসন্ধান, নিজেকে নির্দোষ ও পবিত্র দাবি করে সমালোচনায় প্রবৃত্ত হওয়া। তখন বুঝতে পারলাম মনে কখন কিভাবে এত দুঃখ-অশান্তি জমা হয়। পরে এ লেখাটিও বাদ দেই। যদিও কয়েক ঘন্টা পর আবার লেখাটিতে নজর দিলে মনে হয় যে না, লেখাটি চালিয়ে দেয়া যায়। এর কারণ- নির্মল দৃষ্টি, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও শুদ্ধ অনুভূতি সবসময় থাকে না। আসলে বাহ্যিক দিক থেকে লেখাটিতে কোন সমস্যা ছিল না, কিন্তু গভীর দিক থেকে সমস্যায় পরিপূর্ণ। এ জাতীয় লেখা বিভেদ-বিচ্ছিন্নতা দূর করার পরিবর্তে আরো সৃষ্টি করে। তারচেয়ে বড় কথা নিজের সাদা অন্তরটিতে দাগ ফেলে। তাই আপাতত লেখা অফ। আমাদের আরো শুদ্ধ হতে হবে।



ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত একটি বই মাত্র পড়ে শেষ করলাম। যেহেতু এর সঙ্গে আমার প্রচুর মতানৈক্য আছে, তাই নাম বলছি না। বিষয় : উপমহাদেশের রাজনীতি, আলেমসমাজের ভূমিকা ইত্যাদি। এখানে কংগ্রেস, মুসলিম লীগ, দেওবন্দ, হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা, ইংরেজ শোষণ সবই এসেছে। বিষয় ও ঘটনা বর্ণনায় লেখক যথেষ্টই নিরপেক্ষতা দেখিয়েছেন। কিন্তু তারপরও আমি লক্ষ্য করলাম, তার সঙ্গে আমার দৃষ্টিভঙ্গির বিশাল পার্থক্য। তখনকার প্রধান দুটি আন্দোলনের একটি ছিল ভারতীয় জাতীয়তাবাদ, এটি মূলত হিন্দু জাতীয়তার প্রাধান্যে। অন্যটি দ্বিজাতি স্বত্ত্বা। আমি আশ্চার্যান্বিত হয়ে লক্ষ্য করি, “সেই সময়” আর “এই সময়ের” কত মিল! সমস্যার চরিত্র, উদ্ভব, বিকাশ, সমাধানের পদক্ষেপ, আলেম ও বুদ্ধিজীবীদের বিশ্লেষণ, রাজনীতিকদের ভূমিকা সেই একই। সবই পুরনো খেলা! নতুন কিছু দেখছি না। তাহলে কি শতাব্দীর পর শতাব্দী একই বৃত্তে বন্দি থাকবে এ জাতি? এমনই তো মনে হয়!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.